নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বিশেষ কেউ বা কিছু না। যা মনে আসে যেভাবে মনে আসে তাই লিখি।
১৮৬/বি শিরিয়া মন্জিল, ছোটবেলার ডায়রি।
২ (কহিনূর নামা)
ছবি: গুগল
হঠাৎ করেই টিনের ঘর ছেড়ে আমরা দালান ঘরে উঠলাম। জমিদার খালাম্মা ঢাকা চলে গিয়েছিল বলে একতলা দালানটা খালি হয়ে গিয়েছিল। আমরা পাকা ঘরে উঠার পর পরই মেইন গেইটে "ঘর ভাড়া দেওয়া হবে" সাইন বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হলো। আমি অনেক খুশি পাকা ঘরে থাকি বলে। হঠাৎ করেই নিজের ভেতর একটা ভাব কাজ করতে লাগল। বাড়িতে তখন আমার সমবয়সি কেউই নেই, থাকলে তাদের নেতা নিশ্চিত ভাবে আমিই হতাম। (ছোট বেলার ভাবনা গুলো কতোই অদ্ভুত আর হাস্যকর ছিল)
কদিন পরই আমাদের পুরনো ঘরে নতুন ভাড়াটি আসলো, ঘর ভাড়া নিয়েছে মোল্লা কাকা। বাসার সামনে যে ছোট দোকানটা নতুন হয়েছে সেটাও মোল্লা কাকা ভাড়া নিয়েছে । কাকার তিন ছেলে দুই মেয়ে। বড় ছেলে হুজুর ভাই মেজ ছেলে কাদের মোল্লা তারপর বড় মেয়ে শাহিনূর, ছোট মেয়ে কহিনূর আর সবার ছোট ছেলে বাবু।
বাবুর সাথে কদিনেই ভাব হয়ে গেল গলায় গলায় ভাব, বাবুর অনেক শক্তি। সেই সময়ে বিটিভিতে "রিপলিস বিলিভ ইট অর নট" নামক একটা অনুষ্ঠান দেখাত সেখানে অদ্ভুত সব মানুষ আর অদ্ভুত তাদের সকল কাজ দেখাত। সেখান থেকে দেখে দেখে নিজের মত নানা কৌশল আবিষ্কার করে বাবুর শক্তি পরিক্ষা করতাম। বাবুকে টিভিতে যা হত তা বলতাম আর বাবু অবাক হয়ে তা শুনত। বাবুদের ঘরে কোন টিভি ছিলনা। একদিন আমি আর বাবু বিকেলে বাড়ির পেছনের যে ডোবাটা ভরিয়ে ফেলেছে তাতে খেলতে গিয়েছিলাম।(ডোবার ইতিহাস বিশাল পরে বলবো) ডোবার মাঝেই চলে গিয়েছিলাম আমরা, হঠাৎ করেই বাবু ডোবার একটা চোরা খাদে পড়ে গেল, আমার বাবুকে তোলার মত শক্তি বা সাহস কোনটাই ছিল না। বাবু নোংড়া কালো পানিতে একবার ডুবছিল আবার ভেঁসে উঠছিল। কি করবো বুঝতে না পেড়ে এক দৌড়ে বাবুর মার কাছে চলে গেলাম। বাবুর মা দ্রুত এসে বাবুকে উদ্ধার করলো, আর বাবু যে গর্তে পড়ে গিয়ে ছিল তাতে একমুষ্টি চাল, একটা কাচাঁ ডিম এর একটা একটাকার মোটা কয়েন ফেলে দিয়ে এসলো। কেন এইসব দিল তার কোন ব্যাখা আমি আজো পাইনি।
ছবি: গুগল
কালো ছিপ ছিপে দেহ আর কাধঁ পর্যন্ত কালো-বাদামি রংয়ের চুল ছিল কহিনূরের। প্রথমে দু-চারদিন তার সাথে কথা বলিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সাথে আমার গভির ভাব হয়ে গিয়েছিল। কহিনূর পড়ালিখা করতনা। তার সাথে থাকা হতো অনেক, কহিনূরের সাথে বউ জামাই ই খেলতাম বেশি ,আমি বাজার করে আম পাতা, পেয়ারা পাতা, আতা পাতা,আমড়া পাতা নিয়ে আসতাম আর সে রান্না করে দিত সারা দিন অফিস করে আমি অনেক ক্লান্ত থাকতাম সে আমার হাত-পা ও টিপি দিত। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কহিনূরকে আমি সত্যিই বিয়ে করবো। হঠাৎ শুনি হুজুর ভাই বিয়ে করবে, নতুন বউ নিয়ে এই ছোট্ট ঘরে তাদের জায়গা হবেনা বলে তারা বাসা ছেড়ে চলে গেল। বাসা ছাড়ার পরও বেশ কদিন তাদের নতুন বাসায় যাওয়া আসা ছিল। তারপর হঠাৎ করেই যাওয়া আসা বন্ধ। এভাবেই ছোট্ট বেলার প্রেমিকাকে হারিয়ে ফেল্লাম। এখন হয়তবা কহিনূরের স্বামি আছে তিন-চার-পাচঁটা বাচ্চা আছে। সে কোথায় আছে, কেমন আছে, দেখতে কেমন হয়েছে কে জানে??
পর্ব ১ Click This Link
পর্ব ৩ Click This Link
পর্ব ৪ Click This Link
পর্ব ৫ Click This Link
২| ৩১ শে মে, ২০২০ রাত ৯:২৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার কাহিনী
৩| ৩১ শে মে, ২০২০ রাত ১০:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: আহ!!
সৃতি বড় বেদনাদায়ক।
০৯ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৯
আমি রানা বলেছেন: আমার প্রথম প্রেম ছিল যদিও তখন প্রেম কি বুঝতাম না।
৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৩০
অধীতি বলেছেন: জামাই-বৌ খেলাটা সে কি লজ্জার আবার আনন্দের আমাদের বড় ভাইরা আমাদের ব্লাক মেইল করত এসব আব্বু আম্মুর কাছে বলে দিবে।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৯
কল্পদ্রুম বলেছেন: ডোবায় টাকা চাল কয়েন ফেলার ব্যাপারটা ইন্টেরেস্টিং। ডোবার বিশাল কাহিনীটা লিখবেন একসময়।