নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোম্পানী’ এ্যজ এ কনসেপ্ট: ইষ্ট ইন্ডিয়া হতে গুগল

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৪

কোম্পানী কী? এটি কি শুধূ একটি প্রতিষ্ঠান? নাকি একটি টীম, একটি স্বত্তা, একটি কর্মযজ্ঞ?
ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর নাম তো আমরা সবাই জানি। একটি কোম্পানী সুদুর বিলেত হতে এসে এমনকি একটি বিশাল মহাদেশকে ধীরে ধীরে দখল করে নেয়।টাটা একটি কোম্পানী। যার উদ্যোক্তা রতন টাটা।ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গুরে তারা একটি ন্যানো গাড়ির কারখানা স্থাপন করে। পরবর্তিতে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে এই বিশাল কারখানাটিকে মাত্র ৬-৭ মাস সময়ে বিশাল বিশাল ৪০-৫০টি কন্টেইনার ক্যারিয়ারে করে সুদূর গুজরাটে স্থানান্তর ও পুনঃস্থাপন করা হয়। এ কাজের আঞ্জাম দিয়েছেন টাটার সুসংগঠিত কর্মী বাহিনী। পুরো প্রতিষ্ঠানটি একটি কোম্পানী হিসেবে এখানে টিউন করেছে যা ছিল অবিশ্বাস্য।
কোম্পানী মানে একটি অফিস, ফার্নিচার, কর্মচারী, মেইল, ইন্টারনেট, বস, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, বার্ষিক সাধারন সভা, লভ্যাংশ-এসবই নয়। কোম্পানী মানে “লিমিটেড কোম্পানী” মর্মে কতগুলো ছাপানো কাগজ নয়।

একটি কোম্পানী শুধুই একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বত্ত্বা।কোম্পানী একটি ম্যাচিউরড ও স্ট্রাকচারড প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান যার মূল শক্তি হল তার সুসংগঠিত/সুপ্রতিষ্ঠিত/সুদক্ষ/সুনিয়ন্ত্রিত কর্মীবাহিনী, এর আধুনিক কর্পোরেট কালচার, সুস্পষ্ট পরিচালনা নীতি, আর্থিক সক্ষমতা, কাঠামোগত সক্ষমতা, কারিগরি দক্ষতা, ভিশনারী ম্যানেজমেন্ট, কোয়ালিটি অব ম্যানেজমেন্ট, পার্টিসেপেটিভ ম্যানেজমেন্ট, ডাইনামিজম, পেশাদারীত্ব চর্চা, মেধার চর্চা, বিশ্লেষনাত্মক কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদি।

সুদীর্ঘকালব্যাপী সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান কোম্পানী হিসেবে পরিপক্কতা অর্জন করে। কোম্পানী হল একটি কনসেপ্ট যা ধারন ও লালন করতে হয়।
একটি প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানী হয়ে উঠতে হয় কেন? একটি প্রতিষ্ঠানকে একটি কোম্পানী হয়ে উঠতে হয় এর নিজের স্বার্থেই।অনেকগুলো কারনের মধ্যে অন্যতম হল ’সাসটেইনেবিলিটি’।বর্তমান পৃথিবীতে বহুল আলোচিত একটি টার্ম হল এই সাসটেইনেবিলিটি।অস্তিত্ব রক্ষা বিশেষত এই ২০১৬ সালের পৃথিবীতে এবং ভবিষ্যত পরিবর্তনশীল ব্যবসায়ীক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে নিজ অস্তিত্ব রক্ষা হল “প্রতিষ্ঠান” হতে “কোম্পানী”তে রূপ নেবার প্রধান বাস্তবতা। সাদা চোখে দেখলে বলা যায়, একটি কোম্পানী তার নিজস্ব আভ্যন্তরীন শক্তিতে চলবে। এটি কখনো একটি পার্টিকুলার ব্যক্তি বা গোষ্ঠির পরিচালনায় চালিত হবে না। মোদ্দাকথা একটি ফুটবল টীম যেমন ব্যক্তি নির্ভর হলে তার কাঙ্খিত লক্ষ অর্জিত হয়না যেমনটি আমরা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে দেখলাম, তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান এক বা স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তির একক নির্ভরশীলতায় দীর্ঘপথ চলতে পারে না। ব্যক্তি নির্ভরতার প্রধান অসুবিধা হল ব্যক্তি যখনি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যায়, পুরো সিস্টেম কলাপ্স করে।

কোম্পানীকে কোম্পানী হয়ে উঠতে হলে তার কর্পোরেট কালচারকে প্রমোট করতে হবে। একটি কোম্পানী কতটা ম্যাচিউরড তার অন্যতম নির্দেশক হল কোম্পানীর মৌলিক পরিচালনা নীতিতে আধুনিক কর্পোরেট কালচারের ব্যপক চর্চা। প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট কালচার না থাকলে কী হয়? আমাদের দেশে রাস্তার মাঝে স্পিড ব্রেকার দেখেছেন নিশ্চই? একজন এসে বলে স্পিডব্রেকার দাও, এ্যকসিডেন্ট কমে যাবে। ব্রেকার বানানো হয়। কিছুদিন পর আরেকজন এসে বলে, না, এতে রাস্তার গড় গতি কমে যায়, সুতরাং ভাংতে হবে, ব্যাস ভাঙ্গা হয়। কর্পোরেট কালচার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ও প্রাকটিসের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে, এটি কোনো আইন পাশ বা অফিস অর্ডার ইম্পোজ করার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় না। কর্পোরেট কালচারের অন্যতম রেডিকেল হল প্রফেশনালিজম।

প্রফেশনালিজম কোম্পানীর অত্যাবশ্যক উপাদান। প্রফেশনালিজম কী? আক্ষরিক সংজ্ঞায় না গিয়ে আমি যদি বলি, একজন অভিনেতা যখন তার বাবার প্রযোজিত ছবিতেও অভিনয় করেন তখনো শুটিং শেষে তার পারিশ্রমিক কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেন-এটা প্রফেশনালিজমের অন্যতম রূপ।প্রতিষ্ঠানকে তার পরিচালনায় প্রফেশনালিজমের চর্চাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই প্রফেশনালিজম এ্যপ্লাই হবে প্রফেশনাল কর্মী, প্রফেশনাল ম্যানেজমেন্ট এ্যপ্রোচ ও প্রফেশনাল ওয়ার্কিং প্রসিডিউর-এর মধ্য দিয়ে। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে প্রতিটি কাজ, প্রতিটি উদ্যোগ, প্রতিটি পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত, এ্যকসেপ্টেন্স, রিজেকশন্স, বিনিয়োগ, মুনাফা অর্জন/বন্টন, কর্মী নিয়োগ, বদলী, বরখাস্ত, পুরষ্কার, তিরস্কার-সর্বক্ষেত্রে।
প্রতিষ্ঠানকে চলতে হবে তার আপন গতিতে, আপন শক্তিতে। কোম্পানী স্পিরিট হবে এর মূল চালিকাশক্তি। ব্যক্তি নির্ভর নয়, কোম্পানী হবে সিস্টেম নির্ভর। ব্যক্তির সিদ্ধান্ত’র অপেক্ষায় না থেকে কোম্পানীকে সব কাজের, সব প্রক্রিয়ার একটি সুনির্দিষ্ট সিসটেম আবিষ্কার ও তার প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা চালু করতে হবে। এতে করে ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান তার আপন গতিতেই চলতে থাকবে, থেমে যাবে না কোনো কাজ, কোনো উদ্যোগ, পড়ে থাকবে না কোনো জরুরী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। নিত্যনতুন বস্ এর নানান এক্সপিরিমেন্ট এর গিনিপিগ হবে না প্রতিষ্ঠান।এটি কোনো ব্যক্তির একক প্রতিষ্ঠান নয়, তখন এটি হবে সকলের সম্মিলিত একটি প্রতিষ্ঠান। এর উন্নতি-অবনতি, সুখ-দুঃখ, সমৃদ্ধি-নিম্নগতি, গতিপ্রকৃতি-সবকিছুর অংশীদার হবে এর সকল স্টেকহোল্ডাররা। আর তখনই একটি সামান্য দোকান, ছোট অফিস, বিশাল কারখানা, পারিবারিক ব্যবসা, সরকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যাই হোক এটি একটি কোম্পানীতে রূপান্তরিত হবে। মনে রাখতে হবে কোম্পানীর স্বার্থেই একে কোম্পানী হয়ে উঠতে হবে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: কর্পোরেট কোম্পানি নিয়ে হালকার উপর ঝাপসা পোস্ট! (+)

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৮

বেচারা বলেছেন: চেঞ্জার: হালকা তো বুঝলাম, ঝাপসা কেমন?

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: ঐ কথার কথা আরকি! :)

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১

নোমান প্রধান বলেছেন: সেই দিন নাই, ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিলো একটাই আর এখন অসংখ্য

৫| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪

বেচারা বলেছেন: হু প্রধান ভাই। তবে সেই ব্যাসিক স্ট্র্যাটেজি কিন্তু আজও কার্যকর যেটাকে কাজে লাগিয়ে লর্ড ক্লাইভ এবং গং গোটা এশিয়ার বড় অংশ দখল করেছিল একটা সামান্য কোম্পানী হয়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.