![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জঙ্গীবাদের বিশ্বায়ণ ও বাংলাদেশে এর অবস্থান-১
গত পরশু চ্যানেল আইয়ের ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্হাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে নিজ বাসায় দুবৃত্তরা জবাই করে হত্যা করেছে নিজ বাসায়। তিনি প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন । অনেকের মত আমারও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় ইসলামী অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকী সত্যিকারে আর নেই এবং তিনি একজন ধার্মিক ইসলামী চিন্তাবিদ হয়েও স্বাভাবিক মৃত্যর স্বাদ গ্রহন করে যেতে পারলেন না।
বছর খানেক আগে ২০১৩ এর রমযানে গোপীবাগে একই কায়দায় মুরীদ সহ ৬ জনকে জবাই করে হত্যা করা। পত্রিকা সূত্রে জেনে ছিলাম ঐ পীর সাহেব একসময় নিজেকে ঈমাম মেহেদী হিসাবে দাবী করেছিল এবং তিনি ও তার ভক্তদের নামায় সহ ইসলাম ধর্মীয় রীতি নীতি নিজের মতো করে পালন করতেন, যা অন্যান্যদের নিকট হারাম বা বাতিল বলে বিবেচিত ছিলো এবং একারনেই মুরীদ সমতে খুন হয়েছিলো।
ইসলাম ধর্মে কি আছে কি নেই, এতর্কে যাওয়া একজন অমুসলিমের কাছে বাচালতা মাত্র। তবে এটুকু বুঝতে অক্ষম নই যে, এক বছর আগে গোপীবাগের হত্যাকান্ডের ধরন আর গত বুধবার ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্হাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীর হত্যাকান্ড একই সূত্রে গাঁথা। অর্থ্যাৎ গোপীবাগের পীরের হত্যাকান্ড ঘটেছে তার নিজস্ব ধর্মাচার যাদের নিকট গৃহীত হয়নি তাদের দ্বারা এবং মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী একজন প্রথিতযশা এবং অত্যন্ত পরিচিত মুখ হয়েও ইসলাম ধর্ম বিষয়ে তার চিন্তা ও দর্শন অন্যদেরকে আহত করেছে বলেই এমন ঘটতে পারে বলে সংবাদ মাধ্যমে নানা জনের আলোচনা থেকে জানা যায়।
আন্তর্জাতিক মিড়িয়া কিংবা আমাদের দেশীয় মিড়িয়া মোটামুটি প্রতিদিনই আমার জঙ্গীবাদের খরব থাকে। ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান সহ প্রায় ১০০ ভাগ মুসলিম দেশে শিয়া-সুন্নি-কুর্দি সহ নানা সমস্যা লেগেই আছে। এককথায় বলা যায় সারাবিশ্বে এখন এক ভয়ংকর জ্বরে কাঁপছে, আর সেটি হলো ধর্মের নামে জঙ্গীবাদ। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আফগানিস্তান, পাকিস্তান কোথায় কোথায় নেই এর ভযংকর খাবা। খোদ ব্রিটেন সহ ইউরোপিয় দেশগুলো, বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা এভয়ে কাঁপছে। কেননা ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় কিছু দেশ, ও আমেরিকা থেকেও তাদের যুবকরা ধর্মী জঙ্গীবাদের অংশ গ্রহনের উদেশ্যে নিজদেশের আয়েশী জীবন ও প্রাচুষ্য ফেলে রেখে কিসের নেশায় মত্ত হয়ে সিরিয়া ও ইরাকে পাড়ি জমিয়েছে? এবং কিশের নেশায় এরা তাদের স্বদেশী সাংবাদিক, কিংবা যো্দ্ধার গলা কেটে হত্যা করছে? এর সঠিক কারণ সম্ভবতঃ ঐসব উন্নত বিশ্বের সমাজ বিজ্ঞানীদের কাছেও নেই। একারণেই চায়না সহ কিছু অমুসলিম অধ্যুষিত তাদের দেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঠেকাতে আগাম কিছু পরিকল্পনাসহ প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করে রেখেছে। এঙ্গোলা, চায়না একটি বিশেষ ধর্মে সার্বিক কার্যক্রম ইতিমধ্যে আইন করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আমাদের দেশে যারা মনে করেন ইসলাম ধর্মীয় উগ্র ধারনার জঙ্গীবাদের বিশ্বায়নে সুফীবাদের দেশ বাংলাদেশে এর অস্থিত্ব নেই কিংবা পিছিয়ে - এমন ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। যদি পিছিয়েই থাকবে তবে মাঝে মাঝে ইরাক ও সিয়িরায় সুন্নী জঙ্গীদের আদলে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে জবাই করে হত্যার নিউজ দেখতে হবে কেন? যদি পিছয়ে থাকে তাহলে আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে অমুসলিমদের বাড়ী স্থাপনায় হামলা, বসত বাড়ী থেকে উচ্ছেদ, অগ্নি সংযোগের সংবাদ পেতে হয় কেন?
জঙ্গীবাদ বলতে যা বুঝায় তাহলো অন্যমতাদর্শকে সমূলে নিমূল করা এবং নিজের মতো করে মতাদর্শ বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টাকে বুঝায়। বিষয়টা ব্যক্তি হিসাবে আমি একা নই, দেশের সমাজ বিজ্ঞানী ও মনস্তত্বত্ববিদরা একবাক্যে শ্বীকার করবেন যে বাংলাদেশ শুধু জঙ্গীবাদের ঝুঁকিতে নেই, বরঞ্চ এখানে ধর্মের নামে জঙ্গীবাদ চলছে সম্পূর্ণ নতুন মডেলে নতুন মোড়কে। এরফলে দেশের এমন কোন দিন নেই যেদিন খবর পাওয়া যাবে না দেশের কোন না কোন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তথা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপর ফৌজদারী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে না এবং এসব গুলি সবই ঘটছে উগ্রধর্মীয় মতবাদের কারণে। যদিও প্রতিদিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এসব ঘটনাকে দেশের রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ ধর্মীয় জঙ্গীবান না বলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক ঘটনা বলে উঠিয়ে দেয় মাত্র। চলবে.....চিত্রগুপ্ত, ২৯.৮.১৪ইং
জঙ্গীবাদের বিশ্বায়ণ ও বাংলাদেশে এর অবস্থান-২
অনলাইন নিউজসূত্রে জানতে পারলাম কিছুদিন আগে রাজধানীর রেডিসন হোটেলের লহরী হলে বাংলাদেশ সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত ‘জঙ্গিবাদের হুমকি: বাংলাদেশের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা উঠে এসেছে বাংলাদেশ হরকাতুল জিহাদ, হিজবুত তাহরীর, জামাতুল মুজাহিদিনসহ বাংলাদেশে মোট ৪০টির মত জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। জঙ্গিবাদের কারণে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ২২ হাজার ৭শ’ জনের মৃত্যু হয়েছে, হিন্দুদের ৩০০টি মন্দির ৫০০টি বাড়ি এবং ২০০ দোকান ভাংচুর করেছে তারা। সভায় আলোচকরা বলেছেন - জঙ্গিবাদ দেশের মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে। জঙ্গিবাদ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তথাকথিত জিহাদ ও খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ধর্মের নামে ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানের মতো ইসলামী দেশগুলোতে জঙ্গিবাদ চলছে। জঙ্গীবাদ র্শীর্ষক এ আলোচনার সূত্র ধরে যে কেহ হয়তো বলবেন বাংলাদেশ বাংলাদেশই, এটা কখনোই, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক কিংবা সিরিয়ার মতো হ না কিংবা হতে যাবে কেন? কথাটা সত্যি এজন্য যে ঐ সব দেশের জঙ্গীবাদের রুপ আর বাংলাদেশের জঙ্গীবাদের রুপ সম্পূর্ণ আলাদা। তবে এক না হলে সকল ক্ষেত্রের জঙ্গীবাদের উৎস, যোগসূত্র এরং এর পরিনাম কিন্তু একই।
২০১২ সালের ২৮শে ফ্রেরুয়ারী মাওলানার সাঈদী রায় ঘোষিত হবার পরবর্তী যে তান্ডব হয়েছে, কিংবা ফেবুতে ইসলাম ধর্ম অবমানার অযুহাতে রামু সহ সমগ্র দক্ষিন চট্রগ্রামে সর্বস্তরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে তান্ডব হয়েছে, কিংবা গেলো জানুয়ারীতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোরের মালোপাড়া, রংপুর দিনাজপুরে যা হয়েছে- এসব ঘটনা গুলিকে আমাদের দেশের সবকটি রাজনৈতিক দল, সরকার, ও মডারেট সুশীল সমাজ তাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে ধর্মীয় জঙ্গীবাদের অংশ হিসাবে ঘটনা গুলি বিবেচনায় না এনে বরং কখনো দেখেছে রাজনৈতিক ঘটনার ঘাত প্রতিঘাত হিসাবে, আবার কখনো বা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের বিপরীতে মৃদু প্রতিক্রিয়া হিসাবে।
২০১৩ সালের মে মাসে হঠাৎ করে আত্মপ্রকাশ করে হেফাজত ই ইসলাম নামে অরাজনৈতেক ধর্মীয় সংঘটন। ঘটনা প্রবাহে যতটুকু অনুধাবন করা গেছে, প্রথমে সরকার সংগঠিত এশক্তিকে নিজেদের আওতায় এনে বিরোধী জোটের একই ধাচের শক্তির বিপক্ষে কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছে। একই দৌড়ে জাতীয়পাটির এরশাদ ও তার দল রাস্তা রাস্তা হেফাজতকে পানি খাইয়ে দোয়া চেয়েছে। অন্যদিকে বিরোধী দলীয় জোটের নেতারা রীতিমত হেফাজতের মঞ্চে উঠে বসেছে। সরকার ততক্ষণ হেফাজত ধর্মীয় উগ্র জঙ্গীবাদী শক্তি মনে করেনি, যতক্ষণ চেষ্টা করেছে তাদের ঐশক্তিকে নিজেদের অনুকুলে ব্যবহারের সুযোগ আছে। আমরা ধরে নিতে পারি সরকারের যখনি মনে হয়েছে বিরোধী জোট রীতিমতো হেফাজতের মঞ্চ দখল দিচ্ছে এবং করেছে এবং হেফাজত তার আসল চেহারা রীতিমত তালিবানী তান্ডবে সব কিছু লন্ড ভন্ড করে দিচেছ এবং সরকারের জন্য হুমকীর কারন হয়েছে তখনই হেফাজতকে সেটি জঙ্গীবাদী শক্তি মনে করে টিউমার অপারেশনের মতো করে ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।
আসলে বাংলাদেশের ধর্মীয় জঙ্গীবাদ আন্তর্জাতিক জঙ্গীবাদের অংশ যেমন ঠিক, তেমনি এটির লালিত পালিত হচ্ছে দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির উপর। আর বাংলাদেশে ধর্মীয় জঙ্গীবাদের সুতিকার প্রতিস্ঠান গুলি্ই হলো বহু মাধ্যম ব্যবস্থায় (১) ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, (২) ধর্মীয় উপাসনালয়, (৩) এনজিও, ও পরিশেষে (৪) রাজনৈতিক দল গুলির মৌনতা এবং সহযোগীত। সংক্ষেপে এর ব্যাখা পরে দেয়া হবো। চলবে....চিত্রগুপ্ত, ৩০/০৮/২০১৪
এটি আমার লেখা নয় অর্থাৎ এই লেখাটি অন্যস্থান থেকে সংগ্রহ করে এখানে দিলাম । যিনি লিখেছেন তাহান নাম চিত্রগুপ্ত । লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ । মন্তব্য করলে বেশি খুশি হবো ।
©somewhere in net ltd.