নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

পথের বাপই বাপরে মনা পথের মা’ই মা-পর্ব: ১

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮

ঢাকার রাস্তার নানারকম মসলাদার, চটকদার, লোভনীয় খাবার এখন দুনিয়ার যেকোনো দেশের স্ট্রিটফুড সংস্কৃতির সাথে পাল্লা দিতে সক্ষম। ঢাকার রাস্তায় অগ্যস্ত হাটার একটা বাতিক আছে আমার। উদ্দেশ্যহীন এলোমেলো হাটা। চলার পথে নজরে আসে হরেকরকম স্ট্রিটফুডের দোকান। স্ট্রিটফুডের সংস্কৃতি অনেক দেশেই আছে। কিছু কিছু দেশ সেটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। চাক্ষুস করা কিছু স্ট্রিটফুডের ইতিহাস শেয়ার করলাম।

১. খ্যাতাপুড়ি: বিশেষ উপাদান সহযোগে বানানো মিরপুরের স্পেশাল খ্যাতাপুড়ি। পাওয়া যাবে মিরপুর-১ মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট সংলগ্ন মসজিদের গলিতে আর ২ নম্বরে সনি হলের পেছনে কাঠালবাগ মসজিদের সামনে।

২. বাংলা দোসা: চালের গুড়া, পিয়াজ, কাঁচামরিচ, মসলাসহযোগে কলকাতার আদলে বাংলা দোসা। প্রাপ্তিস্থান: মিরপুর ১ নম্বর মসজিদ গলি।

৩. ভাপা পিঠা: কে না জানে ভাপা পিঠার মাহত্ম্য? শীত আসলে রাস্তায় ভ্যানে করে ভাপা পিঠা কেনাবেঁচার ধুম পড়ে যায়।সারা মিরপুর জুড়ে্ে ি শীতকালে ভাঁপা পিঠার ভ্যান গিজগিজ করে। চলে আসুন এবার শীতে।

৪. চটপটি: টকঝাল চটপটি ছাড়া কোনো উৎসব এখন হয় কি? তবে মিরপুরের ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন চটপটি পাড়ায় মিজান বা জয়নাল নানার চচটপটি না খেয়ে থাকলে এখনো আপনার জীবন অপূর্ণ।

৫. শরমা: এটি ঠিক রাস্তার খাবার না হলেও বিক্রিবাট্টা অনেকটা রাস্তায়ই হয়। কারন মাংসটা যেখানে বেক হয় সেটা ৯৯% রাস্তার মধ্যেই থাকে। কাষ্টমার আকর্ষণ করতে। বড় বড় ফুড শপে বার্গার টাইপ শর্মা হলেও মিরপুরের রোডসাইড রেস্টুরেন্টগুলোতে এমন রোল টাইপ শর্মা পাওয়া যায়।

৬. পিয়াজু: বিকেল বেলায় পাড়ার দোকানে দোকানে পিয়াজু একটা অবশ্যম্ভাবী খাদ্য। কিন্তু মিরপুর কাজীপাড়ায় রাস্তায় বসে ভাজা ও বিক্রি করা এই পিয়াজুর স্বাদ এখনো মুখের কোণায় লেগে আছে।

৭. আমির্তী: দেখতে জিলাপির মতো হলেও এটি কিন্তু আমির্তী। মিরপুর বুদ্ধিজীবি কবরস্থানের পিছনে বড়বাজারের স্পেশাল

৮. জিলাপী: বলতে পারেন এটা আবার স্ট্রীট ফুড কবে হল? হল। মিরপুর অরিজিনাল ১০ এর বেনারশি গেটের জিলাপী খান, আবার আসবেন। বুদ্ধিজীবি গোরস্থানের পিছনে বড়বাজারেরটাও স্পেশাল।

৯. ডিম: ধ্যুর, ডিম আবার স্ট্রিটফুড কবে হল? ওইযে, গরীবে দিন আনে দিন খায়, ব্যাচেলররা ডিম আনে ডিম খায়। আয়োজন করে ডিম খাওয়াও যে যেতে পারে সেটা দেখতে পাবেন মিরপুর ১ নং গুদারাঘাট নামলে।

১০. রোডসাইড কেএফসি: মিরপুরের রাস্তায় এরকম অন্তত ১০টা ভ্রাম্যমান কেএফসি পাবেন। কোয়ালিটি কোনো অংশেই কম না। অন্তত মধ্যবিত্ত বাবার সন্তানদের বুঝ দেবার জন্যতো বটেই।

১১. চওমিন: মিরপুর-১০, মিরপুর-২ সনির সামনে বড় বড় চওমিন তথা নুডলস বেঁচার স্ট্রীটশপ। মুখে স্বাদ লেগে আছে আজও।

১২. ডিম রসগোল্লা: এটা অবশ্য ঠিক স্ট্রিটফুড নয়। তবে কাঁশবনের টং হোটেলে দেখে জিভে পানি এসে গিয়েছিল।

১৩. প্যান কেক: ডিম দিয়ে ইন্সট্যান্ট বানানো কেক। এই কেক এর কাটতি নিজে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।

১৪. চিংড়ি বড়া: মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এই সুস্বাদু চিংড়ি বড়া।

১৫. রুটি মিঠাই: সকালে মর্নিং ওয়াকে গেলে দেখবেন রাস্তার মধ্যে গরম গরম রুটি আর এক টুকরা গুড় দিয়ে উদরপূর্তি করে খাচ্ছে দরিদ্র মানুষ। তবে স্বাদ কিন্তু অসাধারন।

১৬. বট বা গরুর ভুড়ি: সাইকেল ভ্যানে করে বিক্রি হওয়া গরুর ভুড়ি যা বট নামে বিক্রি হয়, একবার খেলে বাপের নাম ভুলে যাবেন।

১৭. দুধ: সাদা প্রোটিন দুধকেও ঢাকার বুদ্ধিমান ব্যবসায়ীরা স্ট্রিটফুডের চেহারা পাইয়েছে। রাত নামলে ঢাকার অনেক মহল্লাতেই বড় কড়ায় করে দুধ জ্বাল দেয়া হয়। গ্লাসে করে একগ্লাস গরম দুধ সাথে কখনো একটা পেল্লাই সাইজের বান বা বনরুটি। আহ!

(এখানে এসে ছবি দেবার কোটা শেষ হল বিধায় বাকিগুলোর ছবি দিতে পারলাম না। ওগুলো এই লিঙ্ক ভিজিট করলে পাবেন:https://www.facebook.com/walidur.rahman1/media_set?set=a.1255204884537516.1073741849.100001440495795&type=3&uploaded=25 )

১৮. চিকেন বান: সেনপাড়া পর্বতার আল হেলাল হাসপাতালের সামনের ফুটপাতে মনোলোভা চেহারার চিকেন বানগুলো দেখলে স্বাদ নিতে সবারই ইচ্ছে করবে।
১৯. কাবাব: মিরপুর-১ এর পথে পথে ভ্যানে একরকম কাবাব পাওয়া যায় যার নাম কাঠি কাবাব কারন বিফ বা চিকেন কাঠিতে গেঁথে সমতল তাওয়ায় ভাজা হয়। এটা পাবেন মিরপুর একনম্বরের রাস্তায় রাস্তায়।
২০. ঝালমুড়ি: ওমা! ঝালমুড়ি আবার স্ট্রিটফুড কবে হল? হ্যা, আপনি মিরপুর স্টেডিয়ামের উল্টোপাশের ফুটপাতে ঝালমুড়ির দোকান না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। ঝালমুড়িটাকে এই ব্যক্তি রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
২১. ফিস কারী: মাওয়া ঘাটের টং হোটেলে টসটসে চেহারার মাছের কারি দেখে জিবে জল রাখা মুশকিল হয়েছিল।
২২. চানাবুট: রিক্সাভ্যানে করে নানান পদের চানাবুট বিক্রি হয়ে থাকে ঢাকায়। তবে মিরপুরে স্টেডিয়ামের কাছে এক দোকানীর চানাবুট বিক্রি স্রেফ চানাবুটের চেয়ে বেশিকিছু।
২৩. মোবাইল বেকারী: রিক্সাভ্যানে করে মোবাইল বেকারী শপ। কী নেই এতে?
২৪. মিঠে পান: পান তো দোকানেই পাওয়া যায় কিন্তু এক ভ্যানের দোকানী সেটাকে আর্টিস্টিক রূপ দিয়েছেন। সনি হলের কাছে দেখেছিলাম ওনাকে পানের ভ্যানে পসরা সাজিয়ে বসতে।

তবে যতই মুকরোচক আর মনোহরা রূপের হোক, এইসব খাবারের হাইজন কতোটা সেটা নিজ দায়ীত্বে বুঝে খাবেন। তা নাহলে আপনি যদি এসব খেয়ে মহাখালি আইসিডিডিআরবিতে শুয়ে আমার শাপশাপান্ত করেন তবে আমি শেষ। তবে আরেকটা কথা। এগুলোর স্বাস্থ্যঝুকি, স্বাদ, ভালমন্দ ছাপিয়ে আরেকটা জিনিস আমার মনে ধরেছে। ঢাকা হল একটা ল্যান্ড অব অপর্চুনিটি। এখানে ভাগ্যের সন্ধানে এসে কেউ বিফল মনোরথ হয় না। কত কী করে যে মানুষ এখানে দু’বেলা ভাতের সংস্থান করছে সেটা বাঘা বাঘা অর্থনীতিবীদদের গবেষণাকেও হার মানাবে। ঢাকার বিচিত্র পেশার মানুষদের নিয়ে একটা পোষ্ট বানাচ্ছি। যদি হায়াতে কুলায় তবে আপলোড করব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.