নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাঠমোল্লাতন্ত্রের সঙ্গে আমার জীবনে চর্চিত ইসলামের তফাৎ যেখানেঃ প্রসঙ্গ, ইসলামে নারী

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬



১।
যে যেখানে বসে এই লেখাটি পড়ছেন, খানিক সময়ের জন্যে ভাবুন যে আপনি সোফা বা চেয়ারে নন, বসে আছেন চট বা সাধারণ কাপড়ের ওপর। ভাবুন, আপনার চারপাশে - আপনার মাথার ওপর কোন আধুনিক স্থাপত্যকলার অনুসরনে নির্মিত পাথুরে দেয়াল আর সিলিং নেই, আছে তাবু, অথবা মাটির প্রলেপ বিশিষ্ট ঘর। সেই কামরায় অত্যাধিক গরমের মোকাবিলায় এসি, বা অত্যাধিক ঠাণ্ডা কমানোর জন্যে রুম হিটার নেই। যোগাযোগের জন্যে মোবাইল - কম্পিউটার নেই। পড়বার জন্যে বই নেই। দেখবার জন্য টিভি নেই। খাবার প্রিজারভ করার জন্যে রেফ্রিজারেটর নেই, চট করে খাবার গরম করার জন্যে ওভেন নেই। দূর যাত্রার জন্যে বাস - ট্রেন - প্লেন কিছুই নেই। ঘরের লাগোয়া টয়লেট নেই, নিরবচ্ছিন্ন পানির প্রবাহ নেই, মন চাইলেই চট করে হট শাওয়ার নেয়ার ব্যবস্থা নেই।

এমন একটা সময়ের কথা চিন্তা করুন যখন আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্যে রাস্তায় পুলিশ নেই, আইন প্রণয়নের কোন সুনির্দিষ্ট সংবিধান নেই, দেশ রক্ষার জন্যে কোন মিলিটারি নেই, এমনকি দেশের / নেশন ষ্টেটের কনসেপ্টও তখনও আবিষ্কার হয় নি। মোটামুটি গোত্রভিত্তিক জীবনব্যবস্থা, এবং জোর যার মুল্লুক তাঁর - এই হচ্ছে সমাজের বাস্তবতা।

মনে করুন ২০২২ এ নয়, আপনি বাস করছেন আজ থেকে ১৫০০ বছর আগে। ১৯০০ সালের দিকে ভারতীয় উপমহাদেশে কন্যা দায়গ্রস্থ পিতাদের উদ্ধার করতে বর্ণব্রাহ্মণরা বিয়ের সেঞ্চুরি করতো (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উল্লেখে তাঁর বই 'একা এবং কয়েকজন' এ), একবার বিয়ে করে, পণের টাকা নিয়ে , বাসর রাত পার করে সেই যে বামুন ঠাকুর উধাও হতেন - কনে তাঁর জীবদ্দশায় আর দ্বিতীয়বার তাঁর স্বামীর দেখা পেতেন কিনা সন্দেহ। ৭ -৮ বছরে বিধবা নারীদের কাশীতে পাঠিয়ে দেয়া হত এই সেদিনও (দেখুন মিরা নায়ারের ওয়াটার, ২০০৫)। নারীরা পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো ভোটের অধিকার পেলেন ১৯২০ সালের দিকে। হিস্টরি (হিজ - স্টোরি) বাদ দিয়ে "হারস্টোরি" রচনা করার জন্যে নারীদের অধিকার সংক্রান্ত ফেমিনিস্ট আন্দোলনগুলো শুরু হল ১৯৭০ এর দশকে, বৃহৎ পরিসরে। আমি নিশ্চিত নই, এখনও ভারতীয় উপমহাদেশে সকল নারী পিতার প্রপার্টি রাইট পান কিনা।

এ সব তথ্য মাথায় রেখে যদি চিন্তা করেন, নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণে এটা আমাদের মস্তিষ্কে ধরা পড়বার কথা যে - ৬১০ খৃষ্টাব্দে রাসুল (সঃ) এর নবুয়ত পাওয়ার পর নারীদের অবস্থার যে অগ্রমুখী পরিবর্তন হয়, তা অ্যারিথমেটিক্যাল প্রগ্রেশন (১,২,৩,৪,৫ ... এভাবে) নয়, বরং জিওম্যাট্রিক প্রগ্রেশন (১, ২, ৪, ১৬, ২৫৬ ... এভাবে)।

যে সমাজে যখন তখন নারীদের তুলে বাসায় এনে রেইপ করা হত, কন্যা সন্তান জন্মালে তাকে অশুভ লক্ষণ বিবেচনায় জীবন্ত কন্যা সন্তানকেই দাফন করে দেয়া হতো - রাসুল (সঃ) এর নেতৃত্বে সেই বর্বরতম সমাজে পরিবর্তন এলো নারীদের নিয়ে মানুষের চিন্তা প্রক্রিয়ায়, তাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠায়, তাদের প্রপার্টি রাইটসে।

রাসুল (সঃ) তাঁর পবিত্র হাতের পাশাপাশি দুটো আঙ্গুল তুলে ঘোষণা দিলেন যে ব্যক্তি তাঁর কন্যাকে সুষম উপায়ে বড় করে তুলবেন, সে ব্যক্তি এবং রাসুল (সঃ) জেন্নাতে এমনভাবেই পাশাপাশি থাকবেন, যেমনটা পাশাপাশি হাতের দুই আঙ্গুল।

ধরুন আপনি মুসলিম নন। রাসুল (সঃ) কে কোন ঐশ্বরিক ক্ষমতাসম্পন্ন, আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আপনি বিবেচনা করেন না। চিন্তা করে দেখুন, একটা প্রবলরকমের পুরুষতান্ত্রিক, একে অপরের রক্তপিপাসু গোত্রভিত্তিক সমাজে, রাসুল (সঃ) যদি কেবল সাম্রাজ্য বিস্তার আর রাজা হবার বাসনা করতেন, উনি সেই পুরুষতন্ত্রের চাকাকেই আরও মসৃণ করে তুললেন। অথচ ঘটনা কি ঘটলো? রাসুল (সঃ) দাঁড়িয়ে গেলেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। তাঁর মুখে শোনা গেলো নারীদের পিতা - স্বামীর সম্পত্তিতে লিগ্যাল রাইটসের কথা। একটা নির্দিষ্ট চ্যাপ্টার কোরআনের মাধ্যমে বিশ্বাসীরা প্রাপ্ত হল - যা কেবল মাত্র নারী - পুরুষের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে। যদি আপনি শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাসী হন, যদি আপনি তাওহীদে বিশ্বাসী হন - আপনি নারীর এ সমস্ত অধিকার, যা ইসলাম এবং রাসুল (সঃ) নিশ্চিত করেছেন, তা এড়িয়ে যেতে পারবেন না। পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগে কোন ধর্মগ্রন্থের একটি সম্পূর্ণ অধ্যায় কি আলাদা করে নারী - পুরুষ সম্পর্ক এবং নারীদের অধিকার নিয়ে আলাপ করেছে? এতোটা সূক্ষ্মভাবে? এতোটা জোর দিয়ে? আমার জানা নেই।

রাসুল (সঃ) এর আমলে নারীরা যুদ্ধে সঙ্গী হতেন, সফরে সঙ্গী হতেন, কূটনীতিক বিষয়ে রাসুল (সঃ)কে উম্মুল মুমিনিনগণ পরামর্শ পর্যন্ত দিয়েছেন। তারা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতেন। রাসুল (সঃ) এর ওফাতের পর উম্মুল মুমিনিনগণ রাসুল (সঃ) এর হাদিসের দরস দিয়েছেন।

ইসলামের একদম প্রাথমিক সময়ে এই ছিল নারীদের অবস্থা। ২০২১ সালের সঙ্গে তুলনা না করে ৬০০ খৃষ্টাব্দের প্রেক্ষিতে বিবেচনা করুন বিষয়টি। তাহলে আপনার মনে হতে বাধ্য যে - রাসুল (সঃ) হাত ধরে নারীর যে অগ্রগতি হয়েছিল, তা পূর্বের হাজার বছরের তুলনায় প্রায় কোয়ান্টাম লিপ। রাসুল (সঃ) এর সময় থেকে আমরা যত দূরে সরে এসেছি, সামাজিক স্ফেয়ারে নারীদের পদচারনা এবং অবস্থান যেন দিনকে দিন আরও দুর্বল এবং ম্রিয়মাণ হয়ে এসেছে। কিন্তু কেন?

২।
প্রশ্ন আসে, আমাদের ব্লগাররা, যারা দরসে নিজামি পাশ করে এখন ইসলামের খেদমতের নামে পোস্ট দিচ্ছেন - তারা এ কোন ইসলামের রুপ দেখাচ্ছেন আমাদের, যাতে নারীদের "বেড়ালের মতো আদুরে" আর "কুকুরের মতো প্রভুভক্ত" বলা হয়? এ কি খোদায়ী বিধান? রাসুল (সঃ) এর কালাম? নাকি তাদের নফসানিয়ত, এবং মনগড়া কেচ্ছাকাহিনী?

আমি নিয়মিত কোরআন তাফসির সহ পাঠ করি আলহামদুলিল্লাহ। কোরআনের একটা মুজেজা আমার জীবনী আমি নিয়ত প্রত্যক্ষ করি। আমি যেকোনো সময় যদি কোন ইস্যুতে পেরেশান থাকি, সেদিন কোরআনের তাফসির আমাকে সে সম্পর্কে দরকারি দিক নির্দেশনা প্রদান করে। কোরআন তো এমনই। হুদাল্লিল মুত্তাকিন। যারা মুত্তাকী (নিজেকে দাবী করছি না), যারা সাবমিশনের মাধ্যমে পথের দিশা খোঁজে - কোরআন তাদের পথ দেখায়।

সূরা আহযাবের তাফসির পড়ছিলাম গতদিন, মুফতি শফি সাহেব রাহিমাহুল্লাহের তাফসিরে মাআরেফুল কুরআনের ১৫০০ পৃষ্ঠার অ্যাব্রিজ ভার্শনে, মাওলানা মহিউদ্দিন সাহেবের বঙ্গানুবাদে। মদিনা মুনাওয়ারায় নাযিল হওয়া এ সূরার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে জড়িত আহযাব, তথা খন্দকের যুদ্ধে রাসুল (সঃ) এর নেতৃত্বে মুসলিমরা জয়ী হওয়ার পর আমাদের উম্মুল মুমিনিন, বা সম্মানিত নবীপত্নীগণ সম্মিলিতভাবে তাদের খোরপোশ ভাতার বৃদ্ধি দাবী করেন। রোম ও পারস্যের সম্রাজ্ঞীদের উদাহরন দেখিয়ে তারা বলেন, নবীপত্নী এবং উম্মুল মুমিনিন হিসেবে তাদের আরও স্বাচ্ছন্দ্য ও বিলাসের সঙ্গে জীবন কাটানোর অধিকার আছে। রাসুল (সঃ) এর প্রতি এই প্রস্তাবের জবাবেই সূরা আহযাব নাযিল হয়। এখানে উম্মুল মুমিনিনদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, পার্থিব দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে বিস্তারিত দিক নির্দেশনা নাযিল হয়। প্রাথমিকভাবে এ সুরার মাধ্যমে উম্মুল মুমিনিনদের দুটো অপশন দেয়া হয়। এক, পার্থিব জগতে সাদাসিধে জীবন, এখন যেমন আছে, সেটাই বরন করে নেয়া এবং আখিরাতে এর বিনিময় লাভ করা। অথবা, দুই, তারা সম্মানজনক উপায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। দ্বিতীয় অপশন বেছে নেয়ার আগে রাসুল (সঃ) উম্মুল মুমিনিনদের জন্যে বিশেষভাবে পরামর্শ দেন, তাদের পিতামাতার সঙ্গে আলাপ করে নিতে। পরবর্তীতে কোন উম্মুল মুমিনিন রাজি হন নি রাসুল (সঃ) এর স্ত্রীর মর্যাদা ত্যাগ করতে।

এই সূত্রেই, উম্মুল মুমিনিনদের কৃতকর্তব্য অনুসারে আরও কিছু আয়াত নাযিল হয়। আমি তাফসিরের পাতা থেকে হুবহু টুকে দিচ্ছি -

"হে নবীপত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ। তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দু'বার পুরষ্কার দেবো এবং আমি তার জন্য সম্মানজনক রিজিক প্রস্তুত রেখেছি। হে নবীপত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গীতে কথা বোলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে - মূর্খতার যুগের অনুরূপ নিজেদের প্রদর্শন করবে না। নামাজ কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ! আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত - পবিত্র রাখতে।" সূরা আহযাব, মাদানি, আয়াত ৩০ - ৩৩। তাফসিরে মাআরেফুল কুরআন

উল্লেখ করা জরুরী যে এই আয়াতসমূহের তাফসিরে মুফতি শফি সাহেব (রহঃ) তাঁর বিচারবুদ্ধি থেকে সংযোজন করেন যে, রাসুল (সঃ) এর গৃহের চর্চার অনুবর্তী হয়ে সাধারণ মুসলিম নারীদেরও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের ভেতরে থাকাই আল্লাহ পছন্দ করেন। আর কমবেশী এই আয়াতগুলো দেখিয়েই আমাদের ওয়ায়েজ হুজুররা আরও একধাপ আগে বেড়ে বিধান জারি করেন যে - নারীদের অবস্থান ঘরের ভেতরেই। বাহিরে আসার অনুমতি তাদের কোরআন দেয় নাই।

খেয়াল করে দেখুন, এই পার্টিকুলার আয়াতসমূহ নাযিলের প্রেক্ষাপট খুব স্পেসিফিকভাবে উম্মুল মুমিনিন - নবী পত্নীগণের সঙ্গে জড়িত। রাসুল (সঃ) এর সম্মানিত স্ত্রীগনের চারিত্রিক পূত পবিত্রতার প্রতি যেন কেউ আঙ্গুল তুলতে না পারে, ফেতনা এবং কেওস সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্যে স্পেসিফিকভাবে তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্যে। বলা হয়েছে তারা যেন নারীদের স্বাভাবিক কোমল স্বরে অচেনা পুরুষদের সঙ্গে আলাপচারিতায় লিপ্ত না হয়। বরং রাসুল (সঃ) এর হামসফর, হামনাওয়া হওয়ার জন্যে তাদের দুই পৃথিবীতে যে অপরিসীম অতুলনীয় মর্যাদা দেয়া হয়েছে - তাঁর মর্যাদা রক্ষা করে উপযুক্ত গাম্ভীর্যের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলাপচারিতায় লিপ্ত হতে। এবং এই আয়াতগুলোর মধ্যে আরও নির্দিষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে - উম্মুল মুমিনিনগণ মোটেই সাধারন নারীদের মতো নন। তাদের বিধানও সাধারণ নারীদের তুলনায় ভিন্ন। তাদের যেকোনো সৎকর্ম, বা অসৎকর্ম দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসবে তাদের জন্য। এই আয়াতগুলির শুরু এবং শেষও স্পেসিফিকভাবে উম্মুল মুমিনিনদের অ্যাড্রেস করবার মাধ্যমে।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই আয়াতের উল্লেখ করে যখন বর্তমান সমাজে সাধারণভাবে নারীদের গৃহাভ্যন্তরে থাকতে বলা হয়, শিশুকন্যার বাবাদের মসজিদ মিম্বর থেকে বলা হয় যে - আপনার, আপনাদের মেয়েদের প্রাথমিক স্কুল পাশ করার পর পড়াশোনা বন্ধ করে দেন - তখন মাওলানারা এই সূরার নাযিল হওয়ার কনটেক্সটটা কি স্রোতাদের সামনে স্পষ্ট করে দেন? কেন তারা এই আয়াতসমূহের শানে নুযূল এড়িয়ে যান?

এই সূরা নাযিল হওয়ার পরেও রাসুল (সঃ) এর জীবদ্দশায় নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েছেন, প্রয়োজনে ব্যবসা করেছেন, জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে শ্রম দিয়েছেন, জঙ্গে জামালে উম্মুল মুমিনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাজি: ) সরাসরি যুদ্ধের ময়দানেও উপস্থিত ছিলেন। বলা হয় জমানা নাকি খারাপ এসেছে এখন, তাই নারীদের মসজিদে যাওয়া অনুচিত। অনুচিত তাদের পড়াশোনা, জীবন জীবিকা নির্বাহ করার প্রয়াস। কি দুর্ভাগ্যজনক আলাপ!

৩।
অবশ্য এ কাউন্টার আর্গুমেন্ট প্রাসঙ্গিকভাবে আসতে পারে যে , যা রাসুল (সঃ) নিজের এবং নিজের পরিবারের পছন্দ করেছেন, বা নিজ জীবনে প্র্যাকটিস করেছেন, তা সবই আমাদের জন্যেও সুন্নত। কাজেই উম্মুল মুমিনিনদের অনুসরন করে আমাদের ঘরের নারীরাও ঘরেই থাকুক।

ইংরেজি ষষ্ঠ শতকে রাসুল (সঃ) সেলাই ছাড়া চাদর ভাঁজ করে গায় দিতেন। তখন সেলাই করার টেকনিক সহজলভ্য ছিল না। যারা রাসুল সঃ এর সুন্নত বিবেচনায় নিজের পরিবারের নারীদেরও ঘরের ভেতরেই আটকে রাখতে চান, তারা সেলাই ছাড়া দুই চাদর পরে বাজারে অফিসে যান? রাসুল (সঃ) এর অনুকরণে তাবুতে বা মাটির ঘরে বাস করেন? বাথরুমে গিয়ে পানি ছাড়া কেবল ঢিলা কুলুখ ব্যবহার করেন? দাত ব্রাশ না করে কেবল মেসওয়াক করেন?

খেয়াল করলে দেখা যাবে বরং অনেক মাওলানা সাহেবেরই আজকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। ব্যাংকে ডিপিএস জমা দেয়ার লাইনে দাঁড়িয়েও মাঝে মাঝে দেখা পাই দাড়ি - কোর্তাওয়ালা মাওলানা সাহেবদের।

সবকিছু ছেড়েছুড়ে কেবল বাকি রয়ে গেলো নারীদের পড়াশোনা ছাড়া ঘরে আটকে রাখার সুন্নতটুকুই, যাতে নারীদের শিক্ষা ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রেখে তাদের কেবল সন্তান উৎপাদনের মেশিন হিসেবে ব্যবহার করা যায়?

৪।
কেন এই লেখা? আমি পুরুষ, আমি মুসলমান। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। এ দেশে প্রচলিত কাঠমোল্লাতন্ত্র যেভাবে নারীদের একপেশে করে রাখতে চাইছে, আমার তো তাতে লাভই। তাহলে আমি কেন তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছি? কেন কাঠমোল্লা সমাজ যেভাবে কোরআন হাদিসের অর্থকে ম্যানিপুলেট করে নারীদের জীবনযাত্রার অগ্রগতি থামিয়ে দিতে চায়, তাতে আমার বিরুদ্ধাচরণ?

প্রথমত, ইসলাম আমাকে নানাভাবে মানুষ, এবং নফসের গোলামী থেকে মুক্তি দিয়েছে। ইসলামের গায়ে আমাদের মতো প্রাকটিশিওনারদের জন্যে, কাঠমোল্লাতন্ত্রের জন্যে যে বর্বরতার দাগ লাগে, তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত হওয়া বিবেচনা করি। আল্লাহতা'লা সৃষ্টিগতভাবে নারীপুরুষের মাঝে ভিন্নতা রাখলেও তা একে অপরের উপর সম্মান বা প্রভুত্ব এনে দেয় বলে আমি মনে করি না। কিছু প্রেক্ষিতে (যেমন গায়ের জোর, সাধারণভাবে) যদি নারীর উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব থাকেও, আমি মনে করি না এ নিয়ে মুসলিম পুরুষদের জিগির তোলার কিছু আছে। এটা গর্ব করার মতো কোন মাপকাঠী না।

দ্বিতীয়ত, কাঠমোল্লাদের নারীবিদ্বেষী বক্তব্যের কারনে আমাদের সমাজের শিক্ষিত নারীদের মধ্যে প্রবলভাবে ধর্মবিদ্বেষ দেখা দিচ্ছে। মানুষ, আত্মিকভাবে নীড় খুঁজে ফেরা এক প্রাণী। এক আল্লাহর প্রতি কমপ্লিট সাবমিশন মানুষের রূহকে নীড়ের সন্ধান দেয়। কিন্তু সিজনাল ব্যাবসায়ি ওয়ায়েজদের স্যাক্সিস্ট বক্তব্যের কারনে সেই নীড়ের প্রতি বিতৃষ্ণা যাগে আমাদের শিক্ষিত নারীসমাজের। এটাও এক কারন, এই লেখা লিখবার।

তৃতীয়ত, নারীদের পুরুষদের অধীনস্থ হয়েই থাকতে হবে- ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যে বা যারাই এই দাবী করে, এই দাবীর ইনহ্যারেন্ট অন্তঃসারশূন্যতাও আমাকে বাধ্য করেছে লেখাটি লিখতে। একটা সময় ছিল, যখন নারী নেতৃত্বের সহজাত বিকাশ সম্ভব ছিল না। সারা পৃথিবীজুড়েই পরিবেশটা ছিল পুরুষতান্ত্রিক। কিন্তু আজ যখন পেশীশক্তির বদলে মেধা মননের ভিত্তিতে মানুষে মানুষে শ্রেষ্ঠত্ব নিরূপণ করা হচ্ছে, ছেলে শিশু আর মেয়ে শিশুকে সমান গুরুত্ব এবং সুযোগ সুবিধা দিয়ে বড় করা হচ্ছে - অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে মেধা মননে মেয়ে শিশুটি ছেলে শিশুটিকে অতিক্রম করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় গায়ের জোরে এটা দাবী করা যে - যতই নারী - পুরুষ সমদক্ষতাসম্পন্ন হোক, তবুও ইসলামের মতে পুরুষকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে, পুরুষকেই নেতৃত্বে থাকতে হবে - এটা যে কোন র‍্যাশনাল মানুষের কাছে অযৌক্তিক , এবং ইসলামের নামে হঠকারিতার চর্চা বলে প্রতিভাত হবে।

৫।
অবশ্যই শ্লীলতা শালীনতা যেকোনো মানুষের একটা গভীর অর্থবহ জীবনযাপনের হাতিয়ার। কিন্তু বুঝতে হবে, পর্দার বিধান কেবল নারীদের জন্য নয়। পুরুষদের জন্য একইরকম উপায়ে চক্ষু, শরীরের খেয়ানত করা হারাম, যেমন নারীদের জন্যে তা হারাম। কাজেই সমাজে অশালীনতার প্রচার প্রসার রোধে কেবল নারীদের গৃহে বন্দী করার ফন্দি করলে চলবে না, পুরুষের নিজের প্রতি যে বিধিবিধান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের (সঃ) দিক থেকে এসেছে, সেগুলো আগে অ্যাপ্লাই করা উচিৎ।

ইসলামের নামে নারীদের প্রতি স্যাক্সিস্ট , এসেনশিয়ালিস্ট, নোংরামো বন্ধ হোক। আমার বোনেরা স্বহস্তে কোরআন, কোরআনের তাফসির, হাদিসের গ্রন্থাবলী তুলে নিক। স্বয়ং খোদার কাছে, খোদার রাসুলের সুন্নাহের মাঝে নিজের মুক্তির দিশা খুঁজুক। যে বোনটি নানারকম কুঅভ্যাসে, বাজে চর্চায়, বাজে সার্কেলে পড়ে নিজেকে সর্বনাশের চরম সীমায় ঠেলে দিয়েছে, তারও অধিকার আছে ফিরে আসার এক আত্মিক, আধ্যাত্মিক শান্তিময় জীবনের দিকে। কোন মোল্লাতন্ত্রের অধিকার নেই তাকে খোদার দিকে রুজু হওয়া থেকে ফিরিয়ে রাখবার, যেমন অধিকার নেই কোন ইসলামবিদ্বেষী সত্ত্বা বা সংগঠনের।

ছবিঃ বিমূর্তচিত্রে রাসুল (সঃ) দুহিতা মা ফাতেমা জাহরা (আঃ সাঃ )

মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪০

কুশন বলেছেন:




লেখার বিষয়ের উপর আপনার সঠিক ধারণা নেই।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: নূর বা হিরণ যেই হও, এই ধরনের মিনিংলেস মন্তব্য দ্বিতীয়বার করলে ব্লক মারব। তোমাদের মতো ছাগলদের জন্যে ব্লগে লিখি না।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ব্লগে চাঁদগাজী না, বরং চাঁদগাজীপনারে সুলেমানি ব্যান মারা দরকার ছিল। আফসোসের ব্যাপার কর্তৃপক্ষের পক্ষে মানুষের খাসলতরে বান মারা সম্ভব না।

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৭

সাসুম বলেছেন: সুন্দর লিখা। ইসলাম কে আপনি আপনার মত করে গ্রহন করেছেন এবং আপনার মত করে জীবন বিধান পালন করছেন। ইসলামের মর্ডানাইজেশানের এই যে চেষ্টা সেটাকে ইউজালি মডারেট ইসলাম বলে। আসল সত্য হল দুনিয়ার সকল কিছুই আজ হোক আর কাল হোক পরিবর্তিত হবে। সেটা ধর্মের জন্য ও প্রযোজ্য , ইসলামের জন্য ও প্রযোজ্য।

আমি পৃথিবীর সবাইকে তার নিজের মত করে চলতে এবং নিজের মত করে জীবনাচারনের ন্যারেটিভ সাজাতে দেয়ার পক্ষপাতী। আপনার ধারনার পক্ষেও আমি।

তবে কস্টের ব্যাপার হল- আপনি যে ধারার সপক্ষে ফান্ডামেন্টালিস্ট রা তখন ইসলামের আদি স্বরূপ নিয়ে আপনার কাছে এসে জবাব চাইবে- ধর্মে তো এভাবে বলা নাই। কিংবা ধর্ম এভাবে বলে নাই, তখন আপনাকে খারিজ করবে।

আপ্নিও আবার আপনার ধর্মের সবকিছুই তো আর বাদ দিতে বা মর্ডানাইজেশান করতে পারবেন না, আপনার মধ্যেও কনফ্লিক্ট তৈরি হবে।

আপনি মানুষ কে যখন ধর্ম দিয়ে বিচার করেন, আপনি আপনার আদি ধর্মের মর্ডানাইজেশান করেন, তখন আপ্নিও সেই ধর্মের গান ই গান। হয়ত কেউ আদি গান গায় সুর তাল ঠিক রেখে, কেউ সেইম গান গায় সুর তালে হালকা পরিবর্তন এনে।

যাই হোক- আপনাকে সাধুবাদ ধর্মের নামে নারীদের কে পুরুষের সম্পত্তি চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসার, কিংবা নারীকে পুরুষের আলোতে দেখার চিন্তা বাদ দেয়ার জন্য কিংবা চরম নারী বিদ্বেষী ধর্ম কে মডারেট করে আধুনিক রুপ দান করার চেষ্টায়।

দিনে দিনে পরিবর্তন আসবে, আজকে আপনি ধর্মের নারী বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করতে চিন্তা করছেন, আরেকজন চিন্তা করছে আধুনিক বাজার ব্যবস্থা এবং ইকোনমিকে ধর্মের নাগপাশ মুক্ত করার জন্য, আরেক দল চিন্তা করছে ধর্মান্ধ মানুষ দের কে জ্ঞানের দিকে আনার জন্য।

সকলের চেস্টাকে স্বাগত জানাই। সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। দুনিয়া মানুষের হোক- ধর্মান্ধতা থেকে মুক্তি পাক সভ্যতা।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: মন্তব্যে ধন্যবাদ সাসুম ভাই। আপনার কিছু বক্তব্যের সঙ্গে আমার দ্বিমত আছে, তবে তা তো থাকবেই। একটু পরে ফিরে আসতেসি সবিস্তার মন্তব্য নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকেন! : )

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৩০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: যাক সাসুম ভাই, ফিরতে একটু দেরী হইলো। ঘরের মধ্যে মাছি অনেক। খেদাইতে গিয়ে সময় নষ্ট।

দেখেন, মডারেট মুসলিম শব্দটা পলিটিকাল। এটা ক্যারি করার বারডেন আছে। আমি কিন্তু নিজেরে আধুনিক মুসলিম দাবী করতেসি না, যে অর্থে পাশ্চাত্য আধুনিক মুসলিমদের খুব পীঠ চাপড়ানি দেয়। আমি বরং অতীত ইতিহাসের দিকে আঙ্গুল তুলতেসি যে স্বয়ং রাসুল (সঃ) নারীদের জন্যে লিগ্যালি কি কি স্টেপ নিসেন, এবং সেই অনুপাতে পরবর্তী যুগের কাঠমোল্লারা নারীদের ইস্যু কীভাবে ডিল করসে।

একটু খেয়াল করলে দেখবেন, ব্লগার কামরুজ্জামান , যার লেখায় বিরক্ত হয়ে এই লেখাটা লিখলাম, উনি কিন্তু কওমি মাদ্রাসার ছাত্র। আমি মাদ্রাসার ছাত্র না হইলেও আমি ঐ একই ধারার, দেওবন্দী সুফি ঘরানা থেকে ইসলাম শিখসি। এখনও সেটাই প্র্যাকটিস করি। কিন্তু দেওবন্দের একটা শক্তিশালি এন্টিকলনিয়াল লেগেসি আছে। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধের ময়দানে সরাসরি লড়াই করসেন। পরাজিত হয়ে ইসলামিক ইন্টেলেকচুয়াল একটা ধারা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করসেন। আজকের ব্লগার কামরুজ্জামান সাহেব, অথবা সাধারণভাবে কওমি মাদ্রাসার যারাই আছেন, তাদের মধ্যে শক্তিশালি ইন্টেলেকচুয়ালের কোন লক্ষণ আমি দেখি না। তারা ক্লাস ৯ - ১০ এর ইস্লামিয়াত পরীক্ষায় যেভাবে উত্তর লিখতাম, সেভাবে ব্লগ লিখে, প্যারা ভাগ করে করে, সুন্দর ছবি দিয়ে দিয়ে। দেওবন্দি ধারার মধ্যেও নারীদের ঘরে আটকায়ে ফেলার একটা প্রবণতা আছে। আমি এই পয়েন্টেও তাদের বিরোধিতা করি। শালীনতার সঙ্গে আলাপ এবং বিরোধ দেওবন্দি ঘরানার ইসলামের বৈশিষ্ট্য।

আমাকে মডারেট মুসলিম বললেন বলে এই বিষয়ে আমার অবস্থান সংক্রান্ত কিছু ব্যাখ্যা দেয়া লাগলো।

আপনি গঠনমূলক সমালোচনা করে মন্তব্য করবেন, যাতে আমার চিন্তায় ফাঁকফোকর থাকলে আমি নিজেরে শুধরাতে পারি। আপনার সব বিষয়েই একটা স্ত্রং স্টান্স থাকে - এটা আমার ভালো লাগে। দুনিয়ার বেশীর ভাগই ল্যাগাব্যাগা মতের মানুষ। নিজের বিশ্বাস, তা যাই হোক, সেটা আঁকড়ায়ে ধরে লজিক্যালি, শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন মানুষরে আমি শ্রদ্ধা করি।

পুনরায় শুভকামনা।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৩৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


আয়েশা সিদ্দিকা কি ভালো মানুষ ছিলেন?

তাকে উদাহরণ হিসেব্যে গ্রহণ করার কোন মানে নেই।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৫৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: প্রিয় শাইয়ান ভাই, আমি আপনার অবস্থান বুঝতে পারছি। ইরানের গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ খোমেনিও বোধয় ঘোষণা জারি করেছেন যে উম্মুল মুমিনিনদের নিয়ে নেতিবাচক কথা পাবলিক স্ফেয়ারে বলা আর পারমেসিবল নয়। যা হোক, আমার পুরো মন জুড়ে আহলে বায়েতের প্রতি ভালোবাসা, কিন্তু এও সত্য যে শিয়ানে আলভীদের বয়ানেও অতিরঞ্জন আছে। আমার পক্ষে উম্মুল মোমেনিন, এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের ব্যাপারে কুধারনা পোষণ করা সম্ভব না। শুভকামনা আপনার প্রতি।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:০২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ওহ, আপনার জন্যে একটা উপহার আছে। ২০ জমাদিউস সানি, মানে গত পরশু মা ফাতিমা জাহরার ধরাধামে আগমন দিবস ছিল। সারাদিন এই ফারসি নোহা / মর্সিয়া শুনে কাটিয়েছি। আপনার ভালো লাগবে বিবেচনায় শেয়ার করলাম। view this link

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৪৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো লেখা, আসলে শিক্ষিত আলোকিত মানুষদের ই এগিয়ে আসতে হবে।

কাঠমোল্লাদের নারীবিদ্বেষী বক্তব্যের কারনে আমাদের সমাজের শিক্ষিত নারীদের মধ্যে প্রবলভাবে ধর্মবিদ্বেষ দেখা দিচ্ছে।
আমার তো মনে হয় , নারীদের উচিত নিজেই পড়াশুনা করে কাঠমোল্লাদের উচিত জবাব দেয়া, ধর্ম বিদ্বেষ এর বিপরীতে।

লেখায় ভালোলাগা।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:০৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: প্রিয় আপা, আমার কষ্টটা আমার পরিবারের মেয়েদের নিয়েই। ইসলামের তাত্ত্বিক দর্শন আমার ভেতরে একটু একটু করে প্রবেশ করার ফলে যে শান্তিময় একটা জীবন আমি কাটাই, তাঁর সবটুকুই আহলুল্লাহ / সূফীদের সংস্পর্শের কারনে। কিন্তু আমার মা, আমার বোন, আমার স্ত্রী তো কখনো সেই সুযোগ পেলো না। আশা করি সময় বদলাবে আবারো। আমাদের মা - বোনরাই ইসলামের সঙ্গে, খোদার সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিসরে সম্পর্ক গড়ে তুলবে। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য : )

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৪৮

সাসুম বলেছেন: দেখেন, আপনি যেভাবে মডারেট ইসলাম ট্যাগ দেয়াকে অপছন্দ করেন সেটার সাথে আমি একমত। মডারেট ইসলাম একটা ক্যাপিটালিস্ট টার্ম। একটা পলিটীকাল টার্ম এবং এর টার্ম ও ইহুদি ব্যাংকার দের ঠিক করে দেয়া। কারন- কট্টর কাঠমোল্লাদের দেশে এসে ব্যাংকিং বিজনেস করতে তাদের একটা ফাক লাগত এবং এই মডারেট সিস্টেম টা তারাই আবিস্কার করেছে।

আপনি আরো খেয়াল করলে দেখবেন- আমি আপনাকে মডারেট বলিনাই। আমি মডারেট ইসলাম যারা পালন করে মানুষ ইসলামের আগার টা খাব মানে পরকালে বেহেশ্ত হুর পাব আবার দুনিয়ায় ব্যাংকিং করব, প্রেম পিরিতী করব , চুরি করব , দুর্নীতি করব আবার শেষ বয়সে গিয়ে আল সৌদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে কাবা ঘর জেয়ারত করে গুনাহ কাটাব - এই ধরনের লোকদের ফান্ডামেন্টালিস্ট থেকে বেশি ভয়ানক ও হিংস্র মনে করি। ফান্ডামেন্টালিস্ট রা ঠিক আছে- একদম কট্টর এবং কিছু বললেই কল্লা ফেলতে চলে আসে।

আমি জাস্ট বলতে চেয়েছি- এইযে ইসলামের ফান্ডামেন্টালিজম থেকে সরে এসে আপনি আপনার সুফি ধারার একটা মতবাদ দিচ্ছেন এটা তো জেনারেল ইসলাম থেকে আলাদা যেটাকে ফান্ডামেন্টিলিস্ট রা মেনে নিবেনা কিছুতেই এবং এটাকেও প্রকারান্তে মডারেট ফর্ম বলে।

আর আপনার পড়ালেখা যে ঘরানার অর্থাৎ দেওবন্দী সুফি ঘরানার- আমাদের উপমহাদেশ এর ইসলাম কিন্তু আবর্তিত হত এই ধারায় এবং সেটা কিন্তু সেই হিন্দকুশ এর উপত্যকা থেকে সিন্ধু পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বাট মিশরীয় টেরোরিস্ট হাসান আল বান্না আর সৈয়দ কুতুব দের আইডিওলজি সাথে সালাফিদের মিডল ইস্টের তেলের টাকা এই উপমহাদেশের ইসলাম কে এক্সট্রিম বানাইছে। ইসলাম এই দেশে শান্তির পসরা নিয়ে এসেছিল, সুফি সাধক রা এভাবেই ইসলাম কায়েম করেছিল। আজকে আমরা দেখি ইসলামের ফান্ডামেন্টালিজম এর নামের এক্সট্রিজম।

যাইহোক- আপনার এইযে ভিন্ন ধারার চিন্তা এটাকে আমি স্বাগত জানাই কারন এটা এক্টা পরিবর্তন। দুনিয়ার সবকিছুই পরিবর্তনশীল। আমি আপনি মানি আর না মানি, পরিবর্তন হবেই , হতে হবেই।

এখন আপনার এই যে নারীর প্রতি চরম অবমাননা থেকে বের হবার প্রচেষ্টা ধর্মের ভেতর থেকেও, এটাকে সম্মান না জানানো আমার অন্যায় হবে। আপনার মত করে আরো হাজারো লাখো মানুষ ভাববে, একসময় চেঞ্জ হবে।

পৃথিবীর সব কিছু মিথ্যা হতে পারে, তবে একটা জিনিষ সত্য, সেটা হল- পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।

আর আমার স্ট্রং স্টান্স এর ব্যাপারে- আমি সব সময় লজিকাল। আমাকে যুক্তি দেখান, আমি মেনে নেব আপনি যদি বলেন গরুর মুতে সঞ্জীবনী সুধা আছে কিংবা উটের মুতে রোগ নিরাময়ের উপায়া আছে। এখন, আপনাকে হয় যুক্তি পথে থাকতে হবে নাইলে অজ্ঞ হয়ে ফ্যালাসির পথে থাকতে হবে। আমি জাস্ট লজিকাল পথেই হাটার চেষ্টা করি।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: পুনরায় মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ সাসুম ভাই। মুসলিম ব্রাদারহুডকে সম্প্রতি সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি বাতিল ফেরকা বলে ঘোষণা করলো বোধয়। আমার কাছে বিষয়টা মোটের উপর হাস্যকর লেগেছে। সাদ্দাম আর গাদ্দাফি একে অপররে - তুই একটা ডিকটেটর বলে খারিজ করার মতোই ইলজিক্যাল বিষয়টা।

আমি পার্সোনালি ধর্মের পলিটিক্যাল ইউজের পক্ষপাতী না। তাতে ধর্মের নামে অধর্ম অনাচারের চর্চা করা আরও বেশী প্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে বলে। কিন্তু মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুডের উত্থান না হয়ে উপায় ছিল না। জওহরলাল নেহরুর হাজার পৃষ্ঠাধিক ইতিহাসের বই গ্লিম্পস অফ ওয়ার্ল্ড হিস্টোরি পড়বার সময় ওতে মিশরের ইতিহাস পড়েছি আমি। আপনিও পড়লে খেয়াল করবেন, নেপলিয়নের হাতে ১৮০০ র শুরুতে মামলুকদের পতনের পর থেকে নিয়ে আজ, এই ২০২২ সাল পর্যন্ত মিশর একটা কলোনাইজড কান্ট্রি। ফ্রান্স, ইংল্যান্ড হয়ে বর্তমানে অ্যামেরিকা - সরাসরি, অথবা পুতুল সরকার বসায়ে মিশর রুল করসে। আফ্রিকার প্রবেশদ্বারে এই দেশের অবস্থান হবার কারনে এর জিও পলিটিকাল সিগনিফিকেন্স অনেক। এখন, এই কলোনিয়াল রুলের বিরুদ্ধে রিভল্ট করার জন্যে ইজিপশিয়ানদের কি অবলম্বন ছিল, ধর্ম ছাড়া? আরও সহজ করে একটা উদাহরন দেই। ৭১ এ যখন পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের লড়াই ছিল, তখন আমাদের হাতিয়ার ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ। খোদা না খাস্তা, আজকে রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে যা করতেসে, যদি আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত কখনো এরকম আমাদের সঙ্গে করে, তখন ভারতের সঙ্গে মানুষ লড়বে কোন ইডিওলজিকে পুঁজি করে? বাঙালি জাতীয়তাবাদ যথেষ্ট হবে না তখন, কারন বাঙালি তো পশ্চিম বঙ্গেও আছে। তখন দেশের মানুষ, শুনতে যতটাই ব্যাকডেটেড শোনাক না কেন, দেখা যাবে ইসলামরে পুঁজি করেই লড়াই করতেসে। সিমিলার একটা কনটেক্সট থেকেই মিশরে হাসান আল বান্না, সাইয়িদ কুতুবের মতো আনঅর্থোডক্স ইসলামি চিন্তাবিদদের উত্থান। আরব বসন্তের পর, মিশরের শত শত বছরের ইতিহাসে প্রথম যে ডেমোক্রেটিক ইলেকশন হল, তাতেও ইসলামি রাজনীতির উপর ভর করেই মুসলিম ব্রাদারহুড আর মুরসি জয়ী হয়। কিন্তু মিশরের জনগনের মধ্যে একটা বড় অংশ লিবারেল হওয়ায় জেনারেল সি সি পাশ্চাত্যের ব্যাকআপ নিয়ে ক্যু করে এখন অনির্বাচিত সামরিক সরকার এবং পাশ্চাত্যের ডামি হিসেবেই বসে আছে ক্ষমতায়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ডিস্টিঙ্গুইস্ট প্রফেসর তারেক রামাদানের আফটারম্যাথ অফ অ্যারাব স্প্রিং নামে একটা বই আছে, জেড লাইব্রেরীতে পাওয়া যায়। সুযোগ পেলে পইড়েন।

যা হোক, আবারো বলি, আমি ধর্মের পলিটিকাল ব্যবহারের পক্ষপাতী না। মুসলিম ব্রাদারহুডের উত্থানের পেছনের কারনটা নিজে যতটুকু বুঝি, তা শেয়ার করলাম, কারন বললেন আপনি র‍্যাশনালি চিন্তা করেন। মনে রাইখেন, প্রতিটা রিঅ্যাকশনারি গ্রুপের জন্ম অপর কোন রিঅ্যাকশনারি গ্রুপের কাউন্টারেই জন্ম হয়।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৩

জ্যাকেল বলেছেন: ভাই, আপনি যেভাবে সহজ সুন্দরভাবে ব্যাপারগুলি বোঝাতে পেরেছেন আমি আনন্দিত হয়েছি যেন আমার চিন্তনীয় কাজগুলো আপনি তুলে ধরতে পেরেছেন যথাসম্ভব গুছিয়ে। এখন মোল্লাদের জারিজুরি ফাঁস করতে গেলেই তো বিপদ, এরা আপনাকে আক্রমণ করবে কোরআন মানি, হাদিস মানি না থিওরীতে। এটা ওদের বিশাল এক ধোঁকা যা বুদ্ধিমান লোক মাত্রই অনুধাবন করবে এরা ভন্ড।
যেখানে আল্লাহর কোরআন অবিকৃত অবস্থায় আছে এবং আমাদের জানাই আছে আমাদের যা ফরজ তা আল্লাহ এই বইতেই নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন সেখানে তারা ফরজ রিপ্লেস করতেছে রিচুয়াল দিয়ে। বাস্তব জীবন ভিত্তিক ইসলামকে এরা বানাচ্ছে রিচুয়াল বেজ ইসলাম। আরো প্রচুর পথ পাড়ি দিতে হবে এইসবের মুখোশ উন্মোচন করতে হলে।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: জ্যাকেল ভাই, ধন্যবাদ আপনার অনুপ্রেরণাদায়ী মন্তব্যে। পূর্বের কিছু মন্তব্যের সূত্রে বলেছি, আপনাকেও বলি, ইসলামকে ব্যবহার কোন ধরনের সামাজিক বৈষম্যকে স্থায়ী করার প্রচেষ্টাকে আমি ব্যক্তিআক্রমন হিসেবেই মনে করি। কারন, আমি ব্যক্তিজীবনে ইসলাম প্রাকটিস করি, এবং প্রতিমুহূর্তে অনুভব করি আমার চর্চা আমাকে কীভাবে একজন আজাদ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে ক্রমাগত। তাই যৌক্তিকভাবে লিখে ইসলামের নামে চর্চিত বৈষম্যের প্রতিবাদ করা। আপনার চিন্তার সঙ্গে আমার চিন্তা এক সূত্রে এসে মিলেছে, এতো আনন্দের ব্যাপার। যদি নাও মিলতো, আমার আলাপের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতাম।

আজকাল প্রায়ই শুনি এই কোরানিস্ট মুভমেন্টের কথা। আহলে হাদিসরা তো আগে থেকেই ছিল। আমি রিচুয়ালি যদিও হানাফি মাতুরিদি, আধ্যাত্মিকতার চর্চা এমদাদিয়া - আশরাফিয়া ঘরানায়। কিন্তু নিজের বিবেক বুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে অন্ধভাবে তাকলিদ করা আমার ধাঁচে নাই। খোদাও মনে হয় না সেটা কামনা করেন। নইলে এতোটা ইন্টেলেক্ট দিয়ে তিনি তৈরি করতেন না মানুষকে।

৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৮

সোবুজ বলেছেন: এমন তথ্যবহুল বিশ্লেষণধর্মী লেখা আমি জীবনে দেখি নাই।এই লেখাটির মতো আরেকটি লেখা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ লিখে দেখাতে পারবেনা।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: পেটে এতো বিষ নিয়া রাতে ঘুম হয় কীভাবে? গ্যাস্ট্রিকে বুক জ্বলে না?

৮| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৫৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এখন শীতের মৌসুম দেশে কাঠমোল্লাদের বাজার গরম কারণ অশিক্ষিত মানুষ বয়ান শুনে আরাম পায়। সুন্দর লেখা। কুশন তাদের একজন মুখোশ পরা সেকুলার, ধারণা সঠিক।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধর্মের ব্যাপারে শুধু এদেশে না, সারা পৃথিবীতেই মানুষের পরের মুখের ঝাল খাওয়ার প্রবণতা বেশী। যাহোক, সেকুলার হওয়াটা সমস্যা না নাওয়াজ ভাই, ছ্যাচরামি করাটা সমস্যা। যারা নিক থেকে ছ্যাঁচড়ামি করে, তারা ব্যাপারটা বুঝলেই হয়। মন্তব্যে ধন্যবাদ। দিনটা সুন্দর কাটুক আপনার।

৯| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:০৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: যত দিন যাচ্ছে ততই ইসলামের নাম দিয়ে নারী কে বিধি নিষেধের বেড়াজালে বন্দী করা হচ্ছে অথচ এটা শুধুই একশ্রেণীর স্বার্থের জন্য । প্রকৃত সত্যকে পাশ কাটিয়ে যারা এগুলো করছে তাদের বিপক্ষে আওয়াজ তোলার মতন লোক তেমন নেই।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ইসলামের নামে নারীদের বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকে কেবল পুরুষতন্ত্রের লাভ মাইদুল ভাই। ইসলামের কোন লাভ তাতে নেই। দুনিয়ার বুকে কেবল নিজেদের পশ্চাৎপদ জাতি হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করা। প্রকৃত সত্য জিনিসটা যে আসলে কি, তা নিয়ে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু কোরআনের ইন্টারপ্রিটেশন যে কনট্যাক্সট বুঝে করতে হয়, এটাও তো আমাদের নাকেল (চোখ বুজে অনুকরন করে যারা) মাওলানারা মানতে নারাজ। তাদের মতে তাদের কোরানিক ইন্টারপ্রিটেশনই ঐশী বানীর মতো সত্য। নাউজুবিল্লাহ।

১০| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:১৫

অগ্নিবেশ বলেছেন: ভাই আপ্নে একাবিংশ শতকের লোক, আপ্নে যা এখন যা জানেন তা চৌদ্দশ বছর আগে মহান আল্লারও জানার উপায় ছিল না। তাই ইসলামে যা নাই সেটা ইসলাম বলে চালিয়ে দিয়ে উলটে গুনাহগার হচ্ছেন। কোরান হাসিদ পড়ে দেখেন কাঠ মোল্লারা এক চুল মিথ্যা বলে না, আপনি আপনার মানবতাবাদ ইসলামে ঢুকাতে গিয়ে বিপদে পড়ে যাবেন। চাপাতির ভয়ে নাস্তিকরা এখন গর্তে গিয়ে বসে আছে, তাই কোপ এইবার আপনারাই খাবেন। সাবধান!

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:০৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: অগ্নিবেশ ভাই, মোদীর পোস্টের পর এই আপনার সঙ্গে আবারো আলাপ। যা হোক, যদি আলাপ করতে চান, এই ধরনের টন্টিং টোনে তো লাভ হবে না। যদি মনে করেন আপনি নাস্তিক বলে দুনিয়ার সবার চে' বেশী বুঝেন, গুড ফর ইউ। তবে পাবলিক ফোরামে আলাপের জন্য, অথবা ইন জেনারেল মুক্তমনা হওয়ার জন্যেও আপনার ভিন্ন ভিন্ন পারস্পেক্টিভ থেকে চিন্তা করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।

যেমন একটা বাজে কথা বললেন, আমি এখন যা জানি, খোদার তা চৌদ্দশ বছর আগে জানা সম্ভব ছিল না। (আল্লাহ পানাহ দেন)। এখন আপনি যদি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নতির কথা বলেন, আপনার কমনসেন্স থেকেই বোঝার কথা - এগুলি অ্যাড্রেস করা কোরআন বা কোন ঐশীগ্রন্থের উদ্দেশ্য হতে পারে না। কীভাবে স্কাড মিসাইল বানায়, স্যাটেলাইট বা রকেট কীভাবে আকাশে নিক্ষেপ করা হবে, কীভাবে করোনার ভ্যাকসিন বানানো হবে - এই সমস্ত বিষয়, ধরেন ৬১০ খৃষ্টাব্দে কোরআনে উল্লেখ করাও হতো, সেই সময়ে মানুষ রাসুল (সঃ)কে কি উন্মাদ মনে করতো না? কি লাভ হত তাতে? কোরআন সহ সকল ঐশী গ্রন্থের মূল উদ্দেশ্য মানুষের পারস্পেক্টিভ চেঞ্জ করা। দুনিয়ারে সে কীভাবে অ্যাপ্রচ করবে, সে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা। এর বাইরে অনুসন্ধিৎসু মানসিকতা তৈরিতে কোরআন ভুমিকা রাখে, তা তো বলাই বাহুল্য। খোলা মনে কোরআনের তাফসির পড়লে দেখবেন, তাতে বার বার বলা হচ্ছে তোমরা ভূপৃষ্ঠের দিকে তাকাও, সমুদ্রের দিকে তাকাও, নক্ষত্ররাজির দিকে তাকাও এবং ভাবো, কোন স্রষ্টা ছাড়া তারা এমনি এমনি তৈরি হয়েছে কিনা। এখন আপনি ধারনা করে নিতে পারেন যে স্রষ্টা ছাড়া ন্যাচারালি সব এমনি এমনি হয়ে গেছে, কিন্তু দাওয়াতের প্রথম যে অংশ, পৃথিবীর দিকে ব্রহ্মাণ্ডের দিকে অনুসন্ধিৎসার দৃষ্টিতে তাকানো - এটা যে কোরআন দেয় নি, আপনি তো এমন দাবী করতে পারবেন না।

যা হোক, বাংলাদেশে মাদ্রাসা পাশ আলেমদের একাংশের মধ্যে সাধারণভাবে যেরকম জেনোফবিয়া এবং স্যাক্সিজমের চর্চা হয়, আমি তাঁর বিরুদ্ধে লিখেছি। মাদ্রাসা থেকে জঙ্গি তৈরি হয় না। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মানুষ কতল করতে যারা নামে, তাদের অধিকাংশই ইংলিশ / বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র। কাজেই আশা করছি যে আমার জীবনের ভয় নাই।

আর ইসলামের মধ্যে মানবতাবাদ ঢোকানোর চেষ্টা করছি না। ইসলামই বৃহৎ দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে মানবতাবাদের সিনোসিমাস শব্দ। উপরের মূল লেখায় উদাহরন দিয়ে দিয়ে সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ঐতিহাসিক কিছু উদাহরন টেনে আনতে পারেন হয়তো, যা আপনার কাছে বারবারিক লাগে। কিন্তু ঘটনা কন্টেক্সটে ফেলে বিচার করলে দেখবেন, ঐ সময়ের প্রেক্ষিতে রাসুল সঃ বা ইসলামের ঐ স্টেপগুলিও সবচে কাইন্ড ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য যেকোনো রাজা বাদশাহের দরবারে ঐ ধরনের অপরাধের শাস্তি আরও অনেক নিস্রংস হত।

আমাদের মূল সমস্যাই হচ্ছে আমরা ২০২২ সালের বাস্তবতায় ৬১০ সাল বুঝতে চাই, এবং ৬১০ সালের বাস্তবতায় রাসুল সঃ এর এক একটা স্টেপ কতোটা রেভলিউশনারি রকমের অগ্রমুখী ছিল, তা স্বীকার করতে দ্বিধা করি।

মন্তব্যে ধন্যবাদ। শুভকামনা আপনার জন্য। : )

১১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৩০

অগ্নিবেশ বলেছেন: আর ইসলামের মধ্যে মানবতাবাদ ঢোকানোর চেষ্টা করছি না। ইসলামই বৃহৎ দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে মানবতাবাদের সিনোসিমাস শব্দ। -- আপনাকে বোঝানো আমার কর্ম নয়।
ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে পরিষ্কারভাবে মালিকানাধীন বা অধিকারভূক্ত দাসীর সাথে যৌন সম্পর্ক হালাল করা হয়েছে। দাসদাসীদের কেনাবেচা, যুদ্ধবন্দী নারী হিসেবে দাসী গ্রহণ করা, এগুলো সবই ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হালাল। ইহা মানবতার সাথে যায় না তাই বললাম আর কি।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনি আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন না। আপনি চাইছেন আমি আপনার মতো করে চিন্তা করা শুরু করি। আপনার মতো করে চিন্তা করা সম্ভব না হলেও আপনার পয়েন্ট অফ ভিউ বোঝার চেষ্টা করার পুরো আগ্রহ আমার আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আপনি সেক্ষেত্রেও আমাকে পর্যাপ্ত ডাটা দিয়ে সাহাজ্য করতে পারছেন না।

১৯ শতকে অ্যামেরিকায় যে সিভিল ওয়ার হল লিঙ্কনের নেতৃত্বে, সে সময়েও কি অ্যামেরিকার সাউথে দাসদাসীদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হবে, তাঁর কোন রিটেন কোড ছিল? দাস - দাসীর প্রাসঙ্গিকতা তখন ছিল, এবং ৬১০ সালের প্রেক্ষিতে ইসলাম তাদের সঙ্গে সম্পর্ক যতটুকু সম্ভব দয়াদ্র করে তোলার পেছনে পর্যাপ্ত ভূমিকা রেখেছে।

আপনি জানতে চাইছেন তারও ১২ শ' বছর আগে রাসুল (সঃ) এবং ইসলামের নেতৃত্বে দাস ব্যবস্থা পুরো বিলিন করে দেয়া হল না কেন? এটা কি সেই সময়ের প্রেক্ষিতে কোন প্রাক্টিকেল চিন্তা? এর পরে কি দাবী করবেন? ইসলাম মানবতার ধর্ম নয়, কারন সে সময় রাসুল (সঃ) এর নেতৃত্বে মুসলমানদের মধ্যে প্লেগ / কলেরা / গুটিবসন্ত রোগের ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প রান করা হয় নাই? বা মানুষরে সে সময় অ্যারোপ্লেনের বদলে উটের পীঠে বা পায়ে হেঁটে জোর করে হজে পাঠানো হতো?

আপনার চিন্তার অসঙ্গতি ধরতে পারছেন?

১২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৩৬

অগ্নিবেশ বলেছেন: গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছেদঃ ১. যে সকল বিধর্মীর কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেছে, পূর্ব ঘোষণা ব্যতীত তাদের বিরুদ্ধে আক্রমন পরিচালনা বৈধ
৪৩৭০। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) … ইবনু আউন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, আমি নাফি’ (রহঃ) কে এই কথা জানতে চেয়ে পত্র লিখলাম যে, যুদ্ধের পূর্বে বিধর্মীদের প্রতি দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া প্রয়োজন কি না? তিনি বলেন, তখন তিনি আমাকে লিখলেন যে, এ (নিয়ম) ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ মুসতালিকের উপর আক্রমণ করলেন এমতাবস্থায় যে, তারা অপ্রস্তুত ছিল (তা জানতে পারেনি।) তাদের পশুদের পানি পান করানো হচ্ছিল। তখন তিনি তাদের যোদ্ধাদের (পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ) হত্যা করলেন এবং অবশিষ্টদের (নারী শিশুদের) বন্দী করলেন। আর সেই দিনেই তাঁর হস্তগত হয়েছিল। (ইয়াহইয়া বলেন যে, আমার ধারণা হল, তিনি বলেছেন) জুওয়ায়রিয়া অথবা তিনি নিশ্চিতরূপে ইবনাতুল হারিছ (হারিছ কন্যা) বলেছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, এই হাদীস আমাকে আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। তিনি সেই সেনাদলে ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইবনু ‘আউন (রহঃ)

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমি মতলববাজ অনলাইন মুহাদ্দিসদের সঙ্গে হাদিস নিয়ে আলাপ করি না। আপনার এই ধরনের ত্যানা প্যাঁচানো ইস্যুরও কনটেক্সচুয়াল উত্তর দেয়া সম্ভব, কিন্তু তাতে কোন লাভ নাই। কারন আপনি আলাপের জন্যে আলাপ করছেন না। আপনার ধান্দা হচ্ছে ইসলামকে রক্তপিপাসুদের ধর্ম হিসেবে যেভাবেই হোক রিপ্রেজেন্ট করা। আপনাকে আপনার ধান্দা মুবারক। কিন্তু প্রতিনিয়ত যে বিষ পেটের ভেতরে নিয়া ঘুমান, এর বাজে রকমের রিফ্লেকশক পড়বে আপনার ক্যারেক্টারে। বৌ পিটানো আরম্ভ করবেন। রাগের মাথায় বাচ্চাকাচ্চারে থাপ্পর দিয়ে মেরে ফেলবেন। এসমস্ত ঘটনা ঘটার আগে আগে শুধরায়ে যান। শুভকামনা।

১৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২২

সাসুম বলেছেন: @লেখক- আপনার এই পোস্টের একদম শুরুতে আমি কমেন্ট করেছিলাম - আপনি ইসলামের ভেতর থেকে নতুন ধরানার নারীবাদ নিয়ে চিন্তা করছেন বাট বেসিকে গিয়ে আবার কনফ্লিক্ট শুরু হবে।

তো, আপনার কমেন্ট সেকশান আর আপনার রিপ্লাই দেখলাম। আপনার মতের সাথে না মিল্লেই যে হারে মোদির সন্তান বলে আর গুজ্রাটি বলে গালি দিয়ে ১৪ পুরুষ উদ্ধার করছেন, এর এক্সাক্ট কারন টা কি??

ব্লগার এভো জাস্ট কিছু সহীহ হাদীস তুলে ধরেছে আপনার সামনে, ( আপনি হয়ত সহীহ হাদীস মানেন না ) বাট, শত শত কোটি মোসলমান কিন্তু এই আহলে হাদীস দের অনুসারী। সবাই কিন্তু খলিফা উমার এর মত খালি কোরআন এর অনুসারী না কারন কোরানে তো সব ক্লিয়ার পাওয়া যায়না, তাই নবীর জীবন আদর্শে তারা বিলিভ করে।

তো, এইভাবে আপনি সহীহ হাদীস কে বাদ দিলেন, কেউ আপনার বিপরীত মত দিলে তাকে পাশের দেশের প্রধানমন্ত্রীর সন্তান বলে গালি দিচ্ছেন-

আমার জানতে চাওয়া টা ঠিক এই যায়গায়, এই কারন টা কি?? মানে দুনিয়ার এত কিছু থাকতে আপনার মতের বিরোধী হলেই তাকে মোদির সন্তান হতে হবে কেন?? সে পাকি পি এম ইম্রানের সন্তান হতে পারেনা?? সে সৌদি জেনোসাইডার এম্বিএস এর সন্তান হতে পারেনা? সে ইস্রায়েল প্রেমী এরদোয়ান এর সন্তান হতে পারেনা?

আপনার মনে রাখা উচিত- দুনিয়ার প্রতিটি মোসলমান তার নিজের এজেন্ডা ও মতবাদ নিয়ে চলে , এখন আপনি সুন্নী তাই শিয়া মোসলমান যখন ফাতেমার খুনের কাহিনী বর্ণনা করবে তখন তার উপর ঝাপিয়ে পড়া কিংবা যখন আহমাদীয়ারা নিজেদের মতবাদ দিবে তখন তাদের কল্লা ফেলে দেয়া কিংবা যখন আহলে হাদীস দের সহীহ হাদীস যখন কেউ বর্ননা করবে তখন তাকে মোদি সন্তান বলে গালাগালি করে ঠিক কি অর্জন করতে পারবেন বলে মনে করেন?? জানার ইচ্ছা

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: সাসুম, আপনার মন্তব্যের উত্তর দেয়ার আগে একটু ব্যাকগ্রাউন্ড সেট করে নেয়া দরকার। একটু ঠাণ্ডা মাথায় বোঝার চেষ্টা করুন আমি কি বলতে চাইছি।

আপনি এই সাসুম নিক থেকে একটা পোস্টের সঙ্গে একবার ফেসবুক পেইজ ইয়ার্কি ডট কমের একটা ছবি শেয়ার করেছিলেন গত বছর, মনে পড়ে? ওতে আপনার আসল নাম সহ কি একটা জ্ঞানগর্ভ বানী তারা শেয়ার করেছিল। তাঁর আগে এবং পরে আপনি আপনার সাসুম নিক থেকে ক্রমাগত আপনি একজন বিজ্ঞানী, আপনি গ্রাজুয়েশন করেছেন কোন সাবজেক্ট থেকে, তারপর পড়াশোনা করেছেন কোথায়, আমাজনে চাকরি করেছেন এসব তথ্য শেয়ার করেছেন আপনি কতোটা হেভিওয়েট, তা আমাদের বোঝাতে। আমি শুধু ইয়ার্কিতে শেয়ার করা আপনার রিয়েল নামটা ধরে সার্চ দিয়েছি গুগলে, আপনার সামুর সত্য অ্যাকাউন্ট, আপনার লিঙ্কড ইন, ফেসবুক আইডি, আপনার ইউটিউব চ্যানেল - যা যা আপনি সাসুম অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য দিয়েছেন, তাঁর সবকিছুই মিলে যায়, এভাবে খুঁজে পেয়েছি। আপনার নাম ইলুমিনেটিং ট্যাক্স। আপনি অমুসলিম। আপনি সাসুম অ্যাকাউন্ট থেকে দারুণ সব মানবতাবাদী কথাবার্তা বলেন, নিজেকে একজন আধুনিক মুক্তমনা মানুষ হিসেবে ব্লগের বাকি সবার সামনে প্রতিষ্ঠিত করছেন। কিন্তু আদতে ভেতরে আপনি একজন পাঁড় মুসলমানবিদ্বেষী।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার মন্তব্যটাই দেখুন, আপনি আমাকে মনে রাখতে বলছেন যে দুনিয়ার প্রতিটা মুসলমানের নাকি নিজস্ব এজেন্ডা আছে। আপনার এ বক্তব্য কতোটুকু ভুল, তা আমি জানি। আমার ছোটবোন এই দেশে প্রতিষ্ঠিত একজন সঙ্গীত শিল্পী। আমার বাবার আগ্রহে ছোটবেলা থেকে সে গোপীবাগ আশ্রম, বা তারও আগে জুরাইনের মন্দিরে পূজাপার্বণে নিয়মিত নজরুলের লেখা শ্যামাসঙ্গীত গেয়ে এসেছে। এগুলো আমার পরিবারের ঘটনা, এবং একজন মুসলিম হিসেবে আমি গর্বিত নই এ বিষয়ে। এ নিয়ে আমি অসন্তোষ প্রকাশ করলেও, কখনো উচ্চবাচ্য বা জবরদস্তী করে নিজের মতবাদ চাপিয়ে দিই নি আমার পরিবারে। বলতে পারেন, আমি যদি অসন্তোষ প্রকাশ করলামই, তবে আমি কেমন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দাবীদার। আমার মত হল, বাংলাদেশের একজন অমুসলিমের মুসলিমের প্রতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রমান করবার জন্যে যেমন গরু কোরবানির সময় গরুর ঠ্যাং চেপে ধরার প্রয়োজন নেই, একইভাবে মন্দিরে শ্যামাসঙ্গীত গেয়েও কোন মুসলমানের প্রয়োজন নেই অমুসলিমের প্রতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রমান রাখা। একজন অমুসলিম নির্দ্বিধায়, কোন বাঁধা বিপত্তি ছাড়া নিজের ধর্মকর্মের সমস্ত আচার অনুষ্ঠান এ দেশে পালন করার সমস্ত বন্দোবস্ত করা একজন মুসলিম হিসেবে এদেশের সরকারের, এবং মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব। একে অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিদেন পক্ষে সহনশীল হলেই যথেষ্ট।

এতোগুলো কথা শুধু আপনার - "পৃথিবীর সমস্ত মোসলমানের নিজস্ব এজেন্ডা আছে" - এই কুৎসিত বাক্যটির প্রতিবাদে বললাম। না, সব মুসলমানের নিজস্ব কোন এজেন্ডা নেই। সব হিন্দুর, বৌদ্ধের, খৃষ্টানেরো এজেন্ডা নেই। কিন্তু আপনি যখন আপনার নিজের আসল নাম লুকিয়ে ছদ্মনামে এসে মানবতার বুলি কপচাতে কপচাতে ঠুস করে এসে বলবেন দুনিয়ার সব সুন্নি সব শিয়ার কল্লা ফালাতে উদগ্রীব, বা সব মুসলমান একেকটা এজেন্ডা বা ধান্দাবাজ - তখন সুস্পষ্ট বোঝা যাবে যে আর কারো এজেন্ডা থাকুক না থাকুক, আপনার অবশ্যই এজেন্ডা আছে।

খেয়াল করে দেখুন, এতোগুলো কথা বললাম কিন্তু আমি রিক্স নিয়ে, নিজের নামে। আমার পরিচয়, বাসস্থান, কর্মস্থল - সবকিছু প্রকাশ্য। এবং আমার এসমস্ত কথায় প্রায় সব মতাদর্শের মানুষই কমবেশী হার্ট হবে। ফলে আমি রিস্কে থাকবো, আমার পরিবার রিস্কে থাকবে। কিন্তু আপনি যদিও ইলুমিনেটিং ট্যাক্স, অথচ এখানে সাসুম নাম ধারন করে বেশ একটা সেইফ সাইডে থাকবেন সব দিক থেকে। আমি ক্রুদ্ধ হবো না আপনার প্রতি? আমি সব কিছু রিক্সে ফেলে নিজের জাতিধর্মের পাশে দাঁড়াচ্ছি, আপনি কিসের রিক্স নিচ্ছেন? আপনি কি হারাচ্ছেন? ক্ষুব্ধ হবার কারন বুঝছেন?

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: এভো, এআর১৫, অগ্নিবেশ - এরাও অমুসলিম। অমুসলিম হওয়াটা সমস্যা না। এদের মতলববাজীটা সমস্যা। আপনি এভো, এআর১৫, আর অগ্নিবেশের অ্যাকাউন্টে ঢুকে বিভিন্ন ব্লগে ওদের কমেন্টগুলো পড়লে সহজেই বুঝতে পারবেন, ওরা শুধু ভিন্ন মত পোষণ করার জন্যে উরাধুরা ওয়েবসাইট থেকে হাদিস কপি পেস্ট করে না, ওদের টার্গেট হচ্ছে সুনির্দিষ্টভাবে ইসলামকে একটা জঙ্গি মতাদর্শের পশ্চাৎপদ ধর্ম হিসেবে প্রমান করা। যেমন এভো এই পোস্টে যে হাদিস শেয়ার করার চেষ্টা করলো, ওতে ও হাদিস দিয়ে প্রমান করার চেষ্টা করলো যে ইসলামের আগেই আরব সমাজে নারীরা ভালো ছিল। ইসলাম এসে তাদের আরও পেছনে টেনে নিয়ে গেছে।

এটা স্রেফ একটা উদাহরন। ওদের এই ধারাবাহিক স্টান্টবাজী আমি অনেক লম্বা সময় ধরে দেখে এসেছি এই প্লাটফর্মে। আমার তো সময় নেই শিট ডিল করার। আমার ফ্যাক্ট নিয়ে কাজ।

এভো আর এআর১৫ বাংলাদেশ থেকে লগিন করে বলে আমার মনে হয় না। ওদের বাংলা খুব স্পেসিফিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক টান মাখা বাংলা। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ইস্যু ছিল না। বামফ্রন্ট মুসলমানদের টার্গেট করে নি কখনো। তৃণমূলের জনসমর্থনের শক্ত ভিত্তি মুসলমানেরা। আর বাকি থাকে কে? এভো, অগ্নিবেশ, এআর১৫ কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ধূর্ত সাপের মতো, বুঝতে আপনার সমস্যা হতে পারে সাসুম, আমার হয় না।

নিজেকে ওদের একজন প্রমান করবেন না। প্যাঁচাল পাড়তে মন না চাইলে চুপ থাকবেন। কূটচাল ডিল করার মতো সময় নেই আমার হাতে।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আর মুসলিম না হয়ে সহিহ হাদিস, জয়ীফ হাদিস, কুরআন অনলি, গায়েরে মুকাল্লিদ ইত্যাদি নিয়ে আলপটকা মন্তব্য করা বন্ধ করুন। যদি জেনুইন আগ্রহ থাকে, আলেমদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বদমতলবে, মুসলমান এবং ইসলামকে সাইজ করার জন্যে এসব সেনসিটিভ বিষয়ে মাথাব্যাথা না থাকাই ভালো। রাসুল (সঃ) - এর দুহিতাকে খালি ফাতেমা বলাটাও অভদ্রতা। আমার, আমাদের তো অভ্যাস হয়ে গিয়েছে একটানে শ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীচৈতন্য, শ্রীকৃষ্ণ , অর্থাৎ আপনাদের অবতারদের নামের আগে সম্মানসূচক শ্রী শব্দটি ব্যবহার করার। এতোটুকু সৌজন্যতাবোধ নেই কেন আপনার মধ্যে?

১৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৩

সাসুম বলেছেন: @সাজিদ- আপনি ভুল করেছেন। সেটা জাস্ট ফান করে শেয়ার করেছিলাম এবং কোথাও দাবি করিনাই আমি সেটা ছিলাম। জাস্ট ইয়ার্কি করেই শেয়ার করেছিলাম, আপনি সেটা আমাকে ধরে নিয়েছেন, এবং বুঝতে ভুল করেছেন।

আমার নাম ইলুমানিটিং ট্যাক্স না, আমার ১৪ গুষ্টির কারো ইউটিউব চ্যানেল নাই। আমি অমুসলিম না। আমি মানবতাবাদী কথা বলিনা বরং লজিকাল কথা বলি। আমি কারো সামনে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার কিছু নাই। আমি এম্নিতেই যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত।

আমার পরিচয় ব্লগের অন্তত ১৫ জন লোকে জানে। অন্তত ৫০ জন উপরের ব্লগার এর সাথে আমার ফেবুতে রেগুলার কন্টাক্ট হয়। কাভা ভাই জানে, রিফাত জানে, অপু জানে, হামা ভাই জানে আমি আপনার দেয়া উপরের কোন কিছুই না। সো- আপনার এই যে ভুল ধারনা এটা আশা করি কাটবে এবার।

সেকেন্ডলি- আমি মোটেই পাঁড় মুসলমানবিদ্বেষী নই। আমি ধর্ম নামের আড়ালে অধর্ম যারা করে এবং এটাকে নিয়ে যারা বিজনেস করে তাদের বিরোধিতা করি। আর আপনার পোস্টে এটাই লাস্ট ইন্টের‍্যাকশান কারন আপনি চাপাতি হাতে নিয়ে যেভাবে দৌড়াচ্ছেন আমাকে এখন এটা ভয়ানক।

ভাল থাকুন।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: দুঃখের বিষয় হচ্ছে, চাপাতিবাজীর সঙ্গে ইসলামের সংশ্রবমুক্তির জন্যেই আমি লিখি। তবুও আপনাদের পোষাচ্ছে না। আপনি যে আর মন্তব্য করবেন না, এই দুক্ষে আমি কাঁদছি এখন বসে বসে।

১৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৯

সাসুম বলেছেন: পৃথিবীর সমস্ত মোসলমানের নিজস্ব এজেন্ডা আছে" - এই বাক্যটা আসলে আমার ঠিক ভাবে লিখা হয়ে ঊঠেনি বা বুঝাতে পারিনি । আমি বুঝাতে চেয়েছিলাম প্রতিটা মোসলমান এর নিজস্ব মতবাদ আছে, প্রতিটা ব্যাপার কে কিভাবে দেখবে। দুনিয়ার সকল মানুষের ই নিজের মতবাদ আছে কিভাবে দেখবে। এই জেনারেল মানুষ রা যখন একত্র হবে তখন তাদের কিছু চিন্তা ভাবনা ও আবার এক হবে এবং তারা সেই সামগ্রিক চিন্তা ভাবনা তাদের গ্রুপ অনুযায়ী প্রকাশ করবে।

শিয়া দেখবে এক ভাবে, সুন্নী দেখবে এক ভাবে, কাদীয়ানী দেখবে এক ভাবে , বাহাই রা দেখবে এক ভাবে, সুফি রা দেখবে এক ভাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.