নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ এক অদ্ভূৎ সামাজিক জীব

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৪২

আমাকে যারা কাছে থেকে চেনেন তারা জানেন, আমি একান্ত গলায় ছুরি ধরার মতো অবস্থায় না পড়লে কোনো বিয়ের দাওয়াতে, মুসলমানি-আকিকার দাওয়াতে, বার্থডে উদযাপনে, পিকনিকে, মৃতের বাড়িতে, নবজাতক দর্শনে যাই না। ব্যপারটা যে হঠাৎ করে একদিনে বন্ধ করে দিয়েছি তা না। একদিন হঠাৎ খেয়াল করলাম যে, আমি একটু বাড়াবাড়ি রকম অসামাজিক মানুষের খ্যাতি পেয়ে গেছি। বন্ধুবান্ধব তো কোনোকালেই আমার ছিল না। সামাজিকতা রক্ষা না করায় সেই সংখ্যা আরো কমেছে। কেউ কেউ অবশ্য টিপ্পনী কাটে-গিফটের পয়সা বাঁচাতে যায় না যদিও গিফটের চাঁদা ভাগমতোই দিই। তাহলে কেন যাই না? যদিও এটি ব্যক্তিগত পছন্দ ও দর্শন তবুও আমার প্রিয় টীমমেটদের সাম্প্রতিক টানাহেঁচড়া, টিকা-টিপ্পনি, নানান রহস্যময় মন্তব্য দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম এবার নিজেই লিখব এর গূঢ় রহস্য।
১.আমি আমার মায়ের দর্শনে প্রচন্ড প্রভাবিত। আমার মা আড়ম্বর একদম পছন্দ করেন না। এখনো আমরা যখন তার সন্তানরা তাকে সবদিক থেকে পূর্ণ করে রাখার চেষ্টা ও সামর্থ রাখি তারপরও তিনি অতি সাধারন পোষাক পরিচ্ছদ পড়তে পছন্দ করেন। তার এই অনাড়ম্বরতার দর্শন আমার মধ্যে জেনেটিক্যালি ডাইভার্ট হয়েছে। আমাদের এখানে একেকটি বিয়ে,জন্মদিন, আকিকা, বিবাহবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ঠিক কী পরিমান সাজসজ্জা, জাকজমক, আড়ম্বর হয় তাতো বলাই বাহুল্য। যেই দেশে এখনো ডাস্টবিন হতে খাবার তুলে মানুষ খায় সেখানে একদল লোক শুধুমাত্র টাকা প্রদর্শনের জন্য আড়ম্বরের চুড়ান্ত করবেন-সেটা আমার সহ্য হয় না।
২.টাকা নেই এমন প্রচুর মানুষও শুধুমাত্র সামাজিকতার চাপে বাধ্য হয় আড়ম্বর করতে। বিশেষত সনাতন ধর্মীয় কন্যার বাবারা সেই আদীকাল হতেই সর্বশান্ত হন স্রেফ মেয়ের বিয়ের আয়োজনে। সমাজের চাপে নিজেকে যেই অনুষ্ঠানে চিড়ে চ্যাপ্টা হতে হয়-তেমন জঘন্য প্রথায় আমি নিজেকে শামিল করার মতো রুচী খুঁজে পাই না।
৩.আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি না, যে পোষাক মানুষের স্ট্যাটাস বা পার্সোনালিটি বাড়ায়। অথচ শুধু এরকম আরোপিত সামাজিকতার অনুষ্ঠানগুলোর জন্য মানুষ সাধ্যাতিত কেনাকাটা করে অপচয় করে। আর প্রতিটি উৎসবে বানিজ্যিক ধান্দার প্রচার প্রসারে পোষাকের প্রোমোশনতো আছেই। একেকটি এমন অনুষ্ঠানে পোষাকের যেই প্রদর্শনী পুরুষ ও নারীরা করেন-সেটাকে এককথায় আমার অরুচীকর মনে হয়। আমি পুরুষ মানুষকেও দেখেছি অনুষ্ঠান এ্যটেন্ড করতে পার্লারে যেতে ।
৪.আমি নিজে কিছুটা ইন্ট্রোভার্ট। সভাসমিতিতে ব্যপক মাতিয়ে রাখতে পারে-তেমন পুরূষ মানুষের দলে আমি পড়ি না। জাকজমকপূর্ণ বিয়ে, মুসলমানি, আকীকা, চল্লিশার অনুষ্ঠানে গেলে কিছুটা ইনফেরিয়র ক্রাইসিসে ভুগি। বড়লোকদের বিত্তের নানামুখি প্রদর্শনের মধ্যে নিজেকে অসহায় লাগে। বিত্তবানদের বিত্ত’র চাকচিক্যে মেজাজ খারাপ থাকে আরো দশদিন।
৫.আমি নিজে মোটামুটি ফকির গোত্রের। অর্থ-বিত্ত খুব একটা বাগাতে পারি নাই জীবনে। তাই বিত্তের প্রদর্শন হয়-এমন অনুষ্ঠানে গেলে নিজের দীনহীন অবস্থার জন্য মন খারাপ হয় যেটা দীর্ঘদিন আপসেট করে রাখে। আর বড়লোকদের ব্যাপারে হয় ইর্ষা। নিষ্ফল ক্রোধ বলতে পারেন। কিন্তু সেটা হয় তো। আমি কী করতে পারি বলুন?
৬.কায়দামতো বা ড্রেসকোড মেনে যেতে হয়-এমন অনুষ্ঠানে গেলে সেখানকার মেকি পরিবেশে দমবন্ধ লাগে। সেটাও একটা কারন।
৭.এইসব কারনের সাথে অবশ্য মৃতের বাড়িতে না যাবার সম্পর্ক নেই। মৃতের বাড়িতে যাই না শুধুমাত্র নিজের প্রচন্ড ইমোশোনাল ব্রেকডাউনের জন্য। নিজের মানুষের মৃত্যুর ভয়াবহ শোক দেখবার, বইবার, নিজেকে শক্ত করে ধরে রাখবার কোনো ক্ষমতাই আমার নেই। মৃতের পরিবারকে দেয়া যেকোনো সান্তনাই মিথ্যা। তাই ভয়ে ওমুখো হই না। দূর হতে মনে মনে দোয়া করি।
৮.নবজাতককে দেখতে যাইনা। একটি নবজাতকের আবির্ভাব নিশ্চই তার বাবা-মায়ের জন্য আনন্দের। কিন্তু আজকালকার সন্তানেরা তাদের বাবা-মায়ের জন্য একচ্ছত্র আশির্বাদ হয়েই আসে না। সাথে সাথে তারা যেই ভেলকী আজকাল হাসিল করেছে তার জন্য বাপমা’র চোখের আর নাকের পানিতে গঙ্গা হয়ে যাবার অবস্থা। আর আমি কখনোই বিশ্বাস করি না, নর ও নারীর বিয়ে ও দাম্পত্যের একমাত্র উদ্দেশ্য মানবসন্তান পয়দা করা। তাই সন্তান জন্ম নিলে আমরা অতিরিক্ত যে আবেগ দেখায় সেটার সাথে নিজেকে আত্মস্থ করতে পারি না। আর আমি সন্তানের জন্মকে খুব স্বাভাবিক একটি প্রাকৃতিক ঘটনা বলে মনে করি। কিন্তু তার আগমনে আকিকা, অন্নপ্রাশন, হাতেখড়ি-নানান আরোপিত সামাজিকতার যে ঘটা শুরু হয়েছে (আর মুখে যতই বলুক উপহার নেবার বিষয়টা রীতিমতো অত্যাচারে পরিণত হয়েছে) তাতে নবজাতকের বাপ-মা বাদে আমাদের মতো গরীবদের জন্য আতঙ্কের বিষয় হতে দেরী নেই।
৯.অনুষ্ঠান যেমনই হোক, তাতে উপহার নেয়াটা এখন আর আন্তরিকতা নয়। সেটি রীতিমতো স্ট্যাটাস, শৌর্যবীর্য, বাধ্যতামূলক একটি প্রথা। সামর্থ থাক বা না থাক, সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কেতা অনুযায়ী উপহার হাতে নেয়া বাধ্যতামূলক। তাতে আবার বই বা ফুলের মতো স্মার্ট উপহার নয় বাটি, ঘটি, জামা, জুতা, গহনা, নগদ টাকার মতো আর্থিক মূল্যসম্পন্ন স্বার্থপর উপহার না নিয়ে গেলে তাকে আর সমাজে স্থান দেয়া হয় না। “কোনো উপহার নয়, আশির্বাদ কাম্য-এই অভয় বাণী আবার কোথাও কোথাও আমন্ত্রণপত্রে লিখে দিলেও সেটা অনুযায়ী আমল করাটা বোকামী। আমার ভয় হয়, কবে যেন জানাজা পড়তে যেতে বা চল্লিশা খেতেও নিম্নত্রণপত্র ছাপিয়ে ডাকা হবে আর সেখানে উপহারসহ যেতে হবে।
১০.মৃতের বাড়ি না যাবার আরেকটা বড় কারন মৃতের আত্মীয় ও স্বজনদের মৃত্যুর দিন মাত্রাতিরিক্ত মেকি শোক আর তার ২ দিন যেতে না যেতেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার ভন্ডামী। আমি এমনও দেখেছি মা বা বাবার মৃত্যুর ৩য় দিনের মিলাদেই সন্তানেরা দলবেঁধে চা-নাস্তা ও কাবাব খেতে খেতে মায়ের মিলাদের মেন্যু ঠিক করছে। ফিরনী থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে দর কষছে। ফাঁকে দিয়ে সিরিয়াল দেখা বন্ধ নেই। এসব দেখে দেখে মৃতের বাড়ির শোক দর্শনের প্রতি ভক্তি উঠে গেছে।
১১.আমার বাবা আমার বাসায় মারা যান। তার মৃত্যুর পর আমার সামনের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও তার জানাযায় আসেনি। আমার বাসায় শোক জানাতেও আসেনি। আমার দীর্ঘ ৪ বছরের গাড়ির সহযাত্রী সহকর্মীদের মধ্যে এসেছেন ১ জন তাও তিনি আবার সনাতন ধর্মীয়। এরপর হতে মৃতের বাড়িতে যাবার ব্যপারে আমিও একরকম প্রতিশোধপরায়ন অনুভব করি।
১২.আমাদের চারপাশে প্রচুর অসহায় মানুষের সাহায্য লাভের করূণ আর্তি প্রতিনিয়ত নানান মিডিয়ামে আমাদের সামনে আসে। আমরা আঙুলের ছোঁয়ায় তা সোয়াইপ করে পরের পোষ্টে চলে যাই। মনে মনে বলি আমার সামর্থ কতটুকু যে আমি করব। চারপাশে এত অসহায়, অভাবী মানুষ অথচ আমি আড়ম্বর করে অনুষ্ঠান করব-কেন যেন সেটা ঠিক মন হতে মানতে পারি না বলে এড়িয়ে চলি।
১৩.আমার কাছে মনে হয় বিয়ে, আকিকা, মৃতের মিলাদ-সবকিছুই অত্যন্ত সাদাসিদা ও অনাড়ম্বর নিয়ে করাই ভদ্রতার শামিল।একসময় এগুলো ছিলও তেমন।কিন্তু আমরা এগুলোকে যতটা জাকজমক ও ব্যয়বহুল করা সম্ভব তার সবই করেছি।কে কতটা ধুমধাম করে কত বেশি অপচয় করতে পারে সেটাই এখন মূখ্য। এগুলো এখন সোশ্যাল স্ট্যাটাসের জন্যই বেশি করা হয়। সোশ্যাল স্ট্যাটাস আবার আমার পছন্দের বিষয় না।
১৪.ধুমধামের এইসব অনুষ্ঠানে সমাজের দরিদ্ররা অপাংক্তেয়। তাদের প্রবেশাধিকার নেই দামি পার্টি সেন্টারে। দরজার বাইরে হতে তারা জলপূর্ণ চোখে চেয়ে চেয়ে দেখে ভেতরের অপচয় উৎসব।আর তার বিপরীতে বড়লোকের গরবিনী মায়েরা তাদের নাদুস নুদুস বাচ্চাদের আরেকটু রোস্টের স্বাদ জোর করে দেবার চেস্টা চালান।
১৫.বিয়ে ছিল একসময় খুবই নিয়মিত একটি সামাজিক নিয়ম। কত সাধারনভাবে সেটা হয়ে যেত। আর এখন স্রেফ খরচ জোগাড়ের ভয়েই বিয়ে করতে পারেনা অনেকে। অথচ বিয়ের বয়স পেড়িয়ে যেতে থাকে। আমাদের প্রিয় নবীজি সামান্য খেজুর বিতরন করেও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন অথচ তার অনুসারি আমরা লাখ টাকা কাবিন না করে শাদি করতে পারি না।
১৬.চল্লিশা যেন বাবা মায়ের মৃত্যু উপলক্ষে সন্তানদের বিত্ত প্রদর্শনের আরেক সুযোগ। যারা করতে চান না তারাও বাধ্য হন ধুমধাম করে গরু জবাই করে চল্লিশা করতে। একজন বাবা, মা, ভাই-বোন বা স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুতে আমরা অনতিবিলম্বে তার মরে যাওয়ার অপরাধে খাশি জবাই করে, ডেকোরেটর ডেকে, মিষ্টি-দধি সহযোগে আড়ম্বর করে তার দায় শোধ করি। কেন? স্বজনহারা একজন মানুষের সামনে আমরা আয়েশ করে খাশির পায়া চিবাই, কোল্ড ড্রিংকস দিতে দেরী হলে বেয়ারাকে ধমকাই, হাসিমুখে পিতাহারা সন্তানটিকে শোক জানাই!, পানের যোগাড় আছে কিনা সে খোজ নেই। “বাবা, তোমার খালাম্মার আসতে পারেনি, নাতীটার পাতলা পা......খানা..............” মানে বক্স করে বাসায় দাও-এই ধান্দাও করি। ফিরনীটাতে মিষ্টি আরেকটু দিতে হত-মর্মে বিজ্ঞ মন্তব্য করি। বাবুর্চীর বাড়ি কই-জানতে চাই এবং ফরিদপুরের বাবুর্চীর উপরে বাবুর্চী নাই-এই খবর জানান দিই।
মৃতের স্বজনেরা কখনো স্বেচ্ছায়, কখনো অনিচ্ছায়, কখনো নাম কামাতে মৃত্যু উপলক্ষে এই ভয়াবহ অমানবিক, পাশবিক, বিকৃত, নিষ্ঠুর, পৈশাচিক প্রহসনের যজ্ঞটি চাপিয়ে দেই বা নিজেরাই করি। আমার বাবার মৃত্যুর অপরাধে আমার কিছু “শুভাকাঙ্খি”! আমাকে বাবার মৃত্যুর অপরাধে কড়া ভাজা জিলাপী দিয়ে এই অপরাধের দায়শোধ করতে বাধ্য করেন।আমার রুচি হয়না এমন অনাচারে শামিল হতে।
১৭.বিয়ে হয় দুজন অপরিচীত নরনারীর। বিয়ের পরবর্তিতে স্বাভাবিক নিয়মে নরনারীর ব্যক্তিগত দাম্পত্য সম্পর্কের একটি গোপনীয় ও লাজুক বিষয় থাকে যা তাদের দুজনের মধ্যে সীমিত থাকার কথা। অথচ এখনকার বাবামায়েরাও মেয়ের হানিমুন, হানিমুনের কর্মকান্ড, দাম্পত্য এসব নিয়ে বিয়ে ও তার অনুষ্ঠানে দলবল নিয়ে মজা করে। বন্ধুরা নানারকম ইশারা ইঙ্গিতে কোনো একটা পার্সোনাল বিষয়ে ঠাট্টা করে।আমি এই অসভ্যতাটা সহ্য করতে পারি না বিধায় যাই না ও পাড়ায়।
১৮.পিকনিক ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নামক আজব কিছু অনুষ্ঠানেও যাই না (ঠ্যাকায় না পড়লে)। কেন? গড়পড়তা পিকনিকগুলো হয় কিছু লোকের কারিশমা প্রদর্শনের প্লাটফরম। অদ্ভুত নানান সেগমেন্ট দিয়ে পিকনিক উদযাপিত হয় (ডিজে ড্যান্স নামক মেয়ে মানুষ প্রদর্শনী, জঙ্গলে গিয়ে তৈলাক্ত খাবার ভক্ষন, প্যাকেজ আনন্দ, লটারী ইত্যাদি)। এক যায়গায় দেখলাম পিকনিক শেষে ডিজে ড্যান্স হচ্ছে। তারই একফাঁকে সভাপতির পোলা আরবী ও বাংলায় সুরা শোনালেন। কি দারুন বাহ! ওগুলোর কোনোটাই আমার রুচীতে যায় না। মানুষ দারুন একটি প্রাকৃতিক আশ্চর্যের স্থানে গিয়ে যায়গাটার সৌন্দর্য’র চেয়ে সেলফী আর আর আরামে বেশি মনোযোগী হলে তার সাথে কী করে তাল দেই?
।।।।।
আমি জানি এতকথার পরেও কেউই আমার সাথে একমত হবেন না। তারা বলতেই থাকবেন আমার এগুলো গোড়ামি এবং এগুলো সব খোড়া যুক্তি। তবে অন্তত এই বলে নিজেকে ডিফেন্ড করতে পারি যে, উল্লেখিত অনুষ্ঠানগুলো যেমন যাই না তেমনি আমি থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা মদ্যপান ও মাতলামি ইভেন্ট, ওয়েডিং এ্যানিভার্সারি তথা ন্যাকামী ইভেন্ট, অফিস কলিগদের সাথে সেলফী মূল্য সম্বলিত জঙ্গল দর্শন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নামক অপচয় পার্টিতেও যাই না। থাকি না আমি একটু অসামাজিক। জগতের বাকি ৫০০ কোটি ৯৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৯ জন সামাজিক মানুষের ভীড়ে আমার মতো নাদান না হয় একজন থাকলই। কোনোদিন যদি বেলি ফুল দিয়ে সত্যি সত্যি কেউ বিয়ে করতে পারে আর তার সামাজিক আত্মীয়রা সেটা অভিনন্দনের সাথে গ্রহন করে সেই অনুষ্ঠানে আমি কোমরে গামছা বেঁধে কাজ করব। আরেকটা কথা এই সুযোগে বলি। কেউ কেউ আমাকে অত্যন্ত কৃপন টাইটেল দিয়েছেন। তাদের ধারনা আমি টাকা পয়সা একদমই খরচ করতে চাই না। টাকা খরচের ভয়ে কোথাও যাই না। স্বল্প পরিসরে দু’টো কথা তাই আরো বলি। আমার ব্যক্তিগত জীবন দর্শন হল, মানব জীবন হল ৫০ থেকে ৬০ বছরের মতো সময় শুধুমাত্র। এত মূল্যবান সময় আর কষ্টার্জিত অর্থ-দু’টোই অর্থবহ কাজে খরচ করা এবং জীবন ও সময়কে সার্থক করাই মানব জীবনের মূল সাফল্য। অপচয় আর অর্থহীন কাজে অর্থব্যয় করে নিজেকে রুচীহীন ও খেলো করতে চাই না। কাজে লাগানো যায় এমন কত খাত চারপাশে। তাতে ইনভেস্ট করার পরে আর জাকজমকে অপচয় করার সময় কই?

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমার ভয় হয়, কবে যেন জানাজা পড়তে যেতে বা চল্লিশা খেতেও নিম্নত্রণপত্র ছাপিয়ে ডাকা হবে আর সেখানে উপহারসহ যেতে হবে।
এটা ভাল লেগেছে।
আপনার সব কথাই আমার সাথে যায়। ব্যক্তিগত ভাবে কোন ধরনের অনষ্ঠানই ভাল লাগে না আমার।
র সবচেয়ে বাজে লেগেছে এই অংশটা।
আমার দীর্ঘ ৪ বছরের গাড়ির সহযাত্রী সহকর্মীদের মধ্যে এসেছেন ১ জন তাও তিনি আবার সনাতন ধর্মীয়। এরপর হতে মৃতের বাড়িতে যাবার ব্যপারে আমিও একরকম প্রতিশোধপরায়ন অনুভব করি।
সনাতন ধর্মি কি মানুষ নারে ভাই যে আলাদা করে উল্লেখ করতে হবে? বলতঘ পারতেন একজন মাত্র এসেছেন। হিন্দুদের আলাদা করে দেখার এই মানসিকতা খুব জঘন্য, বিশ্বাস করুন। মানুষ পরিচয়টা কি যথেষ্ট নয়?

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৬

বেচারা বলেছেন: না আরন্যক। আমাকে ভুল বুঝবেন না। সনাতন ধর্মীয় সহযাত্রীর কথাটা আলাদা করে বলার পেছনে কোনো বর্ণবাদ মনে কাজ করে নি। “১ জন তাও তিনি আবার সনাতন ধর্মীয়”-এই কথাটা বলার কারণ হল আমার নিজ বিশ্বাসের সহযাত্রীদের আসার দায়ীত্ব আরো বেশি কারন তারা এসে দাফন, কাফনসহ অন্যান্য কাজে বেশি সাহায্য করবেন-সেটা কাম্য কিন্তু তারা আসেননি। এসেছেন একজন সমব্যথী বন্ধু যিনি সনাতন বিশ্বাসের। আমি বরং তার এই ঔদার্যকে আরো বেশি সম্মান করি।

২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০৯

কালীদাস বলেছেন: বুঝতে পারছি। আপনি জন্ম থেকেই বেচারা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.