![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
মহান আল্লাহ বলেনঃ ...নিশ্চয় সত্যের বিপরীতে ধারনা কোন কার্যকারিতা রাখেনা । ( সুরা ইউনুস – ৩৬)
মহান আল্লাহ এখানে আমাদের স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেনঃ সত্য সত্যই ।
মহান আল্লাহ অন্যত্রে বলেনঃ তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করনা এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করনা । ( সুরা বাকারাহ – ৪২
)
সুরাহ বাকারার এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাছির তার তাফসিরে তাফসিরে তাবারি থেকে বর্ননা করেছেন যেঃ ইহুদিদের ভিতর এই অভ্যাসটা ছিল যে তারা সত্য গোপন করত । এটা তাদের কুঅভ্যাস ছিল । তাই আল্লাহ তায়াল তাদের উদ্দেশ্যে এই কথা বলেন। ( তাফসির ইবনে কাছির , ১ম খন্ড /২১৮ নং পৃষ্ঠা ) । বস্তুত আল্লাহ তায়ালা এই কথাটি সমগ্র মানব জাতির জন্যই ।
আমরা যখন দেখি মানুষ মিথ্যা বলছে তখন সত্য উদঘাটন করতে চাই কিন্তু আমরা পুর্বে থেকে মিথ্যার প্রতিকার করতে চাই না ।
ইতিহাস থেকে কথা বলার চেষ্টা করব । ইনশাআল্লাহ । আমরা এখানে খুব সংক্ষেপে দু একটি কথা বলার আপ্রান চেস্টা করব। বাইবেল ও কুরানের ভিতরে অনেক মিল পাওয়া যায় । তবে বৈপরীত্যর সংখ্যাও কম নয় । মুলত , দুনিয়ার সকল ধর্ম গ্রন্থের ভিতর অনেক মিল রয়েছে । অধিকাংশ মৌলবাদী খ্রিস্টানরা বলে থাকে যে বাইবেল থেকে কুরান নকল করে লিখা হয়েছে। বস্তুত এটা তাদের মনগড়া মিথ্যা মাত্র । পবিত্র কুরানের ব্যাপারে P.K.Hitti তার The History of Arabs বইতে (জ্ঞানকোষ প্রকাশনী , পেজ নং ২৮) বলেনঃ এই বইটি একটি শক্তিশালী ও তেজোদ্দীপ্ত বানির মুর্তরূপ যা সাধারনত আবৃত করা হয় এবং এর অন্তর্নিহিত ভাবের উপলব্ধি জন্য মুল পাঠ্যাংশটি শোনা দরকার । কোরানের ছন্দ ও অলংকার, তার ধ্বনির উত্থান পতন ও দ্রুতগতি কোন অংশই কম গুরুত্বপুর্ন নয়, এবং এই বৈশিষ্ট্যের কিছুটা ক্ষতি সাধন না করে কবিতাগুলার অনুবাদ সম্ভব নয়।
আমরা যদি একটু ভাল করে খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাব যে বাইবেল ও কুরানের ভিতর কৃষ্ণ পক্ষ শুল্ক পক্ষের পার্থক্য রয়েছে। যেমন একটা উদাহারনঃ আদিপুস্তক ১৯/৩০-৩৮ এ স্পস্টভাবেই বলা হয়েছে যে – নবি লুত তার দুই মেয়ের সাথে মদ পান করে মাতাল হয়ে পরপর ২ দিন ব্যভিচারে লিপ্ত হয় । পক্ষান্তরে কুরানে আল্লাহ লুত (আ) এর বর্ননা করেনঃলুত (আ) তার কওমকে বলছেনঃ ‘আমি তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত রাসূল। (শো‘আরা ২৬/১৬২)
উপরোক্ত বাইবেলের ঘটনার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে রাহমাতুল্লাহ কিরানবি তারিকুল আউলিয়া নামক পাদ্রি স্মিথ এর বই থেকে উল্লেখ করে বলেনঃপাদ্রি স্মিথ বলেনঃ লোটের এই অবস্থা দেখে ক্রন্দন করা ছাড়া উপায় নেই । ...তবে সবচেয়ে অবাক বিষয় যে , ইনিই কি সেই লোট যিনি সাদোমের সকল পাপ ও অন্যায় থেকে পবিত্র থাকলেন?? [ আল্লামা রাহমাতুল্লাহ কিরানবি রচিত ইযহারুল হক্ক – ২য় খন্ড, পেজ নং ৩৯৫]
তাহলে আমরা এই মাত্র একটা উদাহারন থেকে বুঝতে পারি যে কুরান ও বাইবেলের মদ্ধ্যে পার্থক্য কত? বস্তুত খ্রিস্টানরা যে ভাবে দাবি করে যে বাইবেল থেকে কুরান নকল করা হয়েছে ঐ রকম দাবি বাইবেলের ক্ষত্রেও করা যায় । যেমনঃ Acharay S নামক এক আমেরিকা মহিলা লিখেছেনঃ The Bible is not the "word of God," but stolen from pagan sources. Its Eden, Adam and Eve were taken from the Babylonian accounts; its Flood and Deluge is but an epitome of some four hundred flood accounts; its Ark and Ararat have their equivalents in a score of Deluge myths; even the names of Noah's sons are copies, so also Isaac's sacrifice, Solomon's judgment, and Samson's pillar acts; its Moses is fashioned after the Syrian Mises; its laws after Hammurabi's code. Its Messiah is derived from the Egyptian Mahdi, Savior, certain verses are verbatim copies of Egyptian scriptures. Between Jesus and the Egyptian Horus, Gerald Massy found 137 similarities, and those between Christ and Krishna run into the hundreds. How then can the Bible be a revelation to the Jews?
[http://www.truthbeknown.com/bible.htm]
তাহলে আমরা এভাবেই বলতে পারি যে কুরান যদি বাইবেল থেকে চুরি হয়ে থাকে তাহলে বাইবেল কি হয় নি?? এই বিষয়ে সামনে আমরা সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করব । ইনশাআল্লাহ ।
আমরা ১মে বাইবেল নিয়ে কিছু কথা বলা জরুরি মনে করছি । তারপর কুরান নিয়ে কথা বলব ।
১মে আমরা বাইবেল থেকে আলোকপাত করিঃ
বাইবেল কুরানের পুর্বের কিতাব । পবিত্র কুরানে তাওরাত , যাবুর ও ইঞ্জিল এর কথা উল্লেখ রয়েছে । কিন্তু বর্তমান বাইবেল তাওরাত , যাবুর ও ইঞ্জিল এর সমষ্টি নয় । বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি থেকে প্রকাশিত বাইবেলে ( পুরান ও নতুন নিয়ম একত্রে) নতুন নিয়মের শেষ হবার পর কিছু টিকা লিখা হয়েছে । ৪১০ নং পৃষ্ঠাতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ Byblos নামে (বর্তমান) লেবাননে সমুদ্র বন্দর ছিল। এই বিবলস ছিল আমদানিকৃত Papyrus এর কেন্দ্রস্থল । এই বিবলস থেকে বাইবেল শব্দটি এসেছে।
এই বাইবেলকে বর্তমান বাংলাদেশে কিতাবুল মুকাদ্দাস নামে চালানো হচ্ছে । মধ্যযুগ থেকে আরবে তারা এই নাম দিয়ে বাইবেল প্রচার করতে থাকে । বর্তমান তারা দক্ষিন এশিয়াতেও এই নাম চালাচ্ছে । আরবে হলে সমস্যা নয় কিন্তু অনারাব দেশে সমস্যা । কোন মুসলিম নাম শুনলেই মনে করবে এটা তো ইসলামিক বই। এর জন্যই তারা বাইবেল এর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। খ্রিষ্টানরা তাদের ধর্মগ্রন্থকে অনুবাদের মাধ্যমেও পরিবর্তন করে যার প্রমান মেলে এই মুল বইয়ের নাম পরিবর্তন দেখলে ।
বাইবেল এর নাম যিশু খ্রিস্টের সময় কিছিল?? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে যিশু খ্রিস্ট এই বাইবেল শব্দটি যানতেন না । বাইবেল অর্থ বই । অনেক গুলা বই নিয়ে বাইবেল । পুরা বাইবেল এর ভিতর এ এই বাইবেল শব্দটি নেই । মোশির যুগ থেকে শুরু করে যিশুর যুগ পর্যন্ত এই বাইবেল এর বড় অংশটি প্রচলিত ছিল। সেটা ভুল্ভাবেই হোক অথবা সঠিকভাবেই হোক । কি নাম ছিল তখন এই পুরাতন নিয়ম(Old testament) এর । নতুন নিয়ম থেকে আমরা এই পুরাতন নিয়মের কিছু নাম জানতে পারি যা যিশু নিজে বলে গিয়েছেনঃ
১। The Scripture/Scriptures : এর মুল অর্থ লিখিত বিষয় । তবে একে ধর্মগ্রন্থ বলে আমরা উল্লেখ করি । মথি ২১/৪২; ২২/২৯; ২৬/৫৪; ২৬/৫৬; মার্ক ১২/১০; ১২/২৪; ১৪/৪৯; ১৫/২৮
২। The Law and the prophets (Matthew 5/17; 7/1; 11/13; 22/40; Luke 16/16; 24/44; John 1/45; Acts 13/15; 2414; 28/23; Romans 3/21)
৩। The law of Moses, and in the prophets, and in the psalms। (লূক ২৪/৪৪। লূক ২০/৪২; প্রেরিত ১/২০)
এভাবে আমরা দেখতে পাই যে যিশু বা তার শিষ্যগন বাইবেল বা পুরাতন নিয়ম শব্দগুলা ব্যবহার করতেন না । বস্তুত তারা এই শব্দদ্বয়ের সাথে পরিচিত ছিলেন না । জানতেন না । তারা উপরের ভাষায় ব্যবহার করতেন ।
এই বাইবেল শব্দের ব্যখ্যায় ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার “পবিত্র বাইবেলঃ পরিচিতি ও পর্যালোচনায়” বইতে ১ম অধ্যায়ে যে কথাগুলা তুলে ধরেছেন তা নিম্নরূপঃ
বাইবেল শব্দটার অর্থ ‘পুস্তক’। ভূমধ্যসাগরের উপকূলে বর্তমান বৈরুতের নিকটবর্তী প্রাচীন ফনিশিয়া ( Phoenicia ) রাজ্যের একটা শহরের নাম ছিল ‘বিবলস’ ( Byblos )। এ শহর থেকেই গ্রিকরা প্রাচীন ‘কাগজ’ প্যাপিরাস ( Papyrus ) আমদানি করত। এজন্য গ্রিক ভাষায় প্যাপিরাস বা কাগজ এবং প্যাপিরাস বান্ডিল ( papyrus scroll ) ‘বিবলস’ ( Byblos / biblos ) এবং কাগজে লেখা ছোট পুস্তক ‘বিবলিয়ন’ ( biblion = small book ) নামে পরিচিত ছিল। মাইক্রোসফট এনকার্টা বিশ্বকোষের ‘বাইবেল’ আর্টিকেলে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:
The term Bible is derived through Latin from the Greek biblia, or “books,” the diminutive form of byblos, the word for “papyrus” or “paper,” which was exported from the ancient Phoenician port city of Biblos. By the time of the Middle Ages the books of the Bible were considered a unified entity.
অনুবাদঃ“বাইবেল শব্দটা ল্যাটিন ভাষার মাধ্যমে গ্রিক ‘বিবলিয়া’ শব্দ থেকে আগত। এটা মূলত ‘বিবলস’ শব্দ থেকে গৃহীত। বিবলস অর্থ ছিল প্যাপিরাস বা কাগজ, যা প্রাচীন ফনিসিয়ান বন্দরনগরী ‘বিবলস’ থেকে আমদানি করা হত। মধ্যযুগে এসে বাইবেলের পুস্তকগুলোকে একীভূত অস্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হত।”
আব্দুল্লাহ আল জাহাঙ্গীরের বক্তব্য এখানেই শেষ ।
বর্তমান আমরা বাইবেল এ পুরাতন নিয়ম এ ৩৯ টি বই দেখতে পাই । এটা প্রোটেস্টান্দের বাইবেল অনুযায়ি। ক্যাথলিকদের রয়েছে আরও ৭ টি বেশি । মোট ৪৬ টি । এবং নতুন নিয়মে রয়েছে ২৭ টি । এই ২৭ টি বইয়ের অধিকাংশ লেখা খৃষ্ট ধর্মের জনক পলের । ১ম খ্রিষ্টীয় শতাব্দির (৩৭-৯৫ খ্রি) প্রসিদ্ধতম ইহুদি ঐতিহাসিক যোসেফাস বাইবেল এর পুরাতন নিয়মের ব্যপারে বলেনঃ
We have not therefore among us innumerable books that disagree and contradict each other, but only two and twenty,embracing the record of all history, and which are justly considered divine compositions.Of these, five are the books of Moses, comprehending both the laws and the tradition respecting the origin of man, down to his own death. This time comprehends a space of nearly three thousand years. But from Moses until the death of Artaxerxes, who reigned after Xerxes king of Persia, the prophets after Moses wrote the events of their day in thirteen books. The remaining four, comprehend hymns to the praise of God, and precepts for the regulation of human life. [ আমাদের ঐশী বই ২২ টি । তার মদ্ধ্য ৫ টি মোশির , ১৩ টি নবিদের , এবং ৪ টি অন্যান্য গিত , সঙ্গিত] ( THE ECCLESIASTICAL HISTORY OF EUSEBIUS PAMPHILUS,page no 97 and 244-245)
এই হল যোসেফাসের বক্তব্য । কিন্তু আজ আমাদের নিকট পুরাতন নিয়মের বই ৩৯/৪৬ টি। জানিনা যোসেফাস এর নিকট কি এগুলা ছিল কিনা?? না তিনি বাকি বইয়ের কথা বলেন নি ।
যাইহোক , বাইবেল এর মদ্ধ্যে অনেক গোজামিল রয়েছে। বর্তমান বাইবেল গবেষকরা বলেন আমাদের নিকট বাইবেলের স্ক্রিপচার রয়েছে। সেটা নির্ভুল । তাদের এই কথাটিও একটা প্রতারনা ।এই বিষয়ে পরে আলোচনা করব । বাইবেল এর ভিতর অনেক আশ্লিল কথা রয়েছে। ভুল রয়েছে।
চলবে......
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
বুলিয়ান বীজ-গণিতে ও লজিকের বইতে 'ট্রুথ টেবল' দেয়া আছে; সেটা বুঝার চেস্টা করেন