![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দূর সম্পর্কের এক আত্নীয়ের সাথে হঠাৎ দেখা।দূর সম্পর্কের হলেও একটা সময় বেশ যোগাযোগ ছিল।ব্যস্ততা আর সময়ের অভাবে এখন আর তেমন একটা যোগাযোগ হয় না। তাই সেদিন হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়াতে বেশ ভালোই লাগছিল।কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সেই ভাল লাগা উবে গেল।তার বড় ছেলের ডিভোর্স হয়ে গেছে। ছোট একটা বাচ্চা রেখে বউ চলে গেছে।সমস্যা কি জানতে চাইলে তিনি বলবেন কি বলবেন না ভেবে কিছুক্ষণ ইতস্ত করছিলেন।পরে বললেন,আসলে আমার কপালটাই খারাপ,তা না হলে একটার একটা খারাপ আমার সাথেই কেন হবে?
আমি জিজ্ঞেস করলাম,কি হয়েছে? আমি যতটুকু জানতাম ওনার ছেলেটা খুবই ভদ্র ,সুদর্শন এবং মেধাবী।সেই ছেলের ঘর ভাঙ্গার খবর আমার জন্য কিছুটা অবাক হওয়ার মতোই।পরে বিস্তারিত যা শুনলাম,তা হলো ওনার ছেলেটা হঠাৎ করেই কেমন যেন বদলে যেতে লাগল।কারো সাথে কথা বলতো না, কোথাও যেতে চাইত না, এমনকি শেষ পর্যন্ত একদিন হঠাৎ করে চাকরিটাও ছেড়ে দেয়।বউয়ের সাথেও তেমন একটা কথা বলতো না। বউয়ের কথাও শুনতে চাইত না। আর এসব নিয়ে প্রতিদিনই বউয়ের সাথে অশান্তি লেগেই থাকতো।ব্যস তারপর একদিন রাগ করে চলেই গেল।এর বেশ কিছুদিন পর ডিভোর্সের জন্য উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে।
এর অনেকদিন পর আমি আমার সেই আত্নীয়ের আরেক নিকটজন থেকে জানতে পারলাম ওনার ছেলেটা নাকি মানসিকভাবে অসুস্থ।ওর চিকিৎসা চলছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম,কখন থেকে অসুস্থ?
সেই নিকটজন বললেন,অনেক দিন ধরেই অসুস্থ।কিন্তু প্রথম দিকে ওনারা লোকলজ্জার ভয়ে ছেলের চিকিৎসা করান নি। বরং মানুষের কথা ধরে অসুস্থ ছেলেটাকে বিয়ে করিয় দিলেন। আর এখন কি হলো,ছেলের ঘর তো ভাঙলই ,মাঝখান থেকে একটা ছোট বাচ্চার কত কষ্ট! আর বউটা! তাকে তো একরকম প্রতারিতই করা হলো।
মনটা স্বাভাবিক ভাবেই খারাপ হলো।আর মনে হলো আমরা মানুষ কেবল লোক লজ্জার ভয়েই এমন কিছু কাজ করি সেগুলো আদৌ করার দরকার আছে কিনা তা ভাবি না। লোকলজ্জাকে বেশি গুরুত্ব দিলে জীবনে সমস্যা বাড়া ছাড়া কখনো কমেছে বলে আমার মনে হয় না।
সেই ঘটনার কয়েকদিন পর আমাদের এক প্রতিবেশির ছেলেটা হঠাৎ করে কেমন অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। সুস্থ একটা ছেলে যখন হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যায় সেটা মেনে নেয়া যে কোনো বাবা-মায়য়ার জন্য বেশ কঠিন বিষয়। আর সেই অসুস্থতা যদি হয় মানসিক তাহলে তো জীবনটা মুহূর্তেই ছাই হয়ে যাওয়ার মতোই যন্ত্রণাদায়ক হয়। আমাদের এই প্রতিবেশির ছেলেটার বয়স ও খুব বেশি না ।মাত্র অনার্স এ ভর্তি হয়েছিল। পড়া লেখায় মোটামুটি ভালোই ছিল।নিয়মিত নামাজ পড়তো।সেই ছেলেটা হঠাৎ যে কি কারণে এমন অসুস্থ হয়ে গেল বুঝতেই পারছি না। ছেলের বাবা-মা,আপন জনেরা চিকিৎসার কোনো ত্রুটিই রাখছে না। ডাক্তার রা বলেছে,ভাল হতে সময় লাগবে।তবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।এর মধ্যে শুনলাম সেই ছেলেটাকে নাকি বিয়ে করানো হচ্ছে।
অসুস্থ ছেলেটার বিয়ের কথা শুনে অবাক না হয়ে পারলাম না ।ছেলের বাবা-মাকে নাকি কারা পরামর্শ দিয়েছে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।এরকম কত পাগল নাকি নিমিষেই ভাল হয়ে গেছে।আর তাই ছেলের বাব-মাও খূঁজে খূঁজে ঠিক ই ছেলের জন্য পাত্রী বের করে ফেললেন।
আমি ভাবছিলাম সেই মেয়েটার কথা।যে সারা জীবনের জন্য বলি হয়ে যাচ্ছে অথচ সে তো জানে না কোন পাপে তার এই শাস্তি।আর ভাবছিলাম মেয়েটার বাবা-মা ,আত্নীয়-স্বজনের কথা।ছেলের বাবা-মা তো ছেলের ভালোর জন্য সব করছিলেন।তাদের সেই চেষ্টার কারণে যে আরেকটা মেয়ের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনটা মুহূর্তেই নরকে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে সেটা ভাবার মতো হিতাহিত জ্ঞান আর তাদের অবশিষ্ট নেই।কিন্তু মেয়ের বাবা-মায়ের এই হিতাহিত জ্ঞান লোপ পাওয়ার কারণটা কি???
উত্তরের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় না আমাকে।কারণ দারিদ্র্যের মতো বিশাল সামাজিক ব্যাধি তো আগে থেকেই আমাদের সমাজের একটা বড় অংশকে আষ্টে পৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। জীবন বহতা নদীর মতো।আর তাই তো কেউ কেউ এটাকে শুধুই বয়ে চলতেই দেয়। বয়ে যে কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে এসব ভাবার মতো ফুরসৎ কোথায়??
অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা হওয়া জরুরি।কিন্তু এমন আজব চিকিৎসা আসলে কতটা যৌক্তিক সেটা নিয়েই প্রশ্ন আমার। একটা অসুস্থ জীবনকে সুস্থ করতে গিয়ে আরেকটা সুস্থ জীবনকে অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেওয়া কতটা মানবিক সেটা বোধ হয় আমাদের সবারই ভাবা উচিত
২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫১
এমদাদ মেহেদী বলেছেন: Very strange. Dunia kothai chole jacche. Ar amader thinking ta kon label a pore ache.......
২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১০
মুদ্দাকির বলেছেন: আসলেই আজব !!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০১
খান সাব বলেছেন: Strange