নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সতীত্ব খোয়ানো নারীর গর্ভে সোনা জন্মালো নাকি তামা জন্মালো তাতে কি আসে যায় ? আমি কলংকের সোনা।

zaku

আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।

zaku › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের ডিসি ফরিদ ৩

০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১:২৪

তাজা মাংসের গন্ধে তার মাথা খারাপ হয়ে যাবার যোগাড়। এত বড় প্রানি জন্মের পর সে দেখেনি। অথচ চোখের সামনেই কিনা পরে আছে বিশালাকার মৃত ফড়িংটি। সার্চ টিম সদস্যদের কাজ দুইটা। খাবার খুজে বের করা এবং অন্য কোন ঢিবির পিঁপড়েরা এর মালিকানা দাবির আগেই নিজের কর্মী বাহিনি দিয়ে এতে দখল প্রতিষ্ঠা করে দ্রত নিজেদের এলাকায় নিয়ে আসা। সে বিদ্যুত বেগে ফিরতি পথ ধরল। এই খনি দিয়াই তাদের একদিনের আমিষের চাহিদা মিটে যাবে। তার কপাল কিঞ্চিৎ খারাপ। এত এত পথ থাকতে সে যে লাইন ধরে এদিকে আসলো সেই একই লাইন ধরে লাল গোত্রের আরেকটা এগিয়ে এলো কেন? কোন মতে মুখোমুখি ধাক্কা খাওয়া থেকে নিজের মাথা বাচিয়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখল আরও একটা এদিকেই এগিয়ে আসছে। সে তার দলের। দ্রত নিজেরা কলাকুলি করে সে তার কানে কানে আসল খবরটা দিল। নতুন পিঁপড়েটা মনে হয় বিশ্বাস করতে পারছিলনা এত বড় একটা খবর। তারা দুজনে দ্রুত শলা করে আবার ফিরে গিয়ে ফড়িঙটাকে দেখল। নাহ আর কেউ এখনো দেখেনি মনে হয়। এইবার তারা দুজন গুল্লির বেগে বের হয়ে গিয়ে বাহিনীকে খবর দিল। তারপরের ঘটনা তো একেবারে পানিভাত। দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ............

ফরিদ পিঁপড়াদের এই পুরো নাটকটায় এতই মশগুল ছিল যে সে ভুইলাই গেল আজ মধ্য এপ্রিলের গনগনে গরম একটা দিন। সকাল থেকে কিছু এখনো খাওয়া হয়নি। বিনা নোটিশে আজও অফিস কামাই দিয়েছে। তার মনে হতে লাগল সে শুধু ঘটনাটাই বুঝেনি বরং পিঁপড়াকুলের কিছু কিছু কথাবার্তাও শুনতে পেয়েছে। সে হাজার চিৎকার করে বললেও কেউ বিশ্বাস করবেনা। অথচ একটা সময় ছিল যখন শিওলি বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করে ফেলত। আফসোস। এত বড় একটা ঘটনা চোখের সামনে ঘটল অথচ সে কাউকে বলতে পারছেনা। আফসোস।

সাড়ে আটটা থেকে ফরিদ কমলাপুরের পুরান রেল ষ্টেশনে বসে আছে। রেল ষ্টেশন হলেও এই যায়গাটা একেবারেই নিরব থাকে। দীর্ঘ সময় এখানে ঘাপটি মেরে বসে থাকার এইটাই কারন। কারো সাথে হুট করে দেখা হবার সম্ভাবনা নাই। ফরিদ একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। কার দিন কি হালে যায়। আজ সকালে ঘুম ভাঙ্গার পরই আলু ভাজির গন্ধে তার খুশি খুশি লাগল। শিউলি সত্যি তাইলে হালুয়া অফ দিছে। তারাতারি ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসে দেখে মচমচে পরাটা ভাজা হচ্ছে। একটা খাওয়ার শেষ পর্যায়ে দ্বিতীয়টা তোলা হচ্ছে। সে মনে মনে ঠিক করে ফেলল শিউলিকে নিয়া নো হাঙ্কি পাঙ্কি। এই মহিলার মাথা ঠিক থাকলে সে-ই আসলে শ্রেষ্ঠ। ফরিদ হাতের গুম্বুজ ওয়ালা আংটিটা তালুর দিকে ঘুরিয়ে দিল যেন শিউলি দেখতে না পায়। এটা ফরিদের খুবই প্রিয় অথচ শিউলি দেখলেই কোন না কোন হাঙ্গামা বাধায়। তাই এই পূর্ব সতর্কতা। শিউলি আজ অনেক কষ্ট করে এইসব রান্না করছে। তার সাথে দুই একটা সুখ দুঃখের কথা বলা যায়-

ফরিদঃ বুঝলা শিলু মনি, আইজ আমি তোমার উপরে মারাত্মক সন্তুষ্ট।

শিউলিঃ পাঙ্গা বাধাইবা না। খাইয়া বিদাই নাও। আমার আরও কাজ আছে।

ফরিদঃ শোন না। তোমার মাথাডা যদি সব সময় ধর ওকে থাকত......... আগামি শীতেই ইনশাল্লাহ ভালো একজন...... কি জানি নাম মোহিত কামাল। অই য চোখ দুইডা বাউক্কা বাউক্কা মার্কা......

শিউলিঃ ( চুলা থেকে গরম কড়াইটা ফেলে দিয়ে মাথা ভাঙ্গা পিতলের লম্বা চামচটা হাতে নিল।)

আজকে অন্তত ফরিদ কোন রকম ঝুট ঝামেলা চায়না। সে দৌরে শিউলিকে ধরতে গেল। হাতের তালুর দিকে প্যাঁচানো আংটির মিনারে লেগে শিউলির পিঠের চামড়া ইঞ্চি তিনেক উঠে গেল। ফরিদ ধরতেই পারল না চামড়া আগে উঠল না তার মাথায় চামচের বাড়ি আগে পরল। কোন মতে জান নিয়া এজিবি কলোনি থেকে এক কালের আবাল ডিসি ফরিদ টলতে টলতে বের হল। সে সাবধানে তার টাকে হাত বুলাল। কিছুটা অংশ শুকনা খটখটে কাদার মত মনে হল।

৫.৫.২০১৪। ( আজ দেশের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। এ দিনে শয়ে শয়ে মানুষকে গনহত্যা করা হয়েছিল। তাই আজকে ফরিদের কোন জটিলতার কথা বলতে পারলাম না।)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.