নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাই নাই

মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান

অতি সামান্য একজন মানুষ। যা আছে তা নিয়েই সুখী।

মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহাম্মকদের আহাম্মকি আর অ্যাকশন-জ্যাকসন!

০১ লা জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬

রাস্তায় বের হলে ভদ্রতা, পেশাগত অপারগতা, শান্তিপ্রিয়তা এবং মধ্যবিত্তের ট্যাগওয়ালা শিকলগুলো সর্বদা টেনে ধরে বিধায় নানাধরণের আহাম্মকির প্রতিবাদ করতে পারিনা। উচিত না হলেও এড়িয়ে যাই। এই যেমন কয়েকদিন আগে আমি আর নওশাদ ইফতারী কিনে জিন্দাবাজার থেকে বাসায় ফিরছিলাম। বারুদখানা পয়েন্টের আগে এসে দেখি যে আজগর-স্কয়ারের সামনে মারাত্বক জ্যাম। রমজান মাসে এরকম জ্যাম থাকতেই পারে, কিন্তু অবাক হয়ে গেলাম যখন দেখলাম জ্যামের জন্যে যতটা না গাড়ির চাপ, তার চাইতে বেশি দায়ী মানুষের আহাম্মকি! একটা কোল্ডড্রিংকস ভর্তি মিনিট্রাক রাস্তার পাশে পার্ক করা এবং প্রায় ছয়টা ক্রেট ট্রাকের পাশে রাস্তার প্রায় মাঝখানে ফেলে রাখা। ফলে গাড়িগুলো সেটাকে এড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় বিপরীত দিকের গাড়ির জন্যে বরাদ্দ লেনের জায়গা দখল করে আজাইরা ধরনের জ্যাম তৈরী করেছে। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেটা নিয়ে কারও কোন মাথাব্যাথা নাই। সাধারণত বাইকওয়ালারা একটু অধৈর্য্য প্রকৃতির হয়। কিন্তু জ্যামের মধ্যে থাকা বাইকারসহ সবাই দেখি খুবই ধৈর্য্য নিয়ে চুপচাপ বসে আছে! আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, পয়েন্টে থাকা কিছু পুলিশ ভাই, বিল্ডিং এর বারান্দায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে। খুব সম্ভবত ওনারা ট্রাফিকপুলিশ না হওয়ায়, এই ব্যাপারটাকে কোন গুরূত্বই দিচ্ছেনা।

আমি নওশাদকে বললাম,
- দেখসো, স্টুপিডের মতন রাস্তার উপর ফেলে রাখা ক্রেটগুলোর জন্যে জ্যাম!
- লাথথি মাইরা ফেলায় দেই ক্রেটগুলো?
অতীতেও বেশ কয়েকবার অনুরূপ পরিস্থিতিতে আমি নওশাদকে থামিয়েছি। কারণগুলোতো শুরুতেই বললাম। কিন্তু সেদিন এতো মেজাজ খারাপ লাগছিলো (রোজায় ধরেছিলো মনেহয়) যে, ওকে বললাম,
- তুমি না মারলে, আমি গিয়া লাথথি মেরে সব ক্রেটগুলা সরাবো।

আমি কথা শেষ করতে পারি নাই, দেখলাম নওশাদ রিকশা থেকে সাঁট করে নেমে গটগট করে রওনা দিলো ক্রেটের দিকে। হাতে আবার রসগোল্লার হাঁড়ি। ওর মোমেন্টাম দেখেতো ভাবছিলাম, এই দিলো বুঝি লাথি! কিন্তু না। আমাকে অবাক করে দিয়ে দেখি ও রীতিমতন ঝাড়ি দিয়ে মোবাইলে খোশগল্পরত পুলিশ ভাইকে ডাকছে।
- এই যে! আপনার ডিউটি না এখানে?
পুলিশ ভাইসাহেব কিছুটা থতমত খেয়ে উঠে দাঁড়ালো। তবে পুলিশ ভাই "জ্বী" বলে বারান্দা থেকে নেমে নওশাদের কাছে আসলো। একজন নাগরিকের অসুবিধায় পুলিশ হিসেবে এগিয়ে আসায় তাকে ধন্যবাদ। নওশাদ যখন রাস্তার উপর রাখা ক্রেটগুলো দেখায় ব্যাপারটা বুঝালো, তখন উনি এগিয়ে এসে দেখি বলছে, "এই মাল কার? সরান এখুনি এগুলো এইখান থেকে।" এই কথা তামাশা দেখতে থাকা কয়েকজন মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলো। কিন্তু তাদের মধ্যেই একজন মাথা নেড়ে বললো, "মাল আমাদের না।" এ কথা শুনে নওশাদ তার ধৈর্য্য হারালো। ও দেখি ফেলে রাখা ক্রেটগুলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর পুলিশ ভাইকে বলছে,
- লাথথি মাইরা এইগুলা ফালায় দেই, তাইলে যার মাল সে চইলা আসবে।

ওর মোশন দেখে সুরসুর করে একটা লোক বেরিয়ে এলো। এবং কি বিচিত্র এই দেশ! এতো দেখি সেই লোক, যে একটু আগে মালের মালিকানার কথা বেমালুম অস্বীকার করেছিলো! পুলিশ ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে দ্রুততার সাথে লোকটা ক্রেটগুলো রাস্তার উপর থেকে সরিয়ে ফেললো। দ্রুততার সাথে করার আরেকটা কারণ হতে পারে যে, যখন সে কাজগুলো করছিলো, তখন নওশাদও তাকে "স্টুপিড", "ননসেন্স" প্রভৃতি শব্দযুক্ত বাক্যবাণে যর্যোরিত করছে। এসময় আমার ভয় হচ্ছিলো যে, উত্তেজিত নওশাদ কখন না জানি, হাতে থাকা রসগোল্লার হাঁড়ি দিয়ে স্টুপিডগুলোর মাথায় বাড়ি মেরে বসে! ভাগ্য ভালো তেমন কিছু হয়নি। এ সময় দেখি কোথা থেকে ভোজবাজির মতন মিনিট্রাকের একজন ড্রাইভারও উদয় হলো। সে গাড়িটাকে রাস্তার পাশ থেকে আরও সরিয়ে প্রায় বিল্ডিং গায়ের সাথে লাগিয়ে পার্ক করলো। এই কাজগুলো হওয়ার প্রায় সাথে সাথেই জ্যাম ছুটে গেলো। আমি সিংঘাম-নওশাদকে নিয়ে রিক্সায় করে বাসার রাস্তা ধরলাম। রিক্সাওয়ালা দেখি হাসে আর বলে, "গলা বাইর না করলে কেউ কথা হুনেনা!"

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫

সুব্রত দত্ত বলেছেন: ভালো লাগল পোস্টটা। আমরা অধিকাংশই নওশাদ নই। এটাই সমস্যা।

০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:০৭

মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। কথা ঠিক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.