নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আপনি কোনো সদ্য গজিয়ে ওঠা শপিংমলে একটা অতি উচ্চমূল্যের দোকান কিনলেন। পয়সা খরচ করে সেটার ডেকোরেশন করলেন, চকচকে ঝকঝকে করলেন, চৌকস বিক্রয়কর্মী নিয়োগ করলেন, দোকানের জন্য বিল, ভাউচার, ক্যাশমেমো ছাপালেন, দোকানের বিজ্ঞাপন দিলেন। কি মূল্যে কোন প্রোডাক্ট বিক্রি হবে বিক্রয় কর্মীদের তার ধারনা দিলেন। ভবিষ্যতে কতদিনে আপনার বিনিয়োগ কিভাবে তুলে নেবেন তার হিসাব করলেন। এসব কিছুই হচ্ছে একটি ছোট্ট প্রতিষ্ঠান শুরু করতে আপনার পূর্ব প্রস্তুতি। এটা আপনি কেন করেন? নিঃসন্দেহে আপনার মুনাফা তথা প্রোডাক্টের অধিক বিক্রি তথা প্রোডাক্টের ক্রেতাশ্রেণী বৃদ্ধি তথা প্রোডাক্টের আকর্ষণ বৃদ্ধি।
প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা (মালিক নয়, আমরা মালিক বলতে অভ্যস্ত) হিসেবে সবাই তার প্রতিষ্ঠানকে একটি প্রোডাক্টের মতো করে ক্রেতার কাছে রেডি করে উপস্থাপন করেন ক্রেতার আকর্ষণ তৈরী করতে। এটা বিক্রির আদিম ও মৌলিক মেথড। ক্রেতা নয়, বিক্রেতাকেই প্রথমে তার পণ্য আকর্ষণীয় করে তার ক্রেতাদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে তার মুনাফা তথা অধিক মার্কেট এ্যকসেস এর স্বার্থে (বর্তমানে ক্ষুদ্র অর্থে “মুনাফা” বা ”বিক্রির চেয়ে আমার কাছে ”মার্কেট এ্যকসেস” কথাটিকে অনেক যুক্তিযুক্ত মনে হয়)। বিক্রেতারই প্রথম দায়ীত্ব হল তার প্রোডাক্ট/সার্ভিস/কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে ক্রেতার কাছে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা। তা দেখে ক্রেতারা আকর্ষণবোধ করবেন সেই বিক্রেতার কাছ থেকে পণ্য কিনতে। ক্রেতা নয় এখানে বিক্রেতার ভূমিকা প্রথমে।
এই মূলনীতিটি একটি ক্ষুদ্র দোকানের ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য তেমনি তা সমভাবে প্রযোজ্য একটি বড় ফরমাল প্রতিষ্ঠান বা আরও বৃহৎ পরিসরে একটি দেশের বিনিয়োগ আকর্ষণের মতো ক্ষেত্রে। একটি প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট, মডার্ন, এডুকেটেড, ভিশনারী, প্রোএ্যকটিভ-এককথায় সুযোগ্য কর্মীবাহিনী দিয়ে সাজাতে ও তাদের ধরে রাখতে হলে কোম্পানীকেই সবার আগে উদ্যোগী হতে হবে, সম্ভাব্য কর্মীদের নয়। প্রথমে কোম্পানীকেই তার নিজেকে সম্ভাব্য কর্মীদের (যারা জব মার্কেটের দৌড়ে আছে) কাছে আকর্ষণ তৈরী করতে হবে। কোম্পানীকে তার ক্যারিয়ার অপর্চুনিটি/কর্পোরেট স্বরূপকে এমন ইমেজে ক্রেতাদের (চাকুরী প্রার্থী) কাছে উপস্থাপন করতে হবে যাতে ক্রেতারা (জব সিকাররা) আগ্রহ বোধ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ পেতে। অনেক উদ্যোক্তা বলে থাকেন কর্মীরা আনস্টেবল (অল্প দিনেই চাকুরী ছেড়ে যায়) বিধায় তারা প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট প্রাকটিসে তেমন মডিফিকেশনে আগ্রহী নন। আগে কর্মীরা সেটল হোক, প্রতিষ্ঠানকে তারা লাভবান করুক, প্রতিষ্ঠানে নিজেদের নিবেদীত হিসেবে প্রমাণ করুক তারপর প্রতিষ্ঠান এর প্রতিদানে নিজেকে “মডার্ণ কর্পেোরেট” স্বরূপে কনভার্শনে উদ্যোগ নেবে। বিপরীতক্রমে কর্মীদের অভিযোগ-প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট প্রাকটিস অপছন্দ, ক্যারিয়ারিজম না থাকা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার কারনে তারা সেই প্রতিষ্ঠান র্যান্ডমলী ছেড়ে যান। এখন আমরা কোন পক্ষে যাব? উদ্যোক্তার ভূমিকা আগে না জব সিকারদের?
অবশ্যই উদ্যোক্তাদের (আবারও বলছি ”উদ্যোক্তা’, ”মালিক” নয়)। সেই যে আদিম তত্ত্ব বলেছিলাম দোকান মালিকের, সেই একই নীতি। উদ্যোক্তাকেই তার প্রতিষ্ঠানকে নিজ উদ্যোগে জব মার্কেটে কর্মীবান্ধব, ভবিষ্যতমূখী, আধুনিক, ডায়নামিক, ফ্লেক্সিবল তথা চমৎকার কর্পোরেট কালচার সমৃদ্ধ একটি আকর্ষনীয় কর্মক্ষেত্র হিসেবে সম্ভাব্য ক্রেতা (জব সিকার)’র কাছে নিজেকে বিক্রির জন্য উপস্থাপন করতে হবে। যাতে ক্রেতারা তাদের ক্যারিয়ার পাথ অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে খুজে নিতে পারে, এই প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের ভবিষ্যতের নির্ভরতার প্ল্যাটফরম বলে আস্থায় নিতে পারে। কর্মীদের দিক থেকে রেসপন্স আসবে পরে, আগে বিক্রেতা তথা উদ্যোক্তাকেই এগিয়ে আসতে হবে। কিছু কর্মী সবসময়ই সুইচিং এর মধ্যে থাকবে। তাদের কর্মকান্ডের উপর বিচার করে প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা, কর্পোরেট কালচারের মূলনীতি নির্ধারন করা আধুনিক প্রতিষ্ঠানের জন্য উচিৎ নয়। আপনি একটি আধুনিক, ফ্লেক্সিবল ও উদার প্রতিষ্ঠানের সওদা নিয়ে জব মার্কেটে আসুন না হে কারবারী, দেখুন যোগ্য, নিবেদীত আর হ্যা অবশ্যই ”লং লাষ্টিং” কর্মী পান কিনা? চ্যালেঞ্জ।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৮
মুনেম আহমেদ বলেছেন: এমন সুযোগ তৈরী করা তো দক্ষ কর্মী পাওয়ার জন্যও জরুরী। ভাল লিখছেন। তবে প্রথম পাতায় একসাথে একাধিক পোস্ট না দিলেই ভাল হয়।