![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের আমজনতা পরিষদ (বাপ) নিয়ে কাজ করা। সাধারণ মানুষের সেবায় এই বাংলার চিঠি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে নিরাপত্তা চেয়ে পেলেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আপাদমস্তক একজন ভদ্রলোক ও স্বজ্জন ব্যক্তি জোড় করে রাতটা পার করলেন বটে তবে পরদিন দুপুরেই তাকে অনেকটা ঘাঢ় ধরে বের করে দিলেন জাতীর বিবেক খ্যাত সাংবাদিককুল। আর ওৎ পেতে থাকা সরকারের না বলে আওয়ামী লীগের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে গেলেন মূহুর্তেই।
বলা যায়, অনেকটা সাংবাদিকদের অসাংবাদিকি আচরণেই গ্রেফতার হলেন মির্জা ফখরুল।ছোট্টবেলা থেকে শুনে আসছিলাম শিক্ষক ও সাংবাদিকরা হচ্ছেন জাতীর প্রধান পথপ্রদর্শক।একজন বিবেক তৈরি করেন অপরজন বিবেক খ্যাতিতে জাতির ভালমন্দ বন্টন করেন। কিন্তু মির্জা ফখরুলের দশা যদি এই হয়, তাহলে এই সাংবাদিকদের কাছে আমাদের সাধারণের অবস্থা কি হবে তা অনুমেয়।
ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, মঞ্জুরুল আহছান বুলবুল, রুহুল আমিন গাজী এবং শাবান মাহমুদরা-ই কি প্রকৃত সাংবাদিক? অল্পকিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে সকলের সামনে এই শাবান মাহমুদকে অতিরঞ্জিত আচরণের জন্য ধমকে দিয়েছেন। তারপরও এই জাতিয় অতি দলবাজী বন্ধ হয়নি। জাতীয় প্রেসক্লাবকে ঘীরে সাংবাদিকদের দুটি সংগঠন ফেডারেল সাংবাদিকদ ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন রয়েছে। যার প্রত্যেকেরই আবার দুটি ভাগ আওযামী লীগ ও বিএনপি মাঝে মাঝেই এমন উদ্ভট আচরণ করছে যা প্রকৃত সাংবাদিকদের বিভ্রান্তিতে ফেলছে। পেশাজীবীদের একটাই ভাগ হবে সেটা পেশা স্বার্থ রক্ষার জন্য, কিন্তু আমরা দেখছি জাতীয় রাজনীতিতে অংশ নিয়ে এদের কেউ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, কেউ বিরোধী দলের উপদেষ্টা হচ্ছেন এবং বহাল তবিয়তে জাতীয় প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করছেন নিজেদের স্বার্থে। জাতীয় প্রেসক্লাব কি তবে তাদের কেনা প্রতিষ্ঠান? জাতীয় প্রেসক্লাবের আসলে কাজটা কি? এটাই এখন জানা খুব জরুরী।
এখানে অধিকাংশ সময়ই রাজনৈতিক কার্যকলাপ, মিটিং, সভার জন্য স্থান ভাড়া দেয়া হচ্ছে। তাদের দুটি সংগঠনের চারটি অংশের সভা সমাবেশে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ হচ্ছেন প্রধান অতিথি। যার সুত্র ধরে কিছুদিন আগে কাজী জাফরকে নিয়েও একই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কাজী জাফর যতক্ষণ মুল জাতীয় পার্টির অংশ ছিলেন ততক্ষণ এ নিয়ে তোনো কথা ওঠেনি, যেই মাত্র তিনি মুল জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে এসে সমাবেশ করলেন ওমনি তার উপর চড়াও হলেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ এর আদর্শের বাইরে কেউ সভা করতে চাইলেই প্রেসক্লাব রণক্ষেত্র। এটা কেন? হয় এখানে কোনো রাজনৈতিক নেতাকে নিমন্ত্রণ করা নিষিদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় সাবইকেই নিমন্ত্রণ ও অতিথি সেবা প্রদান করতে হবে। অন্তত সাধারণ ভাবে আমরা সাংবাদিকদের কাছে এটাই আশা করছি।
আমরা সাংবাদিক বলতে যেটা বুঝি, জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু ও সেবক। জাতীয় সংকট মূহুর্তের পথপ্রদর্শক বলেই তাদের জাতির বিবেক উপাধী দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই বিবেক যদি হন ইকবাল সোবাহান চৌধুরী আর শওকত মাহমুদরা তবে ক্ষমা করুন, এদের চেয়ে নর্দমার কিটরাও অতি উত্তম।
কেননা, একজন সাংবাদিক যেহেতু একজুন সৃজনশীল মানুষ, তার কাছে সবকিছুতেই সৃজনশীলতা্ ও ভদ্রতা শিখবো আমরা। নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দর্শন পক্ষপাতিত্ব তার থাকতেই পারে। তবে সেটা কখনোই নিজের পেশার উর্ধ্বে নয়। সাগর রুনির হত্যা বিষয়টি তাদের কারণে ধামাচাপা পরে গেল। অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে দুঃসাহস অর্জন করে সরকার এখন হঠাৎ করেই একুশে টিভিকে বন্ধ করে দিল। এটা সম্ভব হলো এই পা চাটা সাংবাদিকতার বদৌলতে। যেকোনো সময় আরো টিভি চ্যানেল যে বন্ধ হবে না তার নিশ্চয়তা কি?
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে - পরের জন্য কুয়ো খুদলে সে কুয়োয় নিজেকেই পরতে হয়’। আজ যে বিষয়ে প্রতিবাদ জরুরী সেই বিষয়ে চুপ থেকে সাংবাদিকরা আসলে নিজেদের ভবিষ্যতকেই কুয়োয় ফেলছেন এটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
মির্জা ফখরুলের জাতীয় প্রেসক্লাবে আশ্রয় গ্রহণ এবং রাত কাটানোটা অবশ্যই নিন্দনীয়, কারণ তিনি একজন জাতীয় নেতা। পুলিশের ভয়ে তিনি এ কাজটি করতে পারেন না। কারণ তিনি জানেন, তাকে গ্রেফতার হতেই হবে, সেটা ঘণ্টা আগে বা পরে।কিন্তু একজন সাধারণ ভিতু মানুষ হিসেবে দেখলে তিনি যা করেছেন তা অস্বাভাবিক নয়। আশ্রয় প্রার্থীকে আশ্রয় দান করা এবং তাকে নিরাপদে গন্তব্যে প্যৗঁছে দেয়া মুসলমানের জন্য ফরজ। কিন্তু আশ্রয় দিয়ে সেটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি ও সংঘাত সৃষ্টি করে তাকে বের করে দেয়াটা মহা অপরাধ।
জাতীয় একজন নেতার চরিত্র মির্জা ফখরুলের যে নেই তা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই স্পষ্ট জানেন। জানেন জাতীয় প্রেসক্লাব কেন্দ্রিক সাংবাদিকরাও। যেমনটি জানে এ দেশের একজন কিশোরও। তাই তার বক্তব্য ও ব্যাখ্যা ছিল সরলতা নির্ভর ভীতু মানুষের ব্যাখ্যা। এ রকম নেতা ভালো মানুষ হতে পারেন বটে তবে ভালো নেতা কখনোই হতে পারেন না। তাইতো তার নেতৃত্বে বিএনপির আন্দোলন আজ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি।
এই সুযোগটাই গ্রহণ করেছেন সরকার সমর্থক সাংবাদিক বাহিনী। বিএনপি সমর্থক সাংবাদিক বাহিনীর আমন্ত্রণে এসে মির্জা ফখরুল যে কতটা ভুল করলেন তা আশা করি আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।এই দুটি বাহিনীর হাতে আজ জিম্মি সাধারণ সাংবাদিকরাও। কারণ তাদের সমর্থন ছাড়া এখন আর জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যপদ পাওয়া যায় না। আর যারা এখন সদস্যপদ পাচ্ছেন তারা বেশিরভাগই কোনো সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত নেই, কিম্বা নাম না জানা অখ্যাত সব কাগজের প্রতিনিধি। দীর্ঘদিন ধরে সত্যিকারের সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত কেউ এখন আর জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যপদ চেয়েও পাচ্ছেন না। এদের এই আচরণের প্রভাব শুধু ঢাকায় নয় জেলা শহরের প্রেসক্লাবগুলোতেও স্পষ্ট। এমন একটি জেলা নেই যেখানে দুটি প্রেসক্লাব নেই। কেন সাংবাদিকদের এই বিভাজন?
১৯৯৩ সালে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম জাতীয়তাবাদী চেতনায় এ বিভক্তি তৈরি হয়। ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ভিতরে অবস্থান করে দুটি বিভক্তিতে এরা পৃথক হয়ে যায় ও পৃথক পৃথক সভা সমাবেশ করে নিজেদের বিএনপি ও আওয়ামী পন্থি পরিচয় অগ্রে তুলে ধরে। পর্যায়ক্রমে তাদের সাংবাদিকতার পরিচয় মুছে যেয়ে সেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শব্দটি অগ্রে যুক্ত হতে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে যে দল ক্ষমতায় থাকে, সে দলের সরকারী সুযোগ সুবিদা ভোগ করে সাংবাদিক নেতারা। বলা যায়, সাংবাদিকদের এই বিভক্তি পরবর্তিতে অন্যসব পেশাজীবীদের মধ্যেও প্রভাব বিস্তার করে এবং সব পেশা - শ্রেণীতেই এই বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তাদের এই বিভাজনের ফলে বার বার গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা আক্রান্ত হলেও তারা কিন্তু লাভবান হচ্ছেন। পদবী, পদমর্যাদা ও নগদ অর্থের মালিক হচ্ছেন সাংবাদিক নেতারা ও মিডিয়া মালিকরা। খেসারত দিচ্ছেন সাধারণ সংবাদ কর্মী ও খেটে খাওয়া মানুষ। ধিক্ এই সাংবাদিক নেতাদের। দেশ ও মানুষের চেয়ে যাদের কাছে দল বড় তাদের প্রতি জানাই অতিব ঘৃণা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬
সত্যের পথে আরিফ বলেছেন: আপসোস!! এই নষ্ট জাতীর জন্য