নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বিদ্রোহী আমি বিদ্রোহী আমি বিদ্রোহী

বিদ্রোহী কন্ঠস্বর

আমি চির বিদ্রোহী বীর, বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি এক চির উন্নত শির

বিদ্রোহী কন্ঠস্বর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে দেখা কর্ণফুলী!!

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৩

হে কর্ণফুলী,
জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে মিশে আছো তুমি; অতি নিবিড়ভাবে ও সংগোপনে। তোমারই শীতল জল ও হিমেল হাওয়ায় কেটেছে শৈশব-কৈশোর। তৃষ্ণাত্ব ঐ কাকের মত তোমারই অমৃত পান করছি বারেবারে। দুই নয়নে তোমারই উজান-ভাটার
ঢেউ, আর সাম্পানের সেই শব্দ শুনে দিন কেটেছে অসীমসংখ্যক। তোমারই পাড়ে কেটেছে বন্ধুদের সাথে কাটানো দিন। শীতের ঐ কুয়াসায়, বর্ষার ঐ অঝর বৃষ্টিতে, গ্রীষ্মের ঐ রৌদ্রতেজে তোমারই রূপ দেখেছি খুব কাছ থেকে। শীতের আগমনী বার্তায় তোমারই অমৃত পান করতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসে অতিথি পাখি। জানি তুমি তখন তাদের আপন করে নাও অতি নিবিড়ভাবে। জানি তুমি সর্বনাশী নয়, তবুও
বহুবার তোমারই জল অনেকের রক্ত চুষে নিয়েছে বহুবার; দেখেছি আর শুধু নিরবে কেঁদেছি! তোমারই মাঝে জড়িয়ে আছে ফেলা আসা দিনগুলোর স্মৃতি! স্মৃতির ক্যানভাসের উঁকি দিয়ে যাবে তোমারই
শীতল জলে সাঁতার কাটার অবাধ্য সেই ছেলের ছবিটি। তোমারই জলে জ্যোৎস্নাময়ী রাতে নৌকাভ্রমণের সেই দিনগুলো। জ্যোৎস্না বল জ্যোৎস্নাবিহীন বল তুমি
তোমার সৌন্দর্য নিয়ে চির কাল বড়াই করতেই পারবে।
হে কর্ণফুলী, তুমি আছো তুমিই থাকবে এ হৃদয়ে!!
-
তোমারই সৌন্দর্যে দিওয়ানা হয়ে তোমারি উৎপত্তি কিভাবে হলো জানতে চাইতাম বহুবার। কথিত আছেঃ
আরাকানের এক রাজকন্যা চট্টগ্রামের এক আদিবাসী রাজপুত্রের প্রেমে পড়েন। এক জ্যোৎস্নাস্নাত রাতে তাঁরা দুই জন এই নদীতে নৌভ্রমণ উপভোগ করছিলেন। নদীর পানিতে চাঁদের প্রতিফলন দেখার সময় রাজকন্যার কানে গোঁজা একটি ফুল পানিতে পড়ে যায়। ফুলটি হারিয়ে কাতর রাজকন্যা সেটা উদ্ধারের
জন্য পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু প্রবল স্রোতে
রাজকন্যা ভেসে যান, তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাজপুত্র রাজকন্যাকে বাঁচাতে পানিতে লাফ দেন, কিন্তু সফল হন নি। রাজকন্যার শোকে রাজপুত্র পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেন। এই করুণ কাহিনী থেকেই নদীটির নাম হয় 'কর্ণফুলী!
-
কর্নফুলী নদীর উৎপত্তি, মিজোরামের
লুসাই পাহাড়ে। এটি এঁকেবেঁকে দীর্ঘ পথ
পেরিয়ে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পতেঙ্গায়
মিশেছে।
কর্নফুলী নদীর দৈর্ঘ্য ৩২০কিঃমিঃ,
নদীটি প্রস্থে ৬৬৭ মিটার,
গড় গভীরতা ১০২ মিটার ,
সর্বোচ্চ গভীরতা ১৪৭ মিটার।
-
কবিদের কবিতা ও শিল্পীর গানে কর্ণফুলীঃ
১৯২৫সালে মতান্তরে ১৯২৬সালে কবি কাজী
নজরুল ইসলাম প্রথমবার চট্টগ্রামে আসেন।
কবি সে সময়ে, কবি বন্ধু হাবীবুল্লাহ বাহারসহ অন্যান্য বন্ধুদের সাথে কবি গিয়ে উঠেন সদরঘাটস্থ সাম্পান ঘাটে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর সাম্পান নিয়ে অসংখ্য
গান রচিত হয়েছিল, কবি যে সাম্পানটিতে নদী ভ্রমণের জন্য উঠেছিলেন। সে সাম্পানটি ছিল ভাঙ্গা। কবির সাথে সে সাম্পানে অন্যান্য বন্ধুরা যখন উঠেছিলেন তখন সেই রহিম মাঝির সাম্পানটি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তাই অন্যান্য বন্ধুদের
সাম্পান থেকে নামিয়ে দিয়ে কবি একাই সেই
সাম্পানে নদী ভ্রমণ করেছিলেন এবং সেই
বিখ্যাত গান- ‘আমার সাম্পান যাত্রী না লয়
ভাঙ্গা আমার তরী’ রচনা করেছিলেন।"
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৯ সালে
চট্টগ্রামের ডিসি হিলে ডাক বাংলোতে কর্ণফুলী কবিতাটি লিখেন। কর্ণফুলী কবিতায় আরাকান রাজ্যের রাজকন্যার সেই স্মৃতিময় সত্তায় জড়িত বেদনামধুর ঘটনা ও কর্ণফুলীর সৌন্দর্য কবি সুনিপুণভাবে তার ছন্দে রূপায়িত করেছেনঃ
ওগো কর্ণফুলী!
তোমার সলিলে পড়েছিল
কবে কার কান-ফুল খুলি’।
তোমার স্রোতের উজানে ঠেলিয়া
কোন্ তরুণী কে জানে,
“সাম্পান”-নায়ে ফিরেছিল
তার দয়িতের সন্ধানে?
আনমনা তার খুলে গেল খোঁপা
কান-ফুল গেল খুলি
সে ফুল যতনে পরিয়া কর্ণে কি কর্ণফুলী।
-
এছাড়াো কবি ওহীদুল আলম ১৯৪৬ সালে
কর্ণফুলীর মাঝি নামে একটি কাহিনী-কাব্য
রচনা করেন। ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, কবি
আলাউদ্দিন আল আজাদ ১৯৬২ সালে রচনা
করেন তার উপন্যাস কর্ণফুলী।
-
কর্নফুলী তার হারানো সৌন্দর্য ফিরে পাক এ কামনায়!
-
শিহাব
কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.