নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে: https://t.ly/atJCp এছাড়া, বইটই-এ: https://boitoi.com.bd/author/2548/&

দারাশিকো

লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি

দারাশিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

Yol: কুর্দি সিনেমা

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

একটি খুব ভালো সিনেমা দেখে উঠার পর সিনেমাটা সম্পর্কে জানার আগ্রহে আপনি যদি উইকিপিডিয়ায় ঢুঁ মারেন এবং জানতে পারেন, সিনেমাটির নির্মানের তিনভাগের দুভাগ সময়ই পরিচালক জেলে বন্দী ছিলেন, শ্যুটিং এর পুরো দৃশ্যটা তাকে দেখতে হয়েছে অন্যের চোখে, তখন আপনার কেমন লাগবে? বিস্মিত আমি হতভম্ব হলাম যখন জানলাম সিনেমাটা এমন এক দেশে নির্মিত যে দেশের সিনেমা নিয়ে সাধারণত কেউ কথা বলে না। সিনেমার নাম Yol, ইংরেজিতে বলে ‘দ্য রোড’। দেশের নাম তুরস্ক, পরিচালক ইলমাজ গুনে (Yılmaz Güney)।



তুরস্কের এক জেলখানার কুর্দি কিছু বন্দীকে এক সপ্তাহের জন্য ছুটি দেয়া হল। এক সপ্তাহের মধ্যে পরিবারের সাথে দেখা করে তারপর আবার ফিরতে হবে জেলখানাতেই। অনেক বন্দীর মাঝে পাঁচজন বন্দীর এক সপ্তাহের ঘটনাবলী তুলে ধরা হয়েছে সিনেমায়। তাদের মধ্যে সাইদ আলীর বউ বেশ্যা হয়ে গিয়েছিল এবং ধরা পড়েছে, মোহাম্মদ সালেহ’র অপরাধের সঙ্গী আপন শ্যালক মারা গিয়েছিল সে গ্রেফতার হওয়ার সময় এবং স্ত্রী-পরিবার সন্দেহ করে সেই দায়ী, ওমর পরিকল্পনা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালাবে, ফিরবে না আর জেলে।





ইলমাজ গুনে-র জীবনবৃত্তান্ত একটি থ্রিলার মুভির কাহিনী হলেও তার নির্মিত সিনেমাগুলো সাধারণ মানুষের জীবনঘনিষ্ট ছিল বলেই জানা যায়।



কুর্দিদের সাথে সংঘর্ষ একটি চলমান ইস্যু। উইকিপিডিয়া বলে, তুরস্ক থেকে আলাদা হয়ে নিজস্ব জাতির জন্য স্বায়ত্তশাসন ও একটি আলাদা রাজ্যের জন্য লড়াই করছে কুর্দিরা – সেই ১৯৭৮ সাল থেকে। সিনেমা পরিচালক, উপন্যাসিক, অভিনেতা গুনে একজন কুর্দি। তুরস্কের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে মানবিক আবেদন নিয়ে তিনি এই সিনেমাটা নির্মান করেছিলেন। মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি সিনেমা নির্মান প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হন, যদিও অর্থনীতি ও আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। বলা হচ্ছে, তুরস্কে সে সময় স্টুডিও ভিত্তিক সিনেমা নির্মিত হত যার কাহিনীতে মেলোড্রামা, যুদ্ধ এবং নাট্যাংশ স্থান পেত বেশী। সিনেমা শিল্পের সে অবস্থার সাথে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের বর্তমান অবস্থার বোধহয় খুব বেশী পার্থক্য নেই। এফডিসি-কেন্দ্রিক সিনেমা সত্যিকারভাবে দেশের ঘটনাপ্রবাহ ও সময়কে কতটুকু তুলে ধরতে পারে সে প্রশ্ন বারবারই করা হচ্ছে। তুরস্কেরও সেরকম পরিস্থিতি গুটিকয়েক চলচ্চিত্রনির্মাতা এগিয়ে আসেন যারা সিনেমার মাধ্যমে দেশের সমস্যাগুলোকে অপেক্ষাকৃত অনেক আকর্ষণীয় করে তুলে ধরেন। এদের একজন ছিলেন আতিফ ইলমাজ, গুনে তার সহকারী ও অভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৬৫ সালে গুনে তার সিনেমা নির্মান শুরু করেন। ১৯৭৪ সালের মধ্যে তিনি প্রায় সতেরোটি সিনেমা নির্মান করেন, তিনবার জেলে ঢোকেন, দুবার বের হয়ে আসেন। ১৯৭৪ এই একজন বিচারককে হত্যার অভিযোগে তাকে ১৯ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। গুনে বুঝতে পেরেছিলেন, সামরিক জান্তা তাকে বারবার আটকে দেয়ার চেষ্টা করবে। গুনের ভাষায় -”There are only two possibilities: to fight or to give up, I chose to fight”। গুনে ‘ইয়োল’ নির্মান শুরু করলেন।



১৯৮১ সালে গুনে জেল ও দেশ থেকে পালালেন। তুরস্ক থেকে পালালো তার নির্দেশনায় চিত্রায়িত সিনেমা ‘ইয়োল’ এর নেগেটিভ ফুটেজ, দুয়ের মিল হল সুইজারল্যান্ডে। সেখানে এবং পরবর্তীতে প্যারিসে সিনেমার সম্পাদনা শেষ করেন ইলমাজ গুনে। এই সিনেমা কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পাম ডি’অ পুরস্কার জিতে নিল। সারা বিশ্বের সামনে কুর্দি ফিল্ম হিসেবে তুরস্কের সামরিক জান্তার প্রভাবান্বিত কুর্দিদের অবস্থা তুলে ধরা হল। ফ্রান্স সরকার গুনে-কে সাময়িক নিরাপত্তা প্রদান করেছিল সে সময়, বডিগার্ড সহায়তা দেয়া হয়েছিল অপহরণ বা গুপ্তহত্যা থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে। গুনে যখন মঞ্চে উঠলেন, অশ্রুভেজা চোখে দর্শকরা চেচালো – গুনে, গুনে, গুনে!



পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন মানুষের মাধ্যমে সে সময়কে তুলে ধরেছেন গুনে। দেখিয়েছেন, এমন একটা সময় যেখানে জেল থেকে মুক্তি সত্যিকারের মুক্তি নয়। সংস্কার, জান্তা, দারিদ্র্য ইত্যাদির শৃঙ্খল আরও আটোসাঁটো হয়ে আটকে পড়ে গলায়। চারদেয়ালের জেল সে তুলনায় অনেক বেশী নিরাপদ, আর, মৃত্যুতে মুক্তি।



ছবির অভিনেতারা অভিনয় করেছেন দারুন। ইরানী সিনেমায় অভ্যস্ত দর্শকরা তাদের অভিনয়ে সন্তুষ্ট হবেন। কুর্দিস্তানের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবনযাত্রা অদ্ভুত প্রক্রিয়া উঠে এসেছে সিনেমায়। সব কিছুকে ছাপিয়ে ফুটে উঠেছে ব্যক্তি জীবনের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্পগুলো। সিক্ত হোন ‘ইয়োল’এ।

তথ্যসূত্র:

1. Click This Link

2. Click This Link

3. Click This Link

4. Click This Link

5. Click This Link

6. http://en.wikipedia.org/wiki/Yol

ছবিসূত্র:

Click This Link

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

সুখ নাইরে পাগল বলেছেন:
১৯৬৫ সালে গুনে তার সিনেমা নির্মান শুরু করেন। ১৯৭৪ সালের মধ্যে তিনি প্রায় সতেরোটি সিনেমা নির্মান করেন, তিনবার জেলে ঢোকেন, দুবার বের হয়ে আসেন।

ইন্টারেস্টিং, দেখতে হবে।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮

দারাশিকো বলেছেন: গুনের ফিল্ম বাংলাদেশেও দেখানো হয়েছিল, কোন একটা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। দেখি নাই। :(

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮

আহমেদ সাব্বির পল্লব বলেছেন: ধন্যবাদ......রিভিউ এর জন্য....।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

দারাশিকো বলেছেন: ধন্যবাদ পল্লব, এটা আসলে রিভিউ না, পরিচিতি পোস্ট বলতে পারেন।
ভালো থাকুন :)

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

হাঁসি মুখ বলেছেন: দেখতে হবে মুভিটা । ডিরেক্ট লিংক খুজে পাচ্ছ না ।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩

দারাশিকো বলেছেন: লিংক পেলে দিয়ে যাবেন প্লিজ। আমি যে কিভাবে পেয়েছিলাম সেটা মনেই করতে পারছি না :(

হাসিমুখে থাকুন হাসিমুখ :)

৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪০

অন্ধকারের রাজপুত্র বলেছেন: রিভিউ পড়ে দেখার আগ্রহ হচ্ছে .....
দেখি লিংক পেলে এখনই নামিয়ে নেব...
সুন্দর রিভিউয়ের জন্য অনেক ধন্যবাদ !

++++++

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪

দারাশিকো বলেছেন: শুকরিয়া রাজপুত্র।
এটা আসলে রিভিউ না, পরিচিতি পোস্ট বলতে পারেন। ভালো থাকুন :)

৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

আমি তুমি আমরা বলেছেন: রিভিউ পড়ে দেখার আগ্রহ হচ্ছে .....

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১১

দারাশিকো বলেছেন: এটা আসলে রিভিউ না, পরিচিতি পোস্ট বলতে পারেন। ভালো থাকুন আপনারা ;)

৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৮

কাউসার রুশো বলেছেন: মুভিটার অনেক নাম শুনেছি। পরিচালকের জীবনটাই তো টানটান উত্তেজনাপূর্ণ আস্ত একটা সিনেমা!!
দেখতে হবে মুভিটা

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১১

দারাশিকো বলেছেন: সত্যিই। বিপ্লবী ফিল্মমেকার।
দেখেন, ভালো লাগবে।

৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩২

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: এই সিনেমাটার কথা শুনেছি অনেক। দেখতে হবে।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

দারাশিকো বলেছেন: দেখে ফেলুন শামীম ভাই। অ্যাপিলিঙ স্টোরিটেলিঙ

৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪১

মামুন রশিদ বলেছেন: একেবারেই অজানা একজন পরিচালক এবং তার ছবি সম্পর্কে জানলাম ।


ধন্যবাদ জানবেন । পোস্টে প্লাস ।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮

দারাশিকো বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন। :)

৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৯

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: রিভিউ দেবার জন্য ধন্যবাদ ।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৯

দারাশিকো বলেছেন: পরিচিতি - রিভিউ না :)
রাফাত নুর এখনো মুক্তি পায় নাই?

১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৩

ইউসুফ খান বলেছেন: দেখলাম মুভিটা।
নিঃসন্দেহে অসাধারন একটা মুভি। অত্যান্ত ন্যাচারালভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ব্যাক্তিগত জীবনের ঘটনাগুলো। কিছু শট এতোটাই মারাত্মক লেগেছে মনে হচ্ছিলো এরকম শট হলিউডওয়ালাদের পক্ষেও দেয়া সম্ভব না। খুব ভাল লেগেছে। কিছু দৃশ্য তুর্কি ফিল্ম হিসেবে বেমানন মনে হলেও রিয়েলিটি আনার জন্যই ডিরেক্টর হয়তো সেগুলো রেখে দিয়েছেন।
আমার রেটিং-
৮.৫/১০
+++++++++++++++
ধন্যবাদ সুন্দর একটি মুভির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য বস। :)

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৯

দারাশিকো বলেছেন: গুড বয় ওয়াই কে :)
দেখে ফেলেছেন :)

১১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৮

সন্দীপ হালদার বলেছেন: দেখার আগ্রহ বেড়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১০

দারাশিকো বলেছেন: দেখে জানাবেন কেমন লাগল।
ভালো থাকুন সন্দীপ হালদার :)

১২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩০

কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: ক্ল্যাসিক সিনেমা মনে হচ্ছে। দেখতে হবে।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯

দারাশিকো বলেছেন: ক্ল্যাসিক এর পর্যায়ে চলে গেছে কিনা শিওর না, তবে একটা সময়কে ভালো রিপ্রেজেন্ট করে এই সিনেমা।

১৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১৪

শব্দহীন জোছনা বলেছেন:
মুভি টা দেখার জন্য অনেক খানি আগ্রহ বোধ করছি। ধন্যবাদ ক্লাসিক একটি মুভি শেয়ার করার জন্য।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৩

দারাশিকো বলেছেন: ধন্যবাদ শব্দহীন জোছনা :)
ভালো থাকুন

১৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৬

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: দেখলাম মুভিটা। বরফের যেই শটগুলো আছে সেগুলো ক্লাসিক পর্যায়ের।গল্প অসাধারণ। তবে চরিত্র কম রাখলে হয়তো গল্পটা আরো ভালো লাগত। একটা ফিল্ম একজনের গল্প হওয়াই ভালো।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৪

দারাশিকো বলেছেন: একজনের গল্প বললে কিন্তু একই সময়ের এতগুলো সমস্যা তুলে ধরা কষ্টকর হয়ে যেত। প্রত্যেকের জন্য একটা সিনেমাও তো সম্ভব না। এদিক থেকে আমার কাছে ভালোই লেগেছে। তবে হ্যা, কারেক্টার পাচজনের জায়গায় তিনজন হলে একটু বেশী সহজ হত। প্রথমদিকে কে কি সেটা ধরতে কষ্ট হচ্ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.