নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবেকের ফাঁসি!

আজাদী আকাশ

সাদা মনে বলছি। পেশায় আইনজীবী। ভাবতে ভালবাসি। ভাবাতে ভালবাসি। ষোল কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি!

আজাদী আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুরান ঢাকার হোলি উন্মাদনা! এসব নোংরামীর শেষ কোথায়?

১৬ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৬


হিন্দু সম্প্রদায়ের যতগুলো উৎসব আছে দোলযাত্রা তার মধ্যে অন্যতম। দোলযাত্রা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগনের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে। এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। হোলি উৎসব বা দোলযাত্রার ইতিহাস রচনা আমার উদ্দেশ্য নয়। হোলি উৎসবের নামে পুরান ঢাকার শাখারী বাজারে ঘটে যাওয়া বেহায়াপনা সম্পর্কে কিছু না লিখে পারছি না।পুরাতন ঢাকায় যুগযুগ ধরে চলে আসছে এই উৎসব। কিন্তু এবারের উৎসবে বেশকিছু অভিযোগ এসেছে সামনে। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব সহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে চলছে এই হোলি বিতর্ক। এ সম্পর্কে বেসরকারী টিভি চ্যানেল যমুনা একটি নিউজ সম্প্রচার করেছিল যেখানে দেখা যাচ্ছিল কিছু বখাটে তরুণ-তরুণীরা জোর করে পথচারী, যাত্রী, স্কুল গামী বা স্কুল ফেরত ছাত্র ছাত্রী সহ অফিসগামী নারী পুরুষ দেরকে জোর করে রং মাখিয়ে দিচ্ছে। তবে তাদের টার্গেট মনে হলো মেয়েরা। রং মাখানোর অজুহাতে মেয়েদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত লাগানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। টিভিতে দেখলাম অনেক মেয়েই অভিযোগ জানাচ্ছে যে, তাদেরকে জোর করে রং মাখানো হয়েছে। রং লাগানোর কারণে তারা অফিসে যেতে পারছে না। অনেক নিষেধ করা সত্বেও ঐ সব বখাটেরা কোন কথাই শোনেনি। যুগ ‍যুগ ধরে চলে আসা হিন্দুদের এই উৎসবে কালিমা একে দিয়েছে বখাটেরা।

নিউজে দেখা যাচ্ছে একটি মেয়ে জানাচ্ছে- এটা কোন উৎসবই নয় বরং একটি নোংরামী। আরেকটি মেয়ে বলছিল- আমি বারবার এই ছেলেগুলোর কাছে সরি বলছি কিন্তু ্ওরা কি করছে দেখেন। এখন ‍যদি আমি আমার চাকরীটা না বাচাতে পারি তার ক্ষতিপুরণ কে দিবে? নিউজ টিতে আরো দেখা যাচ্ছে টিভিতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ও তারা রেহাই পাচ্ছেন না বখাটেদের এমন নোংরা আচরণের। হোলি খেলার নামে নোংরামি দেখুন। - [link|YouTube https://www.youtube.com/watch?v=zdu_faW2m00
ভীড় বাড়ার সাথে সাথেই উচ্ছৃঙ্খলতা বাড়তে শুরু করে। ভীড়ের মধ্যে একটা শ্রেণি শুধু মেয়েদেরকেই টার্গেট করে রঙ মাখানো শুরু করে। এ সময় তাদের বন্ধুরা মেয়েগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও অনেকেই ব্যর্থ হন। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদেরও রেহাই দেওয়া হচ্ছিল না। কোনো রিকশা গেলেই তাতে চড়াও হচ্ছিলেন যুবকেরা। তবে এ ঘটনা অনেকেই মুখ বুছে সহ্য করলেও ভুক্তভোগী দুই বোনের বড় ভাই আহাদ ফেরদাউস এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় বখাটেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ১০ (৩০) ধারায় একটি মামলা করেন। তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে নিলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। বখাটেরা সবাই পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়া। উৎসবের নামে চলা এসব নোংরামীর হোতাদের কঠোর থেকে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আজ যদি এসব বখাটেদেরকে শাস্তি দেওয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে এসব উৎসব আতংকে পরিণত হবে যে টা কারও কামনা নয়। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এইযে, দিন দিন আমাদের শিক্ষা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা, বিবেক, বুদ্ধি, চরিত্র য্নে কোথায় হারিয়ে ফেলছি। আমাদের সভ্যতা যেন হাজার বছর পিছিয়ে যাচ্ছে। এসব নোংরামী চোখের সামনে আমরা ঘটতে দেখছি কিন্তু কোন প্রতিবাদ করছি না বা করতে পারছি না। আমাদের মধ্যে নৈতিকতা জোর নেই বলে আমরা সাহসও হারিয়ে ফেলছি। যদি ভুক্ত ভোগী ঐ দুই বোনের ভাই সাহস করে মামলা না করত তাহলে এসব বখাটেরা শাস্তি তো পেতই না বরং আরো বেশি উশৃংখল হয়ে যেত। আমাদের সোনার বাংলাকে এসব নোংরামীর হাত থেকে বাচানো আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু আমরা অলস হয়ে বসে আছি। কোন প্রতিবাদ নেই। কারণ এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী আমার মা নন, বোন নন বা আপনজন নন। আমরা অপেক্ষা করি কবে আমাদের মা বোনও ঐ রকম নোংরামীর শিকার হবে আর তখন আমরাও একটু নড়েচড়ে বসব!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.