নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ, আমার প্রাণ, মুক্তিযুদ্ধ আমার চেতনা\nসাংবাদিকতা পেশা এবং নেশা!

আহমাদ ইশতিয়াক

কুয়াশা ভেজা কোনো এক রাত শেষের ভোরে প্রান্তর ভেজানো শিশিরে, আমি জন্মেছি, কারো স্বপ্নে বিভোর ঘুম জড়ানো কন্ঠে জল পেতেছি দৃষ্টির আড়ালে। জোসনা ভেজা রাতে চন্দনের ঘ্রাণে ভোরের শিউলিও থমকে ছিলো খানিকটা। মৃদু হাওয়ার স্পন্দনে বকুল ফুলের নেশা আমায় গ্রাস করেছিলো শুভ্র আবহে। ঘরের এককোনে অনাদরে মলিন হওয়া তারপুরার বেদনার সাথে কেনো যেনো বন্ধুত্ব ছিলো শতাব্দী ধরে। চিঠির কালি শুকিয়ে পড়তো জলেশ্বরীর জলপদে। শ্রাবণের সন্ধ্যার বর্ষণের পানে আমি কতোকাল চেয়েছি। তরুণীর ভেজা চুল আকাশের স্বপ্নের শরৎের বিকেল কাশফুলের শুভ্রতা লুটতো আমাকে সঙ্গী রেখে। কারো স্বপ্নে, এক ফোঁটা নিঃশ্বাসে, হয়তো একটুখানি তৃপ্তিতে আমি দিনশেষে ফুরিয়ে যাবো মহাকালের বুকে। হয়তো স্বপ্ন ভিড়বে কুয়াশায়, বকুলের ঘ্রাণে, শ্রাবণের বর্ষনে!

আহমাদ ইশতিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাংবাদিকতার প্রাথমিক নীতি

২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:১৭



সাংবাদিকতার স জানেন না অথচ বাংলাদেশের সাংবাদিকতার উচ্চ পদ গুলো তাদের দখলে! সাংবাদিকতা ফেলনা নয় যে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে ব্যাবহার করবে। সাংবাদিকতা এক নেশার নাম, যেখানে মাসিক বেতন না পেয়েও কাজ চালিয়ে যান হাজারো সাংবাদিক। আচ্ছা মিডিয়া এথিকস সম্পর্কে জানেন তো? আবার শুনে ভাবছেন এটি আবার কোথাকার আমদানি! কোনটি প্রিন্ট মিডিয়া কিংবা ব্রডকাস্টে প্রচার হবে। কোনটি প্রকাশ হবেনা। কোনটি বাতিলের খাতায় পড়বে কিংবা কোনটি জরুরি ভিত্তিতে প্রচার হবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ সাংবাদিক আসেন শুধুই সাথে একটি ডিগ্রি যোগ করে। সাংবাদিকতা সম্পর্কে অনেকের ন্যূনতম ধারনা নেই।


প্রচণ্ড বিকৃত ছবি ছাপা হচ্ছে!
আচ্ছা ধরুন একজন ধর্ষণ হলো, যেমন পিরোজপুরের আকলিমা বেগম। নিউজটা কিভাবে যাবে? ছবি কিংবা নাম দিলে কাটতি কিংবা টিআরপি বাড়বে, আর আপনি নামটাও দিলেন এবং ধর্ষিতার ছবিও দিলেন। সাথে আপনার পোর্টালের হু হু পাঠক কিংবা দর্শক বাড়লো আপনিও খুব খুশি। আমিতো বড় সাংবাদিক হয়ে গেলেন। সত্যি কথা বলতে গেলে আপনি একজন মুদি সাংবাদিক। আপনি সাংবাদিকতার চুলটাও জানেন না।

অমুক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন মারা গেছেন আপনি লাশের ছবি সহ পরদিনের সংবাদপত্রের ফ্রন্ট পাতায় ছাপিয়ে দিলেন। আর আপনার পত্রিকা দুপুরের আগে বাজারে কিংবা গলির মোড়ে গায়েব, সব যে বিক্রি শেষ। আপনি অনেক বড় সাংবাদিক। এবার বোধহয় দেশের সেরা রিপোর্টার আপনি হবেন। প্রেস ক্লাব থেকে আপনাকে সেরা রিপোর্টারের ক্রেস্ট দেয়া হবে, মূলত আপনি মুদি সাংবাদিক পদক পাওয়ার দাবিদার ছিলেন। সাংবাদিকতার ন্যূনতম ধারনা আপনার নেই।



আহত কিংবা লাশের ছবি ছাপা যাবেনা।
রানা প্লাজার কথা মনে আছে? মনে থাকারই কথা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় উদ্ধারকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করার জন্য কয়েকটি সুড়ঙ্গের মতো করেছিলো। যাতে সহজেই উদ্ধার করা যায়, এবং কয়েক জায়গায় রড কেটে বৃত্তের মতো করেছিলো দড়ি কিংবা পানি দিতে উদ্ধারকর্মীদের। আমাদের বীর সাংবাদিকরা ওখানে ক্যামেরা পেতেছেন ভিডিও করে টিভিতে প্রচার করেছেন সার্বিক অবস্থা জানানোর জন্য, অথচ একবারের জন্যও খেয়াল করলেন না ওই কয়েক মিনিটে আরো কয়েকজনকে উদ্ধার করা যেতো! এটা বাংলাদেশে সাংবাদিকতার মান। তথা কার আগে কে সংবাদ প্রচার করবে, কিংবা কে কতো আগে যাবে! এই তো সাধারণ কিছু।
এবার আসুন কোর্টে বিচারাধীন কোনো আসামীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার নীতি কি হবে। যখন একজন অভিযুক্ত আসামী মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে আছেন কিংবা জনৈক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আদালতে বিচারাধীন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সংবাদ প্রচারিত হবে অভিযুক্ত হিসেবে। কোনো ক্ষেত্রেই ট্যাগ লাগানো যাবেনা কিংবা আসামী প্রমান করে কোনো ধরনের হেয় করা যাবেনা। যদি আদালত কতৃক মামলার রায় হয় সে ক্ষেত্রেই শুধু বলা যাবে। মামলার রায়ের আগে খুনি, সন্ত্রাসী, চোরাকারবারি, ছিনতাইকারী, চোর কিংবা দুর্নীতিবাজ বলতে পারবে না একজন সাংবাদিক। যিনি বলবেন তিনি সাংবাদিকতার নীতি বর্জন করে উক্তি করেছেন।

একজন সাংবাদিক সর্ব সময়ে নিরপেক্ষ থাকবেন। হ্যাঁ তিনি কোনো দলের আদর্শ ধারন করতে পারেন কিন্তু সংবাদে তার কোনো প্রতিফলন করতে পারেন না। উদ্ধৃতি প্রকাশের ক্ষেত্রে সাবধান থাকা জরুরি। অবশ্যই আসামী এবং বাদী দুই পক্ষের মন্তব্য প্রকাশ করতে হবে। এক পক্ষের বিবৃতি প্রকাশ সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত। কোনো ক্ষেত্রে যদি বিবৃতি প্রদান করতে হয় তবে বিবৃতিদাতা যা বলেছেন অবশ্যই পূর্ণ বিবৃতি প্রকাশ করতে হবে। আংশিক কোনো ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য নয়। সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত কোনো প্রচার সংবাদ হিসেবে গণ্য হবেনা। কোনটি সংবাদ কিংবা কোনটি সংবাদ না এটি জানা খুব জরুরি।


একজন সাংবাদিককে অবশ্যই পরিপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। সংবাদের ক্ষেত্রে কোনভাবেই নিজস্ব মন্তব্য প্রকাশ করা যাবেনা। যদি প্রকাশ করা হয় তবে এটি সংবাদ হিসেবে পরিগনিত হবেনা। একজন সাংবাদিক যদি কোনোভাবেই জোরপূর্বক সংবাদ গ্রহণ করেন কিংবা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাক্তির নাম প্রকাশ করেন তিনি মুদি দোকানদার হিসেবে খুব সাফল্য লাভ করবেন। পরিশেষে সাংবাদিকতা একটি পেশা এবং নেশা। যিনি যেভাবে গ্রহণ করেন। তবে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার পূর্ণ ব্যাবহার এখনো সৃষ্টি হয়নি, আবার সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বাধ্যতামুলক সাংবাদিকতা বিষয়ে পাঠের পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই বাংলাদেশে অধিকাংশ সাংবাদিক আসে শুধুই জীবিকার তাগিদে। তবুও আশায় থাকি আমাদের দেশে সাংবাদিকতার নীতি এবং আদর্শ বাস্তবায়ন হবে পরিপূর্ণ রুপে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.