নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাগতম অদৃশ্যের এই ব্লগে।।আসবেন , দেখবেন , ঘুরবেন ,বুঝবেন - হারিয়ে যাবেন এই তো দুনিয়ার খেলা। আমি শুধু রুপক মাত্র ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭

সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্‌।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপারেশন সাইলেন্ট ঈগল: (সম্পুর্ন কাল্পনিক)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২৫

রাত দুটো বেজে উনচল্লিশ মিনিট। টেকনাফের আরএইচডি বাংলো রিভার জেটিতে ল্যান্ড করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি Mi 17 হেলিকপ্টার। সাথে সাথে লাফিয়ে নেমে আসে দশ সদস্যের একটি প্যারাকমান্ডো ইউনিট। মেজর হাসান আরিফ ইউনিট লিডার। জেটিতে আগে থেকেই প্রস্তুত আছে বাংলাদেশ নেভীর একটি সাউন্ডপ্রুফ হাইড্রোলিক স্পীডবোট। কমান্ডোরা চড়ে বসে স্পীডবোটে। নিঃশব্দে যাত্রা শুরু করে বোটটি। গন্তব্য মিয়ানমারের মংডু।

মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের সম্ভাব্যতা ও যৌক্তিকতা যাচাইয়ে সেখানকার প্রকৃত ও বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারনা নিতেই মুলত এই অভিযান। কমান্ডোদের সকলের পরনে ক্যাজুয়াল পোষাক। প্রত্যেকের কাছে একটি করে নাইন এমএম রিভলবার । এছাড়া ও রয়েছে দুটি আমেরিকান স্মাইপার রাইফেল, কয়েকটি হ্যানড গ্রনেড, দুটি হাইরেজুলেটেড নাইট ভিশন ভিডিও ক্যাম আর দুটি হাইরেন্জড ওয়্যারলেস ডিভাইস।

ব্রিফ করছেন মেজর হাসান।
ডিয়ার কমান্ডোজ...দিস অপারেশন অনলি ফর ইনফরমেশন কালেকশন রিগারডিং দ্যা এ্যকচুয়াল সিচুয়েশন এন্ড ফ্যাক্টস। উই হ্যাভ টু রিপোর্ট হেড কোয়ার্টার টাইম টু টাইম। নো ক্যাজুয়াল্টি ইজ এক্সপেক্টেড। অল কাইন্ড অব ক্লাশেশ শুড বি এভয়েড।
দ্যা অপারেশন ইজ নেইমড "অপারেশন সাইলেন্ট ঈগল"
অল দোজ ক্লিয়ার??? ইয়েস্ স্যার...
একসাথে জবাব দেয় কমান্ডোরা।

পিন পতন নীরবতা। ঠিক তিনটা বেজে সতের মিনিট। বন্ধ হয়ে যায় বোটের ইন্জিন। নিঃশব্দে একটি পুরাতন জেটিতে ভিড়ে স্পীডবোটটি। নেমে পড়ে কমান্ডোরা। যে যার মত পজিশিন নিয়ে নেয়। ব্যাগ থেকে একটি ম্যাপ বের করে মেজর হাসান। একবার চোখ বুলিয়ে ঠিক করে ফেলে গন্তব্য।
মুভ্... নির্দেশ দেয় কমান্ডোদের।

লোডেড রিভলবার হাতে একটি জংগলের পাশ ঘেষে অন্ধকার কেটে এগিয়ে চলছে কমান্ডোরা। সবার আগে মেজর হাসান। বাতাসে কেমন যেন একটা উৎকট দুর্গন্ধ। রুমাল দিয়ে নাক চেপে ধরে সবাই। পকেট থেকে টর্চ বের করে মেজর হাসান। টর্চ অন করতেই দেখা যায় অসংখ্য আধাগলিত লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বেশ কয়েকটি লাশের ছবি নেয়া হয়। সে কি বিভৎস!
এগিয়ে চলছে সবাই। প্রায় ঘন্টাখানেক হাটার পর জংগল পেরিয়ে একটি টিলার সামনে এসে পড়ে তারা। ততক্ষনে প্রায় ভোর হয়ে এসেছে। কমান্ডোরা যে মত করে একা একা ফজরের নামাজ আদায় করে নেয়। মেজর হাসান কমান্ডোদের দুটি দলে ভাগ করে নেন। নিজের নেতৃত্বে একটি, অন্যটি মেজর কামরানের নেতৃত্বে। মেজর কামরান নিউলি প্রমোটেড মেজর, সেনাবাহিনীর একজন চৌকষ প্যারা কমান্ডো।

ব্রিফ করতে শুরু করেন: এই টিলা পার হলেই একটি গ্রাম। আমাদের অপারেশন শুরু হবে মুলত এখান থেকেই। আমাদের কাজ হবে এখানকার মানুষের সাথে মিশে যাওয়া। তাদের কাছ থেকে কৌশলে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নেয়া এবং তাদের অজান্তেই এসব অডিও ভিডিও রেকর্ড করে নেয়া। যতবেশি এভিডেন্স কালেক্ট করা যায় করতে হবে। কোন অবস্থাতেই কোন প্রকার সংঘর্ষে যাওয়া যাবে না। সময় মাত্র বার ঘন্টা। বার ঘন্টা পর আমরা সবাই আবার ঠিক এখানেই মিলিত হব।
এ্যানি ডাউট? নো স্যার...

টিলা পার হয়ে দুটি দল দুই দিক দিয়ে নেমে যায়। মেজর হাসান তার দলটি নিয়ে কিছুটা দক্ষিন পুর্ব দিকে টার্ন করে গ্রামে ঢুকে পড়ে। পনর মিনিট হাটার পরও কোন মানুষের দেখা পাওয়া গেল না। কেমন জানি একটু খটকা জাগে মেজরের। বাইনোকুলার দিয়ে আশেপাশের এলাকা টা অবজার্ভ করতে শুরু করে। হঠাৎ এক জায়গায় চোখ আটকে যায়। একটা ট্রাকের পেছনের অংশ আর জলপাই রংয়ের পোষাক পরা কয়েকজন লোক দেখা যাচ্ছে। কিছুটা এগিয়ে একটা বড় গাছের আড়ালে অবস্থান নেয় মেজর হাসান সহ বাকি চারজন কমান্ডো। এখান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে প্রায় ডজনখানেক বার্মীজ মিলিটারির উপস্থিতিতে ট্রাক থেকে একটার পর একটা লাশ নামানো হচ্ছে। পাশেই খোড়া হচ্ছে একটি বিশাল গর্ত। কি ঘটে গছে আর কি ঘটতে যাচ্ছে বুঝতে বাকি রইল না। বিদ্যুত খেলে গেল পুরো শরীরে। অনেক কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে মেজর।
ক্যাপ্টেন সাব্বির, টার্ন অন দ্যা ক্যামেরা এন্ড কিপ শ্যুটিং দ্যা সীন... নির্দেশ দেয় মেজর।

প্রায় ত্রিশটির মত লাশ মাটিচাপা দিয়ে বার্মীজ মিলিটারি সমেত ফিরে যায় ট্রাকটি। ঘটনাস্থলে এগিয়ে যায় মেজর হাসান। আশেপাশে কাউকে দেখতে পায় না। পিছন ফিরতেই একজন বৃদ্ধ লোককে এগিয়ে আসতে দেখা গেল। কি হয়েছে জানতে চাইলে লোকটি জানায় গতকাল রাতে একটি মিলিটারী দল এসে পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলে। খোজ করতে থাকে আরসা সদস্যদের। কাউকে না পেয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক যুবককে ধরে নিয়ে যায়। সকালে তাদের লাশ নিয়ে ফিরে আসে তারা। আর এখানেই মাটিচাপা দেয় তাদের। এদের মধ্যে তার দুই সন্তানও আছে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বৃদ্ধ লোকটি। জড়িয়ে ধরে সান্তনা দেয় মেজর। বৃদ্ধ লোকটির পুরো স্টেটমেন্ট রেকর্ড করে নেয় ক্যাপ্টেন সাব্বির।

কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখেই মেটো পথ ধরে চারজন কমান্ডোকে নিয়ে এগিয়ে চলছে মেজর হাসান। সকলের পরনে স্থানীয় বাসিন্দাদের পোষাক। বোঝার উপায় নেই যে এরা বাইরের কেউ। কিছু দুর পর পরই একটা দুটো লাশ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সেমিপাকা ঘর বাড়িগুলোর অধিকাংশ গুলোই আগুনে ভস্মীভূত। এখানকার অবস্থা যে কতটা ভয়াবহ তা আসলে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই।

বেলা তখন বারটা বেজে ছাব্বিশ মিনিট। ঘন্টা দুয়েক চলার পর একটা ব্রীজের দেখা মিলে। বেশ হইচই শব্দে চমকে উঠল মেজর হাসান। নিজেকে একটু আড়াল করে বাইনোকুলার দিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করে। মাই গড !!! অস্পষ্টস্বরে বেরিয়ে আসে মেজরের মুখ থেকে। ব্রিজের উপর প্রায় বিশ পচিশজন মানুষকে পিছমোড়া করে বেধে উপুড় করে ফেলে রাখা হয়েছে। পাশেই আট দশটা বার্মিজ মিলিটারি রাইফেল হাতে দাড়িয়ে আছে। আরো একটু এগিয়ে গিয়ে একটা যুতসই জায়গায় অবস্থান নেয় মেজর। ক্যাপ্টেন সাব্বিরকে নির্দেশ দেয় পুরোঘটনা ভিডিও রেকর্ড করার। প্রায় বিশ মিনিট হতে চলল, কি হতে যাচ্ছে বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ এক ঝাক গুলির শব্দ। মুহুর্তেই ঝরে যায় অনেক গুলো তাজা প্রান। মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে মেজরের হাত, কমান্ডোদের চোখে জলে উঠে প্রতিশোধের আগুন, কিন্তু কিছুই করার নেই। হেড কোয়ার্টারের নির্দেশ কোন ভাবেই সংঘর্ষে যাওয়া যাবে না। না হলে এইরকম দশ বারটা বার্মিজ মিলিটারী খতম করতে একজন কমান্ডোই যথেষ্ট।

বেলা তিনটা। মেজর কামরানের নেতৃত্বে পাঁচজনের কমান্ডো দলটি ঢুকে পড়ে অন্য একটি গ্রামে। এখানকার মানুষ গুলো খুবই ভীতসন্ত্রস্ত। অচেনা লোকজন দেখলেই দুরে সরে পড়ছে। এক ধরনের অজানা ভয় আর আশংকায় শংকিত হয়ে আছে গ্রামবাসী। এগিয়ে চলছে মেজর কামরান। হঠাৎ কেমন যেন একটা আওয়াজে আঁতকে উঠে মেজর। বুঝতে আর বাকি থাকে না যে এগুলো হেলিকপ্টারের আওয়াজ। জংগলে ঢুকে পড়ে তারা। পাঁচ মিনিটের মধ্যে হাজির হয় এক জোড়া কোরিয়ান এ্যাপাচী হেলিকপ্টার। গ্রামের কাছাকাছি আসতেই শুরু হয় উপু্র্যুপরি বম্বিং। কাচা আর সেমি পাকা ঘরবাড়ী গুলোতে মুহুর্তেই দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়। ঘরবাড়ী ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে লোকজন। এবার শুরু হয় গুলিবর্ষন। জীবন বাচাতে দিগ্বিদিক হয়ে পালাতে শুরু করে, কিন্তু শেষরক্ষা হয় না। লুটিয়ে পড়ে অনেক গুলো তাজা প্রান। চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়ে মেজরের, কিন্তু ভিডিও রেকর্ড করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

একটি পেশাদার এবং নিয়মিত মিলিটারি ফোর্স কিভাবে এতটা হিংস্র আর আগ্রাসী হতে পারে, ভাবাই যায় না। একটি জাতিগোষ্ঠীকে সম্পুর্নরুপে নির্মুল করবার জন্য যা যা দরকার তার সব প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছে এরা।

হাতে থাকা ওয়্যারসলেস বিপ বিপ করে উঠে। অন করতেই "দিস ইজ মেজর হাসান"
ইয়েস স্যার, দিস ইজ মেজর কামরান।
মেজর কামরান, বল ওদিকের খবর কি?
স্যার, এদিকের অবস্থা ভয়াবহ।
চোখের সামনে ঘটে যাওয়া সব কিছুই জানায় মেজর হাসানকে।
"এদিকেও যা দেখলাম, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মত না। যাই হোক, হেড কোয়ার্টারের সাথে আমার কথা হয়েছে। তোমরা আর সামনে এগিও না। জাস্ট কামব্যাক সুন" বলে মেজর হাসান।

বিকেল পাঁচটা বেজে চৌদ্দ মিনিট। কমান্ডোদের দুটো দলই একত্রিত হয় টিলার ওপাশে। ক্যামেরা থেকে বের করে নেয়া হয় ভিডিও ক্লিপ গুলো। বার্মিজ মিলিটারির মানবতাবিরোধী অপরাধের চাক্ষুষ প্রমান হিসেবে এগুলো খুবই গুরুত্বপুর্ন। সবকিছু আরেকবার চেক করে নেয় মেজর হাসান। এরপর চলতে শুরু করে জংগলের পাশ দিয়ে।

কিছু দুর চলার পর হঠাৎ কান্নার আওয়াজে থমকে দাড়ায় সবাই। মেজরের ইশারায় সবাই গাছের আড়ালে চলে যায়। একটু সামনে এগিয়ে চোখে বাইনোকুলার দিয়ে কান্নার উৎস খোজার চেস্টা করে মেজর। জংগলের ঠিক মাঝামাঝি ছোট্ট একটা গ্রাম। আট দশটা ঝুপড়ী টাইপের ঘর। মাঝখানে বিশাল উঠানের মত একটা ফাকা জায়গা। সেখানে দশ বারজন মহিলা দাড়িয়ে আছে। সামনে অনেক গুলো শিশু কান্না করছে। যে কান্নার আওয়াজ তারা শুনতে পেয়েছিল, তা মুলত এই শিশুদেরই। তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে আছে প্রায় জনাবিশেক বার্মীজ মিলিটারি। সবার হাতেই ভারি অস্ত্র। একজন মিলিটারি সামনে এসে মহিলাদের কিছু একটা জিগ্গেস করছিল। হঠাৎ কারো ইশারায় গুলি করে একটি শিশুকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শিশুটি। মায়ের গননবিদারী আর্তনাদে প্রকম্পিত হয় আকাশ বাতাস। এরপর আরেকটি শিশুর মাথায় রাইফেল তাক করে অন্য একজন মহিলাকে একইভাবে কিছু জিগ্গেস করতে থাকে সেই মিলিটারি। কি ঘটতে যাচ্ছে বুঝতে আর বাকি নেই মেজরের। চোখ বুজে এল। চোখের সামনে ভেসে উঠলো স্ত্রী সন্তানের মুখ। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে মেজর। ইশারায় কাছে ডাকে সবাইকে।

মেজর কামরান, যারা অসহায় নারী আর নিষ্পাপ শিশুদের উপর অত্যাচার করে তারা মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। এই অমানুষদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। আমি যা করতে যাচ্ছি, তাতে হয়ত আমার কোর্টমার্শাল হবে। কিন্তু বিবেকের কাছে আমাকে কোনদিন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকতে হবে না। তোমরা সবাই ফিরে যেতে পার।

স্যার আমরা আপনাকে এভাবে একা রেখে যেতে পারিনা। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে লড়াই যদি করতেই হয়, আমরাও সাথে থাকব। কোর্ট মার্শালের পরোয়া আমরা করিনা।

পুরো এলাকায় একবার চোখ বুলিয়েই প্লান তৈরি করে ফেলে মেজর হাসান। গ্রামের উত্তর পশ্চিমে আড়াআড়ি ভাবে একটি টিলা আছে। মেজর কামরানের নেতৃত্বে পাচ সদস্যের কমান্ডো দলটি অতি সন্তর্পণে পৌছে যায় টিলার ওপাশে।

এদিকে মেজর হাসান তার দল নিয়ে গ্রামের প্রবেশ মুখে অবস্থান নেয়। নিখুত নিশানাবাজ ক্যাপ্টেন শাহরিয়ারের স্নাইপার রাইফেল নিশানা করে আছে শিশুটির মাথায় বন্দুক তাক করে থাকা মিলিটারিকে। অপেক্ষা শুধু কমান্ডের...

মিলিটারি শিশুটিকে মাটিতে ধাক্কা দিয়ে গুলি করার জন্য ট্রিগারে আঙ্গুল রাখতেই মেজরের ইশারায় ট্রিগারে চাপ দেয় ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার। কলাগাছের মত লুটিয়ে পড়ে সে। বাকি মিলিটারিরা কিছু বুঝে উঠার আগেই এক সঙ্গে গর্জে উঠে নয়টি নাইন এম এম রিভলবার। দুইদিক থেকেই লুটিয়ে পড়ে আরো পাঁচজন। দুইদিকের অতর্কিত আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পড়ে বাকিরা। আক্রমন আসলে কোনদিক থেকে হচ্ছে বা আক্রমনকারী দের সংখ্যাই বা কত এসব বুঝতে না পেরে ভীতুর দল কয়েকটি শিশুকে জিম্মি করে এক পাশে সরে যায়। কাপুরুষের দল যে কোন সময় শিশুদের হত্যা করতে পারে ভেবে তাদের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাবার জন্য মেজর হাসান রিভলবার হাতে দৌড়ে সবার সামনে চলে আসে।

হ্যান্ডসআপ! ড্রপ ইউর গান... পেছন থেকে ভারি কন্ঠে কেউ যেন নির্দেশ দেয়। রিভলবার ফেলে দিয়ে হাত উপরে তুলে মেজর। পিছনে না তাকিয়ে চুপ করে দাড়িয়ে থাকে। চোখের দৃষ্টি সামনে জিম্মি থাকা শিশুদের দিকে আর কান পেছন থেকে এগিয়ে আসা নির্দেশদাতা লোকটির বুটের আওয়াজে। এবার শিশুদের ছেড়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে থাকে মিলিটারিরা। এই সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিল মেজর। পেছনের লোকটি জাস্ট তিন চার ফিটের দুরত্বে আসতেই নিজেকে মাটিতে ছুড়ে দেয় মেজর। কিছু বুঝে উঠার আগেই সর্বশক্তি দিয়ে লোকটির পায় কিক করে। সাথে সাথেই ধপাস করে পড়ে যায় লোকটি। ছো মেরে হাত থেকে পড়ে যাওয়া রাইফেলটি নিয়ে ট্রিগার চেপে অর্ধ বৃত্তাকারে একবার ঘুরিয়ে নেয়। অটোমেটিক রাইফেল তার উপর লোডেড, নিমিষেই লুটিয়ে পড়ে আটজন।
ওদিকে টিলা থেকে মেজর কামরানের নেতৃত্বে কমান্ডোরা গুলি করতে করতে নেমে আসে। ত্রিমুখি আক্রমনে পেছনে থাকা মিলিটারীরাও অসহায় মৃত্যুর শিকার হয়। গাড়ী স্টার্ট দিয়ে পালাচ্ছিল কয়েকজন। গ্রামের প্রবেশ মুখে আসতেই একটা হ্যান্ড গ্রেনেড চার্জ করে ক্যাপ্টেন সাব্বির। বিকট বিস্ফোরনে মুখ থুবড়ে পড়ে গাড়ীটি।

স্যার আপনি ঠিক আছেন তো?
আমি ঠিক আছি। তোমরা সবাই ওকে?
ইয়েস স্যার।
লুটিয়ে পড়া একজন হঠাৎ উঠে দৌড় দেয়।
স্যার একজন পালাচ্ছে.... হাটুর নীচে বাধা ছুরিটা বের করে সজোরে ছুড়ে মারে মেজর। সাথে সাথেই চিৎপটাং।

এক এক করে গুনে দেখা গেল একুশজন বার্মীজ মিলিটারি নিহত হয় এই সংঘর্ষে। এইখানে বেশিক্ষন থাকাটা নিরাপদ হবে না, আর লাশ গুলোও এভাবে রেখে যাওয়া ঠিক হবে না ভেবে মেজরের নির্দেশে একটা গর্ত খোড়া হয়। লাশ গুলো গর্তে তাড়াতাড়ি পুতে দ্রুত ঐ স্থান ত্যাগ করে কমান্ডোরা। মেজরের নির্দেশে সম্পুর্ন গোপন রাখা হয় এ ঘটনাকে।

আর এভাবেই অজানা থেকে যায় ভিনদেশের মাটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি সফল অভিযানের ইতিহাস।
CLTD

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি ঘটনা চেপে যাচ্ছেন, এটা সম্পুর্ন কাল্পনিক নয়

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: কি বলেন , তাহলে আপনি সত্যি টা উন্মোচন করুন , হা হা

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৯

কানিজ রিনা বলেছেন: সত্যি যদি এমনি ভাবেই রহিঙ্গাদের আরাকান
স্বাধীন হত। অনেক ভাল লাগা রেখে গেলাম।

৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৭

এম আর তালুকদার বলেছেন: খুব ভাল লাগলো।তবে এমনিভাবে যদি আরাকান বাংলার মানচিত৾ে চলে আসতো তবে ভালই হত।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: সম্ভাবনা নেই !!!!!!!!!!!

৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১৯

কানিজ রিনা বলেছেন: এটা সম্পুর্ন জঙ্গীদের কাজ চাঁদগাজী
মনে মনে এটাই ধারনা রাখুন।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: হা হা হা হা হাহ হা হাহাহ হা হা হাহা হহাহহাহাহাহা

৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০৬

মুনাতাকিম সাইফ বলেছেন: "Tears of Sun" ei movie er ekta scene er sathe apnar likhar miml ase ....

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: কোন সিন টার কথা বলছেন??

৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:২৪

রুহুল আমিন খান বলেছেন: এই টাইপ কোভার্ট ইনভেস্টিগেশন টাইপ অপারেশনে টিমে নাইন এম এম পিস্তলের সাথে স্নাইপার রাইফেল বহন করা অসামঞ্জস্যপূর্ন।
বেটার হত সবাই MP5 সাইলেন্সার প্লাস রেড ডট সাইট তাহলে শর্ট রেন্জে স্নাইপারের কাজ হয়ে যেত।
MP5 বাংলাদেশের ফোর্স গুলো ইউজ করে এই টাইপ কোভার্ট ইনভেস্টিগেশন টাইপ অপারেশনে টিমে নাইন এম এম পিস্তলের সাথে স্নাইপার রাইফেল বহন করা অসামঞ্জস্যপূর্ন।
বেটার হত সবাই MP5 সাইলেন্সার প্লাস রেড ডট সাইট তাহলে শর্ট রেন্জে স্নাইপারের কাজ হয়ে যেত।
MP5 বাংলাদেশের ফোর্স গুলো ইউজ করে

৭| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৬

মুনাতাকিম সাইফ বলেছেন: যখন মার্কিন সৈন্যরা মনিকা বেলুকে নিয়ে ক্যামেরুন বর্ডার এর দিকে যাচ্ছিল, তখন তারা একটি গ্রামে এরকম একশন চালায়। আপনার লিখার সাথে পুরা মিল নাই, তবে লিখা টা পড়ার সাথে সাথে আমার সামনে ওই দৃশ্যটা ভেষে উঠে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.