নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন মধ্যবিত্ত বাবা’র চেনা চিত্র

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৪

প্রতিদিন অফিসের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করি। প্রায়ই দেখি একজন মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক হাতে ব্যগ নিয়ে আমার পাশেই অপেক্ষা করেন তার গাড়ির জন্য। কর্পোরেট দাসদের চলমান জীবনে যা হয় আরকি। কখনো তেমন খেয়াল করিনা। হঠাৎ একদিন কী মনে হল আমি ভদ্রলোকের দিকে তাকালাম। মাঝবয়সী ভদ্রলোক, পরিপাটি করে চুল আচড়ানো, একটু তেলও বোধহয় দেন। আমি ভদ্রলোকের পরিচ্ছদের দিকে তাকালাম কেন যেন। আমি যা দেখলাম তার প্যান্টটি অল্পদামে ফুটপাত বা বড়জোর সস্তার দোকান হতে কেনা কাপড়ে বানানো। শার্টটি দীর্ঘ ব্যবহারে জীর্ণ। কোনোমতে সেটাকেই আয়রন করে, ব্লু দিয়ে মানুষ করে আবার গায়ে চড়ান। আমি তার জুতাজোড়ার দিকে খেয়াল করে দেখলাম। সস্তা রেক্সিনের শু। মেয়াদ শেষ হয়ে তার এক পরত স্কীন বের হয়ে গেছে। কালি করে তা ঢাকার একটা চেষ্টা। হয়তো আরো কিছু খেয়াল করতে পারতাম তার আগেই তার গাড়ি এসে যায়। তিনি উঠে পড়েন। খানিকবাদে আমারও গাড়ি আসে।

হয়তো তিনি একটি ভাল শা্র্ট পড়ে অফিস যেতে চান কিন্তু শার্ট কিনলে ছেলের স্মার্টফোনের টাকা হয়না। জুতাটার দামে হয়তো মেয়েটার একমাসের কোচিং খরচটা হয়ে যাবে। হয়তো ফুটপাতে একটা রঙিন শার্ট দেখে দামাদামীও করেছিলেন ১৭৫ টাকা পর্যন্ত কিন্তু বড়মেয়েটার ঘরের নাতনীর জন্মদিনে তাকে একটা সস্তা খেলনা কিনে দেবার কথাটা মনে পড়ায় শার্টটা আর কেনা হয়নি। গাড়িতে যেতে যেতে ভাবি ভদ্রলোককে সেই আমরা যখন সেভেন এইটে পড়ি তখনকার আমার বাবার চরিত্রে বেশ মানিয়ে যায়। আমাদের একটু ভাল রাখতে বাবা মায়েরা সারাজীবন কী ভয়ানক কৃচ্ছতা সাধন করে যান তার খবর ক’জন সন্তান রাখে। আমরা চার ভাইবোন ছিলাম। মা’কে দেখতাম কখনোই আমাদের সঙ্গে খেতে বসতেন না। ছোট হওয়ায় আমরা আশা করতাম মা কেন আমাদের সাথে খান না। এখন বুঝি,আমরা যাতে তৃপ্তি মতো খেয়ে নিতে পারি তাই তিনি নানান অযুহাতে পড়ে খেতেন (আমাদের ভাইবোনের খাওয়ার পড়ে যা থাকত তাই।) মা-বাবা তোমরা এত ভাল কেন হও?

মা-বাবাকে জীবনে অনেক কষ্ট দিয়েছি জানি। তার ৯৯%ই ছোটবেলায় বা একান্ত না বুঝে। সেই কষ্টটার জন্য স্যরি বলার সময় কি পাব? সেই কষ্ট দেয়াটার জন্য জীবনে কখনো নিজেকে ক্ষমা করব না।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


মা বাবাদের এত কস্ট করতে হচ্ছে কারণ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, সাইফুর রহমান, মুহিতেরা কোনদিন কস্ট করতে চায়নি।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮

বেচারা বলেছেন: হা হা হা। বিপ্লব বিপ্লব গন্ধ পাচ্ছি। তবে সবযুগেই বাবা-মায়েদের তাদের সন্তানদের কাছ হতে নানা রুপে, নানা বর্ণে, নানান ঢঙে কষ্ট পেতে হয়েছে কিন্তু। এটা বাবা-মা হবার পুরষ্কারের মতো।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১০

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: মধ্যবিত্তের চির চেনা চিত্র।

সুন্দর উপস্থাপনা।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৪

বেচারা বলেছেন: বাবু ভাই: মধ্যবিত্তকে নিয়ে আরেকজন মনিষির মন্তব্য (যদিও প্রাসঙ্গিক নয়) তবু বলছি। বাঙালি মধ্যবিত্ত প্রথম প্রেম করে খালাতো বোনের সাথে আর প্রথম কৌমার্য ভাঙে কাজের মেয়ের সাথে। প্রসঙ্গে আসি। বাবা-মা হওয়াটা খুবই ঝুকিবহুল একটি কাজ বলে মনে হয় আমার কাছে। সারাজীবনের সবরকম ত্যাগ আর সামর্থের সবটুকু সন্তানের পিছনে দিয়ে নিঃস্ব হবার পর শেষে সে মানুষ হবে কি হবে না, মা-বাবাকে দেখবে কি দেখবে না-সেটা ভয়ঙ্কর একটা রিস্ক। অন্তত আজকের বাস্তবতায়।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: বেচারা ,



চমৎকার.... চমৎকার । এক মধ্যবিত্তের কড়চা । দারুন দর্শন ।

বাবা-মায়েরা এরকম নিঃস্বার্থ হয় বলেই আজকালকার সন্তানেরা স্মার্টফোনে ফেবুতে পড়ে থাকতে পারে দিনরাত ।

বাবা মায়েরা সারাজীবন কী ভয়ানক কৃচ্ছতা সাধন করে যান তার খবর ক’জন সন্তান রাখে।
বাবা মায়েরা সারাজীবন কী ভয়ানক কৃচ্ছতা সাধন করে যান তার খবর ক’জন সন্তান রাখে।
বাবা মায়েরা সারাজীবন কী ভয়ানক কৃচ্ছতা সাধন করে যান তার খবর ক’জন সন্তান রাখে।

খুব ভালো লাগলো । ভালো থাকুন এমন সুন্দর একটি মন নিয়ে থাকুন ।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৬

বেচারা বলেছেন: সুন্দর মন আর কই পেলাম? পেলে কি বাবা-মাকে এত কষ্ট দিতাম?

৪| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমার খুব খারাপ লাগে আমার ইনকাম বাবা দেখে যেতে পারেনি...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.