![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানবজাতির ওপর আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহের ফল্গুধারা ক্রমাগত বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হলো তিনি তাদের মাঝে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের আল্লাহ তায়ালার আয়াতগুলো পাঠ করে শোনান। তাদের পরিশুদ্ধ করেন। আল্লাহর কিতাব ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেন। আল্লাহর রাসূল (সা.) এ মহান দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করে গেছেন। তার পর উত্তরাধিকার সূত্রে রিসালাতের সঠিক আদর্শিক পদ্ধতি অনুসরণ করে উম্মতের হেদায়েত ও পথনির্দেশনার এ গুরুভার ওলামায়ে কেরামই বহন করে এসেছেন। তাই তারাই মুসলিম উম্মাহ ও গোটা মানবজাতির হেদায়েতের আলোকবর্তিকা। ঈমান-আকিদার অতন্দ্রপ্রহরী। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের এলম দান করা হয়েছে আল্লাহ তায়ালা তাদের মর্যাদা সমুন্নত করেন।' (সূরা মুজাদালা : ১১)।
ওলামায়ে দ্বীনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে শত প্রশংসা করলেও তাদের হক আদায় হবে না। নবী করিম (সা.) বলেছেন, 'মানবজাতিকে দ্বীন ও কল্যাণ শিক্ষাদানকারী আলেমের জন্য স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা, তাঁর ফেরেশতা, আসমান ও জমিনের অধিবাসী এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত মাগফেরাত কামনা করে।' (তিরমিজি)। রাসূল (সা.) আরও বলেন, 'ওলামায়ে কেরাম সেই নক্ষত্রের ন্যায় যার মাধ্যমে জলে-স্থলে ঘনীভূত অন্ধকারে পথ চেনা যায়।' জাতীয় জীবনে ওলামায়ে কেরামের দায়িত্ব অনেক বড়। তাদের প্রধান দায়িত্ব হলো রাসূলের ওপর অবতীর্ণ দ্বীনের সঠিক জ্ঞান প্রচার করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'যাদের আসমানি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের থেকে আল্লাহ তায়ালা এ মর্মে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন, তোমরা অবশ্যই তা সুস্পষ্ট করে প্রচার করবে। একে গোপন করবে না।' (সূরা আলে ইমরান : ১৭৮)।
শুধু দ্বীনের এলম প্রচারেই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। তাদের কর্মের পরিসর আরও বিস্তৃত। ইসলামের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি সমসাময়িক বিষয়াদির ক্ষেত্রেও তারা জাতিকে সব ধরনের ভ্রান্তি, পাপাচার, কুসংস্কার ও অন্যায়-অবিচার থেকে উদ্ধার করতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। ওলামায়ে কেরাম মধ্যপন্থা ও মিতাচারের প্রতীক। তারাই সঠিক মানদ-ের ভাষ্যকার। তারা যাবতীয় অমূলক মতাদর্শ ও বিকৃত মতবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। আকাশ-সংস্কৃতি, গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনৈক্য, প্রতিহিংসা, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, নৈরাজ্য, ইসলামবিরোধী অপতৎপরতা ও হীনমন্যতা যখন সমাজে ছড়িয়ে পড়ে যুবকশ্রেণীকে বিপথগামী করে তখন ওলামায়ে কেরামই এসবের মোকাবিলায় দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান। তাদের এলম ও দূরদর্শী দিকনির্দেশনার ফলেই ইসলামের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার সব অপকৌশল কোণঠাসা হয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী উন্মুক্ত মিডিয়ার এ যুগে অসুস্থ মূল্যবোধ ও বিধ্বংসী চিন্তাচেতনা প্রতিরোধ করতে ওলামায়ে কেরামকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাই মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং কলমসৈনিকদের সঙ্গে ওলামায়ে কেরামের সংযোগ সাধন জরুরি। কেননা ওলামায়ে কেরামের সঠিক পরামর্শ ছাড়া বিদ্যমান মূল্যবোধের সঙ্কট ও গোমরাহি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। এজন্য সর্বাগ্রে ওলামায়ে কেরামের নিজস্ব আকিদা ও বিশ্বাসকে সব ধরনের সন্দেহ ও সংশয় থেকে মুক্ত রাখতে হবে। মুসলিম উম্মাহর আত্মপরিচয়, ঐক্য ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার্থে এবং পরস্পর কাদা ছোড়াছুড়ি ও দোষারোপ বন্ধ করতে ওলামায়ে কেরামকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। যুব সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে তাদের মাঝে মধ্যমপন্থা চর্চা ও তুচ্ছ মতাদর্শিক বিরোধ থেকে সতর্ক করার মাধ্যমে তাদের উম্মাহর স্বার্থে সংগঠিত করতে হবে। পাশাপাশি তরুণদেরও ওলামায়ে কেরামের দিকনির্দেশনা অাঁকড়ে ধরে কোরআন-সুন্নাহর পথে আসতে হবে।
সুশীল সমাজ, লেখক, সাংবাদিকসহ সমাজের সব সচেতন ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে বলছি, আপনারা নির্ভরযোগ্য আমলদার আল্লাহওয়ালা ওলামায়ে কেরামের পথ অাঁকড়ে ধরুন। তাদের সমর্থন করুন। সঠিক চিন্তা, পথ ও মতাদর্শের অনুসন্ধানে তাদের সহযোগী হোন। মিথ্যা ও ভ্রান্ত মতাদর্শ প্রচারকারীদের দোসর হবেন না, বরং ইসলামী মূল্যবোধ প্রচারে ব্রতী হোন। ধর্মীয় এবং জাতীয় ঐক্য সংহত করুন। মিডিয়াকে অন্যায় দমন ও মানুষের নিরাপত্তা ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজে লাগান। অপপ্রচারকারীদের তৎপরতা ও অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
২২-০৫-১৪৩৬ হিজরি মসজিদুল হারামে প্রদত্ত জুমার খুতবার ভাষান্তর করেছেন মাহমুদুল হাসান জুনাইদ
- See more at: Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯
নিস্পাপ একজন বলেছেন: জাযাকাল্লাহু খাইরান, ভালো লিখেছেন।