![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মি’রাজের পদাবলী
- আবছার তৈয়বী
ওগো আমার প্রিয় রাসূল
তুমি যে কত মহান!
খোদ খোদা আল্লাহ্ তায়ালার
তুমি যে মেহমান।
তোমার মহিমা কত যে উঁচু
কী করে বলি আমি?
জানে না কেহ তব মর্যাদা
জানে শুধু অন্তর্যামী।
কাফির বেদ্বীন মুশরিক যবে
দিলেতে আঘাত হানে,
পাঠালেন খোদা জিব্রিলে নিতে
তোমাকে তারই পানে।
জান্নাতে বোরাক কেঁদে মরে হায়
আমাকে নিয়ে যাও,
যাঁর প্রেমে আমি নিত্য কাঁদি
তাঁর কদমে দাও।
বোরাক নিয়ে জিব্রিল হাজির
উম্মে হানীর ঘরে,
ঘুমিয়ে আছেন দ্বীনের নবী
ডাকি তাঁরে কী করে?
জিব্রিল আমিন বসিয়া পড়ে
নবীর কদম ধরে,
জিহ্বা তারই লাগিয়ে দিল
কদম তালুর পরে।
প্রিয় নবীজির ঘুম ছুটে যায়
শীতল পরশ পেয়ে,
জিব্রিল আমিন দাঁড়িয়ে থাকে
নবীর দিকে চেয়ে।
আরজ করেন- দয়াল নবী
খোদার সালাম নেন,
নিতে এসেছি দাওয়াতে খোদার
অনুমতি যদি দেন।
জিব্রিল আমিন ঢালেন পানি
নবীজি করেন ওজু,
ওজুর পরে খোদার পানে
হলেন তিনি রুজু।
কাবা চত্বরে করল নবীর
বক্ষ বিদারণ,
জমজম দিয়ে ধৌত করে
করল নিবারণ।
জিব্রিল আমিন নবীকে এবার
সাজাল দুলহার সাজে,
নবী শুধালো উম্মত আমার
ছাড়িব কাহার মাঝে?
কত যে খুশি আমি যে আজি
যাচ্ছি খোদার পানে,
উম্মত আমার বে ছাহারা আজি
কে দেখিবে তাদের পানে?
আল্লাহ বলেন নবীকে আমার
খোশ খবরী দাও,
উম্মতের ভার নিলাম আমি
আমার পানেতে চাও।
বোরাক সাজিল অপরূপ সাজে
নবীজি গেলেন কাছে,
জিব্রিল ধরিল লেগাম বোরাকের
খুশিতে বোরাক নাচে।
চোখ যতদূর যায় ততদূর
বোরাকের কদম গতি,
প্রভু সাক্ষাতে চলিল আজি
দোজাহান অধিপতি।
প্রথমে গেলেন মদীনা শরীফে
যেথায় হিজরতগাহ্
সেখান থেকে তুরে সিনায়
মূসার কবরগাহ।
জমিনে দাঁড়িয়ে কবরের ভেতর
দেখেন নূরের রবি,
তাঁরই ওপর পড়ছে সালাত
হযরত মূসা নবী।
সেখান থেকে গেলেন নবী
ঈসার জম্মভুমে
সারাটি পথে তরু-লতা সবে
নবীর কদম চুমে।
নবীরা যেখানে বাহন বাঁধিত
বোরাক বাঁধিল তাতে,
সকল নবী দাঁড়িয়েই আছে
প্রিয়নবীর সাক্ষাতে।
সকল নবী হলেন মুক্তাদি
ইমাম হলেন যিনি,
জগতশ্রেষ্ঠ ইমামুল মুরসালীন
নবীদের নবী তিনি।
সকল নবী কত খুশি আজি
হতে পেরে তাঁর উম্মত,
বিনা ক্লেশে আমি হয়েছি গোলাম
কত বড় মোর কিসমত।
সাখরা থেকে উর্ধ্বপানে যেতে
খোদা পাঠালেন সিঁড়ি,
নবীবর চলেন নূরী বাহনে
মাঝে মাঝে চান ফিরি।
প্রথম আসমানে যখন গেলেন
বাবা আদমের দেখা,
একবার কাঁদে একবার হাসে
হাদিসেতে আছে লেখা।
দ্বিতীয় আসমানে ঈসা ইয়াহইয়া
দাঁড়িয়ে আছে একসাথে,
তৃতীয় আসমানে দেখা হলো তাঁর
হযরত ইউসুফের সাথে।
চতুর্থ আসমানে ইদরীস আছেন
পঞ্চমেতে হারুন,
ষষ্ঠতে দেখা মূসার সাথে
দুশমন যার কারুন।
সপ্তম আসমানে ইব্রাহীম আছেন
মুসলিম জাতির পিতা,
সকলের সাথে সালাম কালাম
করলেন খোদার মিতা।
সেখান থেকে নবীজি গেলেন
সিদরাতুল মুনতাহা,
বিদায় চাইলেন জিব্রিল আমিন
এটি তার এনতেহা।
এক বন্ধু অপরে কি ভাই
মাঝপথে ফেলে যায়?
জিব্রিল বলে একচুল বাড়লে
জ্বলে পুড়ে হবো ছাই।
সবুজ রঙের রফরফ এলো
নূরের দ্যুতি জ্বলে,
নূরের নবী হলেন সওয়ার
নবীকে নিয়ে সে চলে।
লওহ কলম পেরিয়ে রফরফ
আরশে গিয়ে থামে,
আরশ নেচে উঠলো হেসে
নবীজি যখন নামে।
আরশ বলে- দয়াল নবী
ধন্য আমি আজি,
আপনার জন্য আমার সৃজন
নিত্য নতুন সাজি।
সেখানে আসলো আরেক বাহন
নূরের আকর রূপে,
মুগ্ধ হলেন নূরের নবী
নবীকে নিলো সে লুফে।
সত্তর হাজার নূরের পর্দা
পেরোলেন নবী যবে,
মহামহিম প্রভুর সাথে এবার
নবীর দেখা হবে।
‘হে চির প্রশংসিত প্রিয়তম আমার
এবার তুমি দাঁড়াও’
তোমার প্রভু তোমার ওপর
সালাত পড়ছে- খাঁড়াও।
এতদূর তুমি এসোছো বন্ধু
এখন আসবো আমি,
তোমার দিলের সকল খবর
জানি হে বন্ধু আমি।
খোদা আসলেন নবী কাছে
কতটুকু কাছে জানো?
ক্বাবা কাউছাইন আও আদনা
কোরাআন বলে মানো।
তাহিয়্যাত সালাওয়াত তাইয়িবাত সকল
দিলাম উপহার,
উম্মতে আমার দয়া কর প্রভু
তারাাতো গুনাহগার।
সালাম আমার তোমার তরে
হে আমার প্রিয়নবী!
রহমত বরকত নিয়ে যাও সব
তোমাকে দিলাম সবি।
আরো দিলাম পাঁচ ওয়াক্ত
নামায উপহার,
পঞ্চাশ ওয়াক্তের সওয়াব দিবো
তাকে উপহার।
নব্বই হাজার কালাম হলো
মহান প্রভুর সাথে,
সৃষ্টির সকল ধনভাণ্ডারের
চাবি দিল নবীর হাতে।
সকল সৃষ্টির খালিক যিনি
মালিক বানাল তাঁকে,
উভয় জাহান রইলো তোমার
এখতিয়ারের ফাঁকে।
হেলায় আজি ছেড়েছি নামায
ক্ষমা করো আমায় প্রভু,
নবীকে তোমার না ভুলি যেন
জীবনে আমি কভু।
অসীম খোদার অতুল নবী
কত উঁচু তোমার শান,
মিরাজে ধন্য তুমি অনন্য
বাড়িল তোমার মান।
অগনিত দরুদ সালাম পাঠাই
নবীজি তোমার শানে,
তৈয়বী তোমার অধম উম্মত
তাকাও তাহার পানে।
১৬ জুলাই, ২০১৫
বাদে ফজর
আবুধাবি।
©somewhere in net ltd.