![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রায়াত্ত বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি দিয়েছে। এক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা বা বয়সের নিয়মও মানা হয়নি।
এমনকি পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের নিজস্ব নিয়োগবিধিও লঙ্ঘন করেছে বলে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে ধরা পড়ে।
এ বিষয়ে বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকের কথা কানে না তোলায় অর্থ মন্ত্রণালকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রধান নির্বাহীর নিচের দুই স্তর ছাড়া ব্যাংকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়টি প্রধান নির্বাহীই দেখবেন। পরিচালনা পর্ষদ বা কোনো পরিচালক এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবেন না। কিন্তু বেসিক ব্যাংকের পর্ষদ অসিফ সহকারী পদে নিয়োগেও হাত দিচ্ছে।
ব্যাংকের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী মহাব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতি পেতে হলে উপমহাব্যবস্থাপক পদে কমপক্ষে ৩ বছর এবং কমপক্ষে ১৮ বছর ব্যাংকিংয়ের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক। এই নিয়ম লংঘন করে অন্তত পাঁচজনকে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়া হয়েছে বেসিক ব্যাংকে।
ব্যাংক খাতে অভিজ্ঞতা না থাকলেও রুহুল আলম নামে সোনাবাহিনীর এক সাবেক কর্মকর্তাকে সরাসরি উপ মহাব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ওই পদে চাকরি স্থায়ী হওয়ার আগেই মাত্র ৭ মাসের মাথায় ‘মহাব্যবস্থাপক’ পদে পদোন্নতি পান তিনি।
এর কারণ হিসাবে পরিচালনা পর্ষদ তাদের নথিতে ‘অতি চমৎকার কর্মনৈপুণ্যের জন্য পদোন্নতি দেওয়া হলো’ বলে উল্লেখ করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, উপ মহাব্যবস্থাপক পদে নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়স সীমা ৪৫ বছর হলেও তার চেয়ে বেশি বয়সে ওই পদে নিয়োগ পেয়েছেন দেবাশীষ কর্মকার নামের একজন।
একইভাবে অভিজ্ঞতা ও বয়সের বিধি লঙ্ঘন করে অবসরপ্রাপ্ত মেজর বি এম কামরুজ্জামান ও এম কামরান হামিদকে উপ মহাব্যবস্থাপক পদে এবং মো. নিজামউদ্দিনকে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ দিয়েছে বেসিক ব্যাংক।
এ ধরনের নিয়োগ ও পদোন্নতির কারণে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ‘ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে বেসিক ব্যাংকের মানব সম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক রওশনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা না করে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফখরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বে বিভিন্ন বিভাগের কমকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর বেসিক ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ‘রেকর্ড’ সংখ্যক জনবল নিয়োগ দিয়েছে।
২০০৯ সালে বিশেষায়িত এ ব্যাংকটির শাখার সংখ্যা ছিলো ৩৪টি। আর কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন ৭৫০ জন। চার বছরে শাখার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৪টি। আর জনবল প্রায় চারগুণ বেড়ে ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
এই চার বছরে ২ হাজার ৩০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়ার সময় অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ম-কানুন মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের ১২ শ’র বেশি শাখায় কর্মীসংখ্যা ২৪ হাজারের কিছু বেশি। অর্থাৎ প্রতি শাখায় গড়ে ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
একইভাবে জনতা, অগ্রণী, রুপালী, কৃষি ব্যাংকেও প্রতি শাখায় গড়ে ১৫ থেকে ২২ জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন।
অথচ বেসিক ব্যাংকের প্রতি শাখায় জনবল দাঁড়িয়েছে গড়ে প্রায় ৫০ জন। অনেক শাখা অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঠিকমতো বসারও জায়গা নেই। এক টেবিলে তিন-চার জন বসে কাজ করছেন।
একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেভাবে বেপরোয়া নিয়োগ দিচ্ছে, তাতে আমরা ভয়ে আছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪০০ কর্মচারীর নিয়োগ বাতিল হয়েছে। সরকার পরিবর্তন হলে বেসিক ব্যাংকেরও একই অবস্থা হতে পারে, কারণ অধিকাংশ নিয়োগই হয়েছে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন বা যোগ্যতা যাচাই ছাড়া।”
পদোন্নতির বেলায়ও নিয়মের তোয়াক্কা করেনি পরিচালনা পর্ষদ। একাধিক কর্মকর্তা মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে দুইবার পদোন্নতি পেয়েছেন। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করায় একাধিক কর্মকর্তা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, যদিও ব্যাংক কর্তপক্ষ একে বলছে ‘স্বেচ্ছা অবসর’।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু সেনা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা। স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের আমলে অবসরে গিয়ে তিনি জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যোগ দেন। সে সময় অল্প দিনের জন্য সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন তিনি। গাড়ির স্টিকার ও ভিজিটিং কার্ডে কৌশলে তিনি লেখেন ‘শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু সংসদ সদস্য (সাবেক ‘।
ইতোমধ্যে বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির
খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব অনিয়মে পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের সরাসরি হাত রয়েছে বলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে উঠে এসেছে।
১৯৮৯ সালে কার্যক্রম শুরু করা বেসিক ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২৯৪ কোটি ডলার। জুন শেষে ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৭০ কোটি টাকা।
তথ্য সূত্র: Click This Link
সারা বাংলাদেশ যখন পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য আন্দোলনরত বাংলাদেশ ব্যাংকে তখন পোষ্য নিয়োগে অবর্নণীয় দুর্নীতির মাধ্যমে বিশাল অংকের নিয়োগ দেযা হলো ।
Click This Link
©somewhere in net ltd.