![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উর্বর মস্তিষ্কের কার্যকলাপে জবাবদিহি করতে বাধ্য নহে।
ভূমিকা
বাংলাদেশের রাজনীতি অনেকটা গোপন চুক্তি আর অনুচ্চারিত সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কিছু মানুষ ইতিহাসে অদৃশ্য হয়ে যান—আলো থেকে দূরে, চিৎকারহীন এক প্রান্তে। তাঁদের একজন লুতফুজ্জামান বাবর। একসময়কার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, একটানা ১৭ বছর জেলবন্দি, ভারতের সরাসরি ইন্ধনে ফাঁসির আসামি—এই মানুষটা এখন আক্ষরিক অর্থেই ‘মিউট’।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—কেন?
এক সময়ের আওয়াজ, আজ কেন নিস্তব্ধতা?
২০০৫ সালের সেই কুখ্যাত বক্তব্য—"We are looking for shatrooz"—ছিল ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেওয়ার সাহসী ঘোষণা। তখনকার রাজনৈতিক জলঘোলায় দাঁড়িয়ে এই কথাটা বলার মানে ছিল নিজে টার্গেট হয়ে যাওয়া। ফলাফলও সে রকমই হয়েছে। বহু বছর বিচারহীনভাবে কারাগারে আটকে রাখা, ফাঁসির দড়ির নিচে দাঁড়িয়ে থাকা, রাজনীতির মূলধারা থেকে ছিটকে পড়া—সবই সহ্য করেছেন তিনি।
কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাইয়ে রাজনৈতিক জোয়ার বদলালো। ভাগ্যের ছোঁয়ায় মুক্ত হলেন বাবর। অথচ কারামুক্তির পর থেকে তিনি যেন নিজেই নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন—or has he been silenced?
বিএনপির অভ্যন্তরে অদৃশ্য কৌশল?
বাবর সাহেবের নীরবতার চেয়েও বেশি প্রশ্নের জন্ম দেয় বিএনপির আচরণ।
দলের একজন প্রভাবশালী নেতা যখন বন্দি ছিলেন, ফাঁসির দড়ির প্রতীক্ষায়, তখন বিএনপি কী করেছিল? খুব একটা কিছু নয়।
আর এখন?
মুক্তির পর তাঁকে সামনে না এনে বিএনপি তুলে ধরছে সালাহউদ্দিন আহমেদকে—একজন নেতা যিনি ১১ বছর ভারতের মেঘালয়ের শিলং শহরের অভিজাত বাংলোয় ছিলেন 'নিরুদ্দেশ' অবস্থায়।
এই জায়গাটায় খটকা লাগে না?
যে ভারত সরাসরি লুতফুজ্জামান বাবরকে শাস্তি দিতে চেয়েছে, সেই ভারতেরই ছায়ায় দীর্ঘদিন কাটানো একজন নেতাকে আজ দলের মুখ করে তোলা হচ্ছে—এটা কি নিছক কাকতাল? নাকি এর পেছনে গভীর কোনো কূটনৈতিক সমঝোতা রয়েছে?
বাবর কি বিপজ্জনক সত্যের ধারক?
রাজনীতিতে নীরবতা সবসময় অনুপস্থিতির চিহ্ন নয়, কখনও কখনও এটি ভয়, কখনও চুক্তির ফল, কখনও বা অসম্ভব সত্যের ভার।
বাবরের মুখ খুললে কি বিএনপির কোনো অংশ অস্বস্তিতে পড়তে পারে?
তাঁর কারাজীবনের অভিজ্ঞতা, ভারতবিরোধী অবস্থান, অতীতের ভেতরের গল্প—এসব কি আজকের রাজনীতির সুবিধাবাদী কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠতে পারে?
শেষ কথা
বাংলাদেশের রাজনীতি যেভাবে ধোঁয়াশা আর কৌশলের মাঝখানে চলেছে, তাতে বাবরের নীরবতা নিছক ‘ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’—এ কথা মানা কঠিন।
এটি হয়তো কোনো বোঝাপড়ার অংশ, হয়তো দলীয় কৌশলের অংশ, বা হয়তো বড় কোনো রাজনীতির ‘আগামী অধ্যায়ের’ প্রস্তুতি।
কিন্তু একটা কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়—“We are looking for shatrooz” বলার সাহস যাঁর ছিল, তাঁর নীরবতা নিজেই এক ‘পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট’। আর সেটাই আমাদের ভাবতে বাধ্য করে,
"বাবর নীরব কেন?"
©somewhere in net ltd.