নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে: https://t.ly/atJCp এছাড়া, বইটই-এ: https://boitoi.com.bd/author/2548/&

দারাশিকো

লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি

দারাশিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুডব্লগ: সারিন্দার বেসুরো পদ

০৬ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:২৫


বাদ্যযন্ত্র হিসেবে সারিন্দা যতটা না প্রচলিত, তার চেয়ে বেশি প্রচলিত এর প্রবাদ – আমি বলি কী আর আমার সারিন্দা বাজায় কী! সম্ভবতঃ তার চেয়ে একটু কম জনপ্রিয় হলো ময়মনসিংহের সারিন্দা রেস্টুরেন্ট। বিশ্বাস হচ্ছে না? গুগল ম্যাপস এ এই মুহুর্তে রেটিং দিয়েছেন ৩,৬৫৮ জন। আর, হাজারের বেশি ভোট রয়েছে এমন রেস্টুরেন্ট মাত্র তিন-চারটি, যাদের মধ্যে সারিন্দা রেস্টুরেন্ট বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে। সে হিসেবে, সারিন্দা রেস্টুরেন্টকে ময়মনসিংহের সবচেয়ে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট বলা যায়, নাকি?

যারা সারিন্দাকে কেবল বাগধারাতেই চিনেন তাদের জন্য সারিন্দার পরিচয় তুলে ধরা যাক। এই বাদ্যযন্ত্রটি ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত। বাংলাদেশে বাউলদের হাতে দেখা যায়। সেতার বা তানপুরার মত সারিন্দায়ও তার থাকে। তিনটি তার। দেখতে দোতারার মতো হলেও সারিন্দা বাজাতে হয় ধনুকাকৃতির ছড়ের সাহায্যে। ছড় বানানো হয় ঘোড়া বা অন্য কিছু পশুর পশম দিয়ে। এছাড়া রেশমি সুতাও ব্যবহৃত হয়।

বাদ্যযন্ত্র সারিন্দা বা বাগধারা সারিন্দার সাথে সারিন্দা রেস্টুরেন্টের কোন যোগাযোগ আছে বলে জানা নেই। তবে, রেস্টুরেন্ট হিসেবে ময়মনসিংহের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। ২০২২ সালে ঈদের পরে পরিবারসহ ময়মনসিংহ বেড়াতে গিয়ে প্রথমবার সারিন্দায় ভোজনের সুযোগ হয়েছিল।

সি কে ঘোষ রোডে সারিন্দা রেস্টুরেন্ট অবস্থিত। এই রাস্তাটি অত্যন্ত ব্যস্ত, যানজট লেগেই থাকে। এমনকি, রিকশা বা অটোচালকরাও অনেক সময় যেতে আগ্রহী হন না।

দোতলায় ভবনের অর্ধেকটা জুড়ে রেস্টুরেন্টটির বসার জায়গা। চমৎকার পরিবেশ। মুখোমুখি চারজন করে বসার জন্য টেবিল-সোফা। অর্ধচন্দ্রাকৃতির বসার ব্যবস্থা রয়েছে দুটি। সেখানে একত্রে আট-দশজন খেতে পারে। সব মিলিয়ে একত্রে সত্তর আশিজনের ব্যবস্থা আছে বলে মনে হলো। খাবারেও নানা ধরণের বৈচিত্র্য। আমরা সারিন্দার স্পেশাল কাচ্চি বিরিয়ানি অর্ডার করলাম।

পনেরো বিশ মিনিট পরে স্পেশাল কাচ্চি বিরিয়ানি হাজির। পিতলের ছোট হাড়িতে করে পরিবেশন করা হয়েছে। সাথে আস্ত সিদ্ধ ডিম। সাধারণ কাচ্চির তুলনায় খাসির গোস্তের পরিমাণ বেশি হওয়াতেই সম্ভবত স্পেশাল। গরম গরম কাচ্চি, আমরাও ক্ষুধার্ত ছিলাম। ঝাপিয়ে পড়লাম।

পার্থক্যটা টের পেতে একটু সময় লাগলো। ঝাল। কাচ্চিতে ঝাল হয় এই ধারণা কখনও ছিল না। প্রথমে ভাবলাম – বোধহয় আমার জিহবায় সমস্যা। বাচ্চাদেরও ঝাল লাগছে দেখে বুঝলাম সেরকম কিছু না। আমার স্ত্রী ঝাল খেয়ে অভ্যস্ত, কিন্তু দেখলাম তারও কষ্ট হচ্ছে। কোনমতে কোল্ড ড্রিংক্স সহকারে জীবনের প্রথম ঝাল কাচ্চি বিরিয়ানি খেয়ে উঠলাম।

নেত্রকোনা থেকে ফেরার সময় ভাবলাম – লাঞ্চটা ময়মনসিংহের ভালো কোন হোটেলে করে নিবো। সাথে রুহুল কাদের-রিয়া আছে। তারা আগে ময়মনসিংহ আসেনি। রেটিং-রিভিউ দেখে সেই সারিন্দা রেস্টুরেন্টেই ফিরতে হলো।

আগের অভিজ্ঞতা ভুলিনি। অন্যদেরকেও জানিয়ে দিলাম। তাই কেউই স্পেশাল কাচ্চির অর্ডার দিল না। এবার খিচুড়ির অর্ডার হলো – স্পেশাল মাটন। রিয়া বিরিয়ানি-খিচুড়ির দিকে গেলো না, মোরগ পোলাওয়ের অর্ডার করলো।

খিচুড়ি-মোরগ পোলাও পরিবেশন করা হলো। সুঘ্রাণ ভেসে বেড়াচ্ছে। ভুনা খিচুড়ি থেকে ট্যাঙ্কের কামানের মতো খাসির নলা বেরিয়ে আছে। মুখে দিলাম এবং দমে গেলাম। সমস্যাটা কি স্পেশাল আইটেমে? নাকি কপালে? এটায়ও ঝাল! স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশিই।

হয়তো ময়মনসিংহের লোকেরা ঝাল খেতেই ভালোবাসে। অথবা, সারিন্দা রেস্টুরেন্ট এর খাবারে ঝাল থাকে বলেই সবাই খুব মজা করে খায়। কিন্ত আমাদের মুখে তো আর সেই ঝালে তৃপ্তি হলো না। খিচুড়ির পরে তাই ফালুদা খাওয়া হলো। শুকরিয়া, সেখানে ঝাল ছিল না।

মোরগ পোলাওয়ের সাদা পোলাওতে ঝাল ছিল কিনা, সেটা রিয়া নিশ্চিত করতে পারেনি।

আমার অন্যান্য ফুডব্লগ

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৩৯

সোনাগাজী বলেছেন:



ফুড রিভিউতে মুল্য যোগ করতে হয় ও অন্য খাবারের দোকানের গড়মুল্য দেখাতে হয়।

০৭ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:২৩

দারাশিকো বলেছেন: জ্বি।

২| ০৬ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:০৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: রাতের খাবার শেষ করে ব্লগে ঢুকতেই আপনার এই ফুড ব্লগ দেখলাম। আমিও খাবার নিয়ে পোস্ট দিতে চেয়েছিলাম বাট মোবাইলে দুইবার ট্রাই করেও ছবি আপলোড হলো না খান তো দিলাম আগামীকাল পোস্ট দিব।

মনে হয় ওই হোটেলটা ঝালের জন্যই বিখ্যাত। যদি ফালুদা ও ঝাল হতো তাহলে ঝেরে দৌড় দেওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিল না দ্বিতীয়বার ভুলেও ওখানে পা রাখতেন না।

০৭ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:২৪

দারাশিকো বলেছেন: হা হা হা। ভালো বলেছেন। অন্যান্য মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে - ঐ অঞ্চলে খাবারে ঝাল দেয়া হয়। তাই বলে কাচ্চিতে ঝাল - এ মেনে নেয়া যায় না ;)

৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:১০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আমি খেতে না গেলেও ম্যাপ ঘেটে অনেক পর্যালোচনা আর ছবি দেখে বেড়াই। খাবারের ছবি গুলো ভালো লাগে।
সারিন্দা রেস্টুরেন্ট এর রিভিউ গুলো দেখলাম। যা বুঝলাম ইন্টেরিয়রের তুলনায় খাবার ততোটা ভালো না।


আপনার পোস্ট ভালো হয়েছে।

০৯ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৯

দারাশিকো বলেছেন: এই পোস্টে যে কতগুলো মন্তব্যের রিপ্লাই বাকী রয়ে গেছে ভুলেই গেছিলাম। মাফ চাই।

আমি ব্যক্তিগতভাবে রেটিং এ বিশ্বাসী না, বরং রিভিউ খেয়াল করি। সেখানে সঠিক ছবিটা পাওয়া যায়। আর কোথাও বেড়াতে গেলে সময়ের টানাটানি থাকে, তখন বেশি রেটিং পাওয়া যায়গাটাই বেছে নেয়া লাগে আরকি।

খাবারের পরিবেশন কিন্তু চমৎকার। ফালুদাটাও ভালো ছিল। বাকীগুলো চেখে দেখা হয়নি বলে মতামত দিচ্ছি না।

আপনার মন্তব্যেও ভালোলাগা। ধন্যবাদ :)

৪| ০৭ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:১২

সোহানী বলেছেন: মংমনসিংহে যখন গেছিলাম তখন গুগুল রিভিউ এর প্রচলন ছিল না তাই সেখানে যাওয়া হয়নি মনে হয়। তবে সেখানকার অনেক রেস্টুরেন্টে খেয়েছিলাম। একটা মনে হয় ছালাদেওয়া রেস্টুরেন্টে ছিল, বাস স্টেন্ডের পাশে। আমার কলিগ জোর করে নিয়েগিয়েছিল, তবে খাবার ভালো ছিল।

০৯ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৮

দারাশিকো বলেছেন: তাহলে নিশ্চয়ই অনেক আগে গিয়েছিলেন। ময়মনসিংহে খাবারের ভালো দোকান আছে অনেক আগে থেকেই। স্থানীয় লোকজন হয়তো বলতে পারতো। ভবিষ্যতে কখনও গেলে চেখে দেখতে পারেন।

৫| ০৭ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: আমার জানামতে ময়মনসিংহ অঞ্চলের লোকেরা ঝাল বেশি খায় বিশেষ করে যত আপনি হাওর বিলের দিকে আগাবেন তত বেশি ঝালের মুখোমুখি হবেন। কুমিল্লার বিখ্যাত চান্দুর হোটেলেও গরুর মাংস আর আলু ভর্তা সেইরকম ঝাল দেয়!

০৯ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২১

দারাশিকো বলেছেন: এটা হতে পারে। তবে আমার ব্যতিক্রম অভিজ্ঞতাও আছে। অষ্টগ্রামে খাবারে তেমন ঝাল টের পাই নাই।

৬| ০৭ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:০২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ফুড ব্লগিং আমার ভালই লাগে।

০৯ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২২

দারাশিকো বলেছেন: থ্যাংকিউ মোস্তফা সোহেল।

৭| ০৭ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:০২

রানার ব্লগ বলেছেন: আমার মনে হয় নদী তিরবর্তি মানুষেরা ঝাল বেশি খায় !

০৯ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

দারাশিকো বলেছেন: আমার অবশ্য এমনটা মনে হয় নাই। অনেক নদীর তীরবর্তী এলাকায় খেয়েছি, ঝাল বেশি মনে হয়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.