নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

বিএম বরকতউল্লাহ

জানতে চাই।

বিএম বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

টাপুর টুপুর পাতায় প্রকাশিত

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৫


অহংকারী মাছি ও পিঁপড়ে
কোন এক দুরন্ত বালক বাজার থেকে একটা রসগোল্লা কিনে খেতে খেতে বাড়ি ফিরছিল। তার হাত গলে এক ফোঁটা রস পড়ে গেল রাস্তার ধারে। সেই মিষ্টি রসের গন্ধে ছুটে এলো একটা কালো পিঁপড়ে। সে মনের সুখে চেটে-পুটে খাচ্ছিল রসটুকু। একটু খেতে না খেতেই ভন্ভ্ন্ করে উড়ে এসে জুড়ে বসল একটা মাছি। পিঁপড়েটা খুব বিরক্ত হলো। বলা নেই কওয়া নেই বেয়াড়া মাছিটা রস খাওয়া শুরু করে দিল। এ কেমন আচরণ!
পিঁপড়ে বলল, ভাই মাছি, একি করছ তুমি! রসটুকু যে খেয়ে ফেলছ, আমাকে তো কিছুই বললে না। এটা কি ঠিক হচেছ তোমার? আমি কত কষ্ট করে খুঁজে-টুজে বের করলাম এই রসফোঁটাটি।
মাছিটি তার অসংখ্য চোখ লাল করে তাচিছল্যভরে বলল, তুই কি আমাকে দাওয়াত করে এনেছিস যে তোর কাছে জিজ্ঞেস করে খেতে হবে? ভাগ এখান থেকে।
পিঁপড়ে বলল, অবাক কান্ড তো! ভদ্রতা বলতে কি কিছু নেই নাকি তোমার? আবার বলছ ভাগ এখান থেকে। বলি, তুমি ভাগবা না আমি ভাগব? গায়ের জোর দেখাও বুঝি!
মাছি বলল, গায়ের জোর দেখাব না তো কী? তোর চেয়ে আমার শক্তি অনেক বেশি। গায়ের জোর কি তুই দেখাবি, না আমি দেখাবো?

পিঁপড়ে বলল, শক্তির বড়াই করা ?িক না। শুধু শক্তি দিয়ে সব কিছু হয় না। চলো রসটুকু দু‘জনে মিলেমিশে খাই। তুমি অর্ধেক খাও আর আমি খাই অর্ধেক। এবার হলো?
মাছিটি বলল, না, মোটেও হলো না। তোর কথায় যদি আমাকে তোর সমানই খেতে হয় তাহলে আমার আর মর্যাদা থাকে কই? জানিস না আমার যে শক্তি বেশি। তাই আমি খাব গায়ের জোরে আর তুই আমার কাছে চিয়ে-চিন্তে খাবি। দিলে খাবি আর না দিলে না খাবি, বুঝলি এবার? আমি পুরোটাই খাব। তোকে একটুও দিব না। বেশি প্যানপ্যান করবি তো পাখনা দিয়ে এমন ঝড় তুলব, যে ঝড়ের তান্ডবে তুলোর মত উড়ে যাবি তুই।
পিঁপড়ে সাহস দেখিয়ে বলল, এত গায়ের জোর দেখিও না। দিও, আমাকে অর্ধেক দিও -বলেই পিঁপড়েটি রসে চুমুক দিল।
মাছিটা পিঁপড়ের গালে গাট্টা মেরে বলল, বাঁচতে চাস তো সরে যা। নইলে এই রসের মধ্যে আস্ত পুঁতে ফেলব তোকে।
পিঁপড়ে মনের দুখে কেঁদে কেঁদে চলে গেল।

দুই
মাছিটি পাখনা দিয়ে হাত, মুখ, চোখ, পা মুছে-টুছে খুশি মনে আয়েশ করে রসে চুমুক দিল।
ব্যাপার কি? সেই কালো পিঁপড়েটি আবার ধেই ধেই করে এদিকে আসছে যে! তার পেছনে অসংখ্য পিঁপড়ের লম্বা বহর! রসের ফোঁটার চারপাশে এসে ওরা দল বেধে ঘুরতে লাগল। এই দেখে তো মাছিটি ভন্ভন্ আওয়াজ তুলে পেশিশক্তি দেখাতে লাগল। মাছিটি মল¬যোদ্ধার মত দাঁড়িয়ে চারদিকে সতর্ক চোখ ঘোরাতে লাগল।
পিঁপড়েটি মুখ বাড়িয়ে টিàনি কেটে বলল, কী খবর মাছি ভাই। যুদ্ধ বাঁধাবে নাকি?
মাছিটি মুখ বাঁকিয়ে তাচ্ছিল্য করে বলল, যুদ্ধ? ছেঃ ছেঃ! তোদের সাথে যুদ্ধ করে আমার সম্মানটুকু খোয়াব? পিঁপড়ে মেরে হাত কালা! আমার শক্ত পাখার বাড়িতে তোরা ছাইয়ের মত উড়ে যাবি। ভালোয় ভালোয় এখান থেকে চলে যা। আমাকে শান্তিতে রসটুকু খেতে দে। এই বলে মাছিটি রস খাওয়া শুরু করে দিল। এমন সময় কালো পিঁপড়েটি দ্রুত এগিয়ে গিয়ে রসে চুমুক দিল। গোঁয়াড় মাছিটি পিঁপড়েটাকে ঠেসে ধরল রসের মধ্যে। ক্ষুদ্র পিঁপড়েটি গ্যাঁ গোঁ শুরু করে দিল। আর কোনো কথা নেই, ঐক্য, শৃঙ্খলা আর পরিশ্রমের ণিপুন কারিগর শতশত পিঁপড়ে চঞ্চল হয়ে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলল মাছিটাকে। তারা চোখের পলকে চলবল করে মাছির হাতে পায়ে, বুকে-পিঠে ও পাখায় চড়ে বসে কুটুস-কাটুস কামড়াতে লাগল। শুরু হয়ে গেল পিঁপড়ে মাছির জদ্দ জিহাদ।

মাছিটি পালাতে চাইল কিন্তু পারছে না। পিঁপড়েরা মাছির সমস্ত শরীর কামড়ে ধরে আঠার মতো লেগে আছে। কামড় খেয়ে বেহুঁশ হয়ে গেল মাছিটি। দেখতে দেখতে পিঁপড়েরা মাছিটিকে রসফোঁটায় চুবিয়ে দলা পাকিয়ে একেবারে মোয়া বানিয়ে ফেলল।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিঁপড়ের কাছে নির্মম পরাজয় হলো অহংকারী মাছিটির। পরে পিঁপড়েগুলো মাছিশুদ্ধ রসটুকু খেয়ে ফেলল। তারপর বীরদর্পে চলে গেল আপন ঠিকানায়।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৬

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: অহংকার পতন ঢেকে আনে

দারুণ শিক্ষণীয় গল্প।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৮

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: আপনাকে অনেক শুভেচ্ছ। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.