![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[ব্লগের প্রিয় রম্য লেখক পলাশ মাহমুদ ভাইকে(যার লেখার স্টাইল হুবহু হুমায়ুন আহমেদের মতন) পচিয়ে অনেকদিন আগে এ লেখাটা লিখেছিলাম]
জাহান্নামবাসীরা যখন ঈশ্বরের প্রেরিত নোটিসটা নোটিসবোর্ডে দেখলো সবার মধ্যে একটা উত্তেজনা কাজ করা শুরু করলো। নোটিসটি ছিলো এরকম,
"আমার অপ্রিয় জাহান্নামবাসীরা। আপনাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জান্নাতের কতিপয় সদস্য রুল ব্রেক করায় তাদের ডিমোশন হয়েছে। কাজেই জান্নাতে কিছু সিট খালি হয়েছে। সেইসব সিটে জাহান্নামবাসীদের থেকে কিছু সদস্য নেয়া হবে।যেহেতু আমি সমধিকারে বিশ্বাসী, সেহেতু এইসব সদস্য নেয়া হবে একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। খালি সিটের ডিমোশনকৃত সদস্যরা দুনিয়াতে যেভাবে বসবাস করতো, বিজয়ী প্রতিযোগীকে সেইসব সুবিধা দেয়া হবে। তবে তারা জান্নাতের রেগুলার সার্ভিসগুলো পাবেন না। তবে জাহান্নামের চেয়ে দুনিয়ার সেইসব সুবিধাগুলো নিশ্চয় অনেক বেশি আকর্ষনীয় হবে। অতএব দেরী না করে, প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণে রেজিস্ট্রেশন করুন।"
জাহান্নামের গরমে হাসফাস করতে করতে পলাশ মাহমুদ দৌড় দিলো নোটিসের সাথে ডিমোশনকৃত সদস্যদের তালিকা দেখতে। মনে মনে ভাবলো, 'আল্লাহ যেন বিলগেটস বা বার্লুসকোনি বা আজিজ মোহাম্মদ ভাই টাইপ কেউ থাকে লিস্টে'। লিস্ট দেখে পলাশ মাহমুদের খুশি আর ধরে না। উপরের কেউ লিস্টে এদের কেউ না থাকলেও আছে হুমায়ুন আহমেদ। সে নাকি নিজের জন্য অ্যাসাইন করা হুরপরী রেখে অন্য আরেকজনের হুরপরীর সাথে টাঙ্কিবাজি করতে গিয়ে কট খেয়েছে। 'যা খুশি হোক, কট খাইছে, ভালো হইছে। হুমায়ুন আহমেদের দুনিয়ার সুখ পামু, নুহাশ পল্লী পামু, দ্বীপের মইধ্যে বাড়ি পামু, ফ্যালেট পামু, নিজের হাটুর সমান বয়সী বউ পামু। হি হি হি। আর কি লাগে'? মনে মনে ভাবলো পলাশ।
পলাশ দেখলো এইসব সুবিধা পাওয়ার জন্য একটা রচনা প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। যার রচনা হুমায়ুন আহমেদের মতন হবে, সেই হবে বিজয়ী। এই প্রতিযোগীতা হবে দেখে পলাশ মাহমুদ কিছুক্ষণ আপনমনে হাসলো।মনে মনে ভাবলো, 'কেডা আবি আয়। আমি হাত চুলকাইলে যে লেখা বাইর হইবো, কোন হালা দশ কলম ভাইঙ্গাও হুমায়ুন টাইপের লেখার ধারে-কাছেও যাইবার পারবো না big_smile'
এরপর আর কি? পলাশ মাহমুদ প্রতিযোগীতায় ফার্স্ট হলো। কথিত আছে যে, সেই প্রতিযোগীতার স্বয়ং হুমায়ুন আহমেদেও অংশ নিয়েছিলো। কিন্তু সে তার নিজের মত লিখতে পারে নাই। কাজেই পলাশ মাহমুদ সবার সামনে হাসতে হাসতে, হাটুর সমান বয়সী কচিকাচা বউয়ের হাত ধরে নুহাশ পল্লীতে চলে গেলো।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার কয়েকদিন পরে ঈশ্বরের অফিসে পলাশ মাহমুদের আগমন। উদ্দেশ্য ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাত। কিন্ত বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ফেরেশতাটা কিছুতেই তাকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
- আরে, আমনে একটু বোঝার চেষ্টা করেন। আমার খুবই জরুরী দরকার ওনার সাথে।
- (পাথুরে মুখ করে) সরি স্যার। আপনি আগে অ্যাপোয়েনমেন্ট করে আসেন। উনি অ্যাপোয়েনমেন্ট ছাড়া কারো সাথে দেখা করেন না।
- (আগুন ঝরানো চোখে তাকিয়ে) গুল্লি মারি ব্যাটা তোর অ্যাপোয়েনমেন্টের। আখখিয়োসে মারা গুলির কথা বাদই দিলাম, আমার অবস্থা বন্দুক দিয়া করা গুলি খাওয়ার চাইতেও খারাপ। টেরাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড। একটু বোঝার চেষ্টা কর বাপজ!!
বাইরের চলমান বাগবিতন্ডা শুনে ঈশ্বর বেরিয়ে এলেন।
- কি হয়েছে ফেরেশতা। এত হট্টগোল কিসের?
- এই মানুষটা কোন অ্যাপোয়েনমেন্ট ছাড়াই ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছে। কোন কথাই বোঝার চেষ্টা করছেনা।
পিছন থেকে পলাশ চি চি করে বলে উঠলো,
- স্যার, আমি মাত্র দুই মিনিট নিবো স্যার। বেশিক্ষণ না। মাত্র দুই মিনিট। খুব জরুরী স্যার। (গলায় আর্তনাদ)
- আচ্ছা ঠিক আছে বতস। মাত্র দুই মিনিট কিন্তু। এর বেশি না। ফেরেশতা, ওকে ভিতরে আসতে দাও।
ভিতরে আসার পরে।
- কি সমস্যা তোমার পলাশ মাহমুদ? বলো।
- স্যার, সমস্যা একটা না,অনেকগুলো।
- তুমি না সেলিব্রেটিদের পৃথিবীর সুবিধা প্রতিযোগীতার বিজয়ী?
- জ্বী স্যার।
- তাহলে সমস্যাতো থাকার কথা না।
- না স্যার। সমস্যা আছে।
- তোমারতো বাড়ি আছে, গাড়ি আছে, নুহাশ পল্লী আছে, কচিকাচা বৌ আছে। সমস্যাটা কোথায়?
- এইটাইতো সমস্যা। নুহাশ পল্লী আছে, গাড়ি আছে। কিন্তু বর্ষাকালে নুহাশ পল্লীর রাস্তার অবস্থা স্যার কাদায় অতি জঘন্য হয়ে যায়।গাড়ির চাকা আটকায় যায়। তখন গাড়ি থেকে নেমে কাদার মধ্যে গাড়ি ঠেলতে হয়।
- সেইটা কি আমার দোষ। তুমিইতো হুমায়ুন আহমেদের মত জীবন চেয়েছিলে, তাই না? প্রতিযোগীতায়ও বিজয়ী হয়েছো। কাজেই তার যা দুনিয়ায় ছিলো, তাই তুমি এখন এখানে পাবে।
- জ্বী স্যার। আসলে আমি জানতাম না যে, হুমায়ুন সাহেবের কোন হেলিকপ্টার নাই। জানলে অন্যকোন সেলিব্রেটির জন্য ট্রাই মারতাম sad
- আচ্ছা। আর কোন সমস্যা?
- স্যার আসল সমস্যাতো বলাই হয় নাই। সমস্যা আছে আমার কচিকাচা বৌরে নিয়াও।
- ওরে নিয়ে আবার কি সমস্যা?
- সে এক বিরাট ইতিহাস স্যার।
- সংক্ষেপে বলো।
- তখন রাত ২.০০ টার মত বাজে। লেখালিখি শেষ করে খালি বিছানায় শুয়েছি।হঠাত আমার কচিকাচা বৌ ঘুম থেকে উঠে আমাকে বলে, 'দেখসো পলায়ুন,বাইরে কি সৌন্দর্য্য বৃষ্টি। চলো বাইরে যাই। আমি বৃষ্টির মধ্যে তোমার হাত ধরে, রুপভানে নাচে কোমর দুলাইয়া,গীতটা করবো আর সাথে সাথে নৃত্যও করবো '। বলেন দেখি স্যার কি যন্ত্রণা!
- নাচ পারে, গান পারে। কত গুণী নারী তোমার স্ত্রী। তোমারতো খুশি হওয়ার কথা। বাই দ্যা ওয়া, তোমার নামতো পলাশ? পলায়ুনটা কে?
- সেইটাতো আরেক যন্ত্রণা। কোন এক অজানা কারণে সে আমাকে পলায়ুন নামে ডাকে। আর, আমার কোন খুশি নাই স্যার। তার সাথে বৃষ্টির মধ্যে মাঝরাতে নাচ-গান করে একেবারে সেমি-নিউমোনিয়া হয়ে গিয়েছে স্যার। বিশ্বাস না করলে কপালে হাত দিয়ে দেখেন।(মাথাটা একটু সামনে এগিয়ে দেয়) গা এখনো একটু গরম। গলাতেও একটু ব্যথা ব্যথা ভাব।
- তা আমি এখন কি করবো?
- স্যার, আমি স্যার আমার পুরস্কারের ট্রফি চাই না। ফেরত দিতে চাই। তাছাড়া আপনার নামেও আমার একটা ছোট কপ্লেইন আছে। সাহস দিলে বলবো।
- বলো।
- আপনি স্যার বলছিলেন যে তাদের দুনিয়ার সুখটা আমরা পুরস্কার হিসেবে পাবো। কিন্তু এখন দেখি খালি পেইন আর পেইন!
- (স্মিত হেসে)ভুল বললে বতস। আমি বলেছিলাম, তাদের দুনিয়ার সুবিধা দেয়া হবে। সুখ বলি নাই। তুমি নোটিসটা আরেকবার ভালোমত পড়ে দেখো । আর অন্যের সুবিধা ব্যবহার করে সুখী হওয়া যায়না। নিজের সুখ নিজের স্বকীয়তা দিয়েই জয় করে নিতে হয়।
(সমাপ্ত)
১২ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৬
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আসলে আমি নিজেই ঢুকলাম একটু আগে। ফেসবুকের দৌরাত্বে ব্লগ আজ মৃতপ্রায়। পাঠককে দোষ দেই না।
২| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:০২
আলম দীপ্র বলেছেন:
বেশ লিখেছেন তো রম্য!
১২ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৬
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা
অন্যের সুবিধা ব্যবহার করে সুখী হওয়া যায়না। নিজের সুখ নিজের স্বকীয়তা দিয়েই জয় করে নিতে হয়।
খাঁটি কথা
++++
১২ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৭
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ হাসির জন্যে ।
৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫২
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন:
দারুণ লিখেছেন।
কাণ্ডজ্ঞানের উদয় হোক। +
১২ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৮
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। কিন্তু পলাশ ভাই আসলেই মানুষ ভালো।
৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৪
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন ভাই অন্যের সুখ দখল করে নিজে সুখী হওয়া যায় না।
১২ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৮
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪
বিপ্লব06 বলেছেন: সুখে থাকলে ভুতে কিলায় বইলা একটা কথা আছে না!!! সেইরাম হইছে!!!
১২ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৯
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:০৪
মাদিহা মৌ বলেছেন: হা হা হা! খুব মজা পেয়েছি।
১৪ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:১১
মিয়া মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১
মূল-উপদল বলেছেন: অসাম এক রম্য ফেদেছেন ভ্রাতা। হাসতেই আছি। তবে আফসোস এত সময় গেলো একটা কমেন্ট ও নাই!! বাঙালীর কি স্যাটায়ার জ্ঞ্যান কমে যাচ্ছে??