![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোলেস্টেরল
কোলেস্টেরল হল নরম মোমের মত চর্বি জাতীয় পদার্থ যা কিনা অনেক গুলো ঘাতক ব্যাধীর জন্য দায়ী। কোলেস্টেরল ছাড়া কিন্তু জীবন হয় না।কোষের দেওয়াল, হরমোন, ভিটামিন ডি , পিত্ত ইত্যাদি তৈরীতে কোলেস্টেরলর অপরিহার্য।
উৎসঃ- উৎস দুটো, ১) খাবারের সাথে, ২) শরীরে প্রস্তুত । শরীরে স্বাভাবিক ভাবেই কোলেস্টেরল তৈরী হয় আবার তা শরীর থেকে বেরিয়ে ও যায়।একজন পুর্নবয়স্ক মানুষের শরীরে রোজ প্রায় এক গ্রাম কোলেস্টেরল তৈরী হয়, শরীরে মোট পরিমান ৩৫ গ্রাম মত এবং স্বাভাবিক খাবারে প্রতিজনে গড়ে ২০০-৩০০ মিগ্রাম মত কোলেস্টেরল খেয়ে থাকেন।
খাবারঃ- প্রানী থেকে পাওয়া চর্বি জাতিয় খাবার কোলেস্টেরলের প্রধান উৎস।চর্বির মধ্যে থাকে ট্রাইগ্লিসারাইড,ফস্ফলিপিড, কোলেস্টেরল ইত্যাদি।
যে সমস্ত খাবার এর মধ্যে পড়ে তা হল মাংশ বিশেষ করে গরু, খাসী, শুয়োর, ননীযুক্ত দুধ, ঘি, মাখন,পনীর, ডিমের কুসুম, লিভার, চিংড়ি মাছ, মুরগীর মাংশ ইত্যাদি।
উদ্ভিদ জাতীয় চর্বিতে কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রানী জাতীয় চর্বির চেয়ে অনেক কম এবং কোন কোন খাবার যেমন বাদাম বা তিষিতে থাকা ফাইটোকোলেস্টেরল শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক।
দুই ধরনের চর্বি- “স্যাচুরেটেড চর্বি” এবং “ট্রান্স চর্বি” রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, প্রানী থেকে পাওয়া চর্বি জাতীয় খাবারে এ গুলো বেশী থাকে।
শরীরের সমস্ত কোষেই কোলেস্টেরল প্রস্তুত হয়ে থাকে তবে লিভার, অন্ত্র, এড্রেনাল ইত্যাদিতে তা বেশী মাত্রায়।রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার উপর নির্ভর করে শরীরে কোলেস্টেরল উৎপাদনের পরিমান, রক্তে মাত্রা বেড়ে গেলে উৎপাদন কমে যায় এবং মাত্রা কমে গেলে উৎপাদন বেড়ে যায়।
রক্তে কোলেস্টেরলঃ- পানিতে কোলেস্টেরল দ্রবনীয় নয় তাই রক্তে প্রোটিনের সাথে মিশে তা হয় দ্রবিভুত। দুটকে একসাথে বলে লাইপোপ্রটিন আর এই লাইপোপ্রোটিন হিসেবেই তা রক্ত দিয়ে পৌছে যায় কোষ থেকে কোষে, শরীরের এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায়।
কয়েক ধরনের লাইপোপ্রোটিন আছে, কাইলোমাইক্রন,chylomicrons, ভেরি লো ডেন্সিটি লাইপোপ্রটিন,very-low-density lipoprotein (VLDL), ইন্টারমিডিয়েট ডেন্সিটি লাইপোপ্রোটিন,intermediate-density lipoprotein (IDL), লো ডেন্সিটি লাইপোপ্রটিন,low-density lipoprotein (LDL), এবং হাই ডেন্সিটি লাইপোপ্রোটিন।high-density lipoprotein (HDL). কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে বা প্রোটিনের অংশ কমলে ঘনত্ব বা ডেন্সিটি কমে।
এদের মধ্যে লো ডেন্সিটি লাইপোপ্রটিন,(Low-density lipoprotein LDL), এবং হাই ডেন্সিটি লাইপোপ্রোটিন (High-density lipoprotein HDL) শরীরের জন্য গুরুত্ব পুর্ন।অধিকাংশ কোলেস্টেরল লিভার দিয়েই আবার পায়খানার সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। লো ডেন্সিটি লাইপোপ্রটিন,(Low-density lipoprotein LDL) কে বলা হয় খারাপ কোলেস্টেরল রক্তে এটা বেড়ে গেল এথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis) এর ঝুকি বেড়ে যায়। তাই এটা খারাপ । অপর দিকে হাই ডেন্সিটি লাইপোপ্রোটিন (High-density lipoprotein HDL) হল ভাল কোলেস্টেরল এটা বাড়লে এথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis) এর ঝুকি কমে।
কোলেস্টেরলের গুরুত্বঃ- বেশী মাত্রা কোলেস্টেরলকে বলে হাইপারকোলেস্টেরলেমিয়া(hypercholesterolemia) রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা তখন ধমনি, শিরা উপশিরায় জমা হতে থাকে যাকে বলে এথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis)।জমা হতে হতে যখন ধমনীকে বন্ধ করে দেয় তখন রক্ত আর যেতে পারে না ফলে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অংশ বিশেষ মারা যায় যাকে বলে ইনফারকশান।হৃৎপিন্ডে হলে তা হল মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফারকশান বা হার্ট এটাক, মস্তিষ্কে হলে তা হল সেরেব্রোভাস্কুলার ডিজিজ বা স্ট্রোক আর হাত পায়ে কোথাও রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হলে তা হয় গ্যাংরীন।স্ট্রোক এবং হার্ট এটাক মানুষের মৃত্যুর প্রথম এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম কারন।
রক্তে কোলেস্টেরলের পরীক্ষাঃ- ১২ ঘন্টা না খেয়ে থাকার পর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা দেখা হয়, পরীক্ষাতে অনান্য জিনিশ ও দেখা হয় তাই এর নাম “সিরাম লিপিড প্রোফাইল”।এই পরী ক্ষাতে যা দেখা হয়ঃ-
মোট কোলেস্টেরলের পরিমান,
লো ডেন্সিটি লাইপোপ্রটিন,(Low-density lipoprotein LDL) এল ডি এল কোলেস্টেরলের পরিমান ,
এইচ , ডি, এল (High-density lipoprotein HDL) কোলেস্টেরলের পরিমান
মোট কলেস্টেরলের পরিমান ও এল ডি, এল কোলেস্টেরলের অনুপাত
এবং ট্রাই গ্লিসারাইডের পরীমান।
সাধারনত মোট কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এইচ,ডি এল কোলেস্টেরলের মাত্রা বের করা হয়। এল, ডি এল মাত্রা হিসেব করে বার করা হয়।
মোট কোলেস্টেরল=HDL+ LDL, + VLDL. ।
ট্রাইগ্লিসারাইডের পরীমানের পাচ ভাগের এক ভাগ হল VLDL।
লো ডেন্সিটি লাইপোপ্রটিন,(Low-density lipoprotein LDL) = [total cholesterol] − [total HDL] − [estimated VLDL].
তবে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমান ৪০০ মিঃগ্রামের বেশী হলে এল,ডি, এল এর পরীমান সরাসরি মাপা হয়।
ফলাফল ও ব্যাখ্যাঃ-
মোট কোলেস্টেরলঃ-<২০০ মিঃগ্রাম ভাল, ২০০-২৪০ মাঝামাঝি ঝুকি , >২৪০ মিঃগ্রা উচ্চ ঝুকিপুর্ন।
এল, ডি , এল কোলেস্টেরল- < ১০০ মিঃগ্রাঃ কাংক্ষিত, ১০০-১৪০ মিঃগ্রাঃ, ঝুকিপুর্ন, > ১৪০মিঃগ্রাঃ উচ্চ ঝুকিপুর্ন।
এইচ, ডি এল কোলেস্টেরল- > ৪০মিঃগ্রাঃ কাংক্ষিত, <৪০ মিঃগ্রা ঝুকি পুর্ন।
ট্রাইগ্লিসারাইডঃ কাংখিত মাত্রা < ১০০ মিঃগ্রাঃ।
চিকিৎসাঃ- চিকিৎসার উদ্দেশ্য হল এল্ডিএল এর পরিমান কমান এবং এইচ,ডিএল এর পরিমান বাড়ানো
ঔষধঃ – পাচ গ্রুপের ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
স্ট্যাটিন, যেমন লিপিটর
ফাইব্রেট;ফেনোফাইব্রেট-ট্রাইকর।
বাইল এসিড সিকুএস্ট্রান্ট,- কলেস্টাইরামিন, কোলেস্টিপল।
নিকোটিনিক এসিড
কোলেস্টেরল এবসরপ্সহান ইনহিবিটরঃ-এজেটিমাইব
অনেক ক্ষেত্রে দুই গ্রুপের ঔষধ একত্রে ব্যাবহার করা হয়।
ঔষধ বিহীনঃ-খাবার পরিমিত খাবার খাবেন। বেশি খাবার মানেই তা শরীরে গিয়ে জমা হবে।উদ্ভিজ তেল প্রানীর চর্বি থেকে ভাল হলেও তাও কিন্তু বেশী খেলে কোলেস্টেরল বাড়াবে।
যা খাবেন- ফলমুল
শাক সব্জী
উদ্ভিজ তৈল
মাছ
তন্তু বা আশ যুক্ত খাবার।
যা খাবেন না বা কম খাবেনঃ-
প্রাণির চর্বি
মাখন, ঘি,পনীর
ডিমের কুসুম
মাংশ।
ভাজা
ধুমপান, তামাক, এলকোহল নিষিদ্ধ।
শারীরিক ব্যায়াম গুরুত্বপুর্ন। আর কিছু না পারলেও রোজ কম করে আধ ঘন্টা হাটবেন। বসে থাকা পেশাগুলোতে শরীরের পরিশ্রম কম ফলে কোলেস্টেরল বাড়ে। যথা সম্ভব পরিশ্রম করবেন।
২| ২৪ শে মে, ২০১১ সকাল ৮:৪৯
প্রকৌশলী আতিক বলেছেন:
এই খানে কোলেস্টেরল সম্বন্ধে আরও ভাল জানিতে পারিবেন। view this link
২৪ শে মে, ২০১১ সকাল ১১:২৫
বীরেনদ্র বলেছেন: On the net you have oceans of informationsand no one site is better than the other.
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মে, ২০১১ রাত ১১:০৮
অপ্রিয় বলেছেন: ভাল