নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মুক্তি আমার আলোয় এই আকাশে আমার মুক্তি ধুলোয় ধুলোয় ঘাসে ঘাসে

বন্ধু শুভ

আনকোরা যত নন্ভায়োলেন্ট নন্-কো’র দলও নন্ খুশী। ‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি! গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্ফুসি! স্বরাজীরা ভাবে নারাজী,নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি! © কাজী নজরুল ইসলাম

বন্ধু শুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুরুচরণ ও আমাদের প্রত্যাশা : একটি নাট্য পর্যালোচনা

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১



১.
কার্ডে নাম লেখা ছিল "লেঃ কঃ (অবঃ) কাওছার চৌঃ", আর বাসার মুরুব্বি নামটা উচ্চারণ করলেন এইভাবে "লেহ কহ অবহ কাউচ্ছার চৌউ"। নামের পেছনে আরো লেখা আছে "টি এস সি"। পাশে মুরুব্বি ভদ্রলোকের বউ বসা, যার আছে ডায়াবেটিস নামের একটি শারীরিক কষ্ট দেয়ার চেয়ে বেশি মানসিকভাবে পিছিয়ে দেয়া রোগ। এবং ভদ্রলোকের আছে হাইপারটেনশন ও মাথায় স্থায়ী টাক। বুঝতেই পারছেন, মাথায় আধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্টেডিয়াম তথা টাক ধারণকারী লোকটি হলেন আবুল হায়াত (বাবা চরিত্রে) এবং তার স্ত্রী হচ্ছেন দিলারা জামান (মা চরিত্রে)। তাদের দুই সন্তান। একজনের পেশা বুঝার সুযোগ না থাকায় ধরে নিচ্ছি সদ্য পড়াশোনা শেষ করা এক যুবতী, যিনি বাসায় থাকছেন। তার নাম তমা (অপি করিম)। এবং বাসার ছোট মেয়ে পড়াশোনা করছেন, তার নাম (চাঁদনী)। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেই "লেহ কহ অবহ" (মেডিটিয়ান ও কাউন্সিলর) খ্যাত কাওছার চৌঃ তথা জাহিদ হাসান।

২.
একটি পরিবারের বয়ঃবৃদ্ধ দুজন মানুষ আমেরিকা যাবেন ছেলের কাছে বেড়াতে। অথচ তারা ভয়ে আছেন যে, ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশন নিয়ে। ভ্রমনাবস্থায় তারা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় নানা রকম দুশ্চিন্তা তাদের মনে উঁকি দেয়। উপরি হিশেবে তাদের বিশেষ কাজ হচ্ছে সারাক্ষণ ঝগড়া করা। এই অবস্থায় তাদের ছোট মেয়ে, যিনি এখনো পড়াশোনা করছেন, তিনি, তার বান্ধবীকে বিষয়টি শেয়ার করেন। তখন বান্ধবী তার মামার কথা বলেন, যিনি কিনা বিশাল একজন সাইকিয়াট্রিস্ট। তাকে মানুষজন "গুরু" বলেও সম্বোধন করে থাকে। সেই মামা তার ভাগ্নির বিশেষ অনুরোধে আসলেন ঐ বাড়িতে এবং তার "বিশেষ ধরণের চিকিৎসা" দিতে শুরু করলেন। এই চিকিৎসা পদ্ধতি ঐ বাড়ির বড় মেয়ে তমার (অপি করিম) পছন্দ হলো না। তার পছন্দ না হলে কী হবে— তাকে, চিকিৎসা করতে আসা ডাক্তারের ভালো লেগে গিয়েছে। কিন্তু একা ভালো লাগলে তো চলবে না, তালি বাজাতে দরকার দুই হাতের। বাড়ির বড় মেয়ে বিষয়টি বুঝতে পেরে ডাক্তারকে "মামা" সম্বোধন করতে থাকে। যেহেতু কাউন্সিলর সাহেব ছোট বোনের বান্ধবীর মামা, সেহেতু তারও (বড় বোন) মামা। একবার বলে "কি করেন মামা" তো আরেকবার বলে "কি দেখছেন মামা"।

৩.
ডাক্তারের ভাবভঙ্গি ও চিকিৎসা পদ্ধতি খুবই উদ্ভট ও হাস্যকর। তিনি একবার সাইকেল চালানোর মতো করে পা নাড়াতে বলেন তমার বাবা-মা কে। মুরুব্বি দুইজন ঝগড়া করলে সরি বলার সুযোগ করে দেন। ইত্যাদি। কিন্তু তমার এইসব ভালো লাগে না। সে কাউন্সিলর কাওছার চৌঃ কে মৃদু ধমক দিতেই থাকেন। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রেমের ইশারা ইঙ্গিত বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে কাউন্সিলর কাওছার চৌঃ চিকিৎসা করার চেয়ে প্রেম করাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন ; যদিও এই প্রেম একপাক্ষিক। তবু ইতোমধ্যে প্রকাশিত কাউন্সিলরের জ্ঞান এবং আচরণ দেখে তমার মনে এক বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য সেটা কি প্রেম না অন্য কিছু তা তখনো স্পষ্ট হয়ে উঠে নি।

৪.
এই পর্যন্ত যত যা বললাম, ব্যাপারটা সেরকম সরল রেঅ বরাবর কিছু হলে এইটা সম্ভবত নাটক হইতো না। নাটক হয়েছে এখানে নাটকীয়তা আছে বলেই। আর এইখানে নাটকীয়তা হলো, মামা তথা কাওছার চৌঃ মূলত কাউন্সিলর না। তিনি একজন ডাকাত। তার নামের শেষে "টি এস সি" টাইটেলটির মানে এতক্ষণে বুঝা গেল। এই ডাকাত মামা রেস্টুরেন্টে হাফিজ সাহেবের (আবুল হায়াৎ) ছোট মেয়েকে ফলো করেছেন এবং ফলো করতে গিয়েই এই সুযোগটা কব্জা করেছেন। ডাকাত সাহেব তমা নাম্নী অপি করিমের কাছে ধরা পরেছেন পিস্তল এবং অজ্ঞান করার মেডিসিনসহ। এ পর্যায়ে নায়িকা তমা আপা তথা অপি করিম, নায়ক তথা জাহিদ হাসানকে কিছু জ্ঞান প্রদান করেন এবং শেষে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশের কাছে দেয়ার আগেই তিনি ভালো লাগার কথা জানান এইভাবে "আপনি ডাকাতি করেন, অথচ আমি আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম।" পুলিশ আসার আগে বিষয়টি বাসার সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কাওছার চৌঃ প্রশ্নের সম্মুখীন হন। তিনি অপি করিম "তিনি আমার কাছে দীক্ষা নিতে এসেছেন" বলে বিষয়টিকে সহজতর করে দেন। এই বাড়িতে আসার ব্যাপারটিকে সর্বজনগ্রাহ্য করতে জাহিদ হাসান তথা কাওছার চৌঃ বলেন "আমি মানুষ হবার দীক্ষা নিতে এসেছি।" তারপর যথারীতি নায়ক প্রায়শ্চিত্ত করার মধ্য দিয়ে ফিরে আসেন এবং দুজনে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকেন। সুখে বসবাস করার বিষয়টি অনুমানজাত হলেও অপি করিম জেলখানায় ফুল নিয়ে দেখতে যাওয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান।

৫.
এই গল্পটি খুবই সাধারণ একটি গল্প। সামাজিক পরিকাঠামোর বৃহত্তর বিস্তার এখানে লক্ষ্য করা যায় না। এটি নিতান্তই একটি পরিবারের গল্প। এখানে সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরার মতো ভারী কোনো জিনিশ নেই। আছে শুধু একটি পরিবারের গল্প। যা একান্তুই একটি নির্দিষ্ট পরিবারকে প্রতিনিধিত্ব করে।


নাটক: গুরুচরণ
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: ফেরদৌস হাসান
অভিনয়: জাহিদ হাসান, অপি করিম, চাঁদনী, আবুল হায়াত, দিলারা জামান প্রমুখ

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


গড়ে হরিবোল টাইপের নাটক, এগুলো চলতে থাকে, মনে দাগ কাটে না।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০০

বন্ধু শুভ বলেছেন: সত্যিই এগুলো সংখ্যা বাড়ানো নাটক। হৃদয়ে থাকার মতো নয়।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৪

নতুন বলেছেন: এই গুলি পপর্কন খেতে খেতে টাইম পাস করার জন্য তৌরি করে। এটা শুধুই ব্যবসার উদ্দেশেই তৌরি নাটক।

এই রকমের নাটকে মেধা এবং টাকার বিনিয়োগ দুটাই কম।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০১

বন্ধু শুভ বলেছেন: আফসোস হচ্ছে এর চেয়ে আরো সস্তা কাজ আজকাল হচ্ছে এবং বেশি করেই হচ্ছে।

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: ্নাটকটা কি ইউটিউবে আছে?

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০২

বন্ধু শুভ বলেছেন: জ্বি দাদা আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.