![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"আমি হয়তো তেমন না যেমনটা তোমরা ভাবো....!! হয়তো আমি তেমন , যাকে তোমরা বুঝতে পারো না....!!" আমার খুব সাধারন থাকার সাধ । অসাধারন হবার মত কোন গুন আমার ভেতর নেই । সমালোচকদের চোখে : আমি একটা 'অ' টাইপ ছেলে । ((অসহ্য, অসভ্য, অসামাজিক, অতিভদ্র, অস্থির, অধৈর্য্য, অনিয়ন্ত্রিত, অনাকাঙ্খিত (তাদের জীবনে), অবিশ্বাসী, অগোছালো, অতিরিক্ত ভাব, অত্যাচারী, অভিশপ্ত + ..... )) মানবিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এবং অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করি । বন্ধুদের চোখে : আমি আমি বিনয়ী, ভদ্র, বিশ্বাসী, প্রকৃতিপ্রেমী, আঁতেল, মেধাবী, ফানি, দুর্ভাগা এবং রোমান্টিক :) । মনুষ্যত্বের সংজ্ঞায় নিজেকে মানুষ বলে মনে করি । এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় ।
........অনবরত ঘামছে অনু । দাঁতে দাঁত চেপে গাল শক্ত করে রেখেছে । মুঠোবন্দী ফোনটার দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে । অনিক প্রায়ই বলে, এসময় নাকি তাকে বিশ্রী রকমের সুন্দর লাগে । তাকে এখন বিশ্রী রকমের সুন্দর দেখাচ্ছে । নাকের ওপরে ফোঁটা ফোঁটা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে থাকা ছবির মত সুন্দর ।
এই নিয়ে পঞ্চমবারের মত সে অনিকের নম্বরে চেষ্টাকরেছে । প্রতিবারই মেয়েলী সকরুন কন্ঠের “দুঃখিত, এই মুহূর্তে .... “ বিরক্তিকর ভয়েসটি তাকে শুনতে হয়েছে । কেউ দুঃখ প্রকাশ করলেও মাঝেমাঝে তীব্র ঝাঁঝালো রাগ লাগে । সে এখন রেগে আছে । তার অস্থির লাগছে । অস্থিরতা কাটাতে সে বারান্দায় পায়চারী করে । সে এখন বারান্দায় পায়চারী করছে ।
রাত ২.১০ । প্রতিরাতে ২টার সময় নিয়ম করে তাদের কথা হয় । সারাদিনে অজস্র কথার ভীড়েও অনেক না বলা কথা তারা এ সময় বলতে পারে । এতোদিনে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি । কখনো ফোন 'সুইচ অফ' পায়নি । আজ কি হল অনিকের ? সেও তো পারে অন্তত একবার ফোন করে জানিয়ে দিতে । এবার তার মন খারাপ হতে থাকে । চাপা অভিমান জমতে থাকে । সে গ্রীলে হাতরেখে রাতের জ্যোৎস্না ভেজা আকাশ দেখে । জ্যোৎস্নায় তার মুখের একপাশটা রুপালী আলোয় মাখামাখি । বিষন্ন হাওয়ায় দোল খায় এলোমেলো চুল ।
আজ বিকেলেও অনিকের সাথে তার দেখা হয়েছে । রোজকার মতো তার হাতে গোলাপ ছিলনা বলে সে কিছুক্ষণ কপট অভিমানে নীরব ছিল । নীরবতা ভাঙ্গাতে পাগলটার কি ছটফটানি । ইনিয়ে -বিনিয়ে , নানান ছলছুঁতোয় সে কতবার যে তাকে হাসাতে চেয়েছে !! দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে সে পরের বার একসাথে দু’টো গোলাপ আনবে । আজকেরটা বাকী পড়ে রইলো যে !! আর কতক্ষণ স্বভাববিরুদ্ধ নীরব থাকা যায় ...?! একসময় ঠিকই সে হেসে ফেলে । আজ সে আকাশনীল একটা শাড়ী পড়েছে । অনিক বলে- নীল শাড়ীতে তাকে দেবীর মতো লাগে ।
-- ‘তুমি কখনো আফ্রোদিতির নাম শুনছো ?
-- না তো ? কে সে ?
-- রোমানরা তাকে বলে প্রেমের দেবী । অপরুপ সুন্দর এক নারী । যে পৃথিবীতে সবার মনে ভালোবাসার জন্ম দেয় ।
-- তাই ?
-- হুমমম .. তোমাকে ঠিক আফ্রোদিতির মত লাগছে ।
-- হা হা হা ...কিন্তু তুমি তো তাকে দেখোনি ??
-- দেখিনি ঠিক । তবে তোমাকে দেখে তাকে অনুমান করতে পারি
-- হা হা হা ..
প্রকৃতির নিয়মে এক সময় রাত হয় । সব পাখি ঘরে ফেরে- তাদেরও ঘরে ফিরতে হয় । ফেরার সময় অনু তাকে বলে- পৌঁছে ফোন দিও । সেই ফোন এখনো আসেনি ....
মুঠোফোনের আচমকা শব্দে সম্বিত ফিরে পায় সে । ফয়সালের ফোন, অনিকের রুমমেট । এতো রাতে তার ফোন ?!! অজান্তেই হাতটা কেঁপে ওঠে তার ।
--হ্যালো ?
-- কে ? অনু ? আমি ফয়সাল ..
--হ্যা, ফয়সাল ভাই ।
--শোনো তুমি কি একটু বাইরে বেরোতে পারবে ?
--এতো রাতে ? কিন্তু কোথায় ..?
-- সিটি হসপিটালে । অনিক এক্সিডেন্ট করেছে ।
অনুর মুখ দিয়ে কোন শব্দ বেরোয় না। শব্দগুলো যেন কোন দূরনগরের অতিথি। যেন কোন এক ভাষাহীন পৃথিবীর মানুষ সে । ওপাশে ফয়সালের কন্ঠ শোনা যায় ।''--তুমি আসছো তো ?? হ্যালো ...''
|| গল্পটা এখানেই আটকে থাক। মধ্যরাতের নিকষ কালো আঁধার পেরিয়ে অনু নিশ্চয়ই অনিকের পাশে গিয়েছিল । অনিক কি পেরেছিল অনুর সেই ঘামে ভেজা অদ্ভুত সুন্দর মুখটা দেখতে ?/ না কি এই মধ্যরাতের নিকষ কালো আঁধার তাকে আর কখনো আলোর রাজ্যে ফিরবার সুযোগ দেয়নি ?/
সব পাখি কি নীড়ে ফেরে ....? হয়তো না .... ||
......................
গুছিয়ে লেখার অভ্যেস আমার কোনকালেই ছিলনা । আমি খুব অগোছালো-ছন্নছাড়া টাইপের ছেলে। তবে চেষ্টা করছি গুছিয়ে লেখার । তাতে করে কাব্য বা গল্প না হোক-কিছু একটা তো লেখা হবে ।
আআ/AA
©somewhere in net ltd.