নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভেষজ চিকিৎসা গ্রহণ করুন, সুস্থ থাকুন।

আমাতুস সামী তাহেরা

আসসালামু আলাইকুম। আমি আমাতুস সামী তাহেরা। আমি ২০১৯ সালে সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ থেকে ইউনানী চিকিৎসার উপর বি.ইউ.এম.এস. ডিগ্রী অর্জন করেছি। আমি আমার এই ব্লগে ইউনানী চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করব যাতে সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে ও ঘরোয়া ভাবে নিজেদের চিকিৎসা করতে পারে।

আমাতুস সামী তাহেরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

যকৃত রোগে হরিতকী

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৯




বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia chebula
ইংরেজী নাম Chebulic Myrobalan
হরিতকী বহুল পরিচিত পাতা ঝড়া বৃক্ষ। পাতা অনেকটা জামরুলের ছোট পাতার মত। হরিতকীর ফল ও বীজ ব্যবহার করা হয়।
হরিতকীর প্রধান কাজ হল এটি পিত্ত প্রশমক অর্থ্যাৎ দেহ থেকে অতিরিক্ত তাপ নিঃসরণে খুবই সহায়ক।

আমলকির মতো হরিতকীও নানা ভাবে খাওয়া যায়। যেমন
(i) কাঁচা ফল চিবিয়ে খাওয়া যায়।
(ii) শুকনো ফল চূর্ণ করে পানিতে, মধুতে মিশিয়ে বা ঔষধ তৈরি করে খাওয়া যায়।
(iii) শুকনো ফলের কাথ তৈরি করে খাওয়া যায়।
(iv) হরিতকীর মোরব্বা তৈরি করে খাওয়া যায়।

কাঁচা হরিতকীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C আছে তাই এটি স্কার্ভী, দাঁতের মাড়ির রক্তক্ষরণ, চর্মরোগ নিরাময়ে খুবই কার্যকর। তাছাড়া এতে প্রচুর আঁশ জাতীয় উপাদান থাকায় কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে খুবই ফলপ্রসূ। এটি ক্ষুধামন্দাও দূর করে।

হরিতকী চূর্ণ বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। যেমন মস্তিষ্কের রোগ, যকৃতের রোগ, চর্মরোগ ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ।

হরিতকীর কাথ পিত্ত প্রশমক। এটি হাত পা জ্বালা পোড়া নিবারণ করে, পাশাপাশি এটি রক্ত পরিষ্কারক ও শরীরের ব্যাথা নিবারণ করে।
হরিতকীর মোরব্বা মস্তিষ্কের রোগে খুবই কার্যকর। এটি মাথাব্যথা, অনিদ্রা ও স্মৃতিভ্রমের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

DOS (Doctrine of Signature) & TOS (Teachings of Similarity) থেরাপী অনুযায়ী, হরিতকী দেখতে চোখের মত তাই এটি চোখের রোগে কার্যকর। গবেষণায় জানা গেছে হরিতকীর কাথ চোখ উঠা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, অঞ্জনীসহ চোখের নানা রোগ নিরাময়ে খুব কাজ করে।

অনুরূপভাবে, হরিতকীর কাথ কালচে বর্ণের যা ঈঙ্গিত করে এটি যকৃতের নানা রোগে খুব ভাল কাজ করে। এটি যকৃতের বিভিন্ন এনজাইম নিঃসরণে ও মেটাবলীজমের ক্ষেত্রে ভাল কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, হরিতকীর কাথ জন্ডিস নিরাময় করে।

সেবনের মাত্রা ও নিয়মঃ-
হরিতকী চূর্ণ ৫-৭ গ্রাম অর্থ্যাৎ দৈনিক ১ চা চামচ চূর্ণ খাওয়া যায়। তব্র শিশুদের জন্য মাত্রা হল এর অর্ধেক। হরিতকীর মোরব্বা দৈনিক একটি খাওয়া যায় (১টির বেশি খাওয়া উচিত না)। কাঁচা ফল দৈনিক ৩-৪ টি খাওয়া যায়।

হাত পা জ্বালা পোড়া রোগেঃ-
৩-৪ টি শুকনো হরিতকী অর্ধচূর্ণ করে ৫০০ মিলি পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে জ্বাল দিয়ে অর্ধেক হলে নামিয়ে ঠান্ডা করে, চিনি মিশিয়ে খালি পেটে প্রতিদিন সকালে পান করতে হবে ৪৫ দিন।

জন্ডিস নিরাময়েঃ-
৩-৪ টি শুকনো হরিতকী অর্ধচূর্ণ করে ৫০০ মিলি পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে জ্বাল দিয়ে অর্ধেক হলে নামিয়ে ঠান্ডা করে, খাবার খাওয়ার পর পান করতে হবে যতদিন জন্ডিস পুরোপুরি ভাল না হয় ততদিন পর্যন্ত।

কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করার জন্যঃ-
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চা চামচ হরিতকী চূর্ণ ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে পান করতে হবে। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

যকৃতের বিভিন্ন রোগ নিরাময়েঃ-
০.৫ চা চামচ হরিতকী চূর্ণ ১ গ্লাস ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পান করতে হবে দিনে দুই বার খাবার খাওয়ার পর। (অবশ্যই ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে, গরম পানি ব্যবহার করা যাবে না)।

শরীরের ব্যাথা দূর করার জন্যঃ-
৪-৫ টি শুকনো হরিতকী অর্ধচূর্ণ করে ৭৫০ মিলি পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে জ্বাল দিয়ে পানি তিন ভাগের এক ভাগ হলে নামিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। এই মিশ্রণকে অর্ধেক করে দিনে ২ বার খাবার খাওয়ার পর পান করতে হবে।

চোখ উঠা, অঞ্জনীসহ চোখের বিভিন্ন রোগেঃ-
৭-৮ টি শুকনো হরিতকী অর্ধচূর্ণ করে ১০০০ মিলি পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে জ্বাল দিয়ে অর্ধেক হলে নামিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। এই মিশ্রণকে অর্ধেক করে একভাগ রেখে দিতে হবে খাওয়ার জন্য ও অন্যভাগ বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য।
খাওয়ার অংশ দিনে ২ বার খাবার খাওয়ার পর পান করতে হবে।

বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য রেখে দেয়া কাথ দিয়ে দিনে ৩-৪ চোখ ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। হরিতকীতে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-ব্যকটেরিয়াল, এন্টি-ফাঙ্গাল উপাদান আছে; তাই বাহ্যিক ব্যবহার প্রাকৃতিক চোখের ড্রপ হিসেবে কাজ করে।

মস্তিষ্কের রোগেঃ-
দৈনিক ১ টি করে হরিকতীর মোরব্বা মাথাব্যাথা, অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা, স্মৃতিভ্রমসহ মস্তিষ্কের নানা জটিলতা দূর করে।

সতর্কতাঃ-
কোন অবস্থাতেই গর্ভবতী মহিলা, স্তন্যদাত্রী মা, দূর্বল ব্যাক্তি, অপারেশনের পর ও যাদের রক্তক্ষরণ হয়েছে এমন ব্যাক্তিদের হরিতকী সেবন করানো যাবে না। যাদের গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা আছে তারা খালিপেটে হরিতকী খাবেন না।
অতিরিক্ত হরিতকী খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।



___আমাতুস সামী তাহেরা
বি.ইউ.এম.এস. (ব্যাচেলর অফ ইউনানী মেডিসিন এন্ড সার্জারী)
সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ঢাকা, বাংলাদেশ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩১

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট।
এমন আরো পোস্ট আশা করছি ভবিষ্যতে।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৯

আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৩

আকন বিডি বলেছেন: মোটা কমানোর কোন ওষুধ নাই?

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৪

আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: আসলে ডায়েট কন্ট্রোলের উপরে কিছু নাই

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কাচা হরিতকী কতটুকু উপকার ? অনেকে কাচা খায়।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০৫

আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: কাঁচা হরিতকীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C আছে তাই এটি স্কার্ভী, দাঁতের মাড়ির রক্তক্ষরণ, চর্মরোগ নিরাময়ে খুবই কার্যকর। তাছাড়া এতে প্রচুর আঁশ জাতীয় উপাদান থাকায় কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে খুবই ফলপ্রসূ। এটি ক্ষুধামন্দাও দূর করে।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯

আকন বিডি বলেছেন: আচ্ছা মিরপুর ১০ থেকে ১৩ যেতে কৃষি ব্যাংকের সাথে যে কলেজ ঐটায় আপনি পড়েন?

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০২

আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: জি; বর্তমানে আমার পড়া শেষ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.