![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিড়ালছানা এত দুষ্টু হতে পারে যদি জানতাম, তাহলে হাজার টাকা খরচা করে হলেও মেলা থেকে পুতুলবিড়ালছানা এনে দিতাম মেয়েকে। তবুও এই জলজ্যান্ত ডাকাত বিড়ালছানা ঘরে আনতাম না।
আমার এক চিমটি মেয়ে পতৌদি। তার আবদার-অভিমানের সীমা নেই। চাওয়ার সাথে পাওয়া চাই তার। নইলে সে গাল ফুলিয়ে পাল বানিয়ে রাখবে। মেয়ের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে যে বিড়ালছানাটি এনে ঘরে তুলেছি এখন তার দুষ্টুমিতে সবাই অস্থির। বিড়ালছানা নিয়ে মহা ঝামেলায় পড়ে গেলাম আমরা।
একেকবার ইচ্ছে করে বিড়ালছানাটিকে বস্তায় ভরে নিয়ে নদীতে ফেলে দিয়ে আসি, চোখ বেধে দূরে কোনো এক জঙ্গলে রেখে আসি কিংবা ছানাটিকে পিটিয়ে শাসন করি। কিন্তু কিছুই করতে পারছি না আমরা। পারছি না আমার বিড়ালপাগল মেয়েটির কারণে। বিড়ালছানাটির বড়ো বন্ধু আমার আদরের মেয়ে পতৌদি। এই বিড়ালছানা ছাড়া তার এক মুহূর্তও চলে না। মেয়ের অসংখ্য আবদার থেকে রেহাই পেলেও এখন বিড়ালছানার যন্ত্রণা থেকে মোটেও নিস্তার পাচ্ছি না আমরা।
দুই.
বিড়ালছানাটি বেশি দুষ্টু বলে পতৌদি তাকে অনেক বেশি আদর করে। ছানাটি দুধের বাটি, তরকারির পাতিল ওল্টায়, খাবার নষ্ট করে এক দৌড়ে এসে পতৌদির কোলে উঠে বসে। তারপর বসে বসে হাত চাটে, পা চাটে, হাই তোলে। মনে হবে সে কিচ্ছুটি করেনি; তার মতো ভালো ছানাটি জগতে আর নেই।
উঠোনে মুরগিছানারা টইটই করে ঘুরছে। অমনি তাদের ওপর লাফিয়ে পড়বে বিড়ালছানাটি। লুটোপুটি কারবার। পোষা কুকুরটি বারান্দায় গোল হয়ে ঘুমিয়ে আছে। বিড়ালছানাটি তার গায়ে আছাড় খেয়ে পড়বে। কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে ছুটে যায় বিড়ালছানাকে ধরতে। ছানাটি ফোঁস করে কুকুরের মুখে খামচি বসিয়ে দৌড়ে চলে আসবে পতৌদির কোলে। ছানাটি পতৌদির কোলে এমনভাবে বসে থাকবে যে, দেখলে মনে হবে কিছুই জানে না সে।
ভয়ানক চোর! চারদিক থেকে অভিযোগ আসতে লাগল বিড়ালছানাটির বিরুদ্ধে। সে যেখানে সুযোগ পায় সেখানেই চুরি করে। চুরিতে এমন পটু যে, কেউ টের পায় না সহজে।
বিড়ালছানাটির যন্ত্রণায় আমরা অস্থির হয়ে গেলাম। ছানাটিকে এখন কী করা যায়। আমি আর পতৌদির মা ফিসফাস করে পরামর্শ করে ঠিক করলাম, ছানাটিকে আর পোষা যাবে না; দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসতে হবে। পতৌদি যদি বেশি কান্নাকাটি আর বাড়াবাড়ি করে তো প্রয়োজনে অন্য একটা বিড়ালছানা এনে দেবো, তবু এ ছানাটিকে ঘরে রাখব না।
তিন.
যেই কথা সেই কাজ। আমি চুপি চুপি বিড়ালছানাটিকে ধরে তার চোখ দুটি বেধে ফেললাম। তারপর ছানাটিকে একটি চটের ব্যাগের ভেতরে ঢুকিয়ে সোজা চলে গেলাম দূরের একটা জঙ্গলে। আমি জঙ্গলের কিছুটা ভেতরে গিয়ে ব্যাগটির মুখ সামান্য আলগা করে ফেলে দিয়ে সোজা চলে এলাম বাড়ি। আসার সময় বিড়ালছানাটিকে বললাম, ‘যা বাবা এবার খেটেখুটে খাও গে, বড়ো জ্বালাতন করেছ তুমি, এখন এই জঙ্গলের পাখি ধরে খাও।’
সন্ধ্যার পর আমরা একত্রে খেতে বসলাম।
‘মিঁ-ঞা-ও।’
কে! মিঞাও করল কে? আমাদের কান খাড়া হয়ে গেল। নিচে তাকিয়ে দেখি অভিমানে গাল ফুলিয়ে পা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে পতৌদির বিড়ালছানাটি!
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ভাল লাগল। শুভেচ্ছা নিন।
৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম...
বিড়াল ছানার গল্প! আহা পোষা বেড়ালগুলো এতকিছু শেখে কােত্থেকে- দীর্ঘদিনের পোষা মিনুেক ফেলেত গিয়ে নিজেই শিশুর মতো কেঁদে ফেলেছিলাম! বেশ ক'বার ফিরে আসলেও যেবার নিজের ইচ্ছায় বস্তায় ঢুকেছিল ! এরপর আর আসেনি!!!!!
++++++
৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০২
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: বড় দুঃখ পেলাাম। আমার পোষা কুকুরটা হারিয়ে গিয়েছিল। তার কথা এখনো আমি ভুলতে পারি না।
ধন্যবাদ রইল।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২
ফয়জুল কবীর বলেছেন: কে! মিঞাও করল কে? আমাদের কান খাড়া হয়ে গেল। নিচে তাকিয়ে দেখি অভিমানে গাল ফুলিয়ে পা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে পতৌদির বিড়ালছানাটি!
দারুন