নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওপার বাংলা থেকে অপার বিস্ময়ে এই বাংলাদেশের দিকে তাকানো এক ভারতীয়

ওপার বাংলা থেকে অপার বিস্ময়ে এই বাংলাদেশের দিকে তাকানো এক ভারতীয়

রামিজের ডিপফ্রিজ

এখানে পুরনো/নতুন ট্রলের সেরা কালেকশন পাবেন

রামিজের ডিপফ্রিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হোস্টেল জীবন ও পি টি এস ডি শেষ পর্ব

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

হোস্টেল জীবন+ পি টি এস ডি পর্ব ১

হোস্টেল জীবন+ পি টি এস ডি পর্ব ২

হোস্টেল জীবন+ পি টি এস ডি পর্ব ১

হোস্টেল জীবন+ পি টি এস ডি পর্ব ২

হোস্টেল জীবন+ পি টি এস ডি পর্ব ৩



এটাই এই পোস্ট সিরিজের শেষ পর্ব; আগের পর্বে হোস্টেল জীবনের কথা বলেছি; এই পর্বে সে আলোচনা আর বাড়াব না ( যেহেতু ব্লগের বেশির ভাগ পাঠকই চুইংগামের মত বেড়ে চলা মেগাসিরিয়ালগুলির ভক্ত নন )।



এই পর্বে লেখার শিরোনামের আরেকটি অংশ পি টি এস ডি নিয়ে আলোচনা করব।



পি টি এস ডি মানে কী?



পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার; অর্থাৎ কোন বড় ধরনের মানসিক বা শারীরিক আঘাতের পর কোন ব্যক্তির যে মানসিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্ট হয়।



আমার ক্ষেত্রে:



শারীরিক দিক থেকে এক বছরে প্রায় ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলাম। সাধারণত ১২ বছর বয়সে কোন ছেলের দৈহিক ও মানসিক বিকাশের হার খুবই বেশী থাকে, ডাক্তারী শাস্ত্রমতে অ্যাডোলেসেন্ট দুনিয়ার ঢোকার আগের শেষ যাত্রাতোরণ এটি। কিন্তু এই এক বছরে আমার শারীরিক বিকাশ দূরে থাকুক, ওজন কমে ৪২ কেজি থেকে ৩৪ কেজি হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার পর আমাদের পাড়ার ডা্ক্তারবাবু পর্যন্ত আঁতকে উঠেছিলেন।



কিন্তু এটা মূল ব্যাপার নয়, এমনকি উল্লেখযোগ্য ব্যাপারও নয়; সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল মানসিক অ্যাসপেক্ট।



সেবছর অ্যানুয়াল পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর আমি বাড়িতে বাবাকে বোঝাতে পেরেছিলাম যে এ জায়গায় আর ফিরে যেতে আমি পারব না। সেইমত বাবা একদিন ওখানে একা গিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা পাকা করে আসে, আমি আবার আমার পুরানো স্কুলে পুরানো বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তি হয়ে গেলাম।



আমি জানি মাননীয় পাঠকরা মনে মনে ভাবছেন- এবার নটেগাছটি মুড়িয়েছে, আমার পোস্টও শেষ হয়েছে। দুঃখিত, আপনাদের আরো কয়েকটা লাইন পড়া বাকি রয়েছে (তবে ট্যাব ক্লোজ করে দিলে অবশ্য কিছু বলার নেই ;) )



এবার দেখে নিই এই এক বছর আজ অবধি আমার ওপর কি কি প্রভাব ফেলেছে?



১) ক্লাস এইটে পড়াশুনা করার কোন মোটিভেশনই ছিল না; ঐ দমবন্ধ করে পরিবেশ থেকে স্বাধীনতা পেয়েছি- এই স্বস্তিটাই সারা মন জুড়ে ছিল। কাজেই ক্লাসের রেজাল্টও একদম বারোটা বেজে গেল।



২) আজ পর্যন্ত হোস্টেল নামটা শুনলেই একটা বিকর্ষণ কাজ করে, পড়াশুনার স্বার্থে ভার্সিটির হোস্টেলে থাকাটা জরুরী; কিন্তু শুধু এই বিকর্ষণটার জন্য এক বছর আমি হোস্টেল এড়িয়ে চলেছি; যাতায়াতে টাইম নষ্ট হয়েছে; নিট ফল ভার্সিটির পড়াশুনার অনেকটাই মনোমত হয়নি। আবার শেষ পর্যন্ত যখন সাহস সঞ্চয় করে হোস্টেলে সিট নিলাম তখন থেকে পড়াশুনো ঠিকঠাক চলছে।(বলা বাহুল্য- এখানে আমি ল্যাপটপ ইউজ করতে পারি, মোবাইল আছে, বাইরে যখন ইচ্ছে যেতে পারি এবং ভারত সরকারের বদান্যতায় পাও্য়া ইন্স্পায়ার স্কলারশিপের টাকাগুলো মানিব্যাগে থাকে )



৩) এটা পার্সোনাল পয়েন্ট এবং আমার মনে হয় যদি কোন পাঠক কষ্ট করে এতদূর পড়ে আসেন তাহলে এই পয়েন্টটা তিনি যেন নোট করে রাখেন। আমি আর কারোর জীবনে এ ব্যাপার আবার দেখতে চাই না।এই পয়েন্টটা না বললে আমার পোস্ট সিরিজ দেওয়াটাই বেকার।



আজ থেকে ন বছর আগে জুন মাসের যে দুপুরে বাবার যে কড়া আদেশ শুনেছিলাম "তুমি এখানেই পড়বে" (৩য় পার্ট দেখুন) সেই আদেশ ভোলার চেষ্টা অনেক করেছি; আজও পারিনি। আজও অবচেতন মনে এই একটা বছরের দুঃস্মৃতির জন্য বাবাকে দায়ী করি; আজও মনে হয় যে আমি নিজে ওখানে যেতে চাইনি, বাবার জোরাজুরিতেই ওখানে অ্যাডমিশন টেস্ট দিয়েছি।



জানি, আপনারা বলবেন যে বাবা আমার ভালই চেয়েছিল, আমার মস্তিষ্কও তাই বলে, কিন্তু অবচেতন মনে এখনও ঘা-টা বড় কাঁচা।



আবার অন্যদিকে আমি আমার বাবাকে আমার ঠাকুরদার জন্য প্রাণপাত করে পরিশ্রম করতে দেখেছি, ফিমার বোন ভাঙা ঠাকুরদাকে তিনদিন একটানা জেগে ট্রেনের ননরিজার্ভড কামরায় নিজে দাঁড়িয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনার মত অমানুষিক কাজ আমার বাবা করেছে।রাতের পর রাত ঠাকুরদাকে সেবা করে সকাল বেলা ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে বাবা অফিস গেছে। আমার ঠাকুরদার জন্য আমার বাবা যে পরিমাণ ত্যাগস্বীকার করেছে তা যদি অন্য কোন ছেলে তার বাবার জন্য করে থাকে তাহলে আমি খুবই আশ্চর্য হব।



কাজেই মনের মধ্যে একটা দোষীভাব কাজ করে যে এমন পিতৃভক্ত বাবার ছেলে হয়ে আমি যদি নিজের বাবাকে মনে মনে দোষী করি তাহলে সেই বিশ্বাসঘাতকতা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৩

কালোপরী বলেছেন: ভাল লাগল


আপনি হিন্দু না মুসলমান? ঠাকুরদা বলছেন আবার আল্লাহকে ডাকছেন এজন্য জিজ্ঞেস করলাম। রাগ করবেন না যেন

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

রামিজের ডিপফ্রিজ বলেছেন: আমি মুসলমান।

বাড়িতে আমি দাদু শব্দটা ব্যবহার করি; আপনারা অনেকে সেই অর্থে দাদা লেখেন কিন্তু দাদা অর্থে এপারে বড় ভাইকে বোঝানো হয়, আমাদের এলাকায় নানা শব্দটা মূলত ব্যবহার করেন অবাঙালী মুসলমানরা।

তাই কনফিউশনের ভয়ে এই শব্দগুলো ব্যবহার করিনি; হাতে পড়ে থাকে ঠাকুরদা আর পিতামহ- এদুটোর অর্থ নিয়ে ভুল বোঝার কোন সম্ভাবনা নেই।

তাই সবদিক ভেবে ঠাকুরদাই দিলাম।

বুঝতে অসুবিধা হলে দুঃখিত।

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০০

কালোপরী বলেছেন: বুঝেছি :)


ধন্যবাদ

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০১

ছোট নদী বলেছেন: B-) B-) B-)

৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৬

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: শেষ পর্ব টা আরো একটু জমলে ভালো হত ।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬

রামিজের ডিপফ্রিজ বলেছেন: দুঃখিত, গল্প লিখলে হয়ত জমত; কিন্তু এই লেখাটা গল্প নয়।

৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৭

শাহ মো. আরিফুল আবেদ বলেছেন: ভার্সিটি হলের মত আনন্দ আর নেই। পোস্টে ++

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

রামিজের ডিপফ্রিজ বলেছেন: এই একটা লাখ কথার এক কথা বললেন। আসলে এখানে স্বাধীনতার সবটুকু আছে কিন্তু ফ্যামিলি লাইফের দা্য়িত্ব নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.