নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে: https://t.ly/atJCp এছাড়া, বইটই-এ: https://boitoi.com.bd/author/2548/&

দারাশিকো

লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি

দারাশিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

আয়কর দিলে যাকাত দিতে হবে কি

০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

"ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) দিলে কি যাকাত দিতে হবে? আমার মনে হয়, যাকাত দেয়ার সময় ইনকাম ট্যাক্স হিসেবে যা দেয়া হয়েছে সেটা বাদ দিয়ে বাকীটুকু আদায় করা উচিত, ইনকাম ট্যাক্স দেয়ার পর যদি যাকাত দেয়া হয় তাহলে সেটা অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়।"

হুবহু এরকম না হলেও মূল কথা এমন যে যদি কেউ ইনকাম ট্যাক্স দেয় তাহলে মোট যাকাত হতে তা বাদ দিয়ে বাকী টাকা আদায় করলে ভালো হয় – এরকম মতামত আমি শুনেছি। কোন মতামত প্রকাশ না করলেও ‘ইনকাম ট্যাক্স দিলে যাকাত দিতে হবে কি-না’ এই প্রশ্ন আছে এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। এই বিষয়ে আলেমদের মতামত কি সেটা তুলে ধরতে চাই, কারও যদি এর সাথে দ্বিমত থাকে তাহলে কোন আলেমের সাথে আলোচনা করে নেয়া উচিত।

যাকাত হলো আল্লাহর বিধান। এটি ইসলামের মূল ভিত্তিগুলোর একটি এবং এটি হিসাব করা হয় মুসলিম ব্যক্তির উদ্বৃত্ত সম্পদের উপর। যে কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে যাকাত কারও জন্য ফরজ হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো নিসাব পরিমাণ সম্পদ যদি এক চান্দ্র বছর সময়কাল যাবৎ জমা থাকে, তাহলে তার উপর যাকাত আদায় করতে হবে। অন্যদিকে, আয়কর হলো রাষ্ট্রের বিধান। এটি হিসাব করা হয় কোন ব্যক্তির সৌর বছরের আয়ের উপর এবং মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবার উপরে ধার্য্য করা হয়।

এখন কোন ব্যক্তির যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ নির্ধারিত সময় যাবৎ জমা থাকে কিন্তু সারা বছরে কোন আয়-রোজগার না থাকে, তাহলেও তার উপর যাকাত ফরজ হবে। আবার, কোন ব্যক্তি যদি সারা বছরে, ধরা যাক, অর্ধ-কোটি টাকা আয় করে কিন্তু তার সম্পূর্ণটাই ব্যয় করে ফেলে এবং নিসাব পরিমাণ সম্পদ নির্ধারিত সময়কাল জমা না থাকে, তাহলে তার উপর যাকাত ফরজ হয় না।

আয়করের নিয়ম সেরকম নয় – কোন ব্যক্তির যদি বিপুল পরিমাণ অলস সম্পদ থাকে, কিন্তু বাৎসরিক আয় নির্ধারিত সীমা অতিক্রম না করে তাহলে তাকে আয়কর দিতে হবে না। আবার, কেউ যদি সারা বছরে, ধরা যাক, অর্ধ কোটি টাকা, আয় করে অথচ সম্পূর্ণটাই খরচ করে ফেলতে হয় এবং কোন সঞ্চয় করতে পারে না, তা সত্ত্বেও তাকে নির্ধারিত হিসাব মোতাবেক আয়কর প্রদান করতে হবে, অন্যথায় রাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো – যাকাতের অর্থ ব্যয়ের খাত নির্ধারিত। পবিত্র কুরআনের সূরা তওবায় যাকাতের জন্য আটটি খাত নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে, এর বাইরে যাকাতের অর্থ ব্যবহার করার সুযোগ সাধারণত নেই। কিন্তু ইনকাম ট্যাক্স যেহেতু রাষ্ট্রের আওতাধীন, তাই এর ব্যবহার নির্দিষ্ট নয়, সরকার তার প্রয়োজনানুযায়ী বিভিন্ন খাতে ব্যবহার করতে পারে।

তাই, আয়কর দিলেও যদি যাকাত ফরজ হয় তবে যাকাত আদায় করতে হবে। তবে, বাংলাদেশে বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী কিছু নির্ধারিত জায়গায় যাকাত প্রদান করা হলে আয়কর রেয়াত পাওয়া যায়। অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ বলেন যে ইসলামী রাষ্ট্র হলে যাকাত আদায়ের পর কর দেয়ার প্রয়োজন হতো না, তবে এর বিপরীতে একম মতামতও রয়েছে যে ইসলামী রাষ্ট্রে যাকাত আদায়ের পরও রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরণের কর ধার্য করা হয়েছে।

যাকাত ও আয়করের মধ্যে আরও পার্থক্য দেখানো সম্ভব। মূলকথা হলো – আয়কর দেয়া হোক বা না হোক, নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছরকাল যাবৎ জমা থাকলে যাকাত আদায় করতে হবে। কেউ যদি তা না করে তাহলে সূরা তওবার ৩৪-৩৫ নম্বর আয়াত মোতাবেক তাকে আখিরাতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

ব্যক্তিগত ব্লগ আর্কাইভ

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:২৭

নিমো বলেছেন: আজকে খবর বেরিয়েছে যে আয়কর যোগ্য শতকরা ৬৮ ভাগ লোকই আয়কর দেয় না। সেই হিসাবে যাকাত দেয়ার যোগ্য কত শতাংশ যাকাত দেয় বলে আপনার মনে হয় ? যদি নাই দেই, তবে ইহা দিলে দিলে উহা মওকুফ আদতে ফাজালামি ছাড়া কিবা বলা যায়!

০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:২০

দারাশিকো বলেছেন: আয়করের হিসাব বের করা সহজ, কারণ যা আয়কর পাওয়া যাচ্ছে তার পুরোটাই রেকর্ডেড। যাকাতের খুব সামান্যই সরকারের কাছে রেকর্ড থাকে, এ কারণে ধারণা করা খুবই মুশকিল। একটা গবেষণার কথা জেনেছিলাম - সেখানে বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করা সম্ভব বলা হয়েছিল। (Click This Link)। এই হিসাব কতটুকু গ্রহণযোগ্য সেটা আসলে রিসার্চাররা বলতে পারবেন।

তবে যাকাত সম্পর্কে মানুষের জানার ঘাটতি আছে - মূলত এ কারণেই যে পরিমাণ যাকাত আদায় হওয়ার কথা, তা হয় না বলে মনে করি।

২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:৪৯

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আয়করও কেউ ঠিকমত দেয় না যাকাতও কেউ ঠিকমত দেয় না যে যেভাবে পারে ফাঁকি দিচ্ছে।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:২১

দারাশিকো বলেছেন: আমি মনে করি এটা যাকাত সম্পর্কে জানা ও উপলব্ধির ঘাটতি - যাকাতের গুরুত্ব ও হিসাব সম্পর্কে ভালোভাবে জানা থাকলে যাকাত আদায়ের পরিমাণ বাড়বে।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:০৫

কামাল১৮ বলেছেন: আয়কর আদায়ে পরিবর্তন আনতে হবে।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৫২

দারাশিকো বলেছেন: কী পরিবর্তন?

৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আয়কর হোল আয়ের উপর কর আর জাকাত হোল বাড়তি সম্পদের উপর কর। আমাদের দেশে বছর বিশেক আগে সম্পদ করও ছিল।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৫২

দারাশিকো বলেছেন: জ্বী। ধন্যবাদ সাড় চুয়াত্তর।

৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১:২৩

নাহল তরকারি বলেছেন: যাকাত আর কর। দুইটা দুই জিনিস। এটা মানুষ বুঝে না?

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৫৩

দারাশিকো বলেছেন: বেশিরভাগ লোকই হয়তো বুঝে, কিন্তু কিছু লোক বুঝতে চায় না, তাই আরেকটু স্পষ্ট করে লিখে রাখলাম।

৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮

বিটপি বলেছেন: আয়কর হল দেশে প্রচলিত একটা আইন। খুলাফায়ে রাশেদার সময়ও মানুষকে আয়কর দিতে হত। সেই আয়কর সরকারের লোকেরা আদায় করত। কিন্তু যাকাত তারা আদায় করতনা। যার যার যাকায় সে-ই হিসাব করে দিয়ে দিত। সেই নিয়ম এখনও আছে।

নিমোর প্রশ্নের উত্তরঃ যাকাত কোন আইন না। দিলে দেবে না দিলে না দিবে। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ইচ্ছাধীন। অনেকটা নামাজের মত। পড়লে পড়ল, না পড়লে যার যারটা সে বুঝবে। সরকারের কাছে কি হিসাব আছে কয়জন লোক নামাজ পড়ে বাঁ রোজা রাখে? তাহলে যাকাতের মত একটা ব্যক্তিগত ইবাদতের হিসাব সরকার রাখতে যাবে কেন?

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:১৯

দারাশিকো বলেছেন: "বিটপি বলেছেন: খুলাফায়ে রাশেদার সময়ও মানুষকে আয়কর দিতে হত। সেই আয়কর সরকারের লোকেরা আদায় করত। কিন্তু যাকাত তারা আদায় করতনা। যার যার যাকায় সে-ই হিসাব করে দিয়ে দিত। সেই নিয়ম এখনও আছে।" - এইটা সম্পূর্ণ নতুন তথ্য। সেইসময় আয়কর ছিল - এমন কোন ঘটনার কথা জানি না, তবে কর ছিল, সাধারণত বাণিজ্য সংক্রান্ত। আর যাকাত আদায়ের জন্য সরকারের নিয়োজিত কর্মচারি ছিল। যাকাত আদায় করা রাষ্ট্রেরই কর্তব্য। যার যার যাকাত সেই হিসাব করলেও আদায়ের জন্য আলাদা লোক নিযুক্ত ছিল বলে জানি। আপনি যা বলেছেন এ সংক্রান্ত কোন রেফারেন্স থাকলে কাইন্ডলি দিয়েন।

দ্বিতীয়ত, আপনি বলেছেন, “যাকাত কোন আইন না। দিলে দেবে না দিলে না দিবে। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ইচ্ছাধীন।” খুবই ভুল কথা। যাকাত আদায় করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। রাসূল (স) এর মৃত্যুর পরে কিছু লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল, প্রথম খলিফা আবু বকর (রা) তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে যুদ্ধ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। যাকাত সম্পর্কে আপনার আরও জানাশোনা দরকার মনে হচ্ছে।

৭| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: হুজুর আসসালামু আলাইকুম।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:১৯

দারাশিকো বলেছেন: ওয়ালাইকুম আসসালাম রাজীব নুর!

৮| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯:২৯

বিটপি বলেছেন: যেসব দেশে ইসলামী আইন চালু আছে, সেসব দেশের জন্য আপনার ধারণা প্রযোজ্য। বাংলাদেশ একটি সেক্যুলার দেশ। এ দেশে ধর্ম পালনে কেউ বাধ্য নয়। তাই কেউ যাকাত দিতে না চাইলে আবু বকরের (রা) মত কেউ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে না। এই দেশের পরিপ্রেক্ষিতে যাকাত একটি ব্যক্তিগত ইবাদত।

আয়কর না দেওয়া একটা অপরাধ এবং প্রচলিত আইনে তার শাস্তির ব্যবস্থা আছে। যাকাত না দেয়া আইন অনুযায়ী কোন অপরাধ নয়। যারা আল্লাহকে ভয় করে, কেবল তাঁদের জন্যই এই আইন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.