নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চোরা না শোনে ধর্মের কথা

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৬

আমার একজন সিনিয়র সহকর্মী যার সাথে নানা রকম প্রফেশনাল বিষয় নিয়ে আলাপ হয়, কখনো কখনো ডিবেটও হয়। কথা প্রসঙ্গে তার সাথে আলাপ হচ্ছিল কিভাবে প্রতিষ্ঠানে অসততার দ্বার আটকানো যায়? আমার একটা অদ্ভুৎ সমাধান মাথায় এলো।
আমার এক ভাগিনা। যখন ওর ৮-১০ বছর বয়স, ওকে নিয়ে আমি বা যেকোনো বড় কেউ বাজারে গেলাম ফল কিনতে কিংবা বাদাম কিনতে। আমি হয়তো দোকানীর সাথে দরদামে ব্যস্ত। ততক্ষনে ভাগিনা চলতি পথে যে কয়টা দোকানে গেছি সবগুলো থেকে ১টা ২টা করে বাদাম বা আঙ্গুর সমানে নিয়ে অবলিলায় খাচ্ছে। খেতে খেতে অবশেষে দেখা যায় মোটামুটি আধাকেজির মতো ভাগিনা কেনার আগেই হজম করে ফেলেছে (ফ্রি ফ্রম কস্ট)। মাঝে মাঝে এর জন্য ওর বাবাকে-মাকেও যে বিব্রতও হতে হয় না তা নয়।
আমার এহেন ভাগিনার এমন কর্মকান্ড ঠেকাতে হলে পথ কী? প্রথম রাস্তা তাকে একটা রাম থাপ্পর দিতে পারেন। কিন্তু আপনি একটা বাচ্চাকে এযুগে মারলে পুলিশি কেসে জড়াতে পারেন (আবার ঐশী কেসও ঘটতে পারে)। দ্বিতীয় রাস্তা-তাকে কাউন্সেলিং করা। বাবাজিকে আমার যতই বলি, চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। তাছাড়া কঠিন সব নীতিবাক্যের মর্মদ্ধারের মতো বয়স ও তো হয়নি। তাহলে উপায়?
উপায়টা হল যখনি বাজারে যাই, মামাজিকে আমি ডানহাত শক্ত করে ধরে নিয়ে যাই। সে যতই বলে মামা আমার হাত ধরতে হবে না, আমি একা হাটতে পারব, আমরা তাতে কান দিইনা। ”না না মামা, দেখছ কত গাড়ি ঘোড়া, খবরদার হাত ছাড়বা না”...............। ত্যাদড় ভাগিনার আরেক হাতে বাজারে ঢুকেই একটা চিপস বা বিস্কুটের প্যাকেট ধরিয়ে দেই। “মামা, খাও খাও”। মামা আমার খেতে ব্যস্ত বাম হাতে, ডান হাত আমার হাতে। ব্যাস দোকানের ফল ধরবে কোন হাতে?
প্রতিষ্ঠানে অসততা বন্ধ করবেন কিভাবে? পুলিশি কর্মকান্ড দিয়ে, শাস্তির ভয় দেখিয়ে, ডান্ডা মেরে? মহাত্মা গান্ধীর ছবি টাঙিয়ে? প্রত্যেক মাসে একজন করে তাবলিগে পাঠিয়ে? র‌্যাব এর শাখা অফিস আপনার অফিসের মধ্যে বসিয়ে? ২ হাত পরপর সিসি টিভি বসিয়ে?
মনে রাখবেন, বিশ্বের কোনো দেশেই সাধারণ মানুষের সমান সংখ্যায় পুলিশ থাকে না যে একজনের পেছনে একজন পাহারা দেবে। সেখানে থাকে পুলিশের শাসনের ভয় যাতে মানুষ নিজে থেকেই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই পুলিশের সংখ্যা সুশাসন/সততা নিশ্চিত করে না। শুধু তাবলিগে চোর দমন হলে কাকরাইল মসজিদে চুরি হত না, সেখানে পাহারাদারও লাগত না। গান্ধীবাদী আদর্শ প্রচারে কাজ হলে স্বয়ং গান্ধীর ছাগল চুরি হত না (আমি জানি না গান্ধীজীর এই ঘটনা সত্যি কি না)। তাহলে উপায়? হ্যা, এগুলো সবই লাগবে। তবে সবচেয়ে আগে যেটা করতে হবে তা হল অসৎ হাতটাকে ধরে বাঁধতে হবে। ধরবেন, বাধবেন কী দিয়ে? উত্তর একটাই-সিস্টেম। সিস্টেমটাকে এমনভাবে তৈরী করুন যাতে অসততার হাতটা বের করাই না যায়। সিস্টেমই আপনাকে চুরি করতে দেবে না, ঘুষ খেতে সুযোগ দেবে না। মুখে ঠুসি লাগানো গরু দেখেছেন? ঐ যে ধান মাড়াই করার সময় গরুর মুখে পড়ানো হয় যাতে ধানে মুখ না দিতে পারে। ঐ গরু চাইলেও ধানে মুখ দিতে পারে না। তাকে পিটাতেও হয় না, ধর্মবাণীও শোনাতে হয় না, ক্যামেরাও লাগে না। আমাদের চাই এমনি কোনো সিস্টেমের ঠুসি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

গন্ডোলার মাঝি বলেছেন: ভালো লাগলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.