![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কলি থেকে ফুল হয়ে ফোটার আগেই জীবনের বৃন্ত থেকে অকালে ছিঁড়ে ফেলা হলো শিশু রাজনের জীবনকে। কী দোষ করেছিল সেই শিশুটি? কী দোষ করেছিল তার হতভাগী মা; যে মা জন্মদানের পর থেকেই খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে শিশু রাজনকে একটু একটু করে বড় করে তুলছিল। ছেলে বড় হবে, মা-বাবার দুঃখ দূর করবে- এইটুকুই সামান্য আশাই তো ছিল। বাবা গাড়িচালক, তাই সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা। এঅবস্থায় বাবাকে সাহায্য করতে সেও সবজি বিক্রি করে যা দু-চার টাকা আয় করতো, তা তুলে দিত তার মায়ের হাতে।এমনি করেই চলছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাজন এবং তার পরিবারের দিনকাল।
শিশু রাজন- যে বয়সে ব্যাগ কাঁধে করে স্কুলে যাওয়ার কথা, খেলা-ধূলা আর বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হৈ-হুল্লোর করে দিন কাটানোর কথা- সেই বয়সেই ছোট প্রাণের কাঁধে বড় বোঝা সংসারের। এটুকু বয়সেই জীবন যুদ্ধের সৈনিক সে। কারণ তার ভেতরে বিবেকবোধ ছিল যে- মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে হবে, তার বিবেক জাগ্রত ছিল এই কারণে যে- বাবাকে তার সাহায্য করতে হবে। কিন্তু ছোট্ট সেই শিশুটির বিবেকবোধের কাছে আজ আমরা যারা ছিলাম বা আছি তাদের বিবেকবোধ পরাজিত।
আজ রাগে- ক্ষোভে- দুঃখে বোবা কষ্টে আর অমার্জনীয় অপরাধবোধ থেকে ভেতর থেকে একটি কথাই শুধু বারবার উচ্চারিত হচ্ছে- তখন কোথায় ছিলাম আমরা? কোথায় ছিল তথাকথিত জাগ্রত বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষগুলো? যখন শিশু রাজনকে প্রকাশ্যে দিবালোকে জনসমক্ষে দুস্কৃতিকারী এই খুনিরা নির্মমভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করছিল- তখন কোথায় ছিল আমাদের তথাকথিত বিবেক আর মনুষ্যত্ববোধ।
আশেপাশে কী একজন বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষ ছিলেন না?- যে মানুষটি এই বীভৎস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করতে পারতেন।
সমাজে আমার নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাই সবসময়। কিন্তু তথাকথিত ভালোমানুষগুলো কোনোদিনও এক হতে পারি না। আর এ সুযোগেই সমাজের খারাপ মানুষগুলোর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা। আমরা নামকাওয়াস্তে ভালোমানুষগুলো একতাবদ্ধ হতে পারি না বলেই অপরাধীদের হাত দিন দিন আরোও লম্বা হচ্ছে, ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। এ দোষ কার? এ দোষ আমাদের, এ দায়বদ্ধতা আমাদেরই।
আমাদের এই ঘুমন্ত বিবেকবোধ সমাজের কল্যাণ বয়ে আনতে পারবে না। প্রতিদিন এরকম শতশত শিশু রাজন নির্যাতিত হবে, খুনিদের ধারালো থাবায় অকালে জীবনপ্রদীপ নিভে যাবে- তবুও আমরা কিছু করতে পারবো না। যতদিন না আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে না পারবো, ততদিন মার খেয়ে যাবো সু-বিবেচকের দল।
আসুন আমরা আমাদের বিবেকবোধকে জাগ্রত করি। ভবিষ্যতে যেন এধরনের ঘটনার দাঁতভাঙ্গা জবাব যেন আমরা দিতে পারি, যেন তীব্র প্রতিবাদ করতে পারি। খুনি কামরুল মুষ্টিমেয় কয়েকজন, আমরা শত শত জন।
রাজন- আমরা তোর জন্য কিছুই করতে পারলাম না। এ লজ্জা আমাদের, এ লজ্জা আমাদের পুরো জাতির। পারলে তুই আমাদের ক্ষমা করে দিস....ক্ষমা করে দিস।
২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১৩
আলোর জানালা বলেছেন: উনারা তখন ঘুমিয়ে ছিলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ২:৫০
চাঁদগাজী বলেছেন:
" যখন শিশু রাজনকে প্রকাশ্যে দিবালোকে জনসমক্ষে দুস্কৃতিকারী এই খুনিরা নির্মমভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করছিল- তখন কোথায় ছিল আমাদের তথাকথিত বিবেক আর মনুষ্যত্ববোধ। "
-সিলেটে মানুষ কি বসবাস করে?