![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৃষ্টির সবচেয়ে ধৈর্যশীল, সহনশীল জীব হচ্ছে একজন মেয়ে। কেননা বিচার বিবেকহীন, বনের সেই বাঘিনীও নিজের আত্মরক্ষার জন্য গর্জন করার স্বাধীনতা পেয়েছে কিন্তু সৃষ্টিশীল এই সামাজিক জড় পদার্থটি সামান্য 'ঊফফ!' করার মত ক্ষমতাটও অনেক সময় রাখেনা। একমাত্র যা ধারন করে রাখে তা হল-ধৈর্য।
জীবনে বেশ অনেকবার অনেক অসহায় মুহূর্তের স্বীকার হয়েছি। না। খুব বড় কোনো ঘটনা হয়তো নয় যে Placard, Poster হাতে প্রেস ক্লাবের সামনে দাড়িয়ে যাব প্রতিবাদ বা সুষ্ঠুবিচারের আশায়, তবে সে আসহায় মুহূর্ত গুলো ছিল নিতান্তই সর্বজনীন সকল মেয়েদের জীবনের কিছু inevitable মুহূর্ত। চুপটি করে ঘাপটি মেরে নির্বাক বসে রইতাম, ঘড়ির ' টিক টক টিক টক' এর সাথে সাথে সে মুহূর্ত গুলোও 'টক টক' করতে করতে চলে যেতো।
তবে এখন উপলব্ধি করছি, সে ঘটনা গুলো ছিল একেবারেই নগণ্য কারন জীবনের যেই পর্যায় এখন এসে পৌছেছি, সেখানে অসহায়ত্বের বোধহয় কোনো সীমা নেই। ওহ! না না! ভুল বললাম। ইতি আছে এবং তা একটি শব্দে প্রকাশিত- 'কবুল'!
২১ এর কঠায় সবে মাত্র পদার্পন করলমা। নিজের চোখে দেখে খুব একটা বেশি বুঝিনা তবে মানুষের চোখে বোদহয় অন্য মেয়েদের জৌবের ছাপটি ঠিকই নজরে পরে- 'মেয়েটি দেখতে তো ভালই, 'অমুকের' বিয়ের প্রস্তাব টি দেয়া যেতে পারে', দেখিবা মাত্রই যেই চিন্তা খানা তাদের সতঃস্ফুর্ত মস্তিকে উদয় হয়। ব্যাস! শুরু হয়ে যায় বিয়ে related middlemen দের কাজ। দরজার কড়া নেড়ে, হাসি মুখে নিয়ে আসে তাদের প্রস্তাব। ইচ্ছে করে বাঘিনীদের মত গর্জে ওঠে আক্রমনাত্মক স্বরে চিৎকার করে উঠি। কিন্তু সে দৃশ্যপট শুধু মাত্রই মস্তিকের Projector এই। তারা মুখ উঠিয়ে দেখতে চলে আসে 'মেয়ে লজ্জায় কতটুকু মাথা নিচু করে রাখতে পারে'। মনের মাঝে প্রবল মাত্রায় Cyclone বোইতে থাকলেও তার ছিটে ফটা ও নিজের Facial Expression এ বুঝাতে পারিনা। আসহায় যে! ছেলেটি দেখতে যেমনি হোকনা কেন, ঠোঁট বাকিয়ে , হাসি নামক ভোংগি প্রদর্শন করতেই হয়।
আমার মনে Cyclone বোইলেও আমার মায়ের মনে যে আতশবাজি ফুটতে থাকে তাও কিন্তু নয়। তার মনের ভেতোরেও ক্ষোভের আগ্নেয়গীড়ি এলো পাথারি ভাবে ফেটে পরতে থাকে। কিন্তু সে যেনো আরও বেশি অসহায়। 'তার বা তার মেয়ের লবণ পরিমান দৃষ্টিকটু আচরনেও যে তার মেয়ের জীবনে ভয়াবহ মাত্রায় ভুমিকম্প ঘটাতে পারে'- তার ধারনা এটাই।
ছেলে পছন্দ না হলে সেটা স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করতেও ভয় পায়। কেননা তার আচরনে যদি পাত্র পক্ষ আঘাত পায় এবং মেয়ের ব্যপারে কুৎসা রটনা করে যদি একে ওকে যানান দেয় তাহলে সমাজে ওই মেয়ের মুখ গুজার মত জায়গা যে থাকবেনা! There again ভবিষ্যতে ভালো বিয়ে আসার ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। অথচ, ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পড়া শোনা শেষ করে, নিযেকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তোলা পর্যন্ত কী একটু ধৈর্য ধরা যায় না? উপযুক্ত মেয়ের জন্য অনপোযুক্ত পাত্রের bio data ধৈর্য ধারন করে শুনতে পার, অথচ এই মেয়ের জন্যই যে একসময় যোগ্য পাত্র ঠিকই আসবে সেটা এনারা অনক সময় ই এনারা ভুলে যায়।
কী বা আর করার? মেয়ে হয়ে জন্মেছি, শুরু হয়ে গেলো তবে আরেকটি অগ্নিপরীক্ষা। এ ব্যপারে যতই লিখিনা কেনো, কম হবে। তাই ইতি টানতে বাধ্য হলাম।
উত্তর অন্বেষনের জন্য এই অঙ্গাতের প্রশ্ন:
'যদি মেয়েরা সবসময় তাদের তীব্র অসহায়ত্বের বহিপ্রকাশ ঘটায়, তবে কী তারা নির্লজ্জ, অশিক্ষিত, বেয়াদব, নষ্ট মেয়ের কাতারে পরবে, নাকি তাকে 'সাবাস নারী!! তুমি এগিয়ে যাও তোমার স্বাধীন চিন্তা নিয়ে' -বলে সাবাসী দেয়া হবে?'
©somewhere in net ltd.