![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাদা মনে বলছি। পেশায় আইনজীবী। ভাবতে ভালবাসি। ভাবাতে ভালবাসি। ষোল কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি!
ছোট বেলা থেকে একটি পেশার সুনাম শুনে শুনে বড় হয়েছি। আজ বড় হয়েও সেই একই কথা শুনি। আইনপেশা নাকি একটি রাজকীয় পেশা, মহৎ পেশা। ওকালতি যে একটি মহৎ পেশা এ বিষয়ে সন্দেহের লেশ মাত্র নেই আমার মনে। তাই তো আইনজীবী হবার দুর্বার ইচ্ছে নিয়ে আজ আমি আইনজীবী হয়েছি। বড্ড ভাল লাগে যখন নিজেকে বলি আমি একজন আইনজীবী। কেন এত ভাল লাগে মাঝে মাঝে বুঝতে পারিনা তবু ভাল লাগে। আইনপেশা একটি রাজকীয় পেশাও বটে। কিন্তু আমার এ ধারণার চিড় ধরে যখন বাস্তব জীবনে ওকালতি করতে এসে দেখি আমার স্বপ্নের পেশার বেহাল দশা দেখে। নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। যখন দেখি রাজকীয় এই পেশার পেশাজীবীরা রাজকীয় পোশাক কালো কোট, কালো টাই, সাদা শার্ট অর্থাৎ তাদের জন্য নির্ধারিত পোশাকের তোয়াক্কা না করে রঙ্গিন শার্ট বা ইনফর্মাল পোশাক পরে দিব্বি আদালতের এজলাসে শুনানী করছেন তখন রাজকীয় এই পোশাকে অবহেলিত, পদদলিত আর লাঞ্চিত বলে মনে হয়। বয়সে নবীণ থেকে শুরু করে অনেক প্রবীন আইনজীবীও তাদের জন্য নির্ধারিত পোশাকের তোয়াক্কা না করে যেন তেন পোশাক পরে শুনানী করছেন। অনেকে আবার নির্ধারিত পোশাক পরিধান করলেও পোশাকটা এত নোংরা থাকে যে তা না পরার চেয়ে ক্যাজুয়াল পোশাক পরাই শ্রেয় মনে হয়। আমি মনে করি এতে এই রাজকীয় পেশার বদনাম করা হয়। আইনজীবী হলেই যে কেউ প্রচুর টাকা পয়সার মালিক হবে দামি দামি পোশাক পরবে এমনটা নয়। কিন্তু তাঁর নির্ধারিত পোশাক এক সেট হোক তবু সেটা তো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাজকীয় করে তোলা যায়। আমাদের প্রিয় নবীর একটি বাণী আছে যেখানে তিনি বলেছেন তোমরা ছেড়া কাপড় পর তাতে কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু সেটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পরিধান কর। এই পেশা টাকে রাজকীয় পেশা বলার অনেক কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই পেশার জন্য নির্ধারিত পোশাকে রাজকীয় ভাব যতটা ফুটে ওঠে অন্য পেশায় ততটা ফুটে ওঠে না। আইনজীবীদের পোশাকের ব্যাপারে সিভিল রুলস এন্ড অর্ডারের রুল ৮২৬ এ বলা হয়েছে যে,আদালতরে উপস্থতিকিালে অধঃস্তন আদালতসমূহরে এডভোকটেগণ নিম্নোক্ত বিশেষ পোশাক পরিধান করিবেন:
(১) পাজামার সহতি মানানসই কালো বা সাদা চাপকান, আচকান বা বোতাম যুক্ত লম্বা কোট এবং কালো আলপাকা গাউন; অথবা
(২) ইউরোপীয় পোশাক পরধিান করলিে কালো বা সাদা পাজামাসহ কালো কোট; এবং কালো বা গাঢ় কালো রংয়রে বন্ধনী এবং গাউন।
টীকী-১: (১) উপনয়িমে ‘ সাদা বলতিে ফকিে ক্রমি রংয়রে ন্যায় সরল বর্মিষ রং, প্রাকৃতকি টাসর ইত্যাদকিে বুঝায়।
টীকী-২: গাউন পরধিান বাধ্যতামূলক।
টীকা-৩: ম্যাজষ্ট্রিটে এবং দেওয়ানী ও রাজস্ব র্কতব্য পালনকারী নির্বাহী র্কমর্কতাগণ গাউন পরধিান করে না বিধায় তাহাদের সম্মুখে উপস্থতিকালে এডভোকটেগণের গাউন পরিধান করা না করা ঐচ্ছিক।
আবার ২০০৯ সালরে ফৌজদারী নিয়ম ও আদেশাবলীর এর সংখ্যা-১,অধ্যায় ২৯ নয়িম ৪৮৮ মোতাবকে অধঃস্তন আদালতের সকল পুরুষ আইনজীবীগণ নিম্ন বর্ণিত পোশাকাদি পরিধান করবেন:
(ক) বোতাম লাগানো কোট অথবা কালো চাপকান, আচকান অথবা শরেোয়ানী এবং হাফহাতা গাউন এবং ব্যান্ড অথবা
(খ) কাল বুক খোলা কোট সাদা র্শাট, খাড়া পাখরিডানার মত সাদা কলার, শক্ত অথবা নরম, এবং কাল গাউন এবং ব্যান্ড।
(গ) যেকোন ক্ষেত্রে লম্বা পাজামা (সাদা, কালো, কালো রঙরে দাগাবশিষ্টি ডোরাকাটা অথবা ছাই রঙরে) পরধিান করতে হব।
(ঘ) যদি ইউরোপয়িান পোশাক পরধিান করা হয় তবে একটি কালো কোটরে সঙ্গে কালো অথবা সাদা পাজামা এবং কালো অথবা কালোর মধ্যে রঙ্গনি পইেন টাই এবং গাউন পরতে হবে।
এবং ২০০৯ সালরে ফৌজদারী নয়িম ও আদশোবলীর এর সংখ্যা-১, অধ্যায় ২৯ নয়িম
৪৮৯ মোতাবকে : ‘‘অধঃস্তন আদালতে মহলিা আইনজীবীগণ তাহাদরে পোশাকরে একাংশ হসিাবে নম্নিে লখিতি পোশাকাদি পরধিান করবনে:
কালো রঙরে ফুল হাতা জ্যাকটে অথবা ব্লাউজ, খাড়া জোড়া সাদা কলার শক্ত অথবা
সঙ্গে কালো রঙরে গাউন এবং ব্যান্ড থাকবে, শাড়ি অথবা
স্যালোয়ার কামিজ (সাদা অথবা কালো) পরধিান করতে হব”।
নোট: নির্ধারিত পোশাক পরিধান করা সকল আইনজীবীদরে জন্য বাধ্যতামূলক।
২০০৯ সালে আইনজীবীগণরে ড্রসে কোড নর্ধিারন করা হলে ও এখনো ও র্পযন্ত অনকে আইজীবীগণ নির্ধারিত পোশাক পরিধান করেন না।
এছাড়া যখন দেখি আইনজীবীগণ তাদের ফিস নিয়ে মোয়াক্কেলদের সাথে তর্কাতর্কি করছেন, মেয়াক্কেলদের টাকা পয়সা নিয়ে ঠিকমত কাজ করছেন না, আইনজীবীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজেরাই উশৃঙ্খল আচরণ করছেন তখন সত্যিই মনে হয় আমার স্বপ্নের রাজকীয় পেশা আজ বড়ই অবহেলিত, পদদলিত এবং লাঞ্চিত।
©somewhere in net ltd.