নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জহুরুল অপূর্ব। ভেসে বেড়াই ফ্যান্টাসির জগতে। হাঁটতে ভালোবাসি, হোক তা পিচ ঢালা রাস্তা, সোঁদা গন্ধে ভরা মেঠো পথ, রেলপথ কিংবা ইট বিছানো খোয়া পথ। এই পথেরাই জানে আমার না বলা সব গল্পকথা। ঘুরে বেড়াবো এই পৃথিবীর পথে। তা ছাড়িয়েও অনেক দূর, বহুদূর।

জহুরুল অপূর্ব

ঘুরে বেড়াবো এই পৃথিবীর পথে। তা ছাড়িয়েও অনেক দূর, বহুদূরে!

জহুরুল অপূর্ব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংকট সমাধানে আমাদের করণীয়

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৩

সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন সংঘাতের মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু এবং দৃষ্টিগোচর হচ্ছে ধর্মীয় সংঘাত। উদ্ভট চিন্তা ভাবনা কাজে লাগিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করে একে অন্যের প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়ে চালানো হচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞ।
হিন্দুদের বাড়িঘর ভাংচুর। আগুন দেয়া, ধরে মারধর করা। সম্পত্তি দখল, উচ্ছেদ, তাদের নাম ভাঙিয়ে সুবিধা আদায়, রিউমার ছড়ানো থেকে শুরু করে এহেন জঘন্য কাজ নেই করা হচ্ছে না।

স্বাভাবিক ভাবেই মানবিক, নৈতিক এবং দায়িত্ববোধ থেকেই এসব সমস্যার সমাধান দরকার।
একজন মানুষ অপর মানুষের প্রতি সহযোগিতা ভাবাপন্ন হবে। এমনটাই হওয়ার কথা। হিংসাত্মক নয়।
মানুষের নীতি হওয়া উচিত একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল। ধর্মীয় দিক থেকে চিন্তা করলে এমন কাজ অন্যায়, অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া ব্যক্তিগত ভাবেও এমন কাজে সায় দেয়া উচিত নয়। এবং এই ব্যক্তিগত বোধ ধর্মীয় শিক্ষার কারণেই পাওয়া।
এছাড়া একজন মুসলিমের নিকট এ ধরণের কার্যক্রম কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্যতা রাখে না। ধর্মীয় বিধানে বিশ্বাসী এবং সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাসকারী মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব মানুষের প্রতি মানুষের সুসম্পর্ক সমুন্নত রাখা।

অথচ আমরা হুজুগে মাতি। বিচার বিবেচনা না করেই, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই মেতে উঠি হিংস্র উল্লাসে।
আর এতে লাভবান হয় এক সুবিধাবাদী শ্রেণী যারা সব সময় অন্যের মাথা কেটে নিজের ফায়দা লুটে।

তাঁরা একে অন্যকে দোষারোপ করে যান অথচ মূল সমস্যা সমাধানে কেউই উদ্যোগী হয় না।
সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের ভালো বানানোর চেষ্টা করে আর নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টাতেই সময় কাটে। একদল নিজেদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন মিথ তৈরি করে আর মানুষের মধ্যে রিউমার ছড়িয়ে দেয়। আর অন্যদল পাল্টা রিউমারে ব্যস্ত।
ফলস্বরূপ মানুষকে বিভ্রান্ত করে রাজনৈতিক ভাবে নিজেদের নিষ্পাপ বানানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই হয়না।
অন্যদিকে নিজেদের নিষ্পাপ প্রমাণ করতে বিপরীত মতের লোকদের (যা কমবেশি সব পক্ষই করে থাকে।) বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ছড়ায় এবং কল্পিত গালগল্পে মানুষদের ভুলিয়ে মূল সমস্যা চাপা দিয়ে বাস্তব অবস্থা থেকে দূরে সরে যায় যাতে করে ভবিষ্যতে সুযোগ বুঝে আবার চাপা আগুন উস্কে দিতে পারে।

আর এর ভুক্তভোগী সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষজন। সে যে ধর্মেরই হোক না কেন দিনশেষে তাকেই কপাল চাপড়ে হাহাকার করতে দেখা যায়।

তাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। কেউ না। অসহায়ের আর্তনাদ শোনার কেউ নেই।
রাজনীতিবিদরা তাদের ফায়দা নিতে ব্যস্ত। রাশভারি সেজে নিজেদের আত্মগরিমা প্রচারে সিদ্ধহস্ত।
কেউ সাম্যের নামে, অসাম্প্রদায়িকতার নামে, জাতীয়তাবাদের নামে, ধর্মের নামে নিজ নিজ আত্মগরিমায় ব্যস্ত অথচ মূল বিষয় থেকে আরও অনেক দূরে থেকে।
এসব নাম রক্ষা করতে গিয়েই তারা সংঘাতের পথ উন্মুক্ত করে দেয়। এবং দিনশেষে ভদ্রলোক সেজে জ্ঞান দানে পটু। আমরা এমন এমন করেছি, ওরা করেছে কি? এমনটাই তাদের ভাব ভঙ্গিমা।

এক সময় ছিল জ্ঞানীরা জ্ঞান চর্চা করতো। নৈতিকতা আর আদর্শের বাণী প্রচার করতো। নৈতিক ভাবে তাঁরা ছিলেন দৃড়চেতা। বিষের পেয়ালা, গিলোটিন, শূল, তরবারির কোপ কিংবা ফাঁসির কাষ্ঠ তাঁদেরকে সত্যের পথ থেকে টলাতে পারেনি।
এখনকার জ্ঞানীর যাঁরা আছেন তারা রাজনৈতিক লোকদের পদলেহনে ব্যস্ত। কর্তব্য বোধ সব নর্দমায় ফেলে তারা রাজনৈতিক শ্রেণীর সুদৃষ্টির আশায় তৃষ্ণার্ত কাকের ন্যায় অপেক্ষায় দিন গুনে।
তাঁদের নিকট প্রত্যাশাকে তাঁরা জলাঞ্জলি দিয়ে এক একজন সংসপ্তকের 'কানা কাটা রমজান'। চাটুজ্জ্যের এক জ্বালজ্বল্য দৃষ্টান্ত। শহীদুল্লা কায়সার সম্ভবত এদের কথাই বলে গেছেন।

মানিক বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, "ঈশ্বর থাকেন ঐ ভদ্রপল্লীতে।"
আমি বিশ্বাস করি সৃষ্টিকর্তা সবখানেই থাকেন। কিন্তু তাঁর নির্দেশনা আমরা মানি না। কেউ না।
আর আমরা বহুভাবে বিভক্ত হয়ে তাঁর বিধানের কথা ভুল প্রচার করে মানুষের বোধশক্তি নষ্ট করে দেই। সবশেষে ডান, বাম, সর্বদিকে কিংবা দুইদিকে সমান দাবিদার সকলেই কোন না কোন ভাবে ধর্মের ব্যবসায়ী।

আর এসবের মূল কারণ অজ্ঞতা। ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনে ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা। আর এই ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা কারণে আমরা মাতি বুনো উল্লাসে। ধ্বংসে!
ধর্মীয় জ্ঞানের সূচনা করা হয়েছিল 'ইকরা' (পড়া) দিয়ে। জ্ঞান অর্জন করা। পড়তে বলা হয়েছিল, জ্ঞান অর্জনের কথা বলা হয়েছিল। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে মানব কল্যাণে শান্তির মহান বার্তা প্রচার করা। শান্তির বিধান প্রতিষ্ঠা করা এমনটাই ধর্মের বিধান। কিন্তু দিনের পর দিন ধর্মের বিধান ভুলে আমরা চলছি উল্টো পথে।

এই সব সমস্যা সমাধানে করণীয় ঠিক করার আগে আমাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। ডালপাতা ছেঁটে কাজ নেই। তাতে শাখা প্রশাখা বরং আরও বৃদ্ধি পায়। সমূলে উত্‍পাটন ছাড়া কখনোই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

তবে সবার আগে আমাদের এক একজন মানুষ হয়ে উঠতে হবে। মানুষ হয়ে জন্মেও আমরা মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি।
সৃষ্টিজগতে "সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে কেউ নয়।" এই কথার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা কখনোই কোন সমস্যার সমাধানে যেতে পারবো না।

"আবার তোরা মানুষ হ্"

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২৪

মোঃ ইয়াসির ইরফান বলেছেন: স্বাগতম।
ভালো লিখেছেন।
সুন্দর হোক আগামীর পথচলা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.