নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যবাক

অাবছার তৈয়বী

আবছার তৈয়বী

অাবছার তৈয়বী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কীভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা যায়?

২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১১

কল্যাণপুরের অকল্যাণকামীদের কালো মদদদাতা কারা?
কীভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা যায়?

-আবছার তৈয়বী
গতকাল শেষ রাতে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএস ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিহত লোকদের স্মরণে আমি যখন কবিতা লিখছিলাম- ঠিক সেই সময়েই ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে 'অপারেশন স্ট্রম-২৬' চালানো হচ্ছিল। এর বিন্দু-বিসর্গও আমি জানতাম না। আজ সকাল ৯ টায় প্রথম বিষয়টি জানতে পারি। বলা যায়, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ঠিম 'সোয়াত' অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতায় নিঁখুত পরিকল্পনায় অত্যন্ত সাহসিকতা ও নির্ভিকতার সাথে অপারেশনটি পরিচালনা করেছেন। এতে ৯ জন জঙ্গি পটল তুলেছে এবং একজন জঙ্গি আহত অবস্থায় ধৃত হয়েছে। এজন্য দেশের ও প্রবাসের শান্তিকামী আপামর বাংলাদেশী জনসাধারণের পক্ষ থেকে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাতে চাই। আপনারা আমার ধন্যবাদ ও সাধুবাদ গ্রহণ করুন।

কিন্তু আমাদের জানতে হবে- কল্যাণপূরের এই 'অকল্যাণকামী' জঙ্গিগোষ্ঠী কারা? তাদের কালো মদদদাতা ইসলাম, দেশ ও জাতির দুষমনগুলো কারা? কারাই বা আমাদের দেশের এই তরুণ প্রজম্মকে বিভ্রান্ত করছে? ধর্ম, মানবতা, দেশ ও জাতির সেই গণদুষমনদের কেন আড়াল করা হচ্ছে? তাদেরকে কেন জাতির সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে না? এই কালো সন্ত্রাসীদের কালো পোশাককে 'সন্ত্রাসী পোশাক' না বলে কেন 'জিহাদী' পোশাক বলা হচ্ছে? তাদের বইগুলোকে কেন 'জিহাদী' বই বলা হচ্ছে? তারা কি অাসলেই 'জিহাদ' করছে? সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের নাম কি 'জিহাদ'? ধর্মের প্রতি অনুরাগী না হওয়ার জন্য কেন প্রচ্ছন্নভাবে প্রচারণা ও প্রোপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে? জীবিত জঙ্গিরা ধরা পড়ছে না কেন? যারা ধরা পড়ছে- তারা তথাকথিত ক্রসফায়ারে 'খরচ' হয়ে যায় কেন?

অাপনারা লিখে রাখুন- এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যথাযথ ভাবে জানা না গেলে বাংলাদেশ থেকে কখনোই 'জঙ্গিবাদ' নির্মূল হবে না। জঙ্গিবাদের মূল শেকড়টা উপড়ে ফেলার জন্য এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ কিছু জঙ্গি 'অন দ্যা স্পট' মারা গেলেও আরো জঙ্গি কোথাও না কোথাও ওঁৎ পেতে আছে। তারা সুযোগের অপেক্ষায় আছে। সবচেয়ে বড়ো কথা, জঙ্গিবাদের 'জনক-জননীদের' ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রেখে জঙ্গিবাদ নির্মূল করার স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না। কারণ, ওই কালো মনের মানুষগুলো প্রতিনিয়ত জঙ্গি 'প্রোডাকশন' দিচ্ছে। তাদের প্রজনণ ক্ষমতা প্রচুর এবং ব্যাপক। এজন্য প্রথমেই জঙ্গি প্রজনণের কেন্দ্রগুলো চিহৃিত করতে হবে। সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। বন্ধ করা না গেলে কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো- জঙ্গিবাদের জনক-জননীদের চৌদ্দ শিকের বড় দালানে ঢোকাতে হবে। তাদের শাস্তি সুনিশ্চিত করতে হবে। জঙ্গিবাদের 'আন্ডা-বাচ্চা'গুলো ও ফ্যাক্টরি ডেস্ট্রয় করে দিতে হবে। না হয় কখনোই জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে না। আচ্ছা- এই সহজ সরল কথাগুলো আমাদের সরকার বুঝে না কেন- বলতে পারেন?

আমাদের এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ছড়ায় কারা? জঙ্গিবাদের পক্ষে উস্কানী দেয় কারা? জঙ্গিবাদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালায় কারা? ইসলাম বিকৃতকারী কুখ্যাত ও ঘৃণ্য আহলে হাদীস, সালাফী ও মৌদুদীবাদের জনসভা ও মাহফিলগুলোতে অতিথি হয়ে অাসন অলংকৃত করে কারা? কারা এদের বিকৃত ইসলাম প্রচারের সুযোগ করে দেয়? জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক ও প্রচারকারী কারা? এদেশের শান্তিপ্রিয় মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ধর্মের ধার্মিক মানুষগুলোর মাঝে 'নাস্তিক্যবাদ' ছড়ায় কারা? শান্তির ধর্ম ইসলাম, ইসলামের নবী, সাহাবা ও অাউলিয়াদের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও কটাক্ষ করে কারা? নাস্তিকদের পক্ষে সাফাই গায় কারা? যদি বলি- 'নাস্তিক্যবাদ' নির্মূল ও 'ইসলাম বিদ্বেষীতা' বন্ধ না করলে, ইসলাম বিদ্বেষী নাটক, সিনেমা, সাহিত্য ও সাংবাদিকতা বন্ধ না করলে জঙ্গিবাদ দমন করা যাবে না- তাহলে কি ভুল বলা হবে?

এজন্য ধর্মের মর্মবাণী তরুণ প্রজম্মের কর্ণকুহর দিয়ে তাদের মর্মমূলে পৌঁছাতে হবে। বিকৃত রূপের চর্চা বাদ দিয়ে ধর্মের প্রকৃত রূপের প্রতি নতুন প্রজম্মের অনুরাগ বাড়ানো না গেলে, মানুষের মাঝে সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করা না গেলে, পুলিশের দমন-পীড়ন ও রাজনৈতিক জোর-জুলুম বন্ধ করা না গেলে জঙ্গিবাদের স্পৃহা ও বীজ কিন্তু ঠিকই থেকে যাবে। তাই আমি সদাশয় সরকারকে অনুরোধ করবো- জঙ্গিবাদ নির্মূলে 'সমন্বিত ও সুদূর প্রসারী উদ্যোগ' গ্রহণ করুন। পাঠ্যপুস্তকে নাস্তিক্যবাদ, ব্রাহ্মণ্যবাদ ও সেক্স সচেতনামূলক পাঠ্যসূচী বাদ দিয়ে মানবতা, উদারতা, দায়া-মায়া, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পারিবারিক বন্ধনের ওপর জোর দিন। প্রকৃত সুফিবাদী ইসলামের পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালান এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিন। উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা বাদ দিয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দিন। পাশা-পাশি খেলা-ধুলা ও সুস্থ বিনোদনের সুযোগ করে দিন। মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ, দায়িত্ববোধ বাড়াতে হবে। দেশের প্রতি জনগণের ভালোবাসা জাগাতে হবে। রাষ্ট্রকে জনগণের সম্মান, নিরাপত্তা, সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের নীতি হতে হবে- 'শিষ্টের লালন ও দুষ্টের দমন'।তবেই জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে। তার আগে নয়। প্রিয় পাঠক/পাঠিকা! আপনারা কী বলেন?

তারিখ: ২৭ জুলাই, ২০১৬ খৃ.
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.