![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মাত্রই মায়ার জালে ফেঁসে যায়। তবে কিছু কিছু মানুষ থাকে যাদের মায়া জিনিসটা স্পর্শ করে না। আমি তাদের একজন।
কিছু কিছু ছোট গল্প থাকে মানুষের জীবনে। শুনতে ছোট মনে হলেও আসলে এতটা ছোট না। মানুষের জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে থাকে এসব গল্পের আবহ। এসব গল্পের কেন যেন একটা করুন পরিনতি হয়। ঠিক বুঝে উঠা সম্ভব হয় না আসলেই কি হয়েছে।
শিরিন আক্তার। নামের অর্থ টা না জানলে ও লিয়াকত সাহেব মেয়ের নাম শিরিন আক্তার রেখেছে। এছাড়াও তার দুটা ছেলে আছে। লিয়াকত সাহেব ঢাকায় ছোট খাটো একটা মুদি দোকানদারি করেন। পৈত্রিক সম্পত্তি আছে কিছু টা। সেজন্য ফসল উৎপাদন মৌসুমে গ্রামে চলে যেতে হয়। একমাত্র স্ত্রী শ্বাসকষ্টের রোগী। বড় ছেলেটা রাজ মিস্ত্রির কাজ করে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো গেল না। স্কুলের ছেলে মেয়েরা নাকি তাকে নিয়ে তামাশা করে।
ছোট ছেলেটা বদের হাড্ডি। রোজই তারজন্য পাড়া পড়শির সাথে ঝগড়া করতে হয়। তারথেকে চার বছরের বড় হলো শিরিন। কিন্তু তার সাথেইই সন্ধ্যা শুরু না হতে লেগে থাকে মারামারি। কিন্তু শাষন করা হয় শিরিন কে।
শিরিন দেখতে শ্যামলা বর্ণের। মায়ের চেহারা পেয়েছে সবাই বলতো। কয়দিন আগেও নাকের পানি বেয়ে বেয়ে পড়তো। আজ মেয়েটা কত বড় হয়ে গেছে। ভালো একটা সম্বন্ধ পেলেই বিয়ে দিতে হবে এসব ভাবেন লিয়াকত সাহেব।
যিনি এই জগত সংসারের কারিগর তিনি মানুষকে নিয়ে নানান খেলা খেলেন। শিরিনের একটা সমস্যা আছে। সে সমস্যার কথা সবাইকে বলা যায় না। ডাক্তার দেখালে কিছুটা ভাল হয় আবার যেই সেই অবস্থায় ফিরে আসে।
এই নিয়ে চলছিলো তাদের জীবন। শীতের মাঝামাঝি সময়ে শিরিনের বিয়ের প্রস্তাব আসে। ছেলে মোটামুটি পড়াশোনা জানে। ঢাকায় আছে ব্যবসা বানিজ্য। আরে পড়াশোনা দিয়ে কি হবে ছেলের তো রুজি রোজগার ভালো। মেয়ে থাকবে সুখে। এসব ভেবে চিন্তে বিয়ে হয়ে গেল। স্রষ্টার ইচ্ছাই হোক আর লিয়াকত সাহেবের ইচ্ছার কারণেই হোক তাদের মেয়ের সমস্যার কথাটা রইলো গোপণ।
সুখে শান্তিতে চলছিলো শিরিনের বৈবাহিক জীবন। শিরিনের স্বামী আজাদ ইদানিং খুব একটা টেনশনে আছে। শিরিন সেটা বুঝতে পারে। তবে এর সমাধান করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
শিরিনের শাশুড়ি বড় ভাল মানুষ। একদিন কথায় কথায় জানতে পারে শিরিনের সমস্যাটার কথা। সহজ গ্রাম্য ভাষায় বলে মাসিক। শিরিনের মাসিক হয় না ঠিকমতো। শিরিন বয়সের তুলনায় গায়ে গতরে বেড়ে গেছে বেশি। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই নিয়ে তার নামে ছড়াচ্ছে কুৎসিৎ রটনা।
তার নাকি আগে ও হয়েছিলো এক বিয়ে। দুইবছরের মাথায় সংসার যায় ভেঙ্গে। লোক মুখে শুনা এ কথার সত্যটা কতটুকু তা জানা গেল না। তবে শিরিনের পবিত্র বদন খানি দেখে তা মনে হওয়ার কোন অবকাশ নেই।
শিরিনের স্বামী ইদানিং বড্ড অসুখী। পাঁচ বছর হয়ে গেছে। এখনো বাবা ডাক শুনতে পারে নি। ছোট্ট বাচ্চাদের প্রতি আজাদের আগ্রহ ভীষণ। কিন্তু নিজের যে এমন দুর্ভাগ্য হবে সেটা কখনো স্বপ্নেও কল্পনা করে নি আজাদ।
দেশ বিদেশের অনেক ডাক্তার দেখানো শেষ। টাকা খরচ করা হয়েছে দুহাতে। কিন্তু কেউই আশু সমাধান দিতে পারলো না। শিরিনের শাশুড়ি ও কম কষ্ট করে নি। যে যেখানে বলেছে সেখানে গিয়েছে। যত পীর মুর্সিদ ছিলো সব শেষ। তবুও শিরিনের মাসিক বা ঋতুস্রাব করতে পারলো না ঠিক।
সব মানুষের ধৈর্যের একটা সীমা থাকে। সেটা এক সময় নষ্ট হয়ে যায় আজাদের। নতুন বিয়ে করবে এই তার ইচ্ছা। কিন্তু শিরিনের এতে নেই সম্মতি। সতীনের ঘর করবে না সে। তাকে পালক সন্তান এনে দিতে হবে।
কিন্তু সম্পূর্ণ সমস্যা এখানে শিরিনের। তার বাবা আজাদকে ধোঁকা দিয়েছে। তার বন্ধা মেয়েকে আজাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে। সেটা জেনেও সে তা মানতে নারাজ।
এদিকে আজাদের পরিবারের অনেক সদস্য ই পরোক্ষ ভাবে শিরিনের প্রতি অসন্তুষ্ট। সবাই চাচ্ছে তাকে নতুন ভাবে বিয়ে দিতে। কিন্তু আজাদ স্ত্রী কে ভালোবাসে। সে তাকে ফেলতেও পারছে না আবার রাখতেও পারছে না।
তিলে তিলে আজাদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে নজর নেই শিরিনের। বৈবাহিক সম্পর্ক টা ও নেই আর আগের মতো। একজন অন্য জনের চাকরি করছে যেন এমন হয়ে গেছে তাদের দাম্পত্য জীবন।
আজাদের এমন অবস্থা সহ্য হচ্ছে না তার পরিবারের কারোরই। তারা আজাদকে হারাতে চায় না। বোন হারাতে চায় না ভাইকে । ভাই হারাতে চায় না ভাইকে। মা হারাতে চায় না তিলে তিলে মানুষ করা ছেলেকে।
অনেকদিন কেটে গেছে তারপর .......
আজাদ আগের মতো ব্যবসায়ে মনোযোগী হয়েছে। পরিবারের সদস্য রা নতুন মেয়ে খুঁজছে।
মিথ্যা দিয়ে সৃষ্টি কোন সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত টিকে না। আর মিথ্যে গুলো যদি হয় এমন ভয়াবহ তাহলে তো সেটা আরো আগেই শেষ হয়ে যায়।
শিরিনের জীবন সেখানেই চলে গেল যেখান থেকে শুরু হয়েছিলো।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
আমিই মিসির আলী বলেছেন: ধন্যবাদ।
বাস্তবতাই!
চারপাশে তো এসব অহরহই ঘটে।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল কাহিনী। ধন্যবাদ
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
আমিই মিসির আলী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৪
সুলতানা রহমান বলেছেন: এই ঘটনাগুলো এত বেশি ঘটছে এখন! কি আর বলবো? হয়তো খুজে পাওয়া যাবে মেয়েটার কোন সমস্যাই নেই।
প্রথম দিকটায় গল্পের আবহে ছিল। পরের দিকটায় বর্ণনার মত লেগেছে। বোঝা যায়, এই গল্প আপনার দেখা। আমি ও দেখেছি।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭
আমিই মিসির আলী বলেছেন: ঠিকই ধরেছেন!!
প্রতি ৫০ টা পরিবারের মধ্যেই এইরকম একটা সমস্যা বিদ্যমান আছে।
আর হ্যাঁ ;
কাহিনীর কিছু অংশ আমার দেখা।
৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২১
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: অনেকেই এই কাজটা করে। সমস্যা লুকিয়ে রেখে বরং সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৫
আমিই মিসির আলী বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৫
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: শিরিনের জীবন সেখানেই চলে গেল যেখান থেকে শুরু হয়েছিলো।
শেষ লাইনটা পুরো বাস্তবতারই প্রতীক। +
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৬
আমিই মিসির আলী বলেছেন: বাস্তবতাই তুলে ধরলাম ভাই।
ধন্যবাদ।
৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৪
নিমগ্ন বলেছেন: ভাল লাগার কি কারণ থাকতে পারে?
বাস্তবতার এক অনন্য উপাখ্যান। চালিয়ে যান ভাউ। পোস্টে +
(তবে শিরিনদের ট্রিটমেন্ট করা যায় শুনলাম।)
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৮
আমিই মিসির আলী বলেছেন: হুম।
কোন কারন নেই ভালো লাগার।
চিকিৎসা হয় তাদের যাদের সমস্যা সাময়ীক। বা বিশেষ কারণে বন্ধ থাকে।
কিন্তু যাদের সমস্যা প্রকট তাদের চিকিৎসা হয় না।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫
অসমাপ্ত গল্পের লেখক বলেছেন: পোস্ট টা ভালো লিখেছেন। কেমন যেনো বাস্তবতার মিল পাচ্ছি।