নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি বিবেকের নিলামকান্ড--

২২ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯




একটি বিবেক বিক্রি হবে। বিবেকটির বর্তমান মালিক একজন নগর বেবুশ্যে। প্রায় অব্যবহৃত ও নতুন। কোনোরকম ট্যাপ খাওয়া নেই। সামান্য আচড়ও এতে কখনো লাগেনি। বিধাতা যেমনটা পাঠিয়েছিলেন তেমন আনকোড়া টিপটপ কন্ডিশানে পাবেন। মডেল নম্বর ১৯৭১-২০১৫।

বিবেকটির বডি ”নিলজ্জতা” নামক বিশেষ ধাতু দ্বারা নির্মিত। ধারণা করা হচ্ছে এটি দেশের অন্যতম প্রাচীন ও অভিজ্ঞ একটি বিবেক। সংগ্রহে রাখার মতো একটি বস্তু। বিবেকটি অনেক পোড় খাওয়া। সেই ১৯৭১ সালে যখন সারাদেশ মুক্তির দাবীতে সোচ্চার হয়েছিল তখন সে কৌশলে মৌনব্রত পালন করে গিয়েছে। যেদিন রাতে এদেশের নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে গনহত্যা করা হয়েছিল সেদিনও সে অনেক পরিশ্রমে নির্বিকার থাকতে সক্ষম হয়েছিল। পাকি ও কতিপয় বঙ্গদেশী জারজ যেদিন মালে গণিমত বলে এদেশের রক্ত-মাংসের নারীদের লজ্জিত করছিল সেদিন বিবেকের ১০৩ ডিগ্রী জ্বর থাকায় সে কোনো বিবৃতি দিতে পারেনি। (এদেশের বিরাঙ্গনাদের তাদের ধর্ষিত হবার পুরষ্কার হিসেবে বিরাঙ্গনা নাম দেয়া হয় যুদ্ধের পর। পুরুষদের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ কিন্তু নারীর জন্য বিরাঙ্গনা। হায়রে পুরুষতন্ত্র।) নিজের ওপর এতটুকু আচড় সে লাগতে দেয়নি। তারপর এই দেশে কত ঘটনা, দুর্ঘটনা ঘটে গেল। এই অসাধারন বিবেকটি চৌকসভাবে নিজেকে সবকিছু থেকে কৌশলে বাচিয়ে নিয়েছে।

যেদিন এই শহরের ২ কোটি মানুষ একটা বাচ্চা ছেলেকে পানির পাইপে ফেলে মেরে ফেলে সেদিন বিবেকটি পাক-ভারতের আদী রসাত্মক কাব্যকলা অধ্যায়ন করছিল। (তাকে এভাবে মরতে ঠেলে দেবার জন্য কোনো একজন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টিকে যখন এই শহরের ২কোটি মানুষ বিচার করতে ব্যর্থ হয় তখন তারাইতো বাচ্চাটির খুনি।)

যেদিন একটা মুৎসুদ্দি গ্যারেজ মালিক তার নিমকহারাম (!) কাজের ছেলেটাকে ধরে এনে বেলুনের মতো ফূলাতে চেয়েছিল কিংবা খুন করতেই চেয়েছিল সেদিন আমাদের এই বিবেকটি আরো কতগুলো বিবেকের সাথে মিলে নিমকহারামটার (!) স্পর্ধার উৎস অনুসন্ধান এবং তার যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত ছিল।

যেদিন “মেড ইন বাংলাদেশ” নামক দৈত্যের নিচে চাপা পড়ে এই শহরে হাজারখানেক (ন)মানুষ পিষে মরল সেদিন বিবেকটি একটু কেমন অসস্তিতে পড়ে যায়। অবশ্য তার পরপরই সে টিভিতে অনেকগুলো টকশোতে “মেড ইন বাংলাদেশ” দৈত্যের দাসদের মৃত্যুতে ব্যপক সুশীল বক্তব্য রেখেছিল এমনকি একটাতেতো সে চোখের পানিও ফেলেছিল।

যেদিন একজন যুদ্ধাপরাধী আমাদের দীর্ঘ চার দশক পর নিশ্চিৎ করেছিল যে এদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই (যারা ছিল সবাই হয় মারা গেছে না হয় পালিয়ে গেছে-সেই অর্থে) সেদিন এই চিকনা বুদ্ধির বিবেকটি “বঙ্গিয় দেশে সুশীল সমাজের ক্রমবিবর্তন” শীর্ষক ”ছেমিনার” এ ব্যস্ত ছিল। অবশ্য পরে তিনি একটি প্রেসনোট পাঠিয়ে “তীব্র প্রতিবাদ” করেছিলেন।

যেদিন টিএসসির বর্ষবরণে এদেশের একজন উশৃঙ্খল (!) পোষাকের নারীকে শৃঙ্খলাপূর্ণ কিছু পুরুষ শৃঙ্খলা শিক্ষা দিতে গিয়ে সারাদেশের সব বিবেককে খুন করেছিল সেদিন কোনোক্রমে এই বিবেকটি চিপায় থেকে অস্তিত্ব রক্ষায় সক্ষম হয়েছিল।

রাজনের হত্যা ও (বলাৎকার চেষ্টাকারী) দানবটাকে বিদেশ পালাতে আর তারপর সারাদেশের হঠাৎ জাগ্রত বিবেককে সবার অলক্ষ্যে ঘুম পাড়াতে এই বিবেক সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছিল।
এই বিবেকটি খুব চাল্লু। অনেক বয়স হলেও এটি সবযুগে চলনসই। সময়ের পরীক্ষায় উত্তির্ন। আছেন কেউ যোগ্য ক্রেতা যার বিবেকের অভাব আছে? যার যেটার অভাব সেইতো সেটা কিনবেন তাই না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:০৭

লায়েবা রাহা্্্ বলেছেন: এই বিবেক তো বোবা।অনেক সহ্য করতে জানে, অতুলনীয় সহনশীলতা তার!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.