নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাবরী চুলের এক সাদামাটা ছেলে\nআমিকি লালন?\nএখনো কেবলই বুকে\nতোমায় করেছি পালন।

zazafee

যখন কিছু করার থাকেনা তখন আমি কিছু লিখতে চেষ্টা করি। আর যখন লিখতে ইচ্ছে করেনা তখন অন্যের লেখা মন দিয়ে পড়ি।

zazafee › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাজেট নিয়ে একটি গল্প

১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬

বাজেট নিয়ে একটি গল্প



সম্প্রতি ঘোষিত হলো বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট। বাজেট নিয়ে নানা মহলে রয়েছে নানা মত। কারো কাছে এটা ‘অশোভনীয় আশাবাদের বাজেট’ আবার কারো কাছে বাজেট পুরোপুরি ব্যর্থতার বাজেট।আসলে বাজেট যাই হোকনা কেন সেটা যদি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলেও এই বাজেটের টাকাতেই দেশের উন্নতি চোখে পড়ার মত অবস্থানে নিয়ে যাওয়া যায় বলে অনেকেই মনে করেন।কিন্ত যে পরিমান অর্থের বাজেট পেশ করা হয়েছে তার কতটা কাজে ব্যয় হবে আর কতটা পকেটে যাবে তার একটা গল্প আপনাদের শোনাবো বলেই সাহস নিয়ে লিখতে বসেছি। প্রাচীন কালে চীন দেশের রাজা একবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আসলেন। প্যারিস নগরী সেই বহুকাল আগে থেকেই মোটামুটি উন্নত। রাতে প্যারিসের চারপাশ হরেক রকম আলোতে আলোকিত হয়ে ওঠে। তো সেই সময় চীন দেশের রাজা প্যারিসের রাতের সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়ে গেলেন। মনে মনে ঠিক করলেন দেশে ফিরে তিনিও তার রাজধানী এভাবেই আলোঝলমলে করে গড়ে তুলবেন।চীনের রাজা দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীকে ডেকে আনলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে তার ইচ্ছার কথা জানালেন এবং বললেন রাজধানী আলোকিত করার জন্য দুই কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করা হলো। প্রধান মন্ত্রী রাজাকে আস্বস্থ করলেন যে রাজার ইচ্ছা পূরণ করা হবে। প্রধান মন্ত্রী এবার গেলেন অর্থ মন্ত্রীর কাছে। গিয়ে বললেন মহামান্য রাজা চেয়েছেন রাজধানী শহর আলোকিত করতে। এ জন্য তিনি এক কোটি ইউয়ান বরাদ্দ দিয়েছেন। আপনি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে আস্বস্থ করলেন যে তিনি এখনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন। প্রধান মন্ত্রী যেতে যেতে মনে মনে ভাবলেন কোন কাজ না করেই এক কোটি ইউয়ান হাতিয়ে নিলাম কাজটা মন্দনয়। প্রধান মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর অর্থমন্ত্রী গেলেন পরিকল্পনা মন্ত্রীর কাছে।গিয়ে জানালেন রাজা এই রাজধানী শহর আলোকিত দেখতে চান তাই এ জন্য তিনি পঞ্চাশ লাখ ইউয়ান বরাদ্দ দিয়েছেন। আপনি কাজ করার ব্যবস্থা নিন। পরিকল্পনা মন্ত্রি তাকে জানালেন অচিরেই কাজ শুরু হবে।প্রধান মন্ত্রীর মত অর্থ মন্ত্রীও ফিরে যেতে যেতে ভাবলেন কি সহজেই এক কোটি ইউয়ান থেকে পঞ্চাশ লাখ ইউয়ান হাতিয়ে নিলাম।পরিকল্পনা মন্ত্রী গেলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে। গিয়ে জানালেন মহামান্য রাজা রাজধানী আলোকিত করার জন্য পচিশ লাখ ইউয়ান বরাদ্দ করেছেন। আপনি ব্যবস্থা গ্রহন করুন। এই বলে তিনি ফিরে আসলেন।তার পকেটেও তখন পচিশ লাখ ইউয়ান।স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জেলা প্রশাসককে ডেকে জানিয়ে দিলেন মহামান্য রাজা এই রাজধানী শহর আলোকিত দেখতে চান তাই তিনি পনের লাখ ইউয়ান বরাদ্দ করেছেন। আপনি শহর আলোকিত করার ব্যবস্থা করুন।জেলা প্রশাসক তাকে আস্বস্থ করলেন তিনি অতি দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন। মন্ত্রী চলে যাবার পর জেলা প্রশাসক থানা নির্বাহী অফিসারকে ডেকে জানালেন মহামান্য রাজা এই শহর আলোকিত দেখতে চান । তাই তিনি পাচ হাজার ইউয়ান বরাদ্দ দিয়েছেন। আপনি ব্যবস্থা নিন। জেলা প্রশাসককে আস্বস্থ করে থানা নির্বাহী অফিসার চলে গেলেন ইউনিয়ন কাউন্সিলরের কাছে। গিয়ে জানালেন মহামান্য রাজা এই শহরকে আলোকিত দেখতে চান। তাই তিনি এক হাজার ইউয়ান বরাদ্দ দিয়েছেন। আপনি দ্রুত শহর আলোকিত করার ব্যবস্থা করুন।এই বলে তিনি ফিরে গেলেন। ইউনিয়ন কাউন্সিলর তার দায়িত্ব পালন করতে লেগে গেলেন। তিনি প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে জানালেন মহামান্য রাজা এই শহর আলোকিত দেখতে চান তাই আপনারা সবাই হরেক রকম লাইট কিনে আজই রাস্তার ধারে ধারে জ্বালিয়ে দিন। তার কথা মত সবাই নিজ নিজ পকেটেরে ইউয়ান খরচ করে লাইট কিনে জ্বালিয়ে দিলেন। সেই রাত থেকে সারা শহর হরেক রকম আলোয় আলোকিত হয়ে উঠলো।রাজা ভীষণ খুশি হলেন।তিনি প্রধান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিলেন সুন্দর ভাবে কাজ করার জন্য। প্রধান মন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে গিয়ে ধন্যবাদ দিলেন অর্থমন্ত্রী পরিকল্পনা মন্ত্রীকে গিয়ে ধন্যবাদ জানালেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানালেন এভাবে ইউনিয়ন কাউন্সিলর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানালেন। সেদিন থেকে শহর আলোকিত হলো আর রাজা মনের সুখে বাস করতে লাগলেন।’



**আমাদের সরকারও বাজেট ঘোষণা করেছে।সেই বাজেটের অর্থের পরিমাণও বিশাল বললে ভুল হবেনা। কিন্ত আমাদের কাছে সেই অর্থের কানা কড়িও পৌছাবেনা।শেষে চীন দেশের সেই শহর আলোকিত করার মতই আমাদের নিজেদের টাকায় শহর আলোকিত করতে হবে।

**যা বাজেট পেশ করা হয়েছে তাই বাস্তবায়ন করুন কোন রুপ অনিয়ম না করে দেখবেন এ দেশের একটা রাস্তা থাকবেনা যেখানে স্কেটিং করার মত হবেনা। এমন কোন গ্রাম থাকবেনা যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌছাবেনা।এমন কোন স্কুল কলেজ থাকবেনা যেটা এমপিও করতে আমাদের চিন্তা করতে হয়।

**আসুন আমরা যা বাজেট দিয়েছি সেটাই সুষ্ঠু ভাবে ব্যবহার করি। পদ্মা সেতুর মত আরো অনেক সেতু আমরা নিজেরাই করতে পারবো যদি বাজেটের প্রতিটা টাকা সঠিক ভাবে সঠিক খাতে ব্যয় করি। এটা কোন পাগলের উচ্চাভিলাষি স্বপ্ন নয় এটাই বাস্তবতা।





জাজাফী

এস এম হল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১১ জুন ২০১৩

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

ঢাকাবাসী বলেছেন: চীনের উদাহরণটা গ্রহনযোগ্য হল না কারন সেখানে এরকম চুরি হয়না। দুনিয়াতে একমাত্র বাংলাদেশেই এরকম চুরি সম্ভব। ভাল লিখেছেন।

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২০

zazafee বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। আসলে চীন নামটা প্রথমে মনে আসলো তাই লিখে ফেললাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.