![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাদা মনে বলছি। পেশায় আইনজীবী। ভাবতে ভালবাসি। ভাবাতে ভালবাসি। ষোল কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি!
নারী জাতি শারিরীক ভাবে দুর্বল পুরুষের তুলনায়। আর এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পৃথিবীর শুরু থেকেই পুরুষ জাতি নারী জাতির উপর হিংস্র হায়েনার মত অত্যাচার করেছে। বানিয়ে রেখেছে নিজেদের হাতের পুতুল। অত্যাচার আর নির্যাতনে তিলে তিলে শেষ করে দিয়েছে নারীর অস্তিত্ব। প্রত্যেক পরিবারেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোন বিষয় নিয়ে মতের অমিল থাকতেই পারে। স্বামী স্ত্রী কে শাসায়। নোংরা কথা বলে স্ত্রী কে। স্ত্রী সে সব জঘন্য কথার প্রতিবাদ করলেই হিংস্র জন্তু জানোয়ারের মত অনেক পুরুষেরাই তাদের স্ত্রীদের সাথে বিধ্বংসী আচরণ করে থাকে। কারণ নারী জাতি শারিরীক ভাবে পুরুষের তুলনায় দুর্বল।
সাম্প্রতিক কালে আমাদের দেশের উপর দিয়ে কিছু বিধ্বংসী ঘুর্ণিঝড় বয়ে গেছে। সেগুলো একটু পযালোচনা করলেই একথাটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সে সব বিধ্বংসী ঘুর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে নারীদের নামে।যেমনঃ রিটা, ক্যাটরিনা, নার্গিস, সিডর, রেশমী, বিজলী ইত্যাদি। তাহলে কি নারীরা এসব ঘুর্ণিঝড়ের মতই এত বিধ্বংসী? কিন্তু বৈশিষ্ট, প্রকৃতিগত এবং আচরণ গত ভাবে পুরুষেরা এত বিধ্বংসী হওয়া সত্বেও বিধ্বংসী ঘুর্ণিঝড় গুলোর নাম কেন বেছে বেছে নারীদের নামেই নাম করণ করা হয়? এটা কি উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো নয়?ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, শুধু সাম্প্রতিকালেই নয় বরং অতীতেও অনেক বার ঘুর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে নারীদের নামে।
আমরা মোটামুটি সবাই এটা জানি যে, সাগরের জলরাশির ঠিক উপরিভাগের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কোন কারণে যদি বেড়ে যায়৷ তাহলে হালকা গরম বাতাস দ্রুতগতিতে উপরে উঠে যায় এবং ওই শূন্যস্থানটির বায়ুচাপ কমে যায়৷ তখন চারপাশ থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বাতাস এসে জায়গাটি পূরণ করে৷ এই বাতাস কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুরতে ঘুরতে ওই শূন্য স্থানে আসে৷ ভারী বাতাসের নিচের দিকের এ গতিপ্রবাহকে নিম্নচাপ বলে৷ এই নিম্নচাপ সময়ের সাথে সাথে শক্তি সঞ্চয় করে৷ ক্রমান্বয়ে তা ভয়ংকর শক্তি পেয়ে কোন একদিকে চলতে শুরু করে৷ সাইক্লোনের বাতাস উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে চক্রাকারে কেন্দ্রের চারদিকে প্রবাহিত হয়৷
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটিই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে। উত্তর ভারতীয় মহাসগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ। বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা এবং ওমানের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার একটি প্যানেল হচ্ছে এস্কেপে। যখনই কোনো ঘূর্ণিঝড় হয়, এই দেশগুলো থেকে নাম প্রস্তাব করা হয়।আগে ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে নামকরণ করা হতো ঝড়ের উৎপন্ন অবস্থানকে নিয়ে। তা আবার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ ভিত্তিক। কিন্তু বর্তমানে নারীদের নামে ঘূণিঝড়ের নামকরণের মাত্রা বেশি পরিমাণে বেড়ে গেছ। বিষয়টি উদ্বেগজনক। এভাবে নামকরণের মাধ্যমে নারীকে বিশ্ববাসীর কাছে বিধ্বংসী হিসেবে পরিচয় দেওয়া হচ্ছে।
সাম্প্রতিকালে বাংলাদেশ আরো একটি ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। শিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে কায়ান্ট। কায়ান্ট নামটি প্রস্তাব করেছিল মিয়ানমার। স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ কুমির। এর থেকে বোঝা যায় যে, নারীদের নাম বাদ দিয়েও ঘূর্ণিঝড়ের সুন্দর সুন্দর নাম দেওয়া যেতে পারে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বা ডব্লিউ.এম.ও কে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের ব্যাপারে আরো বেশি দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করা উচিত। বিষয়টি অনেকের কাছেই তুচ্ছ হতে পারে। কিন্তু আমাদের এটা ভাবা উচিত এটি তুচ্ছ বিষয় নয়। অনেক ভেবে চিন্তে এরূপ নামকরণ করা হচ্ছে। নারীদের নামে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে আমরা নারীদেরকে পরোক্ষ ভাবে অপমানিত করছি।
©somewhere in net ltd.