নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রয়োজনে যে বেয়াদপ হতে পারে, ভদ্রতা পাওয়ার অধিকার শুধু তাই।

অদ্বিত

পরাজয়ে ডরে না বীর।

অদ্বিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ধারা ও ২৫ ধারা সংশোধন করা দরকার

১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:১১

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ধারা এবং ২৫ ধারা কেন সংশোধন করা প্রয়োজন তা জানার আগে ধারাগুলো জেনে নেয়া যাক -

২১ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচার চালানো বা উহাতে মদদ প্রদান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুরূপ কার্য ইইবে একটি অপরাধ।এই অপরাধের শাস্তি অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুনঃ অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
২৫ ধারায় আক্রমণাত্মক, মিথ্যা ও ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ, ইত্যাদি বিষয়ে (ক) উপধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে, এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ করেন, যাহা আক্রমণাত্মক বা ভীতি প্রদর্শক অথবা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও, কোনো ব্যক্তিকে বিরক্ত, অপমান, অপদস্ত বা হেয়প্রতিপন্ন করিবার অভিপ্রায়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করেন, বা খ) রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করিবার, বা বিভ্রান্তি ছড়াইবার, বা তদুদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও, কোনো তথ্য সম্পূর্ণ বা আংশিক বিকৃত আকারে প্রকাশ, বা প্রচার করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। এই অপরাধের শাস্তি অনধিক ৩ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুনঃ অপরাধের জন্য ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এই ধারাগুলো কেন পরিবর্তন করা প্রয়োজন ?

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার তাৎপর্য, গুরুত্ব একেকজন মানুষের কাছে একেকরকম। ৯৯% বাংলাদেশীর কাছে মুক্তিযুদ্ধকে মহান মনে হলেই ১% বাংলাদেশীর কাছে মুক্তিযুদ্ধকে কেন মহান মনে হতে হবে ? একজন বাংলাদেশীর কাছে জাতির জনক, জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার যেরকম গুরুত্ব সেরকম গুরুত্ব আরেকজন বাংলাদেশীর কাছে না থাকলে আইনের ভয় দেখিয়ে জোর করে গুরুত্ব তৈরি করা হবে নাকি ? কোন ব্যক্তিই বা কোন কিছুই সমালোচনার উর্ধ্বে থাকা উচিত নয়। তা সেটা বঙ্গবন্ধুই হোক, জাতীয় সঙ্গীতই হোক, জাতীয় পতাকাই হোক আর মুক্তিযুদ্ধই হোক। কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করে তাকে শাস্তি না দিয়ে, কারাদন্ড না দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হোক - কেন তার কাছে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে অপমানের যোগ্য মনে হল ? Why ?
ও, আমি তো ভুলেই গেছিলাম - বাংলাদেশের মানুষ কারণ জানতে চায় না ?

কারণ জিজ্ঞাসার পর যদি তার কারণ যৌক্তিক বলে মনে হয় তবে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে আর যদি অযৌক্তিক হয় তবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করতে হবে। সেটা না করে শাস্তির বিধান কেন ? শাস্তির ভয় দেখিয়ে অনলাইনে প্রগাপান্ডা বা প্রচার চালানো হয়ত বন্ধ করা যাবে কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি তো আর পাল্টাতে পারবেন না। দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোই তো আসল। সরকার নিশ্চয়ই চায় না যে জাতির জনকের প্রতি কারোর মনে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকুক। তাই না ?

মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে ফেসবুকে, ইনস্টাগ্রামে, টুইটারে যত অপমানই করা হোক; যতই গালিগালাজ করা হোক শুধুমাত্র ভার্চুয়াল জগতের লেখার জন্য কাউকে দশ বছর কারাদন্ড দেয়া যায় না, কারোর জীবন থেকে 10 বছর কেড়ে নেয়া যায় না। এটা পাগলামি। দশটা বছর মানে বুঝে সরকার ? দশ বছর জেলে থেকে আসার পর একজনের পুরো জগৎটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে, জেলের বাইরে এসে সে পরিচিত কোনকিছুই খুঁজে পাবে না। তার পরিচিত দোকান থাকবে না, তার পরিচিত মডেলের মোবাইল ফোন আর পাওয়া যাবে না, তার পরিচিত খেলার মাঠে বিল্ডিং গড়ে উঠবে, তার দাদু দিদা অপেক্ষা করতে করতে মরে যাবে, তার অবিবাহিত বন্ধুবান্ধবদের বাচ্চাকাচ্চা পর্যন্ত বড় হয়ে যাবে। এত পরিবর্তন ঘটবে, কিন্তু সে কিছুই জানবে না। এটা যে কত কষ্ট তা শুধু প্রচন্ড কল্পনাশক্তি আছে এমন মানুষই ( যেমন আমি ) বুঝবে। এত বড় শাস্তি কেন ? মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে অপমান করার জন্য, তাও আবার ভার্চুয়াল জগতে ( Fake world এ )। যে কাজের জন্য কোন শাস্তিই হওয়া উচিত না, সেই কাজের জন্য মৃত্যুদন্ডতুল্য শাস্তি !!!

বঙ্গবন্ধুকে বা অন্য কোন সাধারণ ব্যক্তিকে, যাকেই অপমান করা হোক। অপমানকারীকে কিছুতেই ২ সপ্তাহর বেশী জেল দেয়া যায় না। পৃথিবীতে কারোর সম্মান এত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না যে তার সম্মানে মৌখিকভাবে আঘাত করার জন্য ২ সপ্তাহর বেশী জেল দেয়া যায়। বইয়ে লিখে কাউকে অপমান করলে হয়ত একমাস এবং বই থেকে অপমানজনক কথা মুছে ফেলার আইনী নির্দেশ দেয়া যেতে পারে। আর সোশাল মিডিয়ায় ফটোশপ করে অপমান করলে ১ মাস কারাদন্ড এবং ঐ ছবি সোশাল মিডিয়া থেকে ডিলিট করার আইনী নির্দেশ দেয়া যায়। আর সোশাল মিডিয়ায় শুধু পোস্ট লিখে অপমান করলে একদিনও শাস্তি দেয়া উচিত হবে না। কারণ, ভার্চুয়াল জগতের লেখার এক পয়সাও দাম নাই।
সামনাসামনি অপমান করলে সেটাকে বড় করে দেখা উচিত। সোশাল মিডিয়ায় লিখিত অপমান দেখাই উচিত না। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ব্লগ এসব সোশাল মিডিয়ায় শুধু লিখিত অপমানের জন্য তর্ক করে বুঝানো বাদে অন্য কোন পদক্ষেপ নেয়াটাই বাড়াবাড়ি। সর্বোচ্চ অপমানকারী ব্যক্তিকে অপমানিত ব্যক্তির সাথে যুক্তিতর্কে লিপ্ত হবার আইনী নির্দেশ দেয়া যায়। যদি অপমানকারী তর্কে হেরে যায় তবে তাকে শুধু ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যাস আর কিছু না।

ফেসবুকে আমার এক আমেরিকান ফ্রেন্ড গত ৫ বছর ধরে ট্রাম্পকে পঁচিয়ে যাচ্ছে। তার প্রোফাইল ছবিই হল ট্রাম্পের মাথায় হাগু। কই ? সে তো তার দেশের প্রেসিডেন্টকে অবমাননা করার জন্য গ্রেফতার হল না। আমি যেকোন ধরণের অবমাননার বিরুদ্ধে। যে কারোর গঠনমূলক সমালোচনা করা যায়, কিন্তু অবমাননা করা যায় না। "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন" - কথাটা শুনলে বা দেখলে মনে হয় সরকার এত নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে কেন ? এই বুঝি কেউ সমালোচনা করে দিল !

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দরকার আছে। তা না হলে পুলাপান খুব বেশি উজায়ে যাইবে।

১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৩৩

অদ্বিত বলেছেন: আমি আইন বাতিল করতে বলি নাই, আইন সংশোধন করতে বলেছি।

২| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:০৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: তাও করবে না । ইচ্ছামত প্রয়োগ করার জন্য

৩| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:২৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যারা মুক্তিযুদ্ধকে মহান মনে না করে তাদের বাংলা দেশে থাকার কোন অধিকার নেই।

১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১১:১৩

অদ্বিত বলেছেন: এটা আবেগের কথা। এই কথায় লজিক নাই। যে মুক্তিযুদ্ধকে মহান ভাবে না, তাকে বুঝাতে হবে যে মুক্তিযুদ্ধ কেন মহান। দেশ থেকে বের করে দিলে তো দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.