![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চ্যাটবক্সের লেখাগুলোর দিকে আমার বায়োফোকাল চশমার ভেতর দিয়ে তাকালাম। জুনায়েদের রিপ্লাই-
- না আমিতো একাই থাকি। হ্যাঁ চাকরি করি। একটা কর্পোরেট অফিসের অ্যাকাউন্ট সেকশনে।
আমি ওকে সোমবার কফি খাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে সেদিনের মত লগ আউট করলাম।
-বাহ তোমাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে। কিন্তু এই রকম আলোঝলমলে শপিংমলে তোমার এই কালো সানগ্লাসটা একেবারেই মানাচ্ছে না।
-ওকে খুলতেসি। তুমি একটু বস এখানে। আমার একটা ফ্রেন্ড আসছে। ওর সাথে দেখা করে আসি।
জুনায়েদ গেছে বিশ মিনিটের মত হল। আমি শাড়ির দোকানটায় গিয়ে ঢুকলাম।
-সরি! কুত্তার বাচ্চাটা আজকেও আমার টাকা ফেরত দিলো না।
-কি হয়েছে?
-না কিছু না... কি দেখতেসিলা শাড়ির দোকানে?
-এক ভাবি শাড়ি দেখছিল। তার সাথে কথা হল আর কি। মেয়েকে কোচিং –এ নামিয়ে দিয়ে শপিং-এ আসছে। আজকালকার মায়েরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারে এত সিরিয়াস! কথা শুনেই বোঝা গেল।
- ও! আচ্ছা চল! ভালো কফিশপটা ঐদিকটায়।
-কি ব্যাপার! তুমি আমার কোমরে হাত দিয়ে হঠাৎ জড়িয়ে ধরলা কেন?
- আরে চল চল। কি করব একটা কচি খুকী মতন মেয়ে তোমাকে আর আমাকে দেখে মনে হয় মা-ছেলে ভাবসে। ভাববে না কেন... বয়স বাড়সে তোমার, সাথে ফিগারও ! এত মোটা না হয়ে স্লিম থাকলে আমার পাশে সুন্দরী মেয়ে হিসাবে মানায় যাইতো।
-আমারও ইচ্ছা করে মাথায় পনিটেইল করে আবার কচি খুকী হয়ে যাই।
-হাঃ হাঃ হাঃ ভালো বলসো।
-নিশিতা! মামনি আমার, যা জানলাম সেটা কি সত্যি?
- কোনটা?
-তোমার ফ্রেন্ড সাবিহার বাবা আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আছে। সে আমাকে জানালো তুমি তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছ!
- ইয়েস আম্মু আই ডু লাভ হিম। আঙ্কেল অনেক কেয়ারিং। আমার প্রতিটা কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। কিন্তু আমি কেন তোমাকে এসব বলতে যাচ্ছি? তুমি আমার কতটুকু-ই বা খেয়াল রাখো?
- তোমার বাবা বিদেশ থেকে যে টাকাগুলো পাঠায়, তার অর্ধেকটাই আমি তোমার আনন্দ-বিলাসে খরচ করি। আইফোন চাইতেই পেয়ে গিয়েছ!
তোমার সমান আর কয়টা মেয়ের এমন ভাগ্য আছে!
- হ্যাঁ আম্মু খুব বাজে ভাগ্য! যার মা শপিংমলে নিজের থেকে কমবয়সী ছেলের সাথে টইটই করে ঘুরে বেড়ায়। আর সেই উগ্র ছেলে আমার সামনে আমার আম্মুর কোমর জড়িয়ে ধরে!
- জানিস নিশিতা, আমি আর তোর নুহান খালামনি যখন ছোট ছিলাম, তোর নানু আমাদের নিজ হাতে জামা সেলাই করে দিত। সাথে ম্যাচ করে একটা ব্যাগও বানিয়ে দিত। আমি হয়তো তোর সাথে এমন না। তুই একা স্কুলের পর শপিংমল ঘুরিস। শেষ কবে আমার সাথে এমন ছিলি মনে আসছে না। চল কালকে আমরা একসাথে ঘুরব। ভুল থেকে ফেরার পথও আছে।
নিশিতা এখন ভালো ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে। পুরনো ভুলগুলো আমরা অনেক পিছনে ফেলে এসেছি। জুনায়েদের নিজের কাছাকাছি এক মেয়ের সাথে সম্পর্কের বিষয়টা আমি জানতাম। আমিও তাই ওকে আমার দিকে টেনে এই ভুলের প্রসার ঘটাতে চাইনি।
আমরা মা-মেয়ে নিজেদের একাকিত্বকে নিজেদের মধ্যে খুব ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দিয়ে শেষ করতে পেরেছি। কখনো নিশিতা আমাকে আমার জন্মদিনে কেক বানিয়ে চমকে দেয়। আগেরমত এতটা বিলাসিতা পছন্দ না ওর। আর আমি মনে হয় এখন অন্যসব মায়েদের থেকে ওর পরাশুনার ব্যাপারে বেশি খুঁতখুঁতে।
ছোট্ট এ জীবনে মা- মেয়ে দু’জন মিলে এখন অন্যদের করা প্রশংসাগুলো উপভোগ করি!
২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫
স্বাধীনচেতা চিত্রাঙ্গদা বলেছেন: হ্যাঁ সেটা হতেও পারে।
তবে পরবর্তীতে আমার পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে আপনার যেন এমন না লাগে।
ধন্যবাদ মতামত ব্যক্ত করার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৪২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: খুব উশখুশ লাগছে গল্পটা পড়ে , হয়তো আমি অতো ফাস্ট না তাই ।
ভালো থাকুন , সুন্দর থাকুন