![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বৃহস্পতিবার সন্ধার পর থেকে ঢাকার টিভি চ্যানেল, পত্রিকার অনেক সাংবাদিকের কাছে 'তথ্য' আসছে- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিনের 'সন্ধান' মিলেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় দুর্গম একটি চরে। সেখানে নাকি তাঁর মতো কাকে দেখা গেছে! এর মধ্যে ওই এলাকায় পুলিশ সদস্যরা গেছেন অভিযান চালাতে। সেখানে সালাহ উদ্দিনের খোঁজে অভিযানও চলছে!
মুঠোফোনে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিখোঁজ বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিনের 'সন্ধানে' পুলিশ ফুলছড়ি উপজেলায় দুর্গম চরে অভিযান চালাচ্ছেন। গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন দৈনিক মানবজমিনকে জানান, 'একটি গুঞ্জন শুনে তাঁরা সেখানে গেছেন। ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের খাটিয়ামারি চরে একটি লাশ পাওয়া গেছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর তারা সেখানে যান।'
জানি না, সংবাদটা স্রেফ গুজব, নাকি এর কোনো ভিত্তি আছে? জাতীয় পত্রিকার কোনো কোনো সাংবাদিক অপেক্ষা করছেন, পত্রিকার দ্বিতীয় সংস্করণে সালাহ উদ্দিনের 'খোঁজ' পাওয়ার প্রতিবেদন ছাপানোর! টিভি চ্যানেলগুলোও অপেক্ষা করছে এ বিষয়ে জাতিকে একটা সুসংবাদ দিতে। সম্ভব হবে তা? নাকি গুজবের বিভ্রান্তি কাটানোর জন্য অপেক্ষা করছি মাত্র?
সালাহ উদ্দিনের আগে ২০১২ সালে 'নিখোঁজ' হন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। আজও তাঁর খোঁজ মেলেনি। তিনি 'নিখোঁজ হওয়ার পর ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল দেশের প্রথম সারির জাতীয় একটি দৈনিক পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করে 'ইলিয়াসের সন্ধান মিলেছে: পূবাইলে র্যাবের অভিযান' শিরোনামে।
প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়- 'সন্ধান মিলেছে নিখোঁজ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর। গতকাল শনিবার রাতে র্যাব ও পুলিশ গাজীপুরের পূবাইলে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলেও ইলিয়াসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। ...সংশ্লিষ্ট একাধিক অসমর্থিত সূত্র এ তথ্যটি জানালেও কোনো নিরপেক্ষ সূত্র তা নিশ্চিত করতে পারেনি।' ইলিয়াস আলী আজ পর্যন্ত 'নিখোঁজ' থাকায় সময়ের ব্যবধানে প্রমাণিত হয়েছে ওই পত্রিকার প্রতিবেদনটি ডাহা মিথ্যে।
ইলিয়াস আলীকে নিয়ে ঢাকা থেকে প্রকাশিত তৃতীয় সারির একটা দৈনিক পত্রিকা তখন লেখে, কলকাতার কোন কারাগারে নাকি তাঁর 'সন্ধান' মিলেছে! এসব গাজাখুরি তথ্য কাউকে কাউকে হয়তো সাময়িক বিভ্রান্ত করেছে! তবে আজগুবি তথ্য কখনো বাস্তবতার পথ ধরে হাঁটতে পারে না। সালাহ উদ্দিনের 'খোঁজ' পাওয়ার সংবাদটাও কি ইলিয়াস আলীকে নিয়ে ওই দুটি পত্রিকার করা প্রতিবেদনের মতো?
গত ১০ মার্চ থেকে 'নিখোঁজ' সালাহ উদ্দিন। তাঁর 'নিখোঁজ' হওয়ার রহস্যের জট এখনো খোলেনি। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন- তাঁর বউ, ছেলে-মেয়েরাও জানেন না। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে সালাহ উদ্দিন নিয়মিতই দলের পক্ষে 'গোপন আস্তানা থেকে এলান' পাঠাতেন! তাঁর গায়েবি বিবৃতিতে থাকতো জামায়াত-বিএনপির কর্মসূচির ঘোষণা। তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিভিন্ন অভিযোগ আছে। সেজন্য তাঁকে আইনের মুখোমুখি করার সুযোগ আছে। তাই তাঁকে খুঁজে বের করার দায় রাষ্ট্রের। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীও কিছুতেই এ দায় এড়াতে পারে না।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টে বিএনপি-জামায়াতের মদদে আরেকটা ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড ঘটানোর ষড়যন্ত্রকে আমরা সভ্যতা বিরোধী বর্বরতা বলি। শাহ এম এস কিবরিয়া, আইভি রহমান, আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের বিএনপি-জামায়াতের মদদে প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ আমরা এখনো জানায়। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানায়। তবে ইলিয়াস আলী, সালাহ উদ্দিনের মতো রাজনীতিবিদের 'নিখোঁজ' হয়ে যাওয়াকেও সমর্থন করি না। এমনকি রাষ্ট্রের সামান্য এক নাগরিকের 'নিখোঁজ' হয়ে যাওয়াকেও না!
হা.শা.
দৈনিক যায়যায়দিন
ভালোবাসা সড়ক,
তেজগাঁও, ঢাকা।
©somewhere in net ltd.