নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাগতম অদৃশ্যের এই ব্লগে।।আসবেন , দেখবেন , ঘুরবেন ,বুঝবেন - হারিয়ে যাবেন এই তো দুনিয়ার খেলা। আমি শুধু রুপক মাত্র ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭

সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্‌।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চা মানে লাইফটা ভরপুর!

০৯ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৮

বাঙালির আড্ডায় চায়ের কতটা প্রভাব রয়েছে তা অবশ্য বিশ্বের নামকরা বাঙালি পরিচালকদের চলচ্চিত্র দেখলেই বোঝা যায়। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, জহির রায়হানসহ নামিদামি সব পরিচালকদের সেই সাদাকালোর আমল থেকে এখন অবধি তরুণ পরিচালক যতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন সেখানে নানানভাবে চায়ের চিত্র ঠিকই ফুটে উঠেছে। নকশাল, মাওবাদী কিংবা ছাত্র ইউনিয়নের নানান আড্ডা এবং তর্কে চা-টা পাসিং শট হিসেবে দারুণভাবেই ছিলো। আর বর্তমানের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণীদের আড্ডা মানে চা থাকা চাই-ই চাই। আর এই চায়ের অবশ্য এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। যেমন বর্তমানে ছেলে মেয়েদের মধ্যে মাল্টা চা, পুদিনা পাতা চা, গুড়ের চা, লিকার চা, লেবু-আদা চা, সাত রঙের চাসহ আরো নানান রকমের চা। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা কিংবা রাসত্মার মোড়ের চায়ের দোকান- সবখানেই তারুণ্যের আড্ডা জমে চায়ের কাপে। তাই দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং আড্ডা, অভিমান, খুনসুটি সবকিছুর সঙ্গে চা এখন মিলেমিশে একাকার। নগরীর তরুণদের মধ্যে খুব কম ছেলে-মেয়েদেরই খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা কিনা জীবনে একবার হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে গিয়ে চা পান করেননি! আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তারুণ্যের দীপ্তময়তা তখনই চাঙ্গা হয় যখন মধুর ক্যন্টিনে বসে চায়ের কাপে চিনত্মার উন্মেষ ঘটে। এই চায়ের সঙ্গে অদৃশ্যভাবে দেশের অনেক ইতিহাসও জড়িত। ক্যাফে কালচার জোরালো হচ্ছে দেশে, সেখানেও নানা পদের চা নিয়েই বসছেন আজকের তরুণ-তরুণীরা। রাতে বাসায় ডিনার সেরে শুধু চা পান করতেই অনেকে যাচ্ছেন কোনো ক্যাফেতে, বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন আড্ডায়। উপলক্ষ চা, বাসা থেকে একটু বের হওয়াও হলো, আড্ডাও হলো। শুধু কী তাই! অনেক দিন বাদে কোনো বন্ধুর অফিসে গেলে কিংবা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে কোথাও কয়েক বন্ধু-কলিগ একসাথে বসলেই প্রথমেই আপ্যায়ন হিসেবে চায়ের কথাই কিন্তু আসে। আর কর্পোরেট কালচারে চা বর্তমানে অন্যতম এক পানীয়। অফিস শেষে কলিগের সাথে রাসত্মার ধারে কোনো দোকানে চায়ের আড্ডাটা না জমলে অনেক কাজ করার পরও কী জানি বাকি থেকেই যায়!
চায়ের ধরন এবং স্বাদ

দিন বদলেছে, বদলেছে অভ্যাস আর তার সাথে অভ্যসত্ম হতেই কালে কালে ঘটেছে চায়ের বিবর্তন। কোথাও স্বাদের প্রয়োজনে, কোথাওবা ঔষধি গুণের কারণে কিংবা সময়ের পরিবর্তনে চায়ের হয়েছে নানান রূপ নানান স্বাদ। তাই তো স্বাদের বৈচিত্র্যে পুরো পৃথিবীতে পাওয়া যায় প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি পদের চা।

বাঙালি চা খায়, নাকি চা বাঙালিকে খায়- এ নিয়ে বেশ মজার বিতর্ক হতে পারে। বাঙালির চায়ের অভ্যাস যেমন খুব বেশি প্রাচীন নয়, তেমনি স্বাদ গ্রহণের দিক থেকেও একটুখানি পিছিয়ে। চায়ের স্বাদ নিয়ে গবেষণা চলেছে ঔপনিবেশিক সময়ে ব্রিটেনে, আর সেই প্রাচীন সময় থেকেই চীনে। দিন বদলেছে, বদলেছে অভ্যাস- আর তার সাথে অভ্যসত্ম হতেই কালে কালে ঘটেছে চায়ের বিবর্তন। বিশ্বায়নের এই সময়ে সুপার শপের যুগে বাংলাদেশেও চালু হয়েছে বিভিন্ন পদের চায়ের। তবে চায়ের তত্ত্ব আর সূত্র বলে আসল চা হয় চার পদের। হোয়াইট টি, গ্রিন টি, উলং টি আর, ব্ল্যাক টি।

হোয়াইট টি: হোয়াইট টি মূলত কোনো মেশিন ছাড়াই হাতে হাতে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। কেবলমাত্র বসনত্মকালে যে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি হয়- কেবল সেটা থেকেই হয় এই হোয়াইট টি। হোয়াইট টি মূলত পুরোই অপ্রক্রিয়াজাত চা, একই সঙ্গে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকরও। হোয়াইট টিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও থেনাইনের (একধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড যা কেবল ভালো মানের চাতেই পাওয়া যায়) পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট স্বাস্থ্য রক্ষা করে ও শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। সেই সাথে রোগ প্রতিরোধ করে। থেনাইন শারীরিক ও মানসিক প্রশানিত্ম দেয়, মন উৎফুল্ল করে, হজমশক্তি বাড়ায় আর মনকে সতেজ রাখে।

গ্রিন টি: গ্রিন টি মূলত আগ্রহের কেন্দ্রতে আসে এর ঔষধি গুণের জন্য। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট শরীরের ভেতরে ভেসে বেড়ানো বিপজ্জনক রেডিক্যালগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। এই চায়ের স্বাদ সাধারণ ঘাসের মতো থেকে শুরু করে মিষ্টি হতে পারে। লিকারের রং হাল্কা সবুজাভ সোনালি। গ্রিন টিও ক্যামেলিয়া সিনেনসিস আর ক্যামেলিয়া আসামিকা গাছ থেকেই হয় বেশি। গ্রিন টি মূলত গাজন প্রক্রিয়াবিহীন চা-পাতা। প্রথমে সিদ্ধ করে তারপর প্যানফ্রাই করে এর গাজন প্রক্রিয়া ব্যাহত করা হয়। গ্রিন টি শরীরের মেদ হ্রাসে ভূমিকা রাখে। তাই তো এই চা বিশ্বের নানান দেশের মতো বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়। গ্রিন টিতে রয়েছে এপিগ্যালোক্যাটেচিন গ্যালাটে, যা প্রকৃতির অন্যতম সেরা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।

উলং টি: চায়ের সমঝদারদের মাঝে এই চায়ের বেশ কদর রয়েছে। ধরনের ভিত্তিতে বলা যায় এই চা ব্ল্যাক টি আর গ্রিন টির মাঝামাঝি। এই চায়ের দানা খানিকটা বড় ও খয়েরি রঙের হয়। স্বাদে বেশ মসৃণ আর গন্ধও বেশ। উলং চা কেবলমাত্র দক্ষিণ-পূর্ব চীন ও তাইওয়ানে উৎপাদিত হয়। কঠোর গোপনীয়তার সাথে তৈরি হয় বলে এই চায়ের প্রক্রিয়াজাতকরণ কৌশল এখনও অজানা। আর বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় বলে এর স্বাদ ও গন্ধের বৈচিত্র্যও বেশি। বলা হয় উলং টি কোলেস্টরেল হ্রাস করে মেটাবলিজম বাড়ায়, সেই সাথে ওজনও কমায়।

ব্ল্যাক টি:
ক্যামেলিয়া সিনেনসিস আর ক্যামেলিয়া আসামিকা- এই দুই ধরনের চা গাছ থেকেই উৎপন্ন হয় ব্ল্যাক টি। এই চা প্রক্রিয়াজাত করার সময়ে ফার্মেন্টেশন বা গাজন প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ হয়। ফলে এই চা বেশি সময় ধরে গরম পানিতে রেখে দিলে অনেক তিতা স্বাদ বের হয় এবং রংটাও বেশ গাঢ় হয়। এই চা মূলত দুধ বা রং চা হিসেবে আমাদের দেশে পরিবেশিত হয় কখনও দুধ-চিনি মিশিয়ে, কখনও বা আদা-লেবু মিশিয়ে। কেবল চীনেই প্রক্রিয়াজাত করার পর ১০ রকমের ব্ল্যাক টি পাওয়া যায়। টান ইয়াং গংফু মূলত ফুজিয়ান প্রদেশে উৎপাদিত ও প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ১৮৫১ সালে এই চায়ের স্বাদ পেয়েছিল ব্রিটিশরা। ঝেঙ্গে গংফু চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের ঝেঙ্গে কাউন্টিতে ও বেইলিন গংফু ফুজিয়ান প্রদেশের বেইলিন এলাকায় উৎপাদিত হয়। এই তিন পদের চা’কে একসঙ্গে বলা হয় ফুুজিয়ান রেডস।

এ ছাড়া চীনের আরও অনেক প্রদেশেই চায়ের চাষ হয়। ফুজিয়ান প্রদেশেই পাইন কাঠের আঁচে শুকানো হয় লাপসাং সচাং- পশ্চিমা ভাষায় যেটা স্মোকড টি। পাইন কাঠের গন্ধ এই চা’কে বিশেষায়িত করেছে। ইন জুনমেই এই চায়ের আরেক পদ। জিন জুনমেই নামের আরও একধরনের চা রয়েছে, যা ফুজিয়ান এলাকার সবচেয়ে সেরা চা । সে কারণেই চীনের সবচেয়ে দামি চা এটা।

কিমেন চা মূলত আনহুই প্রদেশে উৎপাদিত হয়। ১৮৭৫ সালে এক সিভিল সার্ভেন্ট ফুজিয়ান প্রদেশে ব্ল্যাক টি সম্পর্কে জানতে এসে আবিষ্কার করে ফেলেন এই কিমেন। পাইনের সঙ্গে যোগ হয় বিভিন্ন শুকনো ফল। ডিয়ান হং পশ্চিমা বাজারে পরিচিত ইউনান রেড বা ইউনান ব্ল্যাক নামে। ইউনান প্রদেশের চা বলেই এই নাম। মূলত এই চায়ের সঙ্গে অন্য চায়ের পার্থক্য এর চায়ের পাতার কারণে। এই চায়ে কেবলই ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নীতি অনুসরণ করা হয়। লিচু, লংগান, গোলাপ ইত্যাদি দিয়ে ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যায় এই চা-পাতা। ফলে এর ফ্লেভার, গন্ধ অন্য চায়ের থেকে একদম আলাদা। সে কারণে ইংলিশ ব্রেকফাস্ট টি এর অন্যতম উপকরণ এই চা। ইং ডে হং চা মূলত পরিচিত এর কোকো গন্ধ- মিষ্টি আর সামান্য ঝাল ঝাল স্বাদের জন্য। ১৯৫৯ সালে এই চা প্রক্রিয়াজাত করা হয়। জিউ কে হং মে চায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এর চায়ের পাতার আকৃতি। বাংলাদেশেও এখন নানা পদের চা পাওয়া যাচ্ছে। দেশি কোম্পানিগুলোও চায়ে বৈচিত্র্য এনেছে, আনছে। সুপার স্টোরগুলোর র‌্যাক এখন দেশি-বিদেশি নানা পদের চায়ে ঠাসা। মিলছে ভেষজ চা-ও, তুলসী থেকে জিংসেন সবই। নামী-দামি কোম্পানিগুলোর প্যাকেটে চায়ের সঙ্গে বাড়তি কোনো কিছু যোগ করা হয়েছে কি না, তার যেমন উল্লেখ থাকে; তেমনি সেরা স্বাদটি পেতে গেলে কীভাবে বানাতে হবে, তার বর্ণনাও থাকে।

উপহার হিসেবে রইলোঃ
মজাদার মালাই চা তৈরীর রেসিপি

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: এত এত টি। অথচ আমি শুধু দুধ চা খাই।

২| ১০ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:০০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনি সিলেটের নানা রংয়ের চা খেয়েছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.