![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন সময় এসেছে না বলা কথা গুলো বলে বধীর মানুষের বধীরতা ঘোঁচানো, এখন সময় এসেছে আলোর বাঁধ ভাঙ্গার। যে আলোয় অন্ধকারগামী মানুষ চলতে শিখবে। আমি ভীতু, আমার গলার স্বরও নরম। আমি বলতে সাহস করবনা বললেও কেউ শুনতে পাবেনা। যাদের সাহস আছে, যাদের গলা উঁচু আছে তাদেরকে সমবেত স্বরে বলতে হবে। আলোর বাঁধ ভেঙ্গে দাও! অন্ধকারকে হটাও!
ছোট শহরে মানদন্ডে চেহারায় আভিজাত্য শীর্ষ পর্যায়ের কিন্তু ঢাকা শহরের মানদন্ডে সেটাকে মধ্যম পর্যায়ের বলা যেতে পারে। বাসের প্রচন্ড ভীড়ে সবাই যেখানে প্রচন্ড বিরক্ত সেখানে ভদ্রলোককে একটু নিস্পৃহ মনে হলো। পাশের সীটের যাত্রী উঠে যাওয়ার পর বসার জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে আমিই দাঁড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু বয়সে আমার চেয়ে বেশি না হলেও বাহিয্যক আভিজাত্যে আমার চেয়ে এগিয়ে থাকার কারণে ভদ্রলোককে বসার সুযোগ করে দিলাম।
প্লিজ আপনি বসুন, এই কথাটা শোনার আশা করছিলাম, কিন্তু আশাহত করে বসে পড়লেন। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার ফলে ভাবছিলাম ভদ্রলোক ধন্যবাদটুকুও দিবেন না। কিন্তু শঙ্কাতেও উনি পানি ঢাললেন। সুন্দর করে বললেন-
-ধন্যবাদ
আমি ওয়েলকাম বলে সীটে হেলান দিয়ে বাসে রাখা ল্যাপটপের ব্যাগের দুই পাশে দুই পা দিয়ে দিয়ে সীটে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। এই ভাবে ঘন্টা খানেক দাঁড়িয়ে থাকলেও আমি সাধারণত ক্লান্ত হইনা, কিন্তু সম্ভবত বসার সুযোগ ছেড়ে দেওয়ার অনুশোচনাতে কিছুটা ক্লান্তিবোধ অনুভব করছি। কাকলি থেকে কালশী হয়ে মিরপুরের এই রাস্তাটাতে বাসে কখনও আসা হয়নি। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে গুলশান গেলে সাধারনত উবার, বা পাঠাওতে আসা হয়। খরচ সংরক্ষণের উদ্দেশ্য নিয়েই মূলত: বাসে করে আসছি। রাস্তাটিতে চলতে গিয়ে যেটা মনে হলেও এই রুটে জ্যাম থাকলেও জ্যামের প্রকোপ নেই। সিদ্ধান্ত নিলাম ভাড়া বাবদ খরচ সাশ্রয়ের এই সুযোগ আর হাতছাড়া করব না। ভাবতে ভাবতে বাসটি কালসি চলে আসল। বসার সুযোগ করে দেওয়া ভদ্রলোকটি সীটের থেকে উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার বললেন-
-এই দাঁড়া আমাকে নামিয়ে দে রে, (মনে হলো আজ সারাদিনে এইরকম বিশ্রি শব্দ চয়ন শুনিনি, তবে ঢাকা শহরে বাসে উঠলে হর-হামেশায় এই জাতিয় কুৎসিত শব্দ চয়ন শোনা যায়। )
-আপনি ভাড়া দিয়েছেন? অনুর্দ্ধো 20 বছর বয়সী বাসের কন্ডাকটর জিজ্ঞেস করল।
-এই তুই এই দিকে আয়, তোর ভাড়া দিচ্ছি, আগের তুলনায় আর উচ্চস্বরে ও কুৎসিত ভাবে বললেন, বলতে বলতে বাসের গেটের দিকে হাঁটতে লাগলেন
ঢাকা শহরের এই নিত্য আচরণের প্রায় ক্ষেত্রেই আমি আচরণের কারণ বুঝতে পারিনা। সম্ভবত কন্ডাকটরও এই আচরণের কারণ বুঝেত পারল না, তাই কন্ডাকটরের শরীরী আচরণে কোন পরিবর্তন দেখলাম না, দেখলাম না কোন মনজগতেও, ওর ভয় ও ঘৃনা আমি কোনটায় সনাক্ত করতে পারলাম না, যেমনটি ঐ লোকের আচরণের কারণও সনাক্ত করতে পারলাম না। ঠিক আগের মত করেই তথাকথিত ভদ্রলোক প্যাসেন্জারের পেঁছন পেঁছন ছুটতে লাগল।
-এই কাকলী থেকে এই পর্যন্ত ভাড়া কত? (আগের মতই উচ্চ স্বরে)
-আপনি তো এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসা করেন, ভাড়া কত আপনি জানেন। কন্ডাকটার আবার বলল।
তথাকথিত ভদ্রলোক কি এক আঞ্চলিক ভাষায় গালি দিয়ে বললেন-
-এটা আমার দেশের আঞ্চলিক গালি এর অর্থ তুই বুঝতে পারছিস?
কন্ডাকটর কি বুঝলো তা জানি না, তবে আমি যা বুঝলাম তা লেখার অযোগ্য বলে লিখলাম না।
লোকটি 100 টাকার একটা নোট বের করে দিলেন, কন্ডাকটর কিছু টাকা ফেরত দিল। প্যাসেন্জারটি বাস থেকে নামার সময় আবার চিৎকার করে বলল
-ঐ নামিয়ে দিতে পারছিস না,
সম্ভবত শব্দটা শুনেই বাসের ড্রাইভার ইচ্ছা করে আরও কিছুদুর গিয়ে বাস থামালো, লোকটি চিৎকার করে করে গালি দিতে দিতে নেমে গেলেন।
যারা ঢাকাতে পাবলিক বাসে বসে বসে যাতায়াত করেন তাদের কাছে এ জাতিয় ঘটনা নতুন নয়। ঢাকা বাসী এই আচরণের সাথে প্রচন্ড রকমের অভিযোজিত হয়ে গেছে। আমার কাছে পৃথীবিতে যতগুলো আশ্চার্য্য ঘটনা আছে তার মধ্যে ঢাকাবাসির অভিযোজন ক্ষমতা অন্যতম। এই ক্ষমতা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, পাবলিকের সামনের কোন ড্রাইভার, কন্ডাকটরকে দিব্বি শুয়েরর বাচ্চা বলা যায় কেও প্রতিবাদ করবে না। আবার বাসের ড্রাইভার যদি ইয়াং মেয়েদের বেকায়দায় ফেলার জন্য আচমকা প্রচন্ড গতিতে ব্রেক করে ফেলেও দেয় তবুও কেউ প্রতিবাদ করবে না, কন্ডাকটর ইচ্ছাকৃত ভাবে অপ্রয়োজনে নারী পিঠে হাত দিয়ে বাসে তোলার অজুহাতে সুযোগ নিলেও কেউ প্রতিবাদ করবে না। আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা, আমাদের ধৈর্য্যশক্তি এক বিরাট ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছে গেছে! আমাদের এই ধৈর্য্যশক্তির ধৈর্য্যচ্যুতি কবে হবে জানি না। আমি ভয়ঙ্কর এক ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটার আশঙ্কা দেখার আশায় রইলাম।
আলোর পথিক
04 ফেব্রুয়ারী 2018
২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪
আলোর_পথিক বলেছেন: আমরা সবাই বোধ হয় সেই তীব্র চিকন আলোর আশায় আছি!
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: হঠাৎ সূর্য গায়েব হয়ে যাবে। পৃথিবীর সব জায়গায় অন্ধকার তথা রাত হয়ে যাবে। তিন দিনের সমান সময় পর্যন্ত রাত থাকবে অর্থাৎ সূর্য দেখা যাবেনা। সব মানুষ অস্থির-পেরেশান হয়ে যাবে। এরপরে হঠাৎ দেখবে যে চিকন ও তীব্র আলো নিয়ে পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উঠছে। তা দেখে সমস্ত মানুষ হৈ চৈ শুরু করে দিবে।