![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্লগে ফিরে আসা হবে চিন্তাতেই ছিল না। নতুন ব্লগের জন্য প্রচুর পড়তে হবে।
ভর দুপুরে পুকুর দাবড়িয়ে বাড়ি ফেরা ছেলেটি এখন শান্ত, পেটে প্রচণ্ড ক্ষুধা। সেই সকালে কিছু মুড়ি হাঁতে বেড়িয়েছিল, ফিরল গোসল শেষে। বাসায় কেউ নেই, ‘মা’ হিন সংসারে যে কি জ্বালা তা ক্ষুধা লাগলে বড় বেশী টের পাওয়া যায়।
বাবাকেও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না, হয়তো কাজে বাইরে গেছে। আগে বছর জুড়ে কাজ থাকত, বাবাও হাঁসি মুখে থাকতেন। এখন চাষাবাদ সবাই কমিয়ে করছে, কাজের বড় অভাব। তাঁর উপর নিজের জমিজমা বলতে কিছুই বাকী নেই, মায়ের অসুখের সময় সব বেঁচে দিয়েছে, এখন সম্পদ বলতেই ভাঙ্গা এই ভিটে বাড়ি আর মায়ের সবুজ কবর।
মা মারা যাবার বছর দেড়েক পার হয়েছে, সবাই বাবাকে বিয়ের কথা বলে। নতুন একটি বিয়ে করে সংসারী হতে বলে সবাই, তবে বাবা কেমন জানি বদলে গেছেন। আগের হাসিমাখা মুখটি আর দেখি না। সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বেরিয়ে যান, কাজ পেলে সূর্য ডোবার পরেই ফিরেন না হলে দুপুরে। মা কে বড় ভালবাসতেন অথবা অভাবে যেই কারনেই হোক গত দেড়টা বছর তিনি ছন্নছাড়াভাবেই চলছেন।
জানিনা আজ কখন ফিরবেন, বাসায় খাবার বলতে মাটির পাতিলে ভাত আছে। চুলাঘরটা বড় বেমানান দেখাচ্ছে, মা মারা যাবার পড় যত্ন নেবার যে কেউ নেই। প্রচণ্ড ক্ষুধায় দুইটা টমেটো পুড়ে চটকিয়ে নিলাম। অনেকের কাছেই হয়তো অখাদ্য কিন্তু আমার কাছে এটাই স্বর্গীয় খাদ্য। বরাবরই যে এমন হয় তা না, কাজ পেলে বাবা রাতে বাজার নিয়েই ফিরেন, সকালে রান্না করেই কিছু পেটে দিয়ে চলে যান। আমার জন্য সবকিছু গুছিয়ে রাখেন, কিন্তু গত তিনদিন ধরে কোন কাজ নেই তাই সব কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে।
বাবা ফিরবেন কিনা জানিনা, তাই একই থালায় কিছু ভাত নিয়ে খেতে বসলাম। কিছু ভাত বলতে সব, কারন পেট অভাব বুঝে না বুঝে ক্ষুধার জ্বালা। ভাত কিছু বেশী হয়ে গেছে, ঠিক বেশী না টমেটো চতকানোর সময় ঝালটা বেশী হয়ে গেছে। সবই পাল্টে গেছে কিন্তু পোড়া মরিচের তেজ আজও কমেনি।
এমন সময় বাবা চলে আসলেন, হাঁতে কিছুই নেই এমনকি খবার নিয়ে যাবার বাটিও না। মনে হয় খাবার নিয়ে যান নি, আর দুপুরে ফেরা মানে আজও কাজ পান নি। মুখখানা কেমন জানি শুকিয়ে গেছে, কপাল থেকে ঘাম ঝরছে। আমি ভাত রেখেই পানি আনতে গেলাম। আগে দেখতাম বাবা ফিরলেই মা পিতলের বদনাতে করে পানি দিত, বাবা তা দিয়ে মুখ ধুয়ে পানি খেত। পানি নিয়ে ফিরে দেখি বাবা আমার মাখা ভাতগুলো খেতে বসেছে। আমায় আসতে দেখে কেমন জানি লজ্জা পেল, আমি পানি রেখে হাড়ি দিকে গেলাম। বাবা ডেকে বলল, ভাত তো সব নিয়ে নিয়েছি। আমি বাবার পাশে এসে বসলাম, বাবা আমার মুখে ভাত তুলে দিল। আগেই ঝালের কারনে পানি খেয়ে পেটে ভরে গেছে কিন্ত না খেলে বাবা কষ্ট পাবে তাই খেলাম। মা কে কতো দেখেছি বাবার পাশে বসে পাখা বাতাস করতে, পানি ঢেলে দিতে। মায়ের সেই পাখাটাও নষ্ট হয়ে গেছে, আগে বাবা হাট থেকে পাখা আনত আর মা সেই পাখায় তাঁর শাড়ির আচল লাগিয়ে যে কি সুন্দর করে সেলাই করত!
বাবা আমার বানানো টমেটো চটকা দিয়ে ভাত খাচ্ছে আর আমি পাশে বসে দেখে চলেছি। আমাদের দুজনের চোখের কোণে জল। এটা কষ্টের নয় ভালোবাসার কারন আমরা কষ্ট জয় করেই বেঁচে আছি।
*মন্তব্য পড়ে মনে হয়েছে অনেকে বাবা/মা কে মৃত ভেবেছেন। বাস্তবে তারা বেঁচে আছেন এবং ভালো আছেন (যদিও মা ২০০১ সাল থেকেই অসুস্থ)। তাই লেখাটি যদি কাউকে মনকষ্টে ভোগায় তবে ক্ষমা করবেন।
আজ স্বপ্নে বাবাকে আমার টমেটো চটকা দিয়ে ভাত খেতে দেখেছি, সেটা আমার মাখানো ভাত। পরে স্বপ্ন ও কিছু বাস্তবতাকে নিয়ে সাজিয়ে লিখেছি গল্পটি।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৯
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ। বাবাকে মনে করে লেখা, তবে কাহিনিটা বাস্তবতাকে মেনে।
গল্পের চেয়ে ভর্তাটাতেই ভালোলাগা বেশী! আসুন একদিন দাওয়াত রইল, ভাত ও ভর্তার।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৫৫
মানবী বলেছেন: পিতা পুত্রের কষ্ট আর ভালোবাসার অশ্রু মনে ছুঁয়ে গেলো।
সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
টমেটো ভর্তার ছবিটা চমৎকার! :-)
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১০
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।
গল্পের চেয়ে ভর্তাটাতেই ভালোলাগা বেশী! আসুন একদিন দাওয়াত রইল, ভাত ও ভর্তার।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২১
অগ্নি সারথি বলেছেন: ‘মা’ হিন সংসারে যে কি জ্বালা তা ক্ষুধা লাগলে বড় বেশী টের পাওয়া যায়। । লেখাটা হৃদয় ছুয়ে গেল ভাই। শুভ কামনা।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭
আব্দুল্যাহ বলেছেন: হুম, ধন্যবাদ।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২২
মানবী বলেছেন: দাওয়াতের জন্য ধন্যবাদ :-)
তবে অবশ্যই মন ছুঁয়ে যাওয়ার গুরুত্ব যদি চমৎকৃত হবার চেয়ে বেশি হয় তাহলে গল্পের ভালোলাগা নিঃসন্দেহে ভর্তার ছবি ভালোলাগার চেয়ে বেশি।
আপনার বাবা ও মায়ের জন্য দোয়া রইলো, তাঁরা যেখানেই আছেন যেনো ভালো থাকেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪০
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমার বাবা-মা দুইজনই ভালো আছেন, বেঁচে আছেন।
বিষয়টি হয়তো ভূল বুঝে থাকতে পারেন তাই বললাম এবং লেখার শেষে যোগ করে দিলাম।
৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৬
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: কষ্টকে জয় করে বেঁচে থাকার মধ্যেই আনন্দ আছে। মন ছুঁয়ে যাওয়া একটি লেখা। ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন নিরন্তর।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭
আব্দুল্যাহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
লেখার শেষে কিছু সংযোজন করা হয়েছে।
৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমাদেরে শেকড়ের গল্প গুলো এমনই কষ্টের ছোঁয়াছুয়ি মাখা!
প্রেম আন্তরিকতা আর ভালবাসায় ভরপুর....
+++
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৮
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। বাস্তবতা আসলেই এমন নিঠুর ও মধুর।
লেখার শেষে কিছু সংযোজন করা হয়েছে।
৭| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭
হামিদ আহসান বলেছেন: হৃদয় ছুঁয়ে গেল লেখাটা .।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৮
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০০
গেম চেঞ্জার বলেছেন: শেকড় থেকে উঠে আসা গল্প! অনেকদিন পর প্রাকৃতিক নিঁখাদ একটা অনুভূতি অর্জন করার অভিজ্ঞতা হলো। অসাধারণ ভাই। ৫+
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৪
আব্দুল্যাহ বলেছেন: লেখাটি আসলেই আমায় নতুন করে লেখার প্রেরনা যোগাবে। ধন্যবাদ
৯| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৯
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: টমেটোর ভর্তা খুব মজা লাগে খেতে। মানে টমেটো পুরিয়ে বা সেদ্ধ করে। পোস্টের ছবিটা খুব লোভনীয়।
গল্পের ছেলেটির বাবার পাশে বসে খাওয়াটা বা বাবার মুখে খাবার তুলে দেয়ার দৃশ্য টা খুব মধুর।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি কল্পনার জন্য।
১০| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
শুভ কামনা রইল ভাই।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
১১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
এস কাজী বলেছেন: সুন্দর হয়ছে।
লেখা টা নিয়ে কিছু বলব না। অনেকে বলছে দেখছি। কিন্তু আমি বলব শুধু ভর্তা টা নিয়ে আপনি এটাকে অখাদ্য বলেছেন
অথচ এই ভর্তা আমাকে দিলে এক নিমেষে ৩ প্লেট শেষ করতে পারব এই ভর্তা দিয়া। আর যেই পিক দিলেন ভাই, মুখে এমনিতেই লালা চলে আসছে।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১২
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ঠিক তা না, বলেছিলাম 'প্রচণ্ড ক্ষুধায় দুইটা টমেটো পুড়ে চটকিয়ে নিলাম। অনেকের কাছেই হয়তো অখাদ্য কিন্তু আমার কাছে এটাই স্বর্গীয় খাদ্য।'
সে অন্যের মাঝে আমায় ফেলে দিলেন।
১২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬
শামছুল ইসলাম বলেছেন: এক নিঃশ্বাসে গল্পটা শেষ করলাম।
এবং বেদনায় ব্যথাতুর হলাম।
ভাল থাকুন। সবসময়।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
১৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: টমেটো ভর্তা, আমি ভীষণ পছন্দ করি
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪
আব্দুল্যাহ বলেছেন: আমিও পছন্দ করি, ধন্যবাদ
১৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৬
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার এবং সাবলীল গল্পে ভালো লাগা রইলো।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪২
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ৬ম লাইকটা যখন আপনার তখন বিনা চিন্তায় আপনারই মন্তব্য আশা করেছিলাম।
আপনাদের মতামতই তো নতুন করে ভাবতে শেখায়।
১৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৮
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: টমেটো ভর্তার ছবি দেখে খেতে ইচ্ছে করছে।
গল্পটা মন ছুঁয়ে গেল।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫
আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪২
ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: এসব কার জীবনী?ভর্তাটা অসাধারণ লাগছে।