নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী: যেমন দেখেছি ময়মনসিংহ নগরীকে

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫৩



ময়মনসিংহে গবাদিপশু প্রতিপালনের ভালো অভ্যাস আছে মানুষের।

(পূর্ব প্রকাশের পর)

অত্যন্ত ব্যস্ত একটি শহর ময়মনসিংহ। আগাগোড়া ব্যবসা বাণিজ্যের শহর, বিস্তর দোকানপাট সর্বত্র, ছোট বড় অসংখ্য মার্কেট, কেনাকাটার ধূম সবসময়, মানুষের কোলাহল, হৈ চৈ চিৎকার চেঁচামিচি অনবরত। সর্বত্র মানুষের বেশ ভিড়। আশেপাশের জেলাগুলোর লোকজন নানাবিধ প্রয়োজনে নিত্য আসা যাওয়া করে। ময়মনসিংহ শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যান্য বিভিন্ন বৃহত্তর জেলার তুলনায় বেশিই হবে বোধহয়। অনেকটা ঢাকার মতোই গিজগিজ করে মানুষ। এমনকি মাঝরাতেও ঘুম নেই শহরের, জেগেই থাকে যেন। মোরে মোরে কিশোর যুবার প্রাচীন আড্ডা, তাদের দেদার চা পান, সিগারেট টানা। রেল স্টেশন সংলগ্ন ছোটো ছোটো চা’র দোকান, স্টেশনারী দোকান ও হোটেলগুলো কখনও বন্ধ হয় না। চব্বিশ ঘন্টাই খোলা থাকে, তেমনি ব্রিজ সংলগ্ন বাস টার্মিনালেরও দুয়েকটা। ক্রেতাও থাকে বেশ ভালো পরিমাণে। বেশিরভাগই ঢাকাগামী যাত্রী। ময়মনসিংহের প্রচুর সংখ্যক মানুষ ট্রেনে বাসে নিয়মিত ঢাকা যাওয়া আসা করে। ঢাকার সঙ্গে খুব ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা। বিশেষ করে এই রুটে ট্রেনও খুব জনপ্রিয়। স্টেশনে দেখেছিলাম পোস্টারিং- 'ময়মনসিংহ ঢাকা রুটে আরও ট্রেন চাই, ডাবল ট্রেন চাই, কমিউটার ট্রেন চাই' ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঢাকার তুলনায় ময়মনসিংহে খাবারদাবারের দাম খানিকটা কমই বলা যায়। আহামরি কম নয়, সামান্যই কম। যেমন চিকেন বিরিয়ানি ওখানে খেয়েছিলাম আশি টাকা, ডিম ছাড়া। মাছও তুলনামূলক বেশ সস্তা। বেশ কিছু হোটেলে শাক সবজি ভর্তা ভাজির বিরাট আয়োজন লক্ষণীয়। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ছোটো ছোটো হোটেলে রুটি পরটা, ভাত খাবার চমৎকার বন্দোবস্ত। নদীতীরে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে, শো শো বাতাসের শব্দে খাবার একটা আলাদা মজা আছে। কেমন যেন এক সুখানুভবে ভরে থাকে মন। হোটেলের স্পিকারে গান বেজে চলেছে অবিরাম, পাশে স্রোতহীন, খরাক্রান্ত প্রায় মৃতপ্রায় শুষ্ক নদী, নদীর জলীয় বাতাস উড়ে আসছে, বাতাসের একটানা শো শো শব্দ। সত্যি, দারুণ উপভোগ্য পরিবেশ। ওখানে বেশ কিছু অস্থায়ী ছোটো ছোটো কুঁড়ে ঘর হোটেল আছে। কুঁড়ে ঘর বলে নাক সিটকানোর কোনও সুযোগ নেই। আসলে হোটেলগুলো করাই হয়েছে অস্থায়ীভাবে। বোধহয় খাসজমি’র ওপর, তেমন কোনও অনুমতি ছাড়াই (নদীতীরবর্তী এলাকা তো খাসজমিই হবার কথা)! যাই হোক সেই হোটেলগুলো কিন্তু বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আমি ভিতরে দেখেছিলাম, যথেষ্ট স্বাস্থ্যকরভাবেই রান্না হয় সেখানে। ওদের ভর্তা ভাজির বিরাট আয়োজন, খেতেও বেশ সুস্বাদু। মাছ মাংসে তেল মসলার আধিক্য লক্ষণীয়। আমি মূলত পরটা সবজিই বেশি খেয়েছি। ভাত খেলে ভর্তা ভাজিতে জোর দিয়েছিলাম।
ময়মনসিংহে রেল স্টেশন সংলগ্ন ছোট ছোট দুয়েকটি হিন্দু মালিকানাধীন দিনরাত্রির খোলা হোটেল আছে। ওখানে পরটা, লুচি, ভাজি, ডাল, গরুর নির্ভেজাল খাটি দুধ, গরমা গরম দুধের চা চব্বিশ ঘন্টাই পাওয়া যায়। দুতিনটা হোটেল পাশাপাশি। ওখানে খুব খেয়েছি। বিশেষ করে লুচি আর ভাজি। ওরা ভাজিতে পাঁচ ফোড়ন বা এরকম একটা গুড়ো গুড়ো কালো দানাদার মসলা দেয়, ভাজিটা খেতে ভীষণ সুস্বাদু হয়। দাম বেশি নয়। ভাজি আট থেকে দশ টাকা, আর লুচি পরটা পাঁচ টাকা করে। রুটির ব্যবস্থা আছে কিনা, এখন আর ঠিক মনে করতে পারছি না। হয়তো আছে! সবকিছু অতো পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে রাখা সম্ভবও নয় মানুষের! যথারীতি ভুলেও গেছি অনেককিছু, কিংবা আধো আধোই মনে করতে পারি আজ! যাই হোক ওখানে গরুর খাটি দুধ পাওয়া যায়। ফুল গ্লাস ও আধা গ্লাস যথাক্রমে বিশ ও দশ টাকা। খাটি দুধ। এই জিনিসটা নিয়মিতই খেয়েছি দুদিন। দুদিনই ছিলাম ময়মনসিংহে। টগবগানো গরমাগরম খাটি দুধ। কী যে ভালো লাগে খেতে! ঢাকার মতো পানির কারবার নেই ওদের দুধের মাঝে। শতভাগ সর ভাসা খাটি দুধ। বিক্রিও হয় প্রচুর। বিকেলের পর থেকে দেদার বিক্রি হতে থাকে দুধ, রাতভর চলে। আর কিছু না হলেও সবাই অন্তত এক বা আধা গ্লাস দুধ খেয়ে যাবেই যাবে হোটেলগুলো থেকে। ভাবছি, আমি আবার একবার ময়মনসিংহে যাবো সময় করে। কাছাকাছি সময়েই আরেকবার যাবো।
(চলবে)

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৩৩

হংস বলাকা বলেছেন: আপনার বক্তব্য পড়ে ভ্রমনের ইচ্ছা করছে

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২১

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:৫৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: এবারো ভালো লাগলো, ভালো লিখেছেন, চলতে থাকুক,
শুভকামনা।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২১

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪২

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চলতে থাক............।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২২

অর্ক বলেছেন: দেখি...

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:


অর্ক সাহেব,
ভাল লাগলো। তবে ছবি এড করলে আরো সুন্দর হয়ে উঠতো।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৩

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। অনিবার্য কারণে ছবি সংরক্ষণ করতে পারিনি।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৫৩

রোমিও সবুজ দাস বলেছেন: আমি ময়মনসিংহে থাকি। নদটার জন্য খুব কষ্ট হয়। শহরের ভিতরের রাস্তা আর জ্যাম ও অব্যবস্থাপনা আমার সবচেয়ে খারাপ লাগে।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৫

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। আমারও তাই অভিজ্ঞতা। এমনকি আবর্জনা সরানোতেই বিরাট ত্রুটি রয়ে গেছে, সবখানে স্তূপ।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগলো ময়মনসিংহ কথন।

ভাবছি আমার মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর লিখব।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৫

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। অবশ্যই লিখুন।

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩

করুণাধারা বলেছেন: ময়মনসিংহতে নাকি অনেক রকম মিষ্টি পাওয়া যায়- যেমন মুক্তগাছার মন্ডা, টাংগাইলের পোড়াবাড়ির চমচম এসব। আপনি খান নি?

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৭

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। মুক্তাগাছা যাইনি। এছাড়াও আমি মিষ্টি সেভাবে পছন্দও করি না।

৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৬

তারেক ফাহিম বলেছেন: ভ্রমন গল্প একটি মাত্র ছবি ;) ছবি ব্লগ আমার ভালো লাগে তাই বললাম।

পরের পর্বের অপেক্ষায়।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৮

অর্ক বলেছেন: দুঃখিত। অনিবার্য কারণে ছবি সংরক্ষণ করতে পারিনি।

৯| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ময়মনসিংহের লোকজন খুব এনার্জেটিক। তারা জোরে কথা বলতে ভালবাসে। তাদের চা-স্টলে এবং সাধারণ রেস্তোরাঁগুলোতেও খুব ভাল মানের খাঁটি দুধ পাওয়া যায়। এই একটি জিনিস আমার খুব ভাল লেগেছে যে ওরা দুধে পানি মেশায় না। সুলভ মূল্যে আলাদা করে গ্লাস ভর্তি খাঁটি দুধের সরও পাওয়া যায়। হোটেলে খাওয়ার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশ সস্তা, স্বাদের মানও ভালো।
আপনার লেখায় মোটামুটি একটা বাস্তব চিত্র পাওয়া গেছে। অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২৭ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১

অর্ক বলেছেন: দারুণ প্রেরণাদায়ক আপনার এই দীর্ঘ মন্তব্য শ্রদ্ধেয় খায়রুল ভাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.