![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমার হৃদয়ের করুণা পাবে কি অপদার্থ ভবঘুরে জঞ্জাল এ জীবন, একটাই বর চেয়েছিলাম আমি, আজীবন শুধু তোমায় ভালবেসে যাবার। অমৃত সুধা পান করবো বলে তীর্থর কাক হয়ে রইলাম বসে, সারাটি জীবন, ভীরু কাপুরুষ যা খুশী বল, একবার স্বীকারকর ভালবাস আমায়।।
অমুসলিম দেশে মুসলিম সন্তান প্রতিপালন : সমস্যা এবং কিছু সমাধান (পরিবর্ধন ও সংশোধন যোগ্য )
জা শ ফ , জেদ্দা , ১ ডিসেম্বর ২০১৬।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
আপনি যদি একটি অমুসলিম দেশে বাস করেন , আপনি হয়তো চাইবেন আপনার শিশু ইসলাম এর প্রতি অনুরক্ত হয়ে / ভালোবাসা নিয়ে, বেড়ে উঠুক। ইসলাম সম্পর্কে জানুক, ইসলাম কে নিজের জীবন কাঠামোর মধ্যে নিয়ে বেড়ে উঠুক । আপনি যখন আপনার শিশুকে ইসলামিক জীবন যাপন পদ্ধতি (নবী হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবন পদ্ধতি / সীরাত ) বলতে চেষ্টা করেন, শিক্ষা দিতে প্রয়াস করেন, তা হয়তো আপনার শিশু জন্য অনুধাবন করতে বেশ কষ্ট হয়। বেশির ভাগ সময় শিশু মনোযোগ দিতে চেষ্টা করে না। মূল কারণ হিসাবে অনৈসলামিক পরিবেশে বেড়ে উঠায় দায়ী। শিশুটি ঘরে এক রকম শিক্ষা পাচ্ছে আর স্কুল , খেলার মাথা, বিনোদন কেন্দ্র, বাজার (অন্যান্য....) জায়গায় দেখছে সম্পূর্ণ বিপরীত জিনিস। অন্য ভাবে বলা যায় , ইসলাম তাকে যে সব জিনিস না করতে বলছে - সে দেখছে তার বন্ধু বান্ধব অনায়াসে সে জিনিস করছে। ছেলে বন্ধু / মেয়ে বন্ধু সম্পর্ক , ছেলে মেয়ে মেলা মেশা , স্বল্প বসনা হয়ে না চলা ফেরা করা (পর্দা করা) , সূরা পান না করা , পার্টি উৎসব উল্লাস এ সময় নষ্ট না করা , আরো অনেক উদাহরণ আছে। এ দ্বিমুখী পরিবেশ শিশুদের মনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সে হারিয়ে ফেলে তার নিজস্ব স্বকীয়তা।কোন সংস্কৃতই নিয়ে থাকবে সেই দ্বৈরথ এ থাকে সব সময় । ঠিক এ সময় এ পিতা মাতার প্রয়োজন খুব বেশি। মারাত্মক বাস্তুময় জীবন পাশ্চাত্যে , কিন্তু আপনার শিশুকে সঠিক ভাবে বেড়ে উঠার জন্য আপনি কি যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন? এ প্রশ্ন পিতামাতা কে ।
বাবা মা একটি শিশুর জন্য প্রথম আদর্শ। উপনি একটু সময় নিয়ে চিন্তা করুন কি আদর্শিক মূল্যবোধ কাঠামো আপনি আপনার শিশুর সামনে রাখছেন।আপনি যদি শিশুর সামনে ধুম্পানকরেন - সে ভাববে ধুমপান ভালো জিনিস, আপনি যদি বিনোদন (টেলিভশন, সিনেমা, আনন্দ উল্লাস )নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন - শিশু ভাববে সেটা তার জন্য ঠিক। আপনি ভাবছেন বৃদ্ধ বয়সে আপনার সন্তান আপনাকে দেখভাল করবে - আপনি কি আপনার পিতামাতা কে সে রকম দেখভাল করছেন ? আপনার শিশু কি সেটা দেখছে? আপনার শিশু কি দেখছে উপনি নামাজ পড়ছেন ? আপনার শিশু কি দেখছে আপনি পর্দা করছেন ? আপনার শিশু কি দেখছে আপনি শালীন আচরণ করছেন ? আপনার শিশু কি দেখছে আপনি কুরআন পড়ছেন? আপনি কিছুই করছেন না, আর আপনি চাচ্ছেন আপনার শিশু দেবতুল্য, নিজে নিজে সব শিখে যাবে?
শিশু যখন ঘরের মধ্যে কোনো আদর্শ কে অনুসরণ করার জন্য পাবে না সে তাকাবে ঘরের বাইরে। একটি অমুসলিম দেশে ইসলামিক মূল্যবোধ বিনষ্ট হবার জন্য যথেষ্ট উপকরণ ঘরের বাইরে ছড়িয়ে রেখেছে। সুস্থ্য পরিবেশ এবং পিতা মাতার যথেষ্ট পরিচর্চার অভাব এ শিশুর আদর্শিক অবক্ষয় অমুসলিম দেশের মুসলিম ঘরে ঘরে বিরাজ করছে। পূর্ণ বয়োপ্রাপ্তির পর - মুসলিম মেয়ে কে পালিয়ে যেয়ে বিয়ে করতে দেখা যায় ইহুদি নাসারা হিন্দু ছেলেদের।সেরূপ মুসলিম ছেলেদের ও ইসলামের নিষেধ উপেক্ষা করে ইহুদি নাসারা হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করতে দেখা যায়। দেখা যায় মদ/মাদক এর পেয়ালা হাতে কোনো উল্লাসে মেতে থাকতে। বিবাহ বহির্ভুত নারী পুরুষ সম্পর্ক তৈরী করতে। কোনো ?? এ বেশির ভাগ অভিযোগ এর উত্তর কিন্তু হতভাগ্য মুসলিম / মুসলিমা (এরা হয়তো আর ইসলাম এর উপর থাকে না ) এর শিশুকাল এর ব্যার্থ পরিচর্চা কে এ নির্দেশ করে।
পিতা এবং মাতা (অভিবাবক) আপনি কি ক্ষণিক এর শারীরিক আনন্দর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে সন্তান জন্ম কে দেখছেন ? তাহলে অপদের জন্য উপরেল্লিখিত কথা গুলোর কোনো মানে রাখে না। কিন্তু যারা কুরআন এর এই আয়াত (বাক্য) মানেন (সব মুসলিম এ মানেন) - আমার স্ত্রী / স্ত্রীগণ এবং সন্তান সন্ততি এবং এদের থেকে প্রাপ্ত আনন্দ/শান্তি/ স্বয়ং আল্লাহ সুবহান ওয়া তায়ালার এ রহমত ও মেহেরবানী - "وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا "[ওয়াল্লাজীনা ইয়া কুলুনা - রাব্বানা হাবলানা মিন অজ্ব-ওয়া-জিনা, ওয়া যুররিয়াতিনা কুররাতা আইনুন, ওয়াজ আলনা লিল`মুত্তাকিনা ইমামা ](সূরা ২৫ (আল-ফুরকান : আয়াত ৭৪) {সার্বিক অর্থ : আর যে প্রার্থনা করে -: হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের এমন স্ত্রী (নেককার / পরহেজগার / প্রদানশীল/মোত্তাকী) এবং সন্তান সন্ততি (মোত্তাকী - আল্লাহর ভয়ে ভীত / আল্লাহ র বিধান অনুসারী/ আল্লাহ র একত্ববাদ এর অনুসারী ) দান করুন যারা হবে আমাদের জন্য রহমত ও শান্তি স্বরূপ এবং আমাদেরকে তাদের ইমাম (নেতা) বানিয়ে দিন । } আর আল্লাহ (সুবহান ওয়া তায়ালা ) সেই মুসলিম এর প্রাথনার জবাব দেন "أُوْلَئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوا وَيُلَقَّوْنَ فِيهَا تَحِيَّةً وَسَلَامًا " (সূরা : ২৫ ফুরকান , আয়াত ৭৫) {সার্বিক অর্থ : তাদেরকে (পার্থনাকারীকে) প্রতিদান দেয়া হবে জান্নাতের (বেহেস্ত) সুউচ্চ কক্ষ যেহেতু তারা ছিল ধৈর্যশীল (মোত্তাকী, মুমিন, মুসলিম, আল্লাহ র নির্দেশিত পথ এর অনুসারী) , তাদের সেখানে অবভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে}, সেই সব মুত্তাকী মুসলিমদের জন্য নিম্ন বর্ণিত কথা গুলো প্রযোজ্য।
কুরআন এর উপরিউল্লেখিত বাক্য গুলো (সূরা ফুরকান আয়াত ৭৪-৭৫) সঠিক ভাবে অনুধাবন করা গেলে ঠিক ই বুঝা যাবে যে ইসলাম চর্চা (প্রিয়তা/ ইসলাম এর প্রতি ভালোবাসা ) শুরু হবে ঘরের মধ্য থেকে। যে ঘরে এ পিতা-মাতা দু `জনকে ই হতে হবে একনিষ্ঠ আল্লাহ র আদেশ নিষেধ এর অনুসারী (মুত্তাকী) । নেককার সন্তান হলো আল্লার রহমত সেই মুত্তাকী বান্দার জন্য - যে কিনা তার সন্তান ও স্ত্রী / স্ত্রীগণের ইমাম বা নেতা , যে তাদের কে পরিচালিত করবে ইসলাম এর পথে। (এ দুয়া টি প্রত্যেক মুসলমান এর জন্য এ অপরিহার্য - প্রত্যেক মুসলমান কে আল্লাহ কবুল করে নিন)। শুধু নিজে নয় , নিজ সন্তান সন্ততিদের ও ইসলাম এর উপর কায়েম রাখা সফল মুসলিম পিতা-মাতার দায়িত্ব।জান্নাত প্রাপ্তি ই সর্বোচ্চ সফলতা যেখান এ মুসলিমরা আজীবন সুখে শান্তিতে বাস করবে। অন্য কোথায়, সন্তান কে ইসলাম এর উপর কায়েম রাখাও পিতা-মাতার জান্নাত প্রাপ্তির জন্য অপরিহার্য।
আবার ফিরে আসি পূর্বের আলোচনায় , অমুসলিম দেশে মুসলিম শিশুদের কিভাবে পরিচর্চা দরকার তাকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলার জন্য? একজন মুসলিম পিতা -মাতা হিসাবে আমরা আমাদের শিশুর জন্য যা চাইবো তা নিম্নলিখিত পয়েন্ট এ বিভক্ত করা যেতে পারে -
-১) আমরা চাইবো আমাদের সন্তান যেন আল্লাহর একত্ববাদ এর অনুসারী হয়ে বেড়ে উঠে। তাদের হৃদয়ে ইসলাম এর প্রতি ভালোবাসা নিয়ে বেড়ে উঠে।
-২) আমরা চাইবো আমাদের সন্তান যেন একটি ইসলামিক পরিবেশে বেড়ে উঠে। তাদের বন্ধু বান্ধব ও হয় মুসলিম।
-৩) আমরা চাইবো আমাদের সন্তান যেন কুরআন এর জ্ঞান নিয়ে বেড়ে উঠে , কুরআন কে বুঝতে শিখে , কুরআন কে জীবন চলার গাইড বানিয়ে চলে।
-৪) আমরা চাইবো আমাদের সন্তান যেন কোনো হীনমন্যতায় না ভুগে অন-ইসলামিক জীবন থেকে দূরে থেকে, ইসলাম এ সফলতার চাবি কাঠি জান্নাত এর চিরজীবন এর জন্য এটা যেন ওরা মনে প্রাণে গ্রহণ করে।
-৫) আমরা চাইবো আমাদের সন্তান যেন ইসলাম এর দায়ী হয়ে বেড়ে উঠে - তার আচার আচরণ ব্যবহার কথা বার্তা অমুসলিম শিশুদের কে ও ইসলাম এর প্রতি আকর্ষণ করে এবং বড়দেরকে ও।
আরো অনেক কিছু ই চাইবো - কিন্তু উপরোক্ত পাচটি পয়েন্ট ই পিতা-মাতার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব। আমরা জানি অমুসলিম দেশে (ইউরোপ আমেরিকা) রাত-দিন উদয়ন্ত পরিশ্রম করা হয় অর্থ উপার্জন এর জন্য - জীবিকার প্রয়োজন। জীবন এ হালাল অর্থের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অত্যধিক পরিশ্রম এ আমরা আমাদের ঘরে যে ইমামি দায়িত্ব আছে, ঘরে ইসলামী পরিবেশ কায়েম করা , পরিবার কে মসজিদ এ নিয়ে যাওয়া, ইসলামিক জলসায়/ আলোচনা তে নিয়ে যাওয়া, ইসলামিক সফলতার গল্প বা প্রবন্ধ পাঠের উৎসাহ দেন করা, সামর্থ থাকলে অবশই হজ - উমরা পালন এ নিয়ে যাওয়া , করা তা থেকে যেন দূরে সরে না যাই, জান্নাত থেকে যেন দূরে সরে না যাই । বিশেষ করে সন্তান এর যে প্রশ্ন আসবে মনে , তাদের অমুসলিম বন্ধুদের জীবন পদ্ধতি দেখে , তার সঠিক উত্তর দেবার চেষ্টা করা। ইসলাম কে তাদের উপর চাপিয়ে না দিয়ে তাদের ইসলাম কে বুঝতে সাহায্য করা। সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়তো সম্ভব নয় সবার পক্ষে। সঠিক উত্তর যে জানে তাদের কাছে জেনে সন্তান কে জানানো পিতা-মাতার কর্তব্য। যখন একটি শিশু দেখবে তার পিতা -মাতা তার প্রশ্ন গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে সে তখন জিনিস টি নিয়ে ভাববে। সে ইসলাম এর প্রতি আকৃষ্ট হবে। (ইনশাল্লাহ , আল্লাহুমা আমীন)।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২
শরীফ ফখরুজ্ জামান বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২৩
কালীদাস বলেছেন: স্যরি, একমত হতে পারলাম না। ধরেন আপনি বাসায় খাঁটি ইসলামি পরিবেশ বজায় রাখলেন। আপনার বাচ্চা যখন স্কুলে যাবে, সেখানে অমুসলিম বাচ্চাদের সাথে তার যখন রিলিজিয়াস কারণে এডজাস্ট হবে না তখন সেটা তার জন্য হীনমন্যতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেটাকে কিভাবে সামাল দেবেন?
আমার আশেপাশে বাংলাদেশি মুসলিম ফ্যামিলি সবসময় দেখি না। কিন্তু দেখলে বাচ্চাদের কিভাবে মানুষ করছে সে খবরটুকু নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সুন্দর খাপ খাইয়ে নিচ্ছে বাচ্চাগুলো। অন্য ভাষায় কথা বলা শিখছে স্কুলে যেয়ে, কম্যুনিটি মসজিদে বিকালে যেয়ে তালিমও নেয় সপ্তাহে দুইতিনদিন। বাসায় বাংলায় কথা বলে, বাইরে লোকাল ভাষায়। আপনার প্রেসক্রাইবড মেথড কড়াভাবে ফলো করে জুইশ কম্যুনিটির লোকজন। এটার ফলটাও খুব একটা ভাল না, পরিবারের আগলমুক্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত বাচ্চাগুলো আড়ষ্ট একটা পরিবেশে বড় হয় এবং সোশাইটতে খাপ খাওয়াতেও এদের সময় লাগে বেশি।